শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজের নামে সেতুটি নামকরণের দাবি এলাকাবাসীর
কাজ শেষ হলেও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল মানিকগঞ্জের বালিরটেক কালিগঙ্গা নদীর সেতুটি। সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলেও তা প্রায় দুই বছর বন্ধ রেখে অবৈধভাবে ফেরি সার্ভিস চালু রেখেছে সড়ক ও জনপদ অধিদফতর (সওজ)। এর মাধ্যমে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হতো বলে জানান স্থানীয়রা। এ বিষয়ে সংবাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে গত বৃহস্পতিবার তড়িগড়ি করে কোন নামকরণ ছাড়া সেতুটি খুলে দেয়া হয়। সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। তবে স্থানীয়দের দাবি সেতুটি যেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজের নামে নামকরণ করা হয়। বীরপ্রতীক মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বালিরটেক এলাকায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমা বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে শহীদ হন বলে স্থানীয়রা জানান।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জের বালিরটেক কালিগঙ্গা নদীতে ২০১৬ সালের ১ অক্টোবর সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ শেষ হয়। কিন্তু সংস্থাটির অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় সেতুটি বন্ধ রেখে দীর্ঘ প্রায় ২ বছর যাবৎ অবৈধভাবে ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এই ফেরীর মাধ্যমে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হতো বলে জানান স্থানীয়রা। সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হবার পরেও মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থেকে উপজেলা সদরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সরাসরি যোগাযোগের বন্ধ ছিল। ফলে ২টি উপজেলার হাজার হাজার লোকজনকে যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে অনেক দিন। বিষয়টি নিয়ে সওজ ও এলজিইডি’র কর্মকর্র্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে গত বৃহস্পতিবার কোন নামকরণ ছাড়া সেতুটি খুলে দেয়া হয়। ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয় সওজ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর মানিকগঞ্জ সদর বালিরটেক কালিগঙ্গা নদীর ওপরে ২৯১ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণে ২০১৬ সালে নাভানা কন্সস্ট্রাকশন লিমিটেড কাজ দেয়া হয়। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৪৬ কোটি ২৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩৮১ টাকা।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলার এলজিইডি’র সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আনিসউজ্জামান সংবাদকে বলেন, কালিগঙ্গা নদীর উপরের সেতুটির নির্মাণসহ প্রায় সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। যানবাহন চলাচলের জন্য বৃহস্পতিবার সেতুটি খুলে দেয়া হয়েছে। তবে সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। কোন মুক্তিযোদ্ধার নামে সেতুটির নামকরণের বিষয়ে কোন প্রস্তাবনা দেয়া হয় নাই। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কোন নাম প্রস্তাব দিলে বিবেচনা করা হতে পারে। এ সময় সেতুর বন্ধ রেখে ফেরি দিয়ে চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলার সওজ’র উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহানুর রশীদ সংবাদকে, সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হবার পরে আমরা টোল আদায় নিষেধ করে দিয়েছি। কিন্তু কে বা কারা চাঁদা আদায় করছে সে ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।
নাভানা কন্সস্ট্রাকশন লিমিটেডে জেনারেল ম্যানেজার মো. আলমগীর হোসেন জানান, কালিগঙ্গা নদীর ওপরের সেতুটির কাজ শেষ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে উভয় পাশের রাস্তার কিছু রংয়ের কাজ সামান্য বাকি আছে।
সরেজমিন সেতু এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বালিরটেক কালিগঙ্গা নদীর উপরে ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হবার পরে কিছু স্থানে শুধু চুনা করার কাজ চলছিল। এই সুযোগে স্থানীয়রা সেতুটির সামনে টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। মিনিবাস ট্রাকসহ সব প্রকার বড় যানবাহন ফেরিতে পারাপারের জন্য দীর্ঘ সময় লাইন করে রাখা হয়। ফেরি পারাপারে প্রতিটি শুকতারা মিনিবাস ১৩০ টাকা, ট্রাক ১৩৫ টাকা, বড় গাড়ি ১৫০ টাকা, ছোট গাড়ি ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এভাবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আদায় হয় বলে স্থানীয়রা জানায়। গত ২ মাস ধরে ফারুক মোল্লা, লাভলু রাজিব গংরা প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বকভাবে বিভিন্ন গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করে। এই চাঁদার টাকার একটি অংশ সড়ক ও জনপদ বিভাগের এক শ্রেণীর কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগাভাগি হয় বলে স্থানীয়রা জানায়। গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের সওজ ও এলজিইডি কর্মকর্তার সঙ্গে সংবাদের প্রতিনিধি যোগাযোগ করা হলে তারা চাঁদার তুলার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে গত বৃহস্পতিবার ব্রিজটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় এবং ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়। সেতুটি নির্মাণের ফলে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ১৩টি ইউনিয়নের লোকজন বালিরটেক কালিগঙ্গা নদী অতিক্রম করে খুব সহজে ২টি উপজেলাতে যাতায়াতে করতে পারবে। এমনকি স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী, মোটরসাইকেল, অটোরিকসা, অটোবাইক, ভ্যানবাইক, ভ্যান গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের ধরনের যানবাহন ও ব্যবসায়ীদের পণ্যসামগ্রী পরিবহনের সুবিধা হবে বলে স্থানীয়রা জানায়।