যে নারী শারীরিক প্রতিবন্ধী। একা চলতে পারেন না। তিনি নাকি অন্যের বাড়িতে গিয়ে মারামারি করে ছিনতাই করেছেন! প্রতিবেশীর দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে যাচাই না করেই হত্যার চেষ্টার মামলা গ্রহণ করেছে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দী ইউপির আলমদী দক্ষিণপাড়া ছোট খৈতেরভুলুয়া গ্রামের দরিদ্র অসহায় জয়না মিয়ার পরিবারের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ চলছে পার্শ্ববর্তী আলী আহাম্মদ মিয়ার পরিবারের। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে গত ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার উভয় পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়ার দুইদিন পর ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার আলী আহাম্মদের শ্বশুর রেজু মিয়া সোনারগাঁ থানায় গিয়ে জয়না মিয়ার ছেলে শরিফ হোসেনকে ১নং, স্ত্রী (শারীরিক প্রতিবন্ধী) রেনু বেগমকে ২নং ও জামাল মিয়া নামের একজনসহ তিনজনসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে হত্যাচেষ্টা ও ছিনতাইয়ের অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিবাদীগণ বাদীর বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা ভাঙচুর করে, তার মেয়েকে শ্লীলতাহানি করে, ১নং আসামি দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশে কোপ দেয়, ২নং বিবাদী (প্রতিবন্ধী রেনু) বাদীর মেয়ের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং হত্যার হুমকি দেয়। কিন্তু সোনারগাঁ থানা পুলিশ কোন ধরনের প্রাথমিক তদন্ত বা অভিযুক্তদের পারিবারিক কোন খোঁজখবর না নিয়েই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন। যার মামলা নং-৬০। তাং-২৬/১২/১৯ইং। এদিকে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে তাদের বাড়িতে গেলে আশপাশের নারী-পুরুষসহ এলাকার লোকজন পুলিশকে জানায় আসামি রেনু বেগম একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তার ছেলে অপ্রাপ্তবয়ষ্ক কিশোর। স্থানীয়রা তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যেতে দেবে না। বাধ্য হয়ে পুলিশ আসামি গ্রেফতার না করে ফিরে আসে। পরে অসহায় প্রতিবন্ধী রেনু বেগম আদালতের দ্বারস্থ হন। শারীরিক প্রতিবন্ধী নারীকে তদন্ত ছাড়াই মামলার অন্তর্ভুক্ত করায় সোনারগাঁয়ে থানা পুলিশের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। প্রতিবন্ধী রেনু বেগম জানান, তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। লাঠিতে ভর করে অন্যের সহযোগিতায় সামান্য হাটাচলা করতে পারেন। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়েও থাকতে পারেন না। তাদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী আলী আহাম্মদের পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তাছাড়া আমি যেখানে ঠিকমতো হাটতে পারিনা সেখানে তাদের বাড়িতে গিয়ে মারামারি কিভাবে করি। পুলিশের তো খোঁজখবর নেয়ার দরকার ছিল। পুলিশ আমাদের কোন খবর না নিয়েই মামলার আসামি করে দিয়েছে। এ বিষয়ে মামলার বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমার মেয়ের কাছে ঘটনা শুনে অভিযোগ দিয়েছি। তছাড়া আমার মেয়েকে তারা মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তবে রেনু বেগম প্রতিবন্ধী কিনা তা আমার জানা ছিল না। এদিকে পুলিশের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন পুরুষ ও নারী জানান, হয়ত পুলিশ টাকা পেয়ে মামলা নিয়েছে। না হলে প্রতিবন্ধী একজন মহিলা কিভাবে আসামি হয়। এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, ভিকটিমের জখম গুরুতর। সে ঢামেকে ভর্তি।
শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২০ , ২০ পৌষ ১৪২৬, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
প্রতিনিধি, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)
যে নারী শারীরিক প্রতিবন্ধী। একা চলতে পারেন না। তিনি নাকি অন্যের বাড়িতে গিয়ে মারামারি করে ছিনতাই করেছেন! প্রতিবেশীর দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে যাচাই না করেই হত্যার চেষ্টার মামলা গ্রহণ করেছে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দী ইউপির আলমদী দক্ষিণপাড়া ছোট খৈতেরভুলুয়া গ্রামের দরিদ্র অসহায় জয়না মিয়ার পরিবারের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ চলছে পার্শ্ববর্তী আলী আহাম্মদ মিয়ার পরিবারের। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে গত ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার উভয় পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়ার দুইদিন পর ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার আলী আহাম্মদের শ্বশুর রেজু মিয়া সোনারগাঁ থানায় গিয়ে জয়না মিয়ার ছেলে শরিফ হোসেনকে ১নং, স্ত্রী (শারীরিক প্রতিবন্ধী) রেনু বেগমকে ২নং ও জামাল মিয়া নামের একজনসহ তিনজনসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে হত্যাচেষ্টা ও ছিনতাইয়ের অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিবাদীগণ বাদীর বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা ভাঙচুর করে, তার মেয়েকে শ্লীলতাহানি করে, ১নং আসামি দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশে কোপ দেয়, ২নং বিবাদী (প্রতিবন্ধী রেনু) বাদীর মেয়ের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং হত্যার হুমকি দেয়। কিন্তু সোনারগাঁ থানা পুলিশ কোন ধরনের প্রাথমিক তদন্ত বা অভিযুক্তদের পারিবারিক কোন খোঁজখবর না নিয়েই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন। যার মামলা নং-৬০। তাং-২৬/১২/১৯ইং। এদিকে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে তাদের বাড়িতে গেলে আশপাশের নারী-পুরুষসহ এলাকার লোকজন পুলিশকে জানায় আসামি রেনু বেগম একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তার ছেলে অপ্রাপ্তবয়ষ্ক কিশোর। স্থানীয়রা তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যেতে দেবে না। বাধ্য হয়ে পুলিশ আসামি গ্রেফতার না করে ফিরে আসে। পরে অসহায় প্রতিবন্ধী রেনু বেগম আদালতের দ্বারস্থ হন। শারীরিক প্রতিবন্ধী নারীকে তদন্ত ছাড়াই মামলার অন্তর্ভুক্ত করায় সোনারগাঁয়ে থানা পুলিশের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। প্রতিবন্ধী রেনু বেগম জানান, তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। লাঠিতে ভর করে অন্যের সহযোগিতায় সামান্য হাটাচলা করতে পারেন। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়েও থাকতে পারেন না। তাদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী আলী আহাম্মদের পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তাছাড়া আমি যেখানে ঠিকমতো হাটতে পারিনা সেখানে তাদের বাড়িতে গিয়ে মারামারি কিভাবে করি। পুলিশের তো খোঁজখবর নেয়ার দরকার ছিল। পুলিশ আমাদের কোন খবর না নিয়েই মামলার আসামি করে দিয়েছে। এ বিষয়ে মামলার বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমার মেয়ের কাছে ঘটনা শুনে অভিযোগ দিয়েছি। তছাড়া আমার মেয়েকে তারা মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তবে রেনু বেগম প্রতিবন্ধী কিনা তা আমার জানা ছিল না। এদিকে পুলিশের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন পুরুষ ও নারী জানান, হয়ত পুলিশ টাকা পেয়ে মামলা নিয়েছে। না হলে প্রতিবন্ধী একজন মহিলা কিভাবে আসামি হয়। এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, ভিকটিমের জখম গুরুতর। সে ঢামেকে ভর্তি।