যমুনার ভাঙন হুমকিতে আরিচাঘাট

ড্রেজারে বালু উত্তোলনে তীব্র হচ্ছে ভাঙন

বর্ষার শুরুতে যমুনায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরিচা ঘাট ও আশপাশের এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বেশ কিছু এলাকা। ভাঙন এগিয়ে যাচ্ছে আরিচা ট্রাক টার্মিনাল ও শিবালয় বাজারের দিকে। ফলে হুমকির মুখে পড়বে ঐতিহ্যবাহী শিবালয় বাজার, আরিচা নদী বন্দর, নবনির্মিত আবহাওয়া অফিস, প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ প্লান্ট ও তেওতা-জাফরগঞ্জ রাস্তাসহ আশপাশের গ্রাম। দীর্ঘদিন ধরে একশ্রেণীর মাটি ব্যবসায়ীরা, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে শুস্ক মৌসুমে নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় নদী ভাঙন তীব্র হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

গত মঙ্গলবার সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আরিচা ট্রাক টার্মিনালের পশ্চিম পাশে নদীতে ঘূর্ণিপাকের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে অভিজ্ঞরা মনে করেন। এছাড়া আরিচা সরকারি ডাকবাংলো এবং আরিচা বন্দর ও বাজারের পশ্চিমে নদীর পাড় দিয়ে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বাজারের দোকানপাটগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আরিচা ঘাট নদী গর্ভেবিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এ ব্যাপারে শিবালয় বাজারের ব্যবসায়ী মনোরঞ্জন সুত্রধর বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত আরিচাতে ব্যবসা করছি। আমার বয়সে এ রকম ভয়াবহ ভাঙন দেখিনি। একই কথা বলেছেন শিবালয় বাজারের অন্যান্য ব্যাবসায়ীরা। এলাকার ষাটোর্ধ্ব মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এবার যেভাবে নদী ভাঙছে এ রকম ভাঙন আজ থেকে ৫০ বছর আগে ছোট বেলায় আমরা দেখেছি। একবার ভাঙন শুরু হলে বাড়ি-ঘর, জমি-জমা মুহূর্তের মধ্যে নদী গর্ভে তলিয়ে যায়। সরানোরও সময় পাওয়া যেত না। এবার সে রকম অবস্থা দেখছি। কারণ বিগত বছরগুলোতে যেখানে চর পড়ে নদী ভরাট হয়ে যেত। এবার সেখানে অনেক গভীরতা সৃষ্টি হয়ে পানি ঘূর্ণিতে পড়েছে। প্রবল স্র্রোত এবং ঘূর্ণিপাকের কারণে ব্যাপক আকারে নদী ভাঙনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান। শিবালয় গ্রামের হারুণ শেখ বলেন, নদী পাড় এলাকায় ড্রেজিং করায় ক্যানেলের সৃষ্টি হয়ে স্র্রোত পড়েছে। নদীর মাঝে চর থাকায় আরেকটি স্র্রোত ওই চরে বাড়ি খেয়ে এপার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুই স্র্রোত একত্রিত হয়ে আরিচা ঘাটের পাড় ঘেষে প্রবাহিত হওয়ায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।

শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু জানান, মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে নদী ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।

ভাঙন কবলিত এলাকায় বাঁশ পুতে বেড়া দিয়ে ও বালুর বস্তা ফেলে প্রাথমিকভাবে নদী ভাঙন রোধে শিবালয় উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আরিচার জন্য ২ লাখ, কুষ্টিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভাঙন ঠেকাতে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর আগে নিহালপুর এলাকার বেড়ি বাধের ভাঙন রোধে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৬ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। ভাঙন রোধে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।

image

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) : ভাঙন কবলিত আরিচা ঘাটের ট্রাক টার্মিনাল -সংবাদ

আরও খবর
মাকে বাচাতে গয়না বন্ধক ৩০ হাজার নিয়েও জেল হাজতে পাঠাল পুলিশ
চাঁদপুরে গৃহবধূ হত্যা মামলায় স্বামীসহ মৃত্যুদন্ড দুই
তালতলীতে রিফাত হত্যার বিচারে মানববন্ধন
সুনামগঞ্জে শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন
ফরিদপুরে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ধর্ষণ : আটক ১
নরসুন্দর শেফালী পেল জমি-ঘর
লক্ষ্মীপুরে ফেরি বিকল ১৭ দিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকে!
ইউএসটিসিতে শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন ঢেলে লাঞ্ছনা : আটক ১
সিদ্ধিরগঞ্জের চার চাঁদাবাজ গ্রেফতার
চরফ্যাশনের নিখোঁজ ৬ জেলে উদ্ধার
বগুড়া ১১৪ মামলার আসামি যুবদল নেতা মাসুদ কারাগারে
লবণ সহনশীল বিনা চিনাবাদাম-৬ আবাদে বাম্পার ফলন : খুশি চাষি
বাগেরহাটে ট্রাক চাপায় শিশু হত
মাগুরায় অটোরিকশা চালকের মরদেহ
সিরাজগঞ্জে অপহরণ মামলায় যাবজ্জীবন ১

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০১৯ , ২০ আষাঢ় ১৪২৫, ৩০ শাওয়াল ১৪৪০

যমুনার ভাঙন হুমকিতে আরিচাঘাট

ড্রেজারে বালু উত্তোলনে তীব্র হচ্ছে ভাঙন

রফিকুল ইসলাম, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)

image

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) : ভাঙন কবলিত আরিচা ঘাটের ট্রাক টার্মিনাল -সংবাদ

বর্ষার শুরুতে যমুনায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরিচা ঘাট ও আশপাশের এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বেশ কিছু এলাকা। ভাঙন এগিয়ে যাচ্ছে আরিচা ট্রাক টার্মিনাল ও শিবালয় বাজারের দিকে। ফলে হুমকির মুখে পড়বে ঐতিহ্যবাহী শিবালয় বাজার, আরিচা নদী বন্দর, নবনির্মিত আবহাওয়া অফিস, প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ প্লান্ট ও তেওতা-জাফরগঞ্জ রাস্তাসহ আশপাশের গ্রাম। দীর্ঘদিন ধরে একশ্রেণীর মাটি ব্যবসায়ীরা, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে শুস্ক মৌসুমে নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় নদী ভাঙন তীব্র হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

গত মঙ্গলবার সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আরিচা ট্রাক টার্মিনালের পশ্চিম পাশে নদীতে ঘূর্ণিপাকের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে অভিজ্ঞরা মনে করেন। এছাড়া আরিচা সরকারি ডাকবাংলো এবং আরিচা বন্দর ও বাজারের পশ্চিমে নদীর পাড় দিয়ে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বাজারের দোকানপাটগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আরিচা ঘাট নদী গর্ভেবিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এ ব্যাপারে শিবালয় বাজারের ব্যবসায়ী মনোরঞ্জন সুত্রধর বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত আরিচাতে ব্যবসা করছি। আমার বয়সে এ রকম ভয়াবহ ভাঙন দেখিনি। একই কথা বলেছেন শিবালয় বাজারের অন্যান্য ব্যাবসায়ীরা। এলাকার ষাটোর্ধ্ব মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এবার যেভাবে নদী ভাঙছে এ রকম ভাঙন আজ থেকে ৫০ বছর আগে ছোট বেলায় আমরা দেখেছি। একবার ভাঙন শুরু হলে বাড়ি-ঘর, জমি-জমা মুহূর্তের মধ্যে নদী গর্ভে তলিয়ে যায়। সরানোরও সময় পাওয়া যেত না। এবার সে রকম অবস্থা দেখছি। কারণ বিগত বছরগুলোতে যেখানে চর পড়ে নদী ভরাট হয়ে যেত। এবার সেখানে অনেক গভীরতা সৃষ্টি হয়ে পানি ঘূর্ণিতে পড়েছে। প্রবল স্র্রোত এবং ঘূর্ণিপাকের কারণে ব্যাপক আকারে নদী ভাঙনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান। শিবালয় গ্রামের হারুণ শেখ বলেন, নদী পাড় এলাকায় ড্রেজিং করায় ক্যানেলের সৃষ্টি হয়ে স্র্রোত পড়েছে। নদীর মাঝে চর থাকায় আরেকটি স্র্রোত ওই চরে বাড়ি খেয়ে এপার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুই স্র্রোত একত্রিত হয়ে আরিচা ঘাটের পাড় ঘেষে প্রবাহিত হওয়ায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।

শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু জানান, মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে নদী ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।

ভাঙন কবলিত এলাকায় বাঁশ পুতে বেড়া দিয়ে ও বালুর বস্তা ফেলে প্রাথমিকভাবে নদী ভাঙন রোধে শিবালয় উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আরিচার জন্য ২ লাখ, কুষ্টিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভাঙন ঠেকাতে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর আগে নিহালপুর এলাকার বেড়ি বাধের ভাঙন রোধে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৬ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। ভাঙন রোধে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।