১১ জানুয়ারি

রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক বাংলাদেশে অস্থায়ী শাসনতান্ত্রিক আদেশ জারি

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ও এনা পরিবেশিত খবরে বলা হয়- গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রাষ্ট্রপ্রধান বাংলাদেশের অস্থায়ী শাসনতান্ত্রিক আদেশ (১৯৭২) জারি করেছে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকরী হবে। এতে সংসদীয় গণতন্ত্রের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বর এবং ৭১ সালে জানুয়ারি ও মার্চের নির্বাচিত সকল এমএনএ এবং এমপির (অন্য কোনোভাবে অযোগ্য ঘোষিত হলে) গণপরিষদ গঠন করবেন। প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিসভায় সদস্যদের মনোনীত করবেন। সমগ্র বাংলাদেশের জন্য এ আদেশ প্রযোজ্য।

উল্লেখযোগ্য যে, মঙ্গলবার রাত্রে সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় দফা বৈঠকের পর রাষ্ট্রপ্রধানের আদেশ জারি করা হয়। সকালে প্রথম দফার তিন ঘণ্টাকালীন বৈঠকে এবং রাত্রে সাড়ে চার ঘণ্টাকালীন বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুর মুক্তি বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব স্বীকৃতিকে দ্বারপ্রান্তে এনেছে। ঢাকাস্থ কূটনৈতিক মহল মঙ্গলবার এ মর্মে আভাস দিয়েছেন যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে অবিলম্বে বহুসংখ্যক রাষ্ট্রের স্বীকৃতিদানের সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বলতর হয়েছে। বার্তা প্রতিষ্ঠান এনার কূটনৈতিক সংবাদদাতার এক রিপোর্টে বলা হয় যে, সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক শিবির এবং ব্রিটেন ও ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমূহ যে সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ স্বীকৃতি দান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, এক্ষুণে তার চাইতে অনেক আগে এসব রাষ্ট্র কত পাওয়া যাবে। জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (পূর্ব জার্মানি) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে অন্যান্য দেশের স্বীকৃতি দানের ক্ষেত্রে ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায় যে, আমাদের মহান প্রতিবেশী ভারত সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। পরের দিন ভুটানও ভারতের পথ অনুসরণ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পোল্যান্ড বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের স্বার্থকে তুলে ধরে। গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্স এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করে, যা মূলত মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সহায়ক হয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ‘অন্ধকার হতে আলোতে, বন্দীদশা হতে মুক্তির ঐতিহাসিক যাত্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গত ৯ ডিসেম্বর লন্ডন পৌঁছালে ব্রিটেন তাকে একজন মহান রাষ্ট্রপ্রধানের মর্যাদায় অভিষিক্ত করে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড হিথ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের সাথে আলাপ-আলোচনার সুযোগটুকু গ্রহণ করেন। তাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়েছে যে, বিশ্ব বাংলাদেশ সরকারের কার্যক্রম গভীরভাবে লক্ষ্য করছে। সমগ্র দেশ বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক ও অর্থনৈতিক তৎপরতা পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় তারা গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে।

শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২০ , ২৭ পৌষ ১৪২৬, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

১১ জানুয়ারি

রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক বাংলাদেশে অস্থায়ী শাসনতান্ত্রিক আদেশ জারি

image

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ও এনা পরিবেশিত খবরে বলা হয়- গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রাষ্ট্রপ্রধান বাংলাদেশের অস্থায়ী শাসনতান্ত্রিক আদেশ (১৯৭২) জারি করেছে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকরী হবে। এতে সংসদীয় গণতন্ত্রের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বর এবং ৭১ সালে জানুয়ারি ও মার্চের নির্বাচিত সকল এমএনএ এবং এমপির (অন্য কোনোভাবে অযোগ্য ঘোষিত হলে) গণপরিষদ গঠন করবেন। প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিসভায় সদস্যদের মনোনীত করবেন। সমগ্র বাংলাদেশের জন্য এ আদেশ প্রযোজ্য।

উল্লেখযোগ্য যে, মঙ্গলবার রাত্রে সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় দফা বৈঠকের পর রাষ্ট্রপ্রধানের আদেশ জারি করা হয়। সকালে প্রথম দফার তিন ঘণ্টাকালীন বৈঠকে এবং রাত্রে সাড়ে চার ঘণ্টাকালীন বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুর মুক্তি বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব স্বীকৃতিকে দ্বারপ্রান্তে এনেছে। ঢাকাস্থ কূটনৈতিক মহল মঙ্গলবার এ মর্মে আভাস দিয়েছেন যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে অবিলম্বে বহুসংখ্যক রাষ্ট্রের স্বীকৃতিদানের সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বলতর হয়েছে। বার্তা প্রতিষ্ঠান এনার কূটনৈতিক সংবাদদাতার এক রিপোর্টে বলা হয় যে, সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক শিবির এবং ব্রিটেন ও ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমূহ যে সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ স্বীকৃতি দান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, এক্ষুণে তার চাইতে অনেক আগে এসব রাষ্ট্র কত পাওয়া যাবে। জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (পূর্ব জার্মানি) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে অন্যান্য দেশের স্বীকৃতি দানের ক্ষেত্রে ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায় যে, আমাদের মহান প্রতিবেশী ভারত সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। পরের দিন ভুটানও ভারতের পথ অনুসরণ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পোল্যান্ড বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের স্বার্থকে তুলে ধরে। গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্স এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করে, যা মূলত মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সহায়ক হয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ‘অন্ধকার হতে আলোতে, বন্দীদশা হতে মুক্তির ঐতিহাসিক যাত্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গত ৯ ডিসেম্বর লন্ডন পৌঁছালে ব্রিটেন তাকে একজন মহান রাষ্ট্রপ্রধানের মর্যাদায় অভিষিক্ত করে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড হিথ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের সাথে আলাপ-আলোচনার সুযোগটুকু গ্রহণ করেন। তাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়েছে যে, বিশ্ব বাংলাদেশ সরকারের কার্যক্রম গভীরভাবে লক্ষ্য করছে। সমগ্র দেশ বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক ও অর্থনৈতিক তৎপরতা পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় তারা গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে।