যাত্রী সেজে অটোরিকশা চালককে হত্যা

২ আসামির স্বীকারোক্তি

দুর্বৃত্তরা যাত্রী সেজে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে পথে অটোরিকশা চালক সাদিক মিয়াকে হত্যা করে। হত্যার পর অটোরিকশা (সিএনজি) ও চালকের মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনার পর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযুক্ত আসামি মো. আকবর আলি ও মাহিন মিয়াকে গ্রেফতার করে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী লুণ্ঠিত অটোরিকশা, মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ২ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ অফিস থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের কুলিয়াচরের অটোরিকশা চালক সাদিক মিয়াকে রাত ৮টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রাস্তায় ফেলে দিয়ে তার অটোরিকশা (সিএনজি) ও মোবাইল ফোনটি দুর্বৃত্তরা নিয়ে যায়। মারাত্মক অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করলে ঘটনার ৪ দিন পর সে মারা যায়। মৃত্যুর আগে তার দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী ৩ জনের নাম উল্লেখ করে কুলিয়াচর থানায় একটি মামলা (নং-৭) তারিখ-১৭-১২-২০১৮ দায়ের করা হয়।

ঘটনার পর পুলিশ অটোরিকশা চালক সাদিক মিয়ার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্ত করে আসামি আকবর আলিকে চলতি বছরের (২০১৯) ২৪ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্যে নরসিংদী জেলার রায়পুর এলাকা থেকে মোবাইল ফোনটি ও অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত আসামি আকবর আলি তার সঙ্গে থাকা সহযোগী মাহিন মিয়া ও আবদুল হকিমের নাম বলে। এরপর পুলিশ সিলেট জেলার বিয়ানী বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাহিন মিয়াকে গ্রেফতার করে। দুই জনের দেয়া তথ্যে মো. হাকিম নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। হাকিম ঘটনার পর মাদক মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার হয়েছে। পরে খবর নিয়ে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারকৃত মাহিন মিয়া ও আলি আকবর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

যেভাবে রহস্য উদঘাটন

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আজহারুল হক জানান, ঘটনার ৪০ দিনের মধ্যে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আকবর আলি। সে ঘটনার ১ দিন আগে সিএনজি অটোরিকশা ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। তার পরিকল্পনা অন্য আসামি মাহিন মিয়া ও হাকিমকে জানায়। ঘটানার দিন ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি থেকে ভৈরব যাওয়ার কথা বলে সিএনজি অটোরিকশাটি ভাড়া করে। তারা সিএনজি অটোরিকশায় কুলিয়াচরের জারিয়াকান্দি ব্রিজের কাছে গেলে পেছনে চাকা দিয়ে ধোয়া বের হয়েছে বলে ড্রাইভার সাদেক মিয়াকে জানায়। তখন সাদেক মিয়া সরল বিশ্বাসে সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে দরজা খুলে পেছনে গেলে ২ জন তাকে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে জারিয়াকান্দি এলাকায় রাস্তায় ফেলে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন ড্রাইভারকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ দিন পর তিনি মারা যান। চাঞ্চল্যকর এ মামলার শীঘ্রই চার্জশিট দেয়া হবে।

ঢাকা রেঞ্জ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, ক্লুলেস হত্যাসহ আলোচিত হত্যা মামলা তদন্তে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ অফিস থেকে তদারকি করা হয়। প্রতিটি মামলা তদন্তে জেলা পুলিশকে রেঞ্জ অফিস থেকে গাইডলাইনসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়। এতে থানা তদন্তকারী কর্মকর্তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা পেয়ে সরজমিন তদন্ত করে মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করে।

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০১৯ , ১৯ আষাঢ় ১৪২৫, ২৯ শাওয়াল ১৪৪০

যাত্রী সেজে অটোরিকশা চালককে হত্যা

২ আসামির স্বীকারোক্তি

বাকী বিল্লাহ

দুর্বৃত্তরা যাত্রী সেজে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে পথে অটোরিকশা চালক সাদিক মিয়াকে হত্যা করে। হত্যার পর অটোরিকশা (সিএনজি) ও চালকের মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনার পর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযুক্ত আসামি মো. আকবর আলি ও মাহিন মিয়াকে গ্রেফতার করে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী লুণ্ঠিত অটোরিকশা, মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ২ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ অফিস থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের কুলিয়াচরের অটোরিকশা চালক সাদিক মিয়াকে রাত ৮টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রাস্তায় ফেলে দিয়ে তার অটোরিকশা (সিএনজি) ও মোবাইল ফোনটি দুর্বৃত্তরা নিয়ে যায়। মারাত্মক অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করলে ঘটনার ৪ দিন পর সে মারা যায়। মৃত্যুর আগে তার দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী ৩ জনের নাম উল্লেখ করে কুলিয়াচর থানায় একটি মামলা (নং-৭) তারিখ-১৭-১২-২০১৮ দায়ের করা হয়।

ঘটনার পর পুলিশ অটোরিকশা চালক সাদিক মিয়ার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্ত করে আসামি আকবর আলিকে চলতি বছরের (২০১৯) ২৪ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্যে নরসিংদী জেলার রায়পুর এলাকা থেকে মোবাইল ফোনটি ও অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত আসামি আকবর আলি তার সঙ্গে থাকা সহযোগী মাহিন মিয়া ও আবদুল হকিমের নাম বলে। এরপর পুলিশ সিলেট জেলার বিয়ানী বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাহিন মিয়াকে গ্রেফতার করে। দুই জনের দেয়া তথ্যে মো. হাকিম নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। হাকিম ঘটনার পর মাদক মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার হয়েছে। পরে খবর নিয়ে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারকৃত মাহিন মিয়া ও আলি আকবর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

যেভাবে রহস্য উদঘাটন

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আজহারুল হক জানান, ঘটনার ৪০ দিনের মধ্যে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আকবর আলি। সে ঘটনার ১ দিন আগে সিএনজি অটোরিকশা ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। তার পরিকল্পনা অন্য আসামি মাহিন মিয়া ও হাকিমকে জানায়। ঘটানার দিন ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি থেকে ভৈরব যাওয়ার কথা বলে সিএনজি অটোরিকশাটি ভাড়া করে। তারা সিএনজি অটোরিকশায় কুলিয়াচরের জারিয়াকান্দি ব্রিজের কাছে গেলে পেছনে চাকা দিয়ে ধোয়া বের হয়েছে বলে ড্রাইভার সাদেক মিয়াকে জানায়। তখন সাদেক মিয়া সরল বিশ্বাসে সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে দরজা খুলে পেছনে গেলে ২ জন তাকে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে জারিয়াকান্দি এলাকায় রাস্তায় ফেলে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন ড্রাইভারকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ দিন পর তিনি মারা যান। চাঞ্চল্যকর এ মামলার শীঘ্রই চার্জশিট দেয়া হবে।

ঢাকা রেঞ্জ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, ক্লুলেস হত্যাসহ আলোচিত হত্যা মামলা তদন্তে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ অফিস থেকে তদারকি করা হয়। প্রতিটি মামলা তদন্তে জেলা পুলিশকে রেঞ্জ অফিস থেকে গাইডলাইনসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়। এতে থানা তদন্তকারী কর্মকর্তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা পেয়ে সরজমিন তদন্ত করে মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করে।