কৃষি উন্নয়নে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভূমিকা

মুকুল কুমার মল্লিক

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) দেশের সর্ববৃহৎ বহুবিধ ফসল গবেষণা প্রতিষ্ঠান। দেশের সার্বিক কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন, কৃষকের আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে অত্র প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রকার দানা জাতীয় শস্য, কন্দাল ফসল, ডাল, তেল ফসল, সবজি, ফল, ফুলসহ প্রায় ২১১টি ফসলের ওপর গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠান এসব ফসলের উচ্চ ফলনশীল উন্নত জাত এবং উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি উদ্ভাবন, ফসল ব্যবস্থাপনা, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন ব্যবস্থাসহ কৃষি যন্ত্রপাতি, ফসল সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয়ের ওপর লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গবেষণা করে থাকে। উদ্ভাবিত উন্নত জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তিসমূহ সম্প্রসারণ কর্মী, কৃষি সংশ্লিষ্ট এনজিও কর্মী ও কৃষকের নিকট হস্তান্তরের জন্য বারি কর্তৃপক্ষ নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে থাকে।

এ প্রতিষ্ঠানের কৃষি পরিবেশ অঞ্চলভিত্তিক আটটি আঞ্চলিক ও ৩০টি উপকেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া বারির গবেষণা কার্যক্রম ৬টি বিশেষায়িত ফসলভিত্তিক গবেষণা কেন্দ্র যেমন, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্র, কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র উদ্ভিদ কৌলিসম্পদ কেন্দ্র, ডাল গবেষণা কেন্দ্র ও মসলা গবেষণা কেন্দ্র। এছাড়া ১৬টি বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উদ্ভাবিত প্রযুক্তিসমূহ মাঠ পর্যায়ে কৃষকের সরাসরি মূল্যায়নের জন্য সরেজমিন গবেষণা বিভাগের আওতায় ১৩টি খামার গবেষণা পদ্ধতি ও উন্নয়ন এলাকা এবং ৮৫টি বহুস্থানিক গবেষণা এলাকা দেশব্যাপী ছড়িয়ে রয়েছে।

দেশের কৃষি গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য এ প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালে দেশের সর্বোচ্চ পদক স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করে। এছাড়াও বারি ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ড মেডেল, ২০১২ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। বারি’র বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত বিভিন্ন ফসলের ৫৫৮টি জাত এবং ৫২৯টি উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

বারি কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল আলুর জাত কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ আলু চাষে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। নিজস্ব সংকরায়ণের মাধ্যমে উদ্ভাবিত ১১টি জাত, সিআইপি জার্মপ্লাজম থেকে ৬টি জাত, বিদেশি জাত মূল্যায়নের মাধ্যমে ৪৮টি জাত এবং ২টি টিপিএস জাতসহ মোট ৯১টি আলুর জাত কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক অনুমোদিত হয়ে এ পর্যন্ত বারি হতে অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বারি এ পর্যন্ত ১৬টি মিষ্টি আলুর জাত অবমুক্ত করেছে।

বারি বাংলাদেশে এরোপনিক্স পদ্ধতিতে মানসম্পন্ন বীজ আলু উৎপাদিত হচ্ছে। ভাইরাস ও অন্যান্য রোগবালাই মুক্ত মানসম্পন্ন বীজ আলু উৎপাদন করতে আধুনিক ও জীব প্রযুক্তির বিকল্প নেই। তাই আধুনিক ও জীব প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নত মানের বীজ আলু উৎপাদন করে এদেশের বীজ আলুর আমদানি নির্ভরতা যেমন কমিয়ে আনা সম্ভব, তেমনি দেশে উদ্ভাবিত উন্নত জাতসমূহের বীজ দ্রুত কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেয়াও সম্ভব।

বাংলাদেশে ৯০টির অধিক বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হয়ে থাকে। বারি উদ্ভাবিত সবজির উন্নত জাতসমূহ হচ্ছে বেগুন-উত্তরা, কাজলা, নয়নতারা, বারি বেগুন, বারি হাইব্রিড বেগুন-২, ৩, ৪ বারি বিটি বেগুন-১, ২, ৩, ৪ -বারি টমেটো-১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২১ বারি হাইব্রিড টমেটো- ৫, ৬, ৭, ৯ টমেটো-৪, ৮, ১০ বারি ফুলকপি-২; বারি বাঁধাকপি- অগ্রদূত; বারি বাটিশাক-১; বারি চিনাশাক-১; মুলা-তাসাকিসান, পিংকী, বারি মুলা-৩, ৪; বারি লাউ-৩, ৪ বারি সীম-১, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০ ইত্যাদি। বারি উদ্ভাবিত ফলের উন্নত জাতসমূহ হচ্ছে বারি আম-১, ২, ৩, ৪, ৮, ৯, ১০, ১১, বারি কাঁঠাল-১, ২, ৩; বারি কলা-১, ৩, ৪, ৫ বারি লিচু-২, ৩, ৪, ৫; বারি পেয়ারা-২ বারি-৪, বারি লেবু-২, ৩, ৪ বারি কুল-১, ৩, ৪, ৫ ইত্যাদি।

বারি উদ্ভাবিত ডালের উন্নত জাতসমূহ হচ্ছে বারি ছোলা-৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০; বারি মসুর- ৫, ৬, ৭, ৮, ৯; বারি মুগ- ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮; বারি মাস-১, ২, ৩, ৪; বারি খেসারি-৩, ৪, ৫; বারি মটর-১, ২, ৩ ইত্যাদি।

উচ্চ ফলনশীল তৈলবীজের জাতসমূহ হচ্ছে বারি সরিষা ১১, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮; বারি চীনা বাদাম-৭, ৮, ৯, ১০; সয়াবিনের সোহাগ, বারি সয়াবিন-৫, ৬; বারি তিল-২, ৩, ৪; এবং বারি সূর্যমুখী-২, ৩।

বারি উদ্ভাবিত মসলার উন্নত জাতসমূহ: বারি মরিচ-১, ২, ৩, ৪; বারি পিয়াজ-১, ৪, ৬ ২, ৩, ৫, বারি হলুদ-২, ৩, ৪, ৫; বারি আদা-১, ২, ৩; বারি কালজিরা-১ ইত্যাদি।

বারি উদ্ভাবিত ঊন্নত জাতের ফুল ফসলসমূহ হচ্ছে বারি গ্লাডিওলাস-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬; বারি অর্কিড-১, বারি জারবেরা-১, ২; বারি চন্দ্রমল্লিকা-১, ২, ৩, ৪ ; বারি অ্যান্থুরিয়াম-১; বারি ডালিয়া-১; বারি লিলি-১; বারি এলপিনিয়া-১, বারি গাঁদা-১ এবং বারি রজনীগন্ধ্যা-১।

মাঠে ব্যবহারপযোগী বারি উদ্ভাবিত কৃষি যন্ত্রপাতিসমূহের মধ্যে রয়েছে বারি বীজ বপন যন্ত্র; বারি বেড প্লান্টার; বারি আলু রোপণ যন্ত্র; বারি জিরো টিলেজ প্লান্টার; বারি শুকনা জমি নিড়ানি যন্ত্র; বারি গুটি ইউরিয়া প্র্রয়োগ যন্ত্র; বারি আলু উত্তোলন যন্ত্র; বারি স্ব-চালিত রিপার; বারি শক্তিচালিত শস্য মাড়াই যন্ত্র; বারি শক্তিচালিত ভুট্টা মাড়াই যন্ত্র; বারি আলু গ্রেডিং যন্ত্র, বারি ফল শোধন যন্ত্র, এবং বারি মূলজাতীয় সবজি ধৌতকরণ যন্ত্র।

বারি উদ্ভাবিত উন্নত গম ফসলের জাতসমূহ: বারি গম-২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ইত্যাদি। এ জাতগুলো উচ্চ ফলনশীল, রোগ প্রতিরোধী ও তাপসহিষ্ণু। বারি গম ২৫ জাতটি লবণাক্ততা সহিষ্ণু হওয়ায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষের উপযোগী। এছাড়া বারি ট্রিটিকেলী-১, ২ জাত থেকে একই সঙ্গে সবুজ ঘাস ও দানা পাওয়া যায়।

বারি উদ্ভাবিত ভুট্টার উন্নত হাইব্রিড জাতসমূহ হচ্ছে বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫, ৭, ৮, ৯, ১৪, ১৫, ১৬। এছাড়াও হাই ভ্যালু ভুট্টা ফসলের জাত: খৈ ভুট্টা, বারি মিষ্টি ভুট্টা-১। বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১২ ও ১৩ খরা সহনশীল ও কম সেচে উৎপাদনক্ষম সাদা দানা বিশিষ্ট বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য উপযোগী।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীগণ বিগত চার দশক ধরে দেশের কৃষির উন্নয়নে নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। ফলশ্রুতিতে ক্রমাগতভাবে উদ্ভাবিত হচ্ছে নতুন নতুন ফসলের উচ্চফলনশীল জাত ও উন্নত উৎপাদন বিষয়ক প্রযুক্তি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী, গবেষক, ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তথ্য সহযোগিতার প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে উদ্ভাবিত জাত এবং প্রযুক্তির তথ্য বিষয়ে নিয়মিত বুকলেট, লিফলেট, ম্যানুয়াল, বার্ষিক প্রতিবেদন, নিউজলেটার, উদ্ভাবিত কৃষি প্রযুক্তি (প্রতি বছর প্রকাশিত), কৃষি প্রযুক্তি হাতবই (উদ্ভাবিত জাত এবং প্রযুক্তির তথ্যবহুল সংকলন)সহ বিভিন্ন প্রকাশনা করে থাকে।

শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২০ , ২৭ পৌষ ১৪২৬, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

কৃষি উন্নয়নে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভূমিকা

মুকুল কুমার মল্লিক

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) দেশের সর্ববৃহৎ বহুবিধ ফসল গবেষণা প্রতিষ্ঠান। দেশের সার্বিক কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন, কৃষকের আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে অত্র প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রকার দানা জাতীয় শস্য, কন্দাল ফসল, ডাল, তেল ফসল, সবজি, ফল, ফুলসহ প্রায় ২১১টি ফসলের ওপর গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠান এসব ফসলের উচ্চ ফলনশীল উন্নত জাত এবং উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি উদ্ভাবন, ফসল ব্যবস্থাপনা, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন ব্যবস্থাসহ কৃষি যন্ত্রপাতি, ফসল সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয়ের ওপর লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গবেষণা করে থাকে। উদ্ভাবিত উন্নত জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তিসমূহ সম্প্রসারণ কর্মী, কৃষি সংশ্লিষ্ট এনজিও কর্মী ও কৃষকের নিকট হস্তান্তরের জন্য বারি কর্তৃপক্ষ নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে থাকে।

এ প্রতিষ্ঠানের কৃষি পরিবেশ অঞ্চলভিত্তিক আটটি আঞ্চলিক ও ৩০টি উপকেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া বারির গবেষণা কার্যক্রম ৬টি বিশেষায়িত ফসলভিত্তিক গবেষণা কেন্দ্র যেমন, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্র, কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র উদ্ভিদ কৌলিসম্পদ কেন্দ্র, ডাল গবেষণা কেন্দ্র ও মসলা গবেষণা কেন্দ্র। এছাড়া ১৬টি বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উদ্ভাবিত প্রযুক্তিসমূহ মাঠ পর্যায়ে কৃষকের সরাসরি মূল্যায়নের জন্য সরেজমিন গবেষণা বিভাগের আওতায় ১৩টি খামার গবেষণা পদ্ধতি ও উন্নয়ন এলাকা এবং ৮৫টি বহুস্থানিক গবেষণা এলাকা দেশব্যাপী ছড়িয়ে রয়েছে।

দেশের কৃষি গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য এ প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালে দেশের সর্বোচ্চ পদক স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করে। এছাড়াও বারি ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ড মেডেল, ২০১২ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। বারি’র বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত বিভিন্ন ফসলের ৫৫৮টি জাত এবং ৫২৯টি উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

বারি কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল আলুর জাত কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ আলু চাষে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। নিজস্ব সংকরায়ণের মাধ্যমে উদ্ভাবিত ১১টি জাত, সিআইপি জার্মপ্লাজম থেকে ৬টি জাত, বিদেশি জাত মূল্যায়নের মাধ্যমে ৪৮টি জাত এবং ২টি টিপিএস জাতসহ মোট ৯১টি আলুর জাত কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক অনুমোদিত হয়ে এ পর্যন্ত বারি হতে অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বারি এ পর্যন্ত ১৬টি মিষ্টি আলুর জাত অবমুক্ত করেছে।

বারি বাংলাদেশে এরোপনিক্স পদ্ধতিতে মানসম্পন্ন বীজ আলু উৎপাদিত হচ্ছে। ভাইরাস ও অন্যান্য রোগবালাই মুক্ত মানসম্পন্ন বীজ আলু উৎপাদন করতে আধুনিক ও জীব প্রযুক্তির বিকল্প নেই। তাই আধুনিক ও জীব প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নত মানের বীজ আলু উৎপাদন করে এদেশের বীজ আলুর আমদানি নির্ভরতা যেমন কমিয়ে আনা সম্ভব, তেমনি দেশে উদ্ভাবিত উন্নত জাতসমূহের বীজ দ্রুত কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেয়াও সম্ভব।

বাংলাদেশে ৯০টির অধিক বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হয়ে থাকে। বারি উদ্ভাবিত সবজির উন্নত জাতসমূহ হচ্ছে বেগুন-উত্তরা, কাজলা, নয়নতারা, বারি বেগুন, বারি হাইব্রিড বেগুন-২, ৩, ৪ বারি বিটি বেগুন-১, ২, ৩, ৪ -বারি টমেটো-১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২১ বারি হাইব্রিড টমেটো- ৫, ৬, ৭, ৯ টমেটো-৪, ৮, ১০ বারি ফুলকপি-২; বারি বাঁধাকপি- অগ্রদূত; বারি বাটিশাক-১; বারি চিনাশাক-১; মুলা-তাসাকিসান, পিংকী, বারি মুলা-৩, ৪; বারি লাউ-৩, ৪ বারি সীম-১, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০ ইত্যাদি। বারি উদ্ভাবিত ফলের উন্নত জাতসমূহ হচ্ছে বারি আম-১, ২, ৩, ৪, ৮, ৯, ১০, ১১, বারি কাঁঠাল-১, ২, ৩; বারি কলা-১, ৩, ৪, ৫ বারি লিচু-২, ৩, ৪, ৫; বারি পেয়ারা-২ বারি-৪, বারি লেবু-২, ৩, ৪ বারি কুল-১, ৩, ৪, ৫ ইত্যাদি।

বারি উদ্ভাবিত ডালের উন্নত জাতসমূহ হচ্ছে বারি ছোলা-৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০; বারি মসুর- ৫, ৬, ৭, ৮, ৯; বারি মুগ- ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮; বারি মাস-১, ২, ৩, ৪; বারি খেসারি-৩, ৪, ৫; বারি মটর-১, ২, ৩ ইত্যাদি।

উচ্চ ফলনশীল তৈলবীজের জাতসমূহ হচ্ছে বারি সরিষা ১১, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮; বারি চীনা বাদাম-৭, ৮, ৯, ১০; সয়াবিনের সোহাগ, বারি সয়াবিন-৫, ৬; বারি তিল-২, ৩, ৪; এবং বারি সূর্যমুখী-২, ৩।

