বিদেশি মৎস্য নৌযান কর্তৃক মৎস্য আহরণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে জেল-জরিমানার বিধান রেখে ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০১৯-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
নতুন আইনে এ সংক্রান্ত অপরাধের জন্য অনধিক তিন বছরের কারাদ- বা অনধিক পাঁচ কোটি টাকা অর্থদ- অথবা বা উভয় দ- প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল তার তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে (পিএমও) অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন প্রদান করা হয়।
‘মন্ত্রিসভা বাংলাদেশের সীমানায় দেশি-বিদেশি মৎস্য নৌযানের মৎস্য আহরণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে অনধিক তিন বছরের কারাদ- বা অনধিক পাঁচ কোটি টাকা অর্থদ- অথবা বা উভয়দ-ের বিধান রেখে ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০১৯’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে,’ বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দোকার আনোয়ারুল ইসলাম একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন আইনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাধা প্রদান, মৎস্য নৌযান, ইত্যাদির ক্ষতিসাধন, প্রমাণাদি ধ্বংস ইত্যাদি অপরাধে দ- যৌক্তিক পরিমাণে বৃদ্ধি করে অনধিক দু’বছরের কারাদ- বা অপরাধ ভেদে ১০ লাখ টাকা এবং অনধিক ২৫ লাখ টাকা আর্থিক দ-ের বিধান করা হয়েছে।’ অধ্যাদেশে শাস্তির মেয়াদ অনধিক ৩ বছর এবং জরিমানা ৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ছিল। সচিব বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সময়ে ওই এলকায় মৎস্য আহরণ, সমুদ্র যাত্রার অনুমতি ছাড়া মৎস্য আহরণ, আগমনী বার্তা প্রদান না করার অপরাধের দায়ে আহরিত মাছের মূল্যের সমপরিমাণ এবং তিন গুণ পরিমাণ প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা যাবে।’ অপরাধ সংঘটনে সহায়তা ও পুনর্সংঘটনের জন্য আইনের খসড়ায় দ-ের বিধান রয়েছে উল্লেখ করে অনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘অপরাধ বিচারের ক্ষমতা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং মোবাইল কোর্টের এখতিয়ারাধীন রাখা হয়েছে।’
সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইন কার্যকর হলে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণ, এর টেকসই মজুদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের মাধ্যমে সামুদ্রিক মৎস্য খাতে ব্লু-ইকোনমির সর্বাধিক উদ্দেশ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এবং সাহসী সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক আইনি লড়াইয়ের ফলে অর্জিত বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের ১ লাখ ১৮ হাজার ১১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় মৎস্য সম্পদ আহরণের মাধ্যমে ব্লু ইকোনমির অর্জনকে লক্ষ্য করে ১৯৮৩ সালে জারিকৃত এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশে’র (দি ফিশারিজ অর্ডন্যান্স, ১৯৮৩) সংশোধন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন করে বাংলাভাষায় এই আইনের খসড়াটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য সম্পদের ব্যবস্থাপনা, আহরণ, সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের জনগণের আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান তৈরিই এই আইন প্রণয়ণের লক্ষ্য।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এদিন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৯’ এবং ‘সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৯’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন প্রদান করে মন্ত্রিসভা।
এছাড়া, ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৯’-এর খসড়ার নীতিগত ও চুড়ান্ত অনুমোদন এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতায় ‘বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড’ শীর্ষক কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব এবং ওই কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন (এমওএ) এবং আর্টিক্যালস অব অ্যাসোসিয়েশন (এওএ)-এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘এক্সট্রাডিশন’ এবং ‘মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল এসিন্টেন্স ইন ক্রিমিনাল মেটারস’ সংক্রান্ত দুটি চুক্তির খসড়া অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন এবং ‘প্রটোকল রিলেটিং টু দি মাদ্রিদ এগ্রিমেন্ট কনসার্নিং দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন অব দি মার্কস ১৯৮৯’-এ বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১৬ পৌষ ১৪২৬, ৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
