সঞ্জয়পুর সর. প্রা. স্কুলে শ্রেণিকক্ষসহ নানা সংকট বারান্দায় চলছে পাঠদান

নওগাঁর রানীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শ্রেণী কক্ষ সঙ্কটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। আশানুরুপ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকলেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শ্রেণিকক্ষের সঙ্কট, বসার ব্রেঞ্চের অভাবসহ বিভিন্ন সমস্যায় বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

তারপরও পাঠদান চালু রাখতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক ম-লীরা বাধ্য হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে সাড়িবদ্ধভাবে বসিয়ে পাঠদান কার্যক্রম কোন রকমে চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বারবার জানানোর পরও ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কিংবা সংস্কারের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি না হওয়ায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এলাকার সচেতন অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের বাধ্য হয়ে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করাচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার একডালা ইউনিয়নের সঞ্জয়পুর গ্রামে ১৯৬৯ সালে স্থানীয় বেশ কয়েকজন শিক্ষা-অনুরাগী ব্যক্তিগত উদ্যোগে এক একর জমি ক্রয় করে গ্রামের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। ১৯৭৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাদেশে ৩৬ হাজার ৬শ’ ৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করণে ঘোষণা দিলে তার মধ্যে রানীনগরের সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তালিকায় স্থান পায়। দীর্ঘ সময় মাটি আর বেড়ার ঘরে পাঠদান চললেও ২০০০ সালে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে ঘরের ছাদের সিমেন্ট বালু খুলে পড়ছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তিন কক্ষ বিশিষ্ট পুরাতন ভবনে প্রতিদিন প্রায় ১১৩ জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করছে। প্রতি কক্ষে চারটি করে ফ্যান থাকার কথা থাকলেও রয়েছে দু’টি করে। গরমের সময় গাদাগাদি করে শিশুদের বসিয়ে পাঠদান দেওয়া হয়। অভিভাবক আবু তালেবসহ কয়েকজন জানান, আমাদের এই বিদ্যালয়টি অনেক সমস্যায় জর্জরিত। পুরাতন ভবনের কারণে আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর পর আতঙ্কে থাকি! শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে এসে বারান্দায় মাদুররে বসে শিক্ষা গ্রহণ করে। উপযুক্ত পরিমাণ জায়গা থাকলেও সরকারি কোন বরাদ্দ না পাওয়ায় শ্রেণীক্ষ সঙ্কটসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত সঙ্কটের কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহাদত হোসেন জানান, আমরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করায়। এলাকার অনেক মানুষ বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা দেখে তাদের সন্তানকে ভর্তি করাতে চায় না। শ্রেণিকক্ষ, ব্রেঞ্চ সঙ্কটসহ জরুরি নানান সমস্যায় জর্জরিত এই প্রতিষ্ঠান।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল বাসার শামসুজ্জামান জানান, আমি নতুন অফিসার হিসেবে রানীনগরে যোগদন করেছি ওই বিদ্যালয়ে অবকাঠমোগত কি সমস্যা আছে সেটা আমার জানা নেই। তারপরও ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আমি নিজেই পরিদর্শন করে সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর জানাব।

image

রাণীনগর (নওগাঁ) : সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কক্ষ সংকটে বারান্দায় পাঠ নিচ্ছে শিশুরা-সংবাদ

আরও খবর
বাগেরহাটে মালামালসহ ৯ চোর আটক
কসবায় যুবলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিতে হামলা ইউএনওসহ আহত ৫
১১ দফা দাবিতে পাটকল শ্রমিকদের অনশন
দৌলতপুরে জমি বিবাদে সংঘর্ষ আহত ১০
সুন্দরবনে বাহিনী প্রধান সিদ্দিকসহ গ্রেফতার ৩
ফরদি টটিি ও তার সন্তানরে শহীদ স্বীকৃতি মলেনেি ৪৮ বছরওে
রাজশাহীতে রাসেল হত্যার বিচারে মানববন্ধন
বরিশালে মাদক গ্রেফতার ২
ভৈরবে মাদক বিক্রেতাসহ দণ্ডিত তিন
চাঁপাইয়ের বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ
পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ
জগন্নাথপুরে হামলা আহত কৃষক

মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১৬ পৌষ ১৪২৬, ৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

সঞ্জয়পুর সর. প্রা. স্কুলে শ্রেণিকক্ষসহ নানা সংকট বারান্দায় চলছে পাঠদান

সাইদুজ্জামান সাগর, রানীনগর (নওগাঁ)

image

রাণীনগর (নওগাঁ) : সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কক্ষ সংকটে বারান্দায় পাঠ নিচ্ছে শিশুরা-সংবাদ

নওগাঁর রানীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শ্রেণী কক্ষ সঙ্কটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। আশানুরুপ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকলেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শ্রেণিকক্ষের সঙ্কট, বসার ব্রেঞ্চের অভাবসহ বিভিন্ন সমস্যায় বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

তারপরও পাঠদান চালু রাখতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক ম-লীরা বাধ্য হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে সাড়িবদ্ধভাবে বসিয়ে পাঠদান কার্যক্রম কোন রকমে চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বারবার জানানোর পরও ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কিংবা সংস্কারের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি না হওয়ায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এলাকার সচেতন অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের বাধ্য হয়ে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করাচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার একডালা ইউনিয়নের সঞ্জয়পুর গ্রামে ১৯৬৯ সালে স্থানীয় বেশ কয়েকজন শিক্ষা-অনুরাগী ব্যক্তিগত উদ্যোগে এক একর জমি ক্রয় করে গ্রামের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। ১৯৭৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাদেশে ৩৬ হাজার ৬শ’ ৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করণে ঘোষণা দিলে তার মধ্যে রানীনগরের সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তালিকায় স্থান পায়। দীর্ঘ সময় মাটি আর বেড়ার ঘরে পাঠদান চললেও ২০০০ সালে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে ঘরের ছাদের সিমেন্ট বালু খুলে পড়ছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তিন কক্ষ বিশিষ্ট পুরাতন ভবনে প্রতিদিন প্রায় ১১৩ জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করছে। প্রতি কক্ষে চারটি করে ফ্যান থাকার কথা থাকলেও রয়েছে দু’টি করে। গরমের সময় গাদাগাদি করে শিশুদের বসিয়ে পাঠদান দেওয়া হয়। অভিভাবক আবু তালেবসহ কয়েকজন জানান, আমাদের এই বিদ্যালয়টি অনেক সমস্যায় জর্জরিত। পুরাতন ভবনের কারণে আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর পর আতঙ্কে থাকি! শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে এসে বারান্দায় মাদুররে বসে শিক্ষা গ্রহণ করে। উপযুক্ত পরিমাণ জায়গা থাকলেও সরকারি কোন বরাদ্দ না পাওয়ায় শ্রেণীক্ষ সঙ্কটসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত সঙ্কটের কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহাদত হোসেন জানান, আমরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করায়। এলাকার অনেক মানুষ বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা দেখে তাদের সন্তানকে ভর্তি করাতে চায় না। শ্রেণিকক্ষ, ব্রেঞ্চ সঙ্কটসহ জরুরি নানান সমস্যায় জর্জরিত এই প্রতিষ্ঠান।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল বাসার শামসুজ্জামান জানান, আমি নতুন অফিসার হিসেবে রানীনগরে যোগদন করেছি ওই বিদ্যালয়ে অবকাঠমোগত কি সমস্যা আছে সেটা আমার জানা নেই। তারপরও ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আমি নিজেই পরিদর্শন করে সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর জানাব।