‘এখনও জয়ের সুযোগ আছে’

অবিশ্বাস্য কিংবা অস্বাভাবিক কিছু না ঘটলে চট্টগ্রাম টেস্ট পাকিস্তানের জয় ঠেকানো সম্ভব নয়। ১০ উইকেট হাতে রেখে শেষ দিনে দলটির প্রয়োজন আর মাত্র ৯৩ রান। তারপরও স্বাগতিকরা এখনও জয়ের আশা ছাড়ছে না। কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর মতে, এখনও চট্টগ্রাম টেস্ট জয়ের সুযোগ আছে বাংলাদেশের। চলমান টেস্টের প্রতিদিনই প্রথম সেশন ছিল বোলারদের দখলে পড়েছে। একটু নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়েই উইকেট পড়েছে খুব দ্রুত। ডমিঙ্গোর তাই আশা, শেষ দিনে প্রথম সেশনে পাকিস্তানকে একটু চেপে ধরতে পারলেই ম্যাচ হেলে যেতে পারে বাংলাদেশের দিকে।

চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রথম সেশনে উইকেট পড়ছে। যেভাবে ছেলেরা লড়াই করেছে তাতে আমি গর্বিত। পাকিস্তান ম্যাচে এগিয়ে আছে। তাদের ৯৩ রান প্রয়োজন, আমাদের জিততে হলে বিশেষ কিছু করতে হবে।’

শেষ দিনের শুরুতেই কিছু উইকেট তুলে নিতে চায় টাইগাররা। সেই বিশেষ কিছু যে অসম্ভব নয়, ডমিঙ্গো তাই বললেন। দলের লক্ষ্য কি, তাও জানালেন। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই সম্ভব। আমাদের জয়ের সুযোগ আছে এটা বিশ্বাস করেই কাল (মঙ্গলবার) মাঠে নামতে হবে। প্রথম আধঘণ্টায় এক-দুটি উইকেট তুলে নিতে পারলে, যেকোনো কিছুই সম্ভব।’

এদিকে মাথায় আঘাত পেয়ে রাব্বি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে যাওয়ার পর মেহেদী হাসান মিরাজ দ্রুত আউট হলে আবারও বিপদে পড়ে টাইগাররা। এরপর উইকেটে আসেন রাব্বির কনকাশন সাব নুরুল হাসান সোহান। লিটন এবং সোহান মিলে বাংলাদেশকে লড়াইয়ের পুঁজির স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। যদিও সাজিদ খানের বলে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অহেতুক উইকেট বিলিয়ে দেন সোহান। এতেই শেষ হয় লিটনের সঙ্গে তার ৩৮ রানের জুটির। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সোহানের আউট হয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি সোহানকেও জিজ্ঞেস করেন সেও এই শট আবার খেলতে চাইবে না। সে নিজে এবং দলকে বিপদে ঠেলে দিয়েছে এই শট খেলে। এই বিষয় নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’

সোহানের আউটের আগে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ১৯৬ রানে। আর ৪০-৫০ রান যোগ হলেই পাকিস্তানকে চাপে ফেলা যেত বলে মনে করেন ডমিঙ্গো। এমনটা হলে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসের সংগ্রহটাও কম হত। এ নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন ডমিঙ্গো।

তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি কখনও মিডিয়ায় খেলোয়াড়দের সমালোচনা করি না। কিন্তু আমার মনে হয় আমরা কিছুটা ভালো মোমেন্টাম নিয়ে ফিরে পেয়েছিলাম। আমার মনে হয় আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। আমরা ১৯৬ রানে এগিয়ে ছিলাম ৪ উইকেট হাতে রেখে। দুই ব্যাটসম্যান তাদের জায়গা তৈরি করে নিয়েছিল। এই জুটি আরও ৪০-৫০ রান যোগ করতে পারলে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেয়া সম্ভব ছিল। এরপর তারা এক ঘণ্টার মতো ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেত।’

প্রধান কোচ বলেন, তার চোখে সাম্প্রতিক সময়ে টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি লিটনের ব্যাটিং।

‘টেস্টে গত ১৮ মাসে লিটনের গড় ৬০ এর কাছাকাছি। এই সময়ে সে আমাদের জন্য খুব ভালো কিছু ইনিংস খেলেছে। আমরা ওর জন্য ভালো একটা জায়গা পেয়েছি ৬ ও ৭ নম্বরে। এটা তাকে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিচ্ছে এবং এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে।’

গত ১৮ মাসে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচশর বেশি রান করেছেন লিটন। ১০ ইনিংসে ৫৪.৩০ গড়ে তার রান ৫৪৩। একটি সেঞ্চুরির পাশে ফিফটি পাঁচটি। এই সময়ে বাংলাদেশের আর কারও নেই চারটির বেশি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস।

মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১ , ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

‘এখনও জয়ের সুযোগ আছে’

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

অবিশ্বাস্য কিংবা অস্বাভাবিক কিছু না ঘটলে চট্টগ্রাম টেস্ট পাকিস্তানের জয় ঠেকানো সম্ভব নয়। ১০ উইকেট হাতে রেখে শেষ দিনে দলটির প্রয়োজন আর মাত্র ৯৩ রান। তারপরও স্বাগতিকরা এখনও জয়ের আশা ছাড়ছে না। কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর মতে, এখনও চট্টগ্রাম টেস্ট জয়ের সুযোগ আছে বাংলাদেশের। চলমান টেস্টের প্রতিদিনই প্রথম সেশন ছিল বোলারদের দখলে পড়েছে। একটু নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়েই উইকেট পড়েছে খুব দ্রুত। ডমিঙ্গোর তাই আশা, শেষ দিনে প্রথম সেশনে পাকিস্তানকে একটু চেপে ধরতে পারলেই ম্যাচ হেলে যেতে পারে বাংলাদেশের দিকে।

চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রথম সেশনে উইকেট পড়ছে। যেভাবে ছেলেরা লড়াই করেছে তাতে আমি গর্বিত। পাকিস্তান ম্যাচে এগিয়ে আছে। তাদের ৯৩ রান প্রয়োজন, আমাদের জিততে হলে বিশেষ কিছু করতে হবে।’

শেষ দিনের শুরুতেই কিছু উইকেট তুলে নিতে চায় টাইগাররা। সেই বিশেষ কিছু যে অসম্ভব নয়, ডমিঙ্গো তাই বললেন। দলের লক্ষ্য কি, তাও জানালেন। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই সম্ভব। আমাদের জয়ের সুযোগ আছে এটা বিশ্বাস করেই কাল (মঙ্গলবার) মাঠে নামতে হবে। প্রথম আধঘণ্টায় এক-দুটি উইকেট তুলে নিতে পারলে, যেকোনো কিছুই সম্ভব।’

এদিকে মাথায় আঘাত পেয়ে রাব্বি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে যাওয়ার পর মেহেদী হাসান মিরাজ দ্রুত আউট হলে আবারও বিপদে পড়ে টাইগাররা। এরপর উইকেটে আসেন রাব্বির কনকাশন সাব নুরুল হাসান সোহান। লিটন এবং সোহান মিলে বাংলাদেশকে লড়াইয়ের পুঁজির স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। যদিও সাজিদ খানের বলে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অহেতুক উইকেট বিলিয়ে দেন সোহান। এতেই শেষ হয় লিটনের সঙ্গে তার ৩৮ রানের জুটির। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সোহানের আউট হয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি সোহানকেও জিজ্ঞেস করেন সেও এই শট আবার খেলতে চাইবে না। সে নিজে এবং দলকে বিপদে ঠেলে দিয়েছে এই শট খেলে। এই বিষয় নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’

সোহানের আউটের আগে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ১৯৬ রানে। আর ৪০-৫০ রান যোগ হলেই পাকিস্তানকে চাপে ফেলা যেত বলে মনে করেন ডমিঙ্গো। এমনটা হলে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসের সংগ্রহটাও কম হত। এ নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন ডমিঙ্গো।

তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি কখনও মিডিয়ায় খেলোয়াড়দের সমালোচনা করি না। কিন্তু আমার মনে হয় আমরা কিছুটা ভালো মোমেন্টাম নিয়ে ফিরে পেয়েছিলাম। আমার মনে হয় আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। আমরা ১৯৬ রানে এগিয়ে ছিলাম ৪ উইকেট হাতে রেখে। দুই ব্যাটসম্যান তাদের জায়গা তৈরি করে নিয়েছিল। এই জুটি আরও ৪০-৫০ রান যোগ করতে পারলে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেয়া সম্ভব ছিল। এরপর তারা এক ঘণ্টার মতো ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেত।’

প্রধান কোচ বলেন, তার চোখে সাম্প্রতিক সময়ে টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি লিটনের ব্যাটিং।

‘টেস্টে গত ১৮ মাসে লিটনের গড় ৬০ এর কাছাকাছি। এই সময়ে সে আমাদের জন্য খুব ভালো কিছু ইনিংস খেলেছে। আমরা ওর জন্য ভালো একটা জায়গা পেয়েছি ৬ ও ৭ নম্বরে। এটা তাকে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিচ্ছে এবং এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে।’

গত ১৮ মাসে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচশর বেশি রান করেছেন লিটন। ১০ ইনিংসে ৫৪.৩০ গড়ে তার রান ৫৪৩। একটি সেঞ্চুরির পাশে ফিফটি পাঁচটি। এই সময়ে বাংলাদেশের আর কারও নেই চারটির বেশি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস।