গতবছর সড়ক দুর্র্ঘটনায় প্রাণহানি বেড়েছে

২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ৮ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক প্রতিবেদনে এতথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, ২০১৯ সালে সড়কে ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭ হাজার ৮৫৫ জন নিহত ও ১৩ হাজার ৩৩০ জন আহত হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৫,৫১৪টি দুর্ঘটনায় ৭,২২১ জন নিহত ও ১৫,৪৬৬ জন আহত হন।

দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রতিবেদনে বলা হয়, গতবছর রেলপথে ৪৮২টি দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত, ৭০৬ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ২০৩টি দুর্ঘটনায় ২১৯ জন নিহত ও ২৮২ জন আহত এবং ৩৭৫ জন নিখোঁজ হয়। সড়ক, রেল, নৌপথে সর্বমোট ৬ হাজার ২০১টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫৪৩ জন নিহত এবং ১৪ হাজার ৩১৮ জন আহত হয়েছে।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন বলেন বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তাঘাটের ক্রটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদকসেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা কিংবা ফুটপাত বেদখল ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া।

এ সময় তিনি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশগুলো হলো, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা, টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাটবাজার অপসারণ, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন ও জেব্রাক্রসিং অঙ্কন, গণপরিবহন চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা, যাত্রী, পথচারী ও গণপরিবহনবান্ধব সড়ক পরিবহন বিধিমালা প্রণয়ন, গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিকায়ন, সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠন, হতাহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, দেশব্যাপী চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন গণপরিবহন নামানোর উদ্যোগ গ্রহণ, ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য একাডেমি গড়ে তোলা, গণপরিবহনে সেবা ও নিরাপত্তার মান পর্যবেক্ষণের জন্য মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে একদিন গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা এবং সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২০ , ২৮ পৌষ ১৪২৬, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

গতবছর সড়ক দুর্র্ঘটনায় প্রাণহানি বেড়েছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ৮ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক প্রতিবেদনে এতথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, ২০১৯ সালে সড়কে ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭ হাজার ৮৫৫ জন নিহত ও ১৩ হাজার ৩৩০ জন আহত হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৫,৫১৪টি দুর্ঘটনায় ৭,২২১ জন নিহত ও ১৫,৪৬৬ জন আহত হন।

দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রতিবেদনে বলা হয়, গতবছর রেলপথে ৪৮২টি দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত, ৭০৬ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ২০৩টি দুর্ঘটনায় ২১৯ জন নিহত ও ২৮২ জন আহত এবং ৩৭৫ জন নিখোঁজ হয়। সড়ক, রেল, নৌপথে সর্বমোট ৬ হাজার ২০১টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫৪৩ জন নিহত এবং ১৪ হাজার ৩১৮ জন আহত হয়েছে।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন বলেন বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তাঘাটের ক্রটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদকসেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা কিংবা ফুটপাত বেদখল ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া।

এ সময় তিনি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশগুলো হলো, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা, টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাটবাজার অপসারণ, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন ও জেব্রাক্রসিং অঙ্কন, গণপরিবহন চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা, যাত্রী, পথচারী ও গণপরিবহনবান্ধব সড়ক পরিবহন বিধিমালা প্রণয়ন, গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিকায়ন, সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠন, হতাহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, দেশব্যাপী চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন গণপরিবহন নামানোর উদ্যোগ গ্রহণ, ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য একাডেমি গড়ে তোলা, গণপরিবহনে সেবা ও নিরাপত্তার মান পর্যবেক্ষণের জন্য মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে একদিন গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা এবং সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।