জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি আংশিকভাবে কলুষিত হয়ে গেছে। ছাত্ররাজনীতি আজকে ভয়াবহ পর্যায়ে চলে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে এসব মুক্ত হতে হবে। অর্থনীতিতে সাফল্য আসা সত্ত্বেও বৈষম্য দূর হচ্ছে না। আমাদের এই বৈষম্য দূর করতে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে।’
গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে তাকে সম্মান জানানোর সুযোগ পাওয়া গর্বের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একজন রাজনৈতিক কর্মী থেকে একটি দেশের স্থপতিতে রূপান্তরিত হয়েছেন। তার মৌলিক গুণগুলোকে মনে রাখতে হবে। তিনি দেশকে ভালোবাসতেন। দেশের সমস্যা বের করে সম্ভাব্য সমাধান খুঁজতেন। তার সাংগঠনিক শক্তি ছিল অসাধারণ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বাংলাদেশের অনাচে-কানাচে তিনি গিয়েছেন। তিনি জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। আপোস করার অনেক সুযোগ থাকলেও তিনি করেননি। পাকিস্তানি শাসকরা নানা ষড়যন্ত্র তার বিরুদ্ধে করেছিল কিন্তু তাতে বিচলিত হননি বঙ্গবন্ধু।’ সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত অধ্যায় মন্তব্য করে ড. আনিসুজ্জামান আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন কিন্তু সে সময় তিনি পাননি। তার মৃত্যু মানবসভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায়। নানা দেশের রাষ্ট্রনায়কের হত্যাকাণ্ডের কথা জানি। কিন্তু রাজনীতিবিদ কিংবা রাষ্ট্রনায়কই নন তার গোটা পরিবারকে হত্যা করা পৃথিবীর ইতিহাসে আর নাই। বক্তৃতা শেষে বঙ্গবন্ধু স্মরণে দশ দিনব্যাপী এ সংস্কৃতি উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ড. আনিসুজ্জামান।
শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম এহতেশামূল হক, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায় বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাবেক সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল।
এ সময় নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, বঙ্গবন্ধু শোষিতদের মুক্তি দিতে আবাল-বৃদ্ধদের সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেছেন। যারা পথহারা পথিকের মতো ছুটে বেড়াচ্ছেন তাদের একমাত্র ঠিকানা এই বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে না পারলে এই বাংলাদেশ থাকবে না।
প্রখ্যাত রাজাকার গোলাম রাব্বানী খানের ছেলে খালেদ হায়দার খান কাজলকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমানকে ধিক্কার জানান নাসিক মেয়র আইভী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার রাজাকারদের চিহ্নিত করছে। মুনতাসির মামুনের বইতে রাজাকারদের স্পষ্ট তালিকা রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন এই গলাচিপার গোলাম রাব্বানী খান। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর কথা বলে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে মায়া কান্না করে যারা পদপদবী নিয়ে এসে সংসদ সদস্য হয়ে এই নারায়ণগঞ্জকে অস্থির করে তুলছে, তারাই আবার প্রখ্যাত রাজাকার গোলাম রাব্বানী খালেদ হায়দার কাজলকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছে। রাইফেল ক্লাবের মতো জায়গায় সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে রেখেছে। আমি সেই সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে ধিক্কার জানাই। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মানিত করছে তারা। এই সেলিম ওসমান, শামীম ওসমান মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকার আর রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা বানাচ্ছে। এদেরকে বর্জন করতে হবে। তা না হলে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মাঠে নামতে বাধ্য হব।’
বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২০ , ১৯ পৌষ ১৪২৬, ৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ
জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি আংশিকভাবে কলুষিত হয়ে গেছে। ছাত্ররাজনীতি আজকে ভয়াবহ পর্যায়ে চলে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে এসব মুক্ত হতে হবে। অর্থনীতিতে সাফল্য আসা সত্ত্বেও বৈষম্য দূর হচ্ছে না। আমাদের এই বৈষম্য দূর করতে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে।’
গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে তাকে সম্মান জানানোর সুযোগ পাওয়া গর্বের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একজন রাজনৈতিক কর্মী থেকে একটি দেশের স্থপতিতে রূপান্তরিত হয়েছেন। তার মৌলিক গুণগুলোকে মনে রাখতে হবে। তিনি দেশকে ভালোবাসতেন। দেশের সমস্যা বের করে সম্ভাব্য সমাধান খুঁজতেন। তার সাংগঠনিক শক্তি ছিল অসাধারণ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বাংলাদেশের অনাচে-কানাচে তিনি গিয়েছেন। তিনি জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। আপোস করার অনেক সুযোগ থাকলেও তিনি করেননি। পাকিস্তানি শাসকরা নানা ষড়যন্ত্র তার বিরুদ্ধে করেছিল কিন্তু তাতে বিচলিত হননি বঙ্গবন্ধু।’ সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত অধ্যায় মন্তব্য করে ড. আনিসুজ্জামান আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন কিন্তু সে সময় তিনি পাননি। তার মৃত্যু মানবসভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায়। নানা দেশের রাষ্ট্রনায়কের হত্যাকাণ্ডের কথা জানি। কিন্তু রাজনীতিবিদ কিংবা রাষ্ট্রনায়কই নন তার গোটা পরিবারকে হত্যা করা পৃথিবীর ইতিহাসে আর নাই। বক্তৃতা শেষে বঙ্গবন্ধু স্মরণে দশ দিনব্যাপী এ সংস্কৃতি উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ড. আনিসুজ্জামান।
শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম এহতেশামূল হক, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায় বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাবেক সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল।
এ সময় নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, বঙ্গবন্ধু শোষিতদের মুক্তি দিতে আবাল-বৃদ্ধদের সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেছেন। যারা পথহারা পথিকের মতো ছুটে বেড়াচ্ছেন তাদের একমাত্র ঠিকানা এই বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে না পারলে এই বাংলাদেশ থাকবে না।
প্রখ্যাত রাজাকার গোলাম রাব্বানী খানের ছেলে খালেদ হায়দার খান কাজলকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমানকে ধিক্কার জানান নাসিক মেয়র আইভী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার রাজাকারদের চিহ্নিত করছে। মুনতাসির মামুনের বইতে রাজাকারদের স্পষ্ট তালিকা রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন এই গলাচিপার গোলাম রাব্বানী খান। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর কথা বলে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে মায়া কান্না করে যারা পদপদবী নিয়ে এসে সংসদ সদস্য হয়ে এই নারায়ণগঞ্জকে অস্থির করে তুলছে, তারাই আবার প্রখ্যাত রাজাকার গোলাম রাব্বানী খালেদ হায়দার কাজলকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছে। রাইফেল ক্লাবের মতো জায়গায় সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে রেখেছে। আমি সেই সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে ধিক্কার জানাই। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মানিত করছে তারা। এই সেলিম ওসমান, শামীম ওসমান মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকার আর রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা বানাচ্ছে। এদেরকে বর্জন করতে হবে। তা না হলে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মাঠে নামতে বাধ্য হব।’