ফরম পূরণ না করা প্রথম ব্যক্তি হব আমি

অখিলেশ যাদব

জাতীয় জনসংখ্যা তালিকায় (এনপিআর) অন্তর্ভুক্ত হতে কোন ফরম পূরণ না করার ঘোষণা দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। গত রোববার নিজ দল সমাজবাদী পার্টির নেতাদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন রাখেন, তার এ পদক্ষেপে তারা সমর্থন দেবেন কিনা।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যেই গত সপ্তাহে দেশজুড়ে জনসংখ্যা তালিকা (এনপিআর) করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে যে ফরম পূরণ করতে হবে, সেখানে বাবা-মায়ের জন্ম তারিখ ও জন্মস্থল উল্লেখ করার নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া পার্লামেন্টের ভেতরে-বাইরে অনেকবারই দেশব্যাপী জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রণয়নের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে দেশটির সরকার। এসব পরিকল্পনা নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। রোববার সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেন, এনপিআর হোক আর এনআরসি হোক এর সবই গরিব, সংখ্যালঘু আর মুসলমানবিরোধী। প্রশ্ন হলো আমরা এনআরসি চাই নাকি কর্মসংস্থান? প্রয়োজনে ফরম পূরণ না করা প্রথম ব্যক্তি হব আমি। তবে প্রশ্ন হলো আপনারা আমাকে সমর্থন করবেন কিনা? সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ভারতজুড়ে নিহত হয়েছে অন্তত ২৫ জন। এর মধ্যে ১৯ জনই নিহত হয়েছে উত্তর প্রদেশে। রাজ্যটির পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানোসহ অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সম্প্রতি বলেছেন, পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে ভয় পেয়ে নীরব হয়ে গেছে সব বিক্ষোভকারী। রোববার সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেন, ‘মানুষের ওপর লাঠিচার্জ করা পুলিশ সদস্যদের বলতে চাই, আপনাদের বাবা-মায়েরও সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।’

প্রসঙ্গত, ভারতে ২০১০ সালে শেষবারের মত এনপিআর করা হয়। ২০১৫ সালে একটি পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তা হালনাগাদ করা হয়। মুসলিম বিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদের মুখেই ২০২০ সালে দেশজুড়ে জনসংখ্যা নিবন্ধীকরণ বা জনসংখ্যা তালিকা তৈরির ঘোষণা দেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন তালিকা প্রণয়নের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয় ভারতীয় মন্ত্রিসভা। এই জনসংখ্যা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে নাগরিকদের মা ও বাবা উভয়ের জন্মস্থান ও জন্ম তারিখ জানাতে হবে। ২০১০ সালে সর্বশেষ এনপিআর তৈরির সময় নাগরিকদের ওই তথ্য দেয়ার প্রয়োজন পড়েনি। গত ১২ ডিসেম্বর নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে ভারত। নতুন আইনে ১৯৮৭ সালের পরে জন্ম নেয়া ভারতে বসবাসরত ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব পেতে হলে মা-বাবার অন্তত একজনকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। ফলে এবার এনপিআরে মা-বাবার জন্মের স্থান ও তারিখ জানতে চাওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে।

মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১৬ পৌষ ১৪২৬, ৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ফরম পূরণ না করা প্রথম ব্যক্তি হব আমি

অখিলেশ যাদব

সংবাদ ডেস্ক |

image

জাতীয় জনসংখ্যা তালিকায় (এনপিআর) অন্তর্ভুক্ত হতে কোন ফরম পূরণ না করার ঘোষণা দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। গত রোববার নিজ দল সমাজবাদী পার্টির নেতাদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন রাখেন, তার এ পদক্ষেপে তারা সমর্থন দেবেন কিনা।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যেই গত সপ্তাহে দেশজুড়ে জনসংখ্যা তালিকা (এনপিআর) করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে যে ফরম পূরণ করতে হবে, সেখানে বাবা-মায়ের জন্ম তারিখ ও জন্মস্থল উল্লেখ করার নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া পার্লামেন্টের ভেতরে-বাইরে অনেকবারই দেশব্যাপী জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রণয়নের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে দেশটির সরকার। এসব পরিকল্পনা নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। রোববার সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেন, এনপিআর হোক আর এনআরসি হোক এর সবই গরিব, সংখ্যালঘু আর মুসলমানবিরোধী। প্রশ্ন হলো আমরা এনআরসি চাই নাকি কর্মসংস্থান? প্রয়োজনে ফরম পূরণ না করা প্রথম ব্যক্তি হব আমি। তবে প্রশ্ন হলো আপনারা আমাকে সমর্থন করবেন কিনা? সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ভারতজুড়ে নিহত হয়েছে অন্তত ২৫ জন। এর মধ্যে ১৯ জনই নিহত হয়েছে উত্তর প্রদেশে। রাজ্যটির পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানোসহ অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সম্প্রতি বলেছেন, পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে ভয় পেয়ে নীরব হয়ে গেছে সব বিক্ষোভকারী। রোববার সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেন, ‘মানুষের ওপর লাঠিচার্জ করা পুলিশ সদস্যদের বলতে চাই, আপনাদের বাবা-মায়েরও সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।’

প্রসঙ্গত, ভারতে ২০১০ সালে শেষবারের মত এনপিআর করা হয়। ২০১৫ সালে একটি পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তা হালনাগাদ করা হয়। মুসলিম বিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদের মুখেই ২০২০ সালে দেশজুড়ে জনসংখ্যা নিবন্ধীকরণ বা জনসংখ্যা তালিকা তৈরির ঘোষণা দেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন তালিকা প্রণয়নের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয় ভারতীয় মন্ত্রিসভা। এই জনসংখ্যা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে নাগরিকদের মা ও বাবা উভয়ের জন্মস্থান ও জন্ম তারিখ জানাতে হবে। ২০১০ সালে সর্বশেষ এনপিআর তৈরির সময় নাগরিকদের ওই তথ্য দেয়ার প্রয়োজন পড়েনি। গত ১২ ডিসেম্বর নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে ভারত। নতুন আইনে ১৯৮৭ সালের পরে জন্ম নেয়া ভারতে বসবাসরত ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব পেতে হলে মা-বাবার অন্তত একজনকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। ফলে এবার এনপিআরে মা-বাবার জন্মের স্থান ও তারিখ জানতে চাওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে।