খুবি প্রশাসন ভবনে তালা

বেতন-ফি প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ প্রশাসনিক ভবনের ফটকগুলোতে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সব ফটকগুলোতে তালা লাগিয়ে দেন এবং প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এর আগে সকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের লিখিত আশ্বাস দেয়া হোক। দাবি না মানা পর্যন্ত এ অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- আবসন সংকট দূরকরণ, বর্ধিত বেতন কমানো, দ্বিতীয় পরীক্ষণের ব্যবস্থা ও কোডিং পদ্ধতির ব্যবস্থাকরণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী অধ্যাদেশের সংস্কার তথা সাংস্কৃতিক অবরুদ্ধতা থেকে মুক্তি ও মুক্তচিন্তা বিকাশে অধ্যাদেশের ব্যবস্থাকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত যেসব দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে তার প্রতিকার করা।

শিক্ষার্থীরা জানান, গত কয়েক বছরে বেতন ফি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। নতুন টার্ম রেজিস্ট্রেশনের আগেই বেতন-ফি সহনীয় মাত্রায় কমানোর দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। রেজিস্ট্রেশন ফি কমিয়ে সহনীয় মাত্রায় আনা না হলে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবেন না বলেও জানান তারা।

এদিকে বুধবার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবিসহ সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখে সুপারিশ প্রদানে ডিনদের সমন্বয়ে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে জরুরিভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটির সদস্যরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা উপাচার্যের লিখিত বক্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ১৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের মাধ্যমে উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি দেন।

২১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়া হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় বুধবার সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে সমবেত এ বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর ১২টায় তারা শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

দুপুর ১টায় প্রেসব্রিফিং করে এবং দুপুর ২টায় তাদের দাবি না বাস্তবায়ন হওয়া পর্যন্ত ওই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। বিকেলে শিক্ষার্থীরা চোখে কালো কাপড় বেঁধে ‘পরিণতি’ নামে প্রতীকী পথনাটক করেন। এরপর সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে।

রাত ৮টায় তারা ঢোল-তবলা নিয়ে বিদ্রোহের গান গেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করে। কনকনে শীত উপেক্ষা করে কলা-রুটি খেয়ে তারা রাতে জেগে এ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে আবার দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মসূচি শুরু করেন তারা। যা দিনভর অব্যাহত থাকে।

খুবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, সাত হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫০ জন শিক্ষার্থী আন্দোলন করছেন। চার-পাঁচজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে উসকানি দিচ্ছে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে চাচ্ছে। এসব শিক্ষকরা দিনরাত তাদের সঙ্গে থাকছেন। আমরা যেকোন ন্যায্যদাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকব।

তিনি বলেন, এ আন্দোলনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করতে চায় একটি অপশক্তি। আমরা এ ধরনের অপশক্তিকে প্রতিহত করব। শিক্ষার্থীদের বলব তোমরা ক্লাসে আস।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য গঠিত কমিটি যেসব সুপারিশ করবে তা দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করা হবে। শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবিগুলো বিবেচনায় নিয়েই কর্তৃপক্ষ একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। তাই এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার মনোভাব পোষণ করা কাম্য বলে তিনি মনে করেন।

আরও খবর
ময়মনসিংহের আলোচিত সমালোচিত ঘটনা
সিটি নির্বাচন বিতর্কিত করাই বিএনপির উদ্দেশ্য তথ্যমন্ত্রী
১১৮ জনকে পিপিএম ও বিপিএম পদক দেয়া হচ্ছে
বিশ্ব ইজতেমা তুরাগ তীরে ১০ জানুয়ারি শুরু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশের কোথাও আর বাঁশের সাঁকো থাকবে না পরিকল্পনামন্ত্রী
না’গঞ্জ পুলিশের একযোগে ৪৮ জনের বদলি
জাবির ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
শালিস বৈঠকে বৃদ্ধা হত্যা
নিউইয়র্কে এটিভির লোগো উন্মোচন
রোহিঙ্গা গণহত্যার ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু আজ
‘বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ম্যুরাল উদ্বোধন
শওকত ওসমান গত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক
নতুন বছরে কলেজ-মাদ্রাসা ৮০ দিন বন্ধ থাকবে
এক হাজতখানায় বন্দী নারী-পুরুষ
আগুনে পুড়ে মৃত্যু সাংবাদিক পুত্রের

শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২০ , ২০ পৌষ ১৪২৬, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

৫ দফা দাবিতে

খুবি প্রশাসন ভবনে তালা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, খুলনা

বেতন-ফি প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ প্রশাসনিক ভবনের ফটকগুলোতে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সব ফটকগুলোতে তালা লাগিয়ে দেন এবং প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এর আগে সকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের লিখিত আশ্বাস দেয়া হোক। দাবি না মানা পর্যন্ত এ অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- আবসন সংকট দূরকরণ, বর্ধিত বেতন কমানো, দ্বিতীয় পরীক্ষণের ব্যবস্থা ও কোডিং পদ্ধতির ব্যবস্থাকরণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী অধ্যাদেশের সংস্কার তথা সাংস্কৃতিক অবরুদ্ধতা থেকে মুক্তি ও মুক্তচিন্তা বিকাশে অধ্যাদেশের ব্যবস্থাকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত যেসব দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে তার প্রতিকার করা।

শিক্ষার্থীরা জানান, গত কয়েক বছরে বেতন ফি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। নতুন টার্ম রেজিস্ট্রেশনের আগেই বেতন-ফি সহনীয় মাত্রায় কমানোর দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। রেজিস্ট্রেশন ফি কমিয়ে সহনীয় মাত্রায় আনা না হলে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবেন না বলেও জানান তারা।

এদিকে বুধবার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবিসহ সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখে সুপারিশ প্রদানে ডিনদের সমন্বয়ে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে জরুরিভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটির সদস্যরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা উপাচার্যের লিখিত বক্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ১৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের মাধ্যমে উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি দেন।

২১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়া হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় বুধবার সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে সমবেত এ বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর ১২টায় তারা শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

দুপুর ১টায় প্রেসব্রিফিং করে এবং দুপুর ২টায় তাদের দাবি না বাস্তবায়ন হওয়া পর্যন্ত ওই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। বিকেলে শিক্ষার্থীরা চোখে কালো কাপড় বেঁধে ‘পরিণতি’ নামে প্রতীকী পথনাটক করেন। এরপর সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে।

রাত ৮টায় তারা ঢোল-তবলা নিয়ে বিদ্রোহের গান গেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করে। কনকনে শীত উপেক্ষা করে কলা-রুটি খেয়ে তারা রাতে জেগে এ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে আবার দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মসূচি শুরু করেন তারা। যা দিনভর অব্যাহত থাকে।

খুবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, সাত হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫০ জন শিক্ষার্থী আন্দোলন করছেন। চার-পাঁচজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে উসকানি দিচ্ছে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে চাচ্ছে। এসব শিক্ষকরা দিনরাত তাদের সঙ্গে থাকছেন। আমরা যেকোন ন্যায্যদাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকব।

তিনি বলেন, এ আন্দোলনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করতে চায় একটি অপশক্তি। আমরা এ ধরনের অপশক্তিকে প্রতিহত করব। শিক্ষার্থীদের বলব তোমরা ক্লাসে আস।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য গঠিত কমিটি যেসব সুপারিশ করবে তা দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করা হবে। শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবিগুলো বিবেচনায় নিয়েই কর্তৃপক্ষ একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। তাই এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার মনোভাব পোষণ করা কাম্য বলে তিনি মনে করেন।