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলার বলড়া গ্রামের সাইজুদ্দিন নামের এক বাসিন্দা সংবাদকে বলেন, সেতুটি নির্মাণের ফলে জরুরিভিত্তিতে আমরা হরিরামপুর থেকে মানিকগঞ্জ এবং সিংগাইর উপজেলা খুব সহজে যোগাযোগ করতে পারব। তবে সেতুটি নির্মাণ করায় এই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের উপকার হয়েছে। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরে দীর্ঘ সেতুর বন্ধ রেখে ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করছে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন বিভিন্ন গাড়ি চাঁদা আদায় করে স্থানীয় নেতারা। সেতুটি চালু হলে ঢাকার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আরও দ্রুত হবে।
সুলতানপুর গ্রামের মান্নান নামের এক এলাকাবাসী সংবাদকে বলেন, ঢাকার সঙ্গে মানিকগঞ্জের যোগাযোগ আরও দ্রুত করার জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন সেতু চালু করা হয় না। সেতু বন্ধ করে ফেরি দিয়ে গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। এতে যাত্রী অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই সেতুটি চালু করার আগে সেতুটি নামকরণ দরকার ছিল। কিন্তু কোন নামকরণ ছাড়া সেতুটি খুলে দেয়া হয়েছে। আমাদের এলাকাবাসীর দাবি সেতুটি যেন বীরমুক্তিযোদ্ধা মাহফুজের নামে করা হয়। তিনি একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বালিরটেক এলাকায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমা বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে শহীদ হন।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন সংবাদকে বলেন, মানিকগঞ্জের কালিগঙ্গা নদীতে সেতুটি এলজিইডি নির্মাণ করেছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। তাই ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যতদিন সেতুটি চালু করা হয়টি ততদিন ফেরি সার্ভিস চলাচল করছে।
রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২০ , ২২ পৌষ ১৪২৬, ৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজের নামে সেতুটি নামকরণের দাবি এলাকাবাসীর
মাহমুদ আকাশ ও রামপ্রসাদ সরকার দীপু
কাজ শেষ হলেও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল মানিকগঞ্জের বালিরটেক কালিগঙ্গা নদীর সেতুটি। সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলেও তা প্রায় দুই বছর বন্ধ রেখে অবৈধভাবে ফেরি সার্ভিস চালু রেখেছে সড়ক ও জনপদ অধিদফতর (সওজ)। এর মাধ্যমে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হতো বলে জানান স্থানীয়রা। এ বিষয়ে সংবাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে গত বৃহস্পতিবার তড়িগড়ি করে কোন নামকরণ ছাড়া সেতুটি খুলে দেয়া হয়। সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। তবে স্থানীয়দের দাবি সেতুটি যেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজের নামে নামকরণ করা হয়। বীরপ্রতীক মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বালিরটেক এলাকায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমা বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে শহীদ হন বলে স্থানীয়রা জানান।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জের বালিরটেক কালিগঙ্গা নদীতে ২০১৬ সালের ১ অক্টোবর সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ শেষ হয়। কিন্তু সংস্থাটির অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় সেতুটি বন্ধ রেখে দীর্ঘ প্রায় ২ বছর যাবৎ অবৈধভাবে ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এই ফেরীর মাধ্যমে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হতো বলে জানান স্থানীয়রা। সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হবার পরেও মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থেকে উপজেলা সদরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সরাসরি যোগাযোগের বন্ধ ছিল। ফলে ২টি উপজেলার হাজার হাজার লোকজনকে যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে অনেক দিন। বিষয়টি নিয়ে সওজ ও এলজিইডি’র কর্মকর্র্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে গত বৃহস্পতিবার কোন নামকরণ ছাড়া সেতুটি খুলে দেয়া হয়। ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয় সওজ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর মানিকগঞ্জ সদর বালিরটেক কালিগঙ্গা নদীর ওপরে ২৯১ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণে ২০১৬ সালে নাভানা কন্সস্ট্রাকশন লিমিটেড কাজ দেয়া হয়। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৪৬ কোটি ২৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩৮১ টাকা।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলার এলজিইডি’র সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আনিসউজ্জামান সংবাদকে বলেন, কালিগঙ্গা নদীর উপরের সেতুটির নির্মাণসহ প্রায় সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। যানবাহন চলাচলের জন্য বৃহস্পতিবার সেতুটি খুলে দেয়া হয়েছে। তবে সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। কোন মুক্তিযোদ্ধার নামে সেতুটির নামকরণের বিষয়ে কোন প্রস্তাবনা দেয়া হয় নাই। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কোন নাম প্রস্তাব দিলে বিবেচনা করা হতে পারে। এ সময় সেতুর বন্ধ রেখে ফেরি দিয়ে চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলার সওজ’র উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহানুর রশীদ সংবাদকে, সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হবার পরে আমরা টোল আদায় নিষেধ করে দিয়েছি। কিন্তু কে বা কারা চাঁদা আদায় করছে সে ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।
নাভানা কন্সস্ট্রাকশন লিমিটেডে জেনারেল ম্যানেজার মো. আলমগীর হোসেন জানান, কালিগঙ্গা নদীর ওপরের সেতুটির কাজ শেষ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে উভয় পাশের রাস্তার কিছু রংয়ের কাজ সামান্য বাকি আছে।
সরেজমিন সেতু এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বালিরটেক কালিগঙ্গা নদীর উপরে ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হবার পরে কিছু স্থানে শুধু চুনা করার কাজ চলছিল। এই সুযোগে স্থানীয়রা সেতুটির সামনে টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। মিনিবাস ট্রাকসহ সব প্রকার বড় যানবাহন ফেরিতে পারাপারের জন্য দীর্ঘ সময় লাইন করে রাখা হয়। ফেরি পারাপারে প্রতিটি শুকতারা মিনিবাস ১৩০ টাকা, ট্রাক ১৩৫ টাকা, বড় গাড়ি ১৫০ টাকা, ছোট গাড়ি ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এভাবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আদায় হয় বলে স্থানীয়রা জানায়। গত ২ মাস ধরে ফারুক মোল্লা, লাভলু রাজিব গংরা প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বকভাবে বিভিন্ন গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করে। এই চাঁদার টাকার একটি অংশ সড়ক ও জনপদ বিভাগের এক শ্রেণীর কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগাভাগি হয় বলে স্থানীয়রা জানায়। গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের সওজ ও এলজিইডি কর্মকর্তার সঙ্গে সংবাদের প্রতিনিধি যোগাযোগ করা হলে তারা চাঁদার তুলার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে গত বৃহস্পতিবার ব্রিজটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় এবং ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়। সেতুটি নির্মাণের ফলে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ১৩টি ইউনিয়নের লোকজন বালিরটেক কালিগঙ্গা নদী অতিক্রম করে খুব সহজে ২টি উপজেলাতে যাতায়াতে করতে পারবে। এমনকি স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী, মোটরসাইকেল, অটোরিকসা, অটোবাইক, ভ্যানবাইক, ভ্যান গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের ধরনের যানবাহন ও ব্যবসায়ীদের পণ্যসামগ্রী পরিবহনের সুবিধা হবে বলে স্থানীয়রা জানায়।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলার বলড়া গ্রামের সাইজুদ্দিন নামের এক বাসিন্দা সংবাদকে বলেন, সেতুটি নির্মাণের ফলে জরুরিভিত্তিতে আমরা হরিরামপুর থেকে মানিকগঞ্জ এবং সিংগাইর উপজেলা খুব সহজে যোগাযোগ করতে পারব। তবে সেতুটি নির্মাণ করায় এই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের উপকার হয়েছে। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরে দীর্ঘ সেতুর বন্ধ রেখে ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করছে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন বিভিন্ন গাড়ি চাঁদা আদায় করে স্থানীয় নেতারা। সেতুটি চালু হলে ঢাকার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আরও দ্রুত হবে।
সুলতানপুর গ্রামের মান্নান নামের এক এলাকাবাসী সংবাদকে বলেন, ঢাকার সঙ্গে মানিকগঞ্জের যোগাযোগ আরও দ্রুত করার জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন সেতু চালু করা হয় না। সেতু বন্ধ করে ফেরি দিয়ে গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। এতে যাত্রী অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই সেতুটি চালু করার আগে সেতুটি নামকরণ দরকার ছিল। কিন্তু কোন নামকরণ ছাড়া সেতুটি খুলে দেয়া হয়েছে। আমাদের এলাকাবাসীর দাবি সেতুটি যেন বীরমুক্তিযোদ্ধা মাহফুজের নামে করা হয়। তিনি একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বালিরটেক এলাকায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমা বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে শহীদ হন।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন সংবাদকে বলেন, মানিকগঞ্জের কালিগঙ্গা নদীতে সেতুটি এলজিইডি নির্মাণ করেছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। তাই ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যতদিন সেতুটি চালু করা হয়টি ততদিন ফেরি সার্ভিস চলাচল করছে।