বারি উদ্ভাবিত মসলার উন্নত জাতসমূহ: বারি মরিচ-১, ২, ৩, ৪; বারি পিয়াজ-১, ৪, ৬ ২, ৩, ৫, বারি হলুদ-২, ৩, ৪, ৫; বারি আদা-১, ২, ৩; বারি কালজিরা-১ ইত্যাদি।

বারি উদ্ভাবিত ঊন্নত জাতের ফুল ফসলসমূহ হচ্ছে বারি গ্লাডিওলাস-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬; বারি অর্কিড-১, বারি জারবেরা-১, ২; বারি চন্দ্রমল্লিকা-১, ২, ৩, ৪ ; বারি অ্যান্থুরিয়াম-১; বারি ডালিয়া-১; বারি লিলি-১; বারি এলপিনিয়া-১, বারি গাঁদা-১ এবং বারি রজনীগন্ধ্যা-১।

মাঠে ব্যবহারপযোগী বারি উদ্ভাবিত কৃষি যন্ত্রপাতিসমূহের মধ্যে রয়েছে বারি বীজ বপন যন্ত্র; বারি বেড প্লান্টার; বারি আলু রোপণ যন্ত্র; বারি জিরো টিলেজ প্লান্টার; বারি শুকনা জমি নিড়ানি যন্ত্র; বারি গুটি ইউরিয়া প্র্রয়োগ যন্ত্র; বারি আলু উত্তোলন যন্ত্র; বারি স্ব-চালিত রিপার; বারি শক্তিচালিত শস্য মাড়াই যন্ত্র; বারি শক্তিচালিত ভুট্টা মাড়াই যন্ত্র; বারি আলু গ্রেডিং যন্ত্র, বারি ফল শোধন যন্ত্র, এবং বারি মূলজাতীয় সবজি ধৌতকরণ যন্ত্র।

বারি উদ্ভাবিত উন্নত গম ফসলের জাতসমূহ: বারি গম-২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ইত্যাদি। এ জাতগুলো উচ্চ ফলনশীল, রোগ প্রতিরোধী ও তাপসহিষ্ণু। বারি গম ২৫ জাতটি লবণাক্ততা সহিষ্ণু হওয়ায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষের উপযোগী। এছাড়া বারি ট্রিটিকেলী-১, ২ জাত থেকে একই সঙ্গে সবুজ ঘাস ও দানা পাওয়া যায়।

বারি উদ্ভাবিত ভুট্টার উন্নত হাইব্রিড জাতসমূহ হচ্ছে বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫, ৭, ৮, ৯, ১৪, ১৫, ১৬। এছাড়াও হাই ভ্যালু ভুট্টা ফসলের জাত: খৈ ভুট্টা, বারি মিষ্টি ভুট্টা-১। বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১২ ও ১৩ খরা সহনশীল ও কম সেচে উৎপাদনক্ষম সাদা দানা বিশিষ্ট বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য উপযোগী।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীগণ বিগত চার দশক ধরে দেশের কৃষির উন্নয়নে নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। ফলশ্রুতিতে ক্রমাগতভাবে উদ্ভাবিত হচ্ছে নতুন নতুন ফসলের উচ্চফলনশীল জাত ও উন্নত উৎপাদন বিষয়ক প্রযুক্তি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী, গবেষক, ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তথ্য সহযোগিতার প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে উদ্ভাবিত জাত এবং প্রযুক্তির তথ্য বিষয়ে নিয়মিত বুকলেট, লিফলেট, ম্যানুয়াল, বার্ষিক প্রতিবেদন, নিউজলেটার, উদ্ভাবিত কৃষি প্রযুক্তি (প্রতি বছর প্রকাশিত), কৃষি প্রযুক্তি হাতবই (উদ্ভাবিত জাত এবং প্রযুক্তির তথ্যবহুল সংকলন)সহ বিভিন্ন প্রকাশনা করে থাকে।