দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতির রিপোর্ট করতে গিয়ে যদি আপনারা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদকের) দুর্নীতি খুঁজে পেলেও তা প্রবাস করতে হবে। গতকাল সকালে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন।
দুদক বিটের রিপোর্টারদের সংগঠন রিপোর্টার্স এগেনেইস্ট করাপশন (র্যাকের) উদ্দ্যোগে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। দুদক এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার সার্বিক সহযোগিতা করে। প্রশিক্ষণে বাসসের এমডি ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যুগান্তর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি সাইফুল ইসলাম, দুদকের পরিচালক গোয়েন্দা মীর জয়নুল আবেদিন শিবলী।
প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্ধোধনীতে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুদকের দুর্নীতি পেলেও আপনারা জানাবেন। আমাদেরও ভুল আছে। সিদ্ধান্তের ভুল হয়। অনেক সময় খারাপ কাজ করে ফেলি। আমরা চাই না, আমাদের কারণে নিরীহ মানুষ ভোগান্তির শিকার হোক।কারো প্রেসক্রিপশনে দুদক চলে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুদক কারও প্রেসক্রিপশন ও নির্দেশনায় চলে না। আমরা যতটুকু বুঝি সেটুকু নিয়ে কাজ করি। ক্যাসিনোকাণ্ডের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে চলমান অনুসন্ধান থেমে থাকবে না।’ ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘মাটি খুঁড়ে শেকড় বের করতে হবে। মাটির নিচে অনেক শেকড় থাকে সেখান থেকে মূল শেকড় বের করতে দরকার সঠিক অনুসন্ধান। আর এই সঠিক অনুসন্ধান করবে সাংবাদিকেরা। আলোচিত ক্যাসিনোকাণ্ডের প্রাথমিক সব তথ্য আমরা নিয়েছি গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ থেকে। আমাদের সব কার্যক্রমে ঘনিষ্ঠ সহযোগী সংবাদকর্মীরা।’ তিনি বলেন, ‘দুদক সব পর্যায়ের দুর্নীতিবাজদের ধরতে তৎপর রয়েছে। তবে চুনোপুঁটি দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতারে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সাংবাদিকদের পরেই আমাদের সব থেকে বড় তথ্যের উৎস হলো হট লাইন নাম্বার ১০৬। আমাদের এই হট লাইন নাম্বারটি যেন বেশি প্রচার পায় সেদিকে আপনারা খেয়াল রাখবেন।
চেয়ারম্যান বলেন আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পিছনে প্রধান অন্তরায় দুর্নীতি। এই দুর্নীতির মাত্রা যতটা কমিয়ে আনা যায়, সেটাই হবে মুজিববর্ষে আমাদের জন্য সবচেয়ে উত্তম কাজ।
তিনি বলেন, মানুষ সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ মন বিশ্বাস করে। এমন কি শিশুরা সংবাদপত্র থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছে। সংবাদপত্র, টেলিভিশন মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। আমার মনে হয় সংবাদপত্রের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব দেশের প্রতি। কোন সংবাদ যেন দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না করে এই দিকটাও মাথায় রাখতে হবে। শুধু সংবাদ পত্র নয় আমাদের সবার কর্ম প্রক্রিয়া সর্বপ্রথম থাকা উচিত দেশ, তার পর আপনি, আমি, আমরা সবাই।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, কমিশন কে বড় কে ছোট এমন কিছু বিবেচনা না করে নির্মোহভাবে পথ চলছে, অনেকটা অন্ধের মতো। বিগত প্রায় চার বছরে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমরা পিছপা হইনি। আমি দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি, এ সময়ে কারও দ্বারা প্রভাবিত হইনি। যা করেছি নিজের বিবেক-বিচেনা বোধ থেকেই করেছি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলাম, কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান ও প্রশিক্ষণ ও আইসিটি মহাপরিচালক একেএম সোহেল।
বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২০ , ১৯ পৌষ ১৪২৬, ৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতির রিপোর্ট করতে গিয়ে যদি আপনারা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদকের) দুর্নীতি খুঁজে পেলেও তা প্রবাস করতে হবে। গতকাল সকালে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন।
দুদক বিটের রিপোর্টারদের সংগঠন রিপোর্টার্স এগেনেইস্ট করাপশন (র্যাকের) উদ্দ্যোগে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। দুদক এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার সার্বিক সহযোগিতা করে। প্রশিক্ষণে বাসসের এমডি ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যুগান্তর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি সাইফুল ইসলাম, দুদকের পরিচালক গোয়েন্দা মীর জয়নুল আবেদিন শিবলী।
প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্ধোধনীতে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুদকের দুর্নীতি পেলেও আপনারা জানাবেন। আমাদেরও ভুল আছে। সিদ্ধান্তের ভুল হয়। অনেক সময় খারাপ কাজ করে ফেলি। আমরা চাই না, আমাদের কারণে নিরীহ মানুষ ভোগান্তির শিকার হোক।কারো প্রেসক্রিপশনে দুদক চলে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুদক কারও প্রেসক্রিপশন ও নির্দেশনায় চলে না। আমরা যতটুকু বুঝি সেটুকু নিয়ে কাজ করি। ক্যাসিনোকাণ্ডের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে চলমান অনুসন্ধান থেমে থাকবে না।’ ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘মাটি খুঁড়ে শেকড় বের করতে হবে। মাটির নিচে অনেক শেকড় থাকে সেখান থেকে মূল শেকড় বের করতে দরকার সঠিক অনুসন্ধান। আর এই সঠিক অনুসন্ধান করবে সাংবাদিকেরা। আলোচিত ক্যাসিনোকাণ্ডের প্রাথমিক সব তথ্য আমরা নিয়েছি গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ থেকে। আমাদের সব কার্যক্রমে ঘনিষ্ঠ সহযোগী সংবাদকর্মীরা।’ তিনি বলেন, ‘দুদক সব পর্যায়ের দুর্নীতিবাজদের ধরতে তৎপর রয়েছে। তবে চুনোপুঁটি দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতারে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সাংবাদিকদের পরেই আমাদের সব থেকে বড় তথ্যের উৎস হলো হট লাইন নাম্বার ১০৬। আমাদের এই হট লাইন নাম্বারটি যেন বেশি প্রচার পায় সেদিকে আপনারা খেয়াল রাখবেন।
চেয়ারম্যান বলেন আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পিছনে প্রধান অন্তরায় দুর্নীতি। এই দুর্নীতির মাত্রা যতটা কমিয়ে আনা যায়, সেটাই হবে মুজিববর্ষে আমাদের জন্য সবচেয়ে উত্তম কাজ।
তিনি বলেন, মানুষ সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ মন বিশ্বাস করে। এমন কি শিশুরা সংবাদপত্র থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছে। সংবাদপত্র, টেলিভিশন মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। আমার মনে হয় সংবাদপত্রের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব দেশের প্রতি। কোন সংবাদ যেন দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না করে এই দিকটাও মাথায় রাখতে হবে। শুধু সংবাদ পত্র নয় আমাদের সবার কর্ম প্রক্রিয়া সর্বপ্রথম থাকা উচিত দেশ, তার পর আপনি, আমি, আমরা সবাই।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, কমিশন কে বড় কে ছোট এমন কিছু বিবেচনা না করে নির্মোহভাবে পথ চলছে, অনেকটা অন্ধের মতো। বিগত প্রায় চার বছরে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমরা পিছপা হইনি। আমি দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি, এ সময়ে কারও দ্বারা প্রভাবিত হইনি। যা করেছি নিজের বিবেক-বিচেনা বোধ থেকেই করেছি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলাম, কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান ও প্রশিক্ষণ ও আইসিটি মহাপরিচালক একেএম সোহেল।