বিদায় বছরে গণধর্ষণের শিকার ১৪১৩ নারী আসক

সদ্য বিদায় নেয়া বছরে ধর্ষণ ও দলবেধে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক হাজার ৪১৩ জন নারী। ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৩২ এবং ২০১৭ সালে ছিল ৮১৮। অর্থাৎ ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে দ্বিগুণ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক পরিসংখ্যান তুলে এমন তথ্যই জানিয়েছেন আইন ও সালিশ কেন্দ্র। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন তুলে ধরেন আসকের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক নিনা গোস্বামী। সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব আহমিনা রহমান, নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা, জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে সারা দেশে ধর্ষণ ও দলবেধে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক হাজার ৪১৩ জন নারী। এর মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন। ২০১৮ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ৭৩২ নারী এবং ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল ৮১৮। এ বছর নারীদের উত্ত্যক্ত করা ও যৌন হয়রানির ঘটনাও বেড়েছে।

আসক বলছে, ২০১৯ সালে ২৫৮ জন নারী যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ৪৪ পুরুষ। উত্ত্যক্তের কারণে ১৮ জন নারী আত্মহত্যা করেন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে চার নারীসহ ১৭ জন খুন হয়েছেন। ২০১৯ সালে শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণ ও নিখোঁজের পর মোট ৪৮৭টি শিশু নিহত হয়েছে, গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৪১৯টি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালে ৩৮৮ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে এ বছর ১৮৭ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারের পর হেফাজতে ১৪ জন মারা যান। গ্রেফতারের আগে নির্যাতনে মারা যান ছয়জন এবং গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও ১২ জন। এ বছর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ৩৭ জন এবং তাদের শারীরিক নির্যাতনের কারণে ছয়জনসহ মোট ৪৩ জন মারা গেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ১৩ জন অপহরণ, গুম ও নিখোঁজের শিকার হয়েছেন, তাদের মধ্যে পরবর্তীতে পাঁচজনের সন্ধান পাওয়া গেলেও বাকি আটজন এখনও নিখোঁজ।

আসক জানায়, এ বছর ১৪২ জন সাংবাদিক শারীরিক নির্যাতন, হামলা, হুমকি ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ৭২টি প্রতীমা ভাঙচুর, হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩৯টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে আহত হয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫১ জন ব্যক্তি। আর বছরের মাঝামাঝিতে ‘পদ্মা সেতুতে মাথা লাগবে’ গুজব ছড়ানো হয়। হঠাৎ করে ছেলে ধরা আতঙ্কের মধ্যে নিরীহ মানুষদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ বছর গণপিটুনিতে মারা গেছেন ৬৫ জন।

বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২০ , ১৮ পৌষ ১৪২৬, ৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

বিদায় বছরে গণধর্ষণের শিকার ১৪১৩ নারী আসক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

সদ্য বিদায় নেয়া বছরে ধর্ষণ ও দলবেধে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক হাজার ৪১৩ জন নারী। ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৩২ এবং ২০১৭ সালে ছিল ৮১৮। অর্থাৎ ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে দ্বিগুণ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক পরিসংখ্যান তুলে এমন তথ্যই জানিয়েছেন আইন ও সালিশ কেন্দ্র। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন তুলে ধরেন আসকের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক নিনা গোস্বামী। সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব আহমিনা রহমান, নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা, জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে সারা দেশে ধর্ষণ ও দলবেধে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক হাজার ৪১৩ জন নারী। এর মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন। ২০১৮ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ৭৩২ নারী এবং ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল ৮১৮। এ বছর নারীদের উত্ত্যক্ত করা ও যৌন হয়রানির ঘটনাও বেড়েছে।

আসক বলছে, ২০১৯ সালে ২৫৮ জন নারী যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ৪৪ পুরুষ। উত্ত্যক্তের কারণে ১৮ জন নারী আত্মহত্যা করেন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে চার নারীসহ ১৭ জন খুন হয়েছেন। ২০১৯ সালে শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণ ও নিখোঁজের পর মোট ৪৮৭টি শিশু নিহত হয়েছে, গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৪১৯টি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালে ৩৮৮ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে এ বছর ১৮৭ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারের পর হেফাজতে ১৪ জন মারা যান। গ্রেফতারের আগে নির্যাতনে মারা যান ছয়জন এবং গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও ১২ জন। এ বছর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ৩৭ জন এবং তাদের শারীরিক নির্যাতনের কারণে ছয়জনসহ মোট ৪৩ জন মারা গেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ১৩ জন অপহরণ, গুম ও নিখোঁজের শিকার হয়েছেন, তাদের মধ্যে পরবর্তীতে পাঁচজনের সন্ধান পাওয়া গেলেও বাকি আটজন এখনও নিখোঁজ।

আসক জানায়, এ বছর ১৪২ জন সাংবাদিক শারীরিক নির্যাতন, হামলা, হুমকি ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ৭২টি প্রতীমা ভাঙচুর, হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩৯টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে আহত হয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫১ জন ব্যক্তি। আর বছরের মাঝামাঝিতে ‘পদ্মা সেতুতে মাথা লাগবে’ গুজব ছড়ানো হয়। হঠাৎ করে ছেলে ধরা আতঙ্কের মধ্যে নিরীহ মানুষদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ বছর গণপিটুনিতে মারা গেছেন ৬৫ জন।