বাসস
বিদেশি মৎস্য নৌযান কর্তৃক মৎস্য আহরণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে জেল-জরিমানার বিধান রেখে ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০১৯-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
নতুন আইনে এ সংক্রান্ত অপরাধের জন্য অনধিক তিন বছরের কারাদ- বা অনধিক পাঁচ কোটি টাকা অর্থদ- অথবা বা উভয় দ- প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল তার তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে (পিএমও) অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন প্রদান করা হয়।
‘মন্ত্রিসভা বাংলাদেশের সীমানায় দেশি-বিদেশি মৎস্য নৌযানের মৎস্য আহরণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে অনধিক তিন বছরের কারাদ- বা অনধিক পাঁচ কোটি টাকা অর্থদ- অথবা বা উভয়দ-ের বিধান রেখে ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০১৯’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে,’ বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দোকার আনোয়ারুল ইসলাম একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন আইনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাধা প্রদান, মৎস্য নৌযান, ইত্যাদির ক্ষতিসাধন, প্রমাণাদি ধ্বংস ইত্যাদি অপরাধে দ- যৌক্তিক পরিমাণে বৃদ্ধি করে অনধিক দু’বছরের কারাদ- বা অপরাধ ভেদে ১০ লাখ টাকা এবং অনধিক ২৫ লাখ টাকা আর্থিক দ-ের বিধান করা হয়েছে।’ অধ্যাদেশে শাস্তির মেয়াদ অনধিক ৩ বছর এবং জরিমানা ৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ছিল। সচিব বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সময়ে ওই এলকায় মৎস্য আহরণ, সমুদ্র যাত্রার অনুমতি ছাড়া মৎস্য আহরণ, আগমনী বার্তা প্রদান না করার অপরাধের দায়ে আহরিত মাছের মূল্যের সমপরিমাণ এবং তিন গুণ পরিমাণ প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা যাবে।’ অপরাধ সংঘটনে সহায়তা ও পুনর্সংঘটনের জন্য আইনের খসড়ায় দ-ের বিধান রয়েছে উল্লেখ করে অনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘অপরাধ বিচারের ক্ষমতা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং মোবাইল কোর্টের এখতিয়ারাধীন রাখা হয়েছে।’
সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইন কার্যকর হলে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণ, এর টেকসই মজুদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের মাধ্যমে সামুদ্রিক মৎস্য খাতে ব্লু-ইকোনমির সর্বাধিক উদ্দেশ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এবং সাহসী সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক আইনি লড়াইয়ের ফলে অর্জিত বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের ১ লাখ ১৮ হাজার ১১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় মৎস্য সম্পদ আহরণের মাধ্যমে ব্লু ইকোনমির অর্জনকে লক্ষ্য করে ১৯৮৩ সালে জারিকৃত এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশে’র (দি ফিশারিজ অর্ডন্যান্স, ১৯৮৩) সংশোধন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন করে বাংলাভাষায় এই আইনের খসড়াটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য সম্পদের ব্যবস্থাপনা, আহরণ, সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের জনগণের আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান তৈরিই এই আইন প্রণয়ণের লক্ষ্য।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এদিন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৯’ এবং ‘সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৯’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন প্রদান করে মন্ত্রিসভা।
এছাড়া, ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৯’-এর খসড়ার নীতিগত ও চুড়ান্ত অনুমোদন এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতায় ‘বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড’ শীর্ষক কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব এবং ওই কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন (এমওএ) এবং আর্টিক্যালস অব অ্যাসোসিয়েশন (এওএ)-এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘এক্সট্রাডিশন’ এবং ‘মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল এসিন্টেন্স ইন ক্রিমিনাল মেটারস’ সংক্রান্ত দুটি চুক্তির খসড়া অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন এবং ‘প্রটোকল রিলেটিং টু দি মাদ্রিদ এগ্রিমেন্ট কনসার্নিং দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন অব দি মার্কস ১৯৮৯’-এ বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।