বছরের প্রথম দিন হংকংয়ের রাস্তায় লাখো বিক্ষোভকারী

নতুন বছরের প্রথম দিনে রাস্তায় নেমে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে হংকংয়ের লাখো বাসিন্দা। গতকাল বুধবার ধূসর আকাশের নিচে ভিক্টোরিয়া পার্কের সবুজ লনে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগই কালো পোশাক ও মুখোশ পরে ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এক প্রতিবেদনে সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, নতুন বছরের প্রথমদিন হংকংয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের আয়োজন করেছে গণতন্ত্রপন্থি গোষ্ঠী সিভিল হিউম্যান রাইটস ফ্রন্ট। গত বছরও এদের বেশ কয়েকটি বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যায়। বুধবারের বিক্ষোভে গত বছর হংকংয়ের স্থানীয় নির্বাচনে জয়ী গণতন্ত্রীপন্থি রাজনীতিকরাও যোগ দেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বর্ষবরণের ক্ষণ গণনার সময়ও বিক্ষোভকারীরা ‘লিবারেট হংকং, রেভ্যুলেশন অব আওয়ার টাইম’ স্লোগান দেয়। আন্দোলনকারীরা এরপর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক নাথান রোডের সবগুলো লেইন আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। এ সময় অনেকের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘২০২০ সালেও লড়াই জারি রাখুন’। এদিন বিক্ষুব্ধ তরুণ-বৃদ্ধদের অনেকের হাতে লেখা প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে ‘স্বাধীনতা বিনামূল্যে মেলে না’। এ বিক্ষোভ মিছিলে মা, ভাইয়ের মেয়ে ও নিজের দুই বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে হাঁটা তুং বলেছেন ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার উচ্চারণ করা এখন কঠিন, কেননা হংকংয়ের মানুষ মোটেই খুশি নয়’। পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র, কয়েক মাসের বিক্ষোভে গ্রেফতার হওয়া সাড়ে ৬ হাজার মানুষকে ক্ষমা এবং পুলিশি পদক্ষেপের স্বতন্ত্র তদন্তসহ বিক্ষোভকারীদের দেয়া ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত হংকংয়ের বাসিন্দারা সন্তুষ্ট হবে না বলেও মনে করেন তিনি। তুং আরও বলেছেন, ‘৫ দফা পূরণ না হলে, পুলিশকে যদি তাদের বর্বরতার জন্য জবাবদিহি না করা যায়, তাহলে আমরা সত্যিকারের হ্যাপি নিউ ইয়ার পাব না।’ সিভিল হিউম্যান রাইটস ফ্রন্টের অন্যতম নেতা জিমি শাম বলেছেন, ‘নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই সরকার দমনপীড়ন শুরু করেছে। যারাই নির্যাতিত হোক, আমরা তাদের পাশে থাকব।’

মঙ্গলবার মধ্যরাতের পূর্বাঞ্চলীয় শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র ভিক্টোরিয়া হারবারে জড়ো হন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। এসময় তারা নিজেদের মুঠোফোনের বাতি জ্বালিয়ে আলোর সমুদ্র তৈরি করেন। ২০২০ সালে পদার্পণের কয়েক মিনিট পরেই চীনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।

১ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের মিছিল ও সমাবেশের পরিকল্পনায় রাস্তায় নামলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। রাতে বেশকিছু এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াও হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোথাও কোথাও পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ছুড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বর্ষবরণের ভাষণেও হংকংয়ের প্রসঙ্গ এসেছে।

বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২০ , ১৯ পৌষ ১৪২৬, ৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

বছরের প্রথম দিন হংকংয়ের রাস্তায় লাখো বিক্ষোভকারী

সংবাদ ডেস্ক |

image

সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করেন হংকংবাসিরা -রয়টার্স

নতুন বছরের প্রথম দিনে রাস্তায় নেমে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে হংকংয়ের লাখো বাসিন্দা। গতকাল বুধবার ধূসর আকাশের নিচে ভিক্টোরিয়া পার্কের সবুজ লনে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগই কালো পোশাক ও মুখোশ পরে ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এক প্রতিবেদনে সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, নতুন বছরের প্রথমদিন হংকংয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের আয়োজন করেছে গণতন্ত্রপন্থি গোষ্ঠী সিভিল হিউম্যান রাইটস ফ্রন্ট। গত বছরও এদের বেশ কয়েকটি বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যায়। বুধবারের বিক্ষোভে গত বছর হংকংয়ের স্থানীয় নির্বাচনে জয়ী গণতন্ত্রীপন্থি রাজনীতিকরাও যোগ দেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বর্ষবরণের ক্ষণ গণনার সময়ও বিক্ষোভকারীরা ‘লিবারেট হংকং, রেভ্যুলেশন অব আওয়ার টাইম’ স্লোগান দেয়। আন্দোলনকারীরা এরপর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক নাথান রোডের সবগুলো লেইন আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। এ সময় অনেকের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘২০২০ সালেও লড়াই জারি রাখুন’। এদিন বিক্ষুব্ধ তরুণ-বৃদ্ধদের অনেকের হাতে লেখা প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে ‘স্বাধীনতা বিনামূল্যে মেলে না’। এ বিক্ষোভ মিছিলে মা, ভাইয়ের মেয়ে ও নিজের দুই বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে হাঁটা তুং বলেছেন ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার উচ্চারণ করা এখন কঠিন, কেননা হংকংয়ের মানুষ মোটেই খুশি নয়’। পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র, কয়েক মাসের বিক্ষোভে গ্রেফতার হওয়া সাড়ে ৬ হাজার মানুষকে ক্ষমা এবং পুলিশি পদক্ষেপের স্বতন্ত্র তদন্তসহ বিক্ষোভকারীদের দেয়া ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত হংকংয়ের বাসিন্দারা সন্তুষ্ট হবে না বলেও মনে করেন তিনি। তুং আরও বলেছেন, ‘৫ দফা পূরণ না হলে, পুলিশকে যদি তাদের বর্বরতার জন্য জবাবদিহি না করা যায়, তাহলে আমরা সত্যিকারের হ্যাপি নিউ ইয়ার পাব না।’ সিভিল হিউম্যান রাইটস ফ্রন্টের অন্যতম নেতা জিমি শাম বলেছেন, ‘নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই সরকার দমনপীড়ন শুরু করেছে। যারাই নির্যাতিত হোক, আমরা তাদের পাশে থাকব।’

মঙ্গলবার মধ্যরাতের পূর্বাঞ্চলীয় শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র ভিক্টোরিয়া হারবারে জড়ো হন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। এসময় তারা নিজেদের মুঠোফোনের বাতি জ্বালিয়ে আলোর সমুদ্র তৈরি করেন। ২০২০ সালে পদার্পণের কয়েক মিনিট পরেই চীনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।

১ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের মিছিল ও সমাবেশের পরিকল্পনায় রাস্তায় নামলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। রাতে বেশকিছু এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াও হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোথাও কোথাও পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ছুড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বর্ষবরণের ভাষণেও হংকংয়ের প্রসঙ্গ এসেছে।