ধীরে ধীরে জমে উঠছে বাণিজ্যমেলা

আজ ১৩ দিন পার করছে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। শুরুর দিকে দর্শনার্থী খুবই কম ছিল। তবে ধীরে ধীরে মেলা জমে ওঠছে। গত শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় মেলার দর্শনার্থীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। গতকালও দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল।

‘মুজিববর্ষের’ ক্ষণগণনার উদ্বোধন উপলক্ষে সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন শুক্রবার সারাদিন বন্ধ ছিল মেলা, তার আগের দুই দিনেও আধাবেলা করে বন্ধ রাখতে হয়েছিল। গত শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই মেলায় আসতে থাকে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। তবে সকাল ১০টায় মেলার গেট খোলার পর প্রথম এক ঘণ্টা ক্রেতা দর্শনার্থীদের সমাগম ছিল তুলনামূলক কম। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে মেলায় আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সংখ্যা। দুপুর ১২টার পর ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে অনেকটাই বেড়ে যায়।

মেলার ইজারাদার ও অংশগ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মেলায় বাড়ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। সামনে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে। তবে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়লেও তা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম বলে জানিয়েছেন মেলার গেট ইজারা পাওয়া মীর ব্রাদার্সের মালিক মীর শহিদুল। তিনি বলেন, বর্তমানে মেলার দর্শনার্থী ভালোই হচ্ছে। ২০ হাজারের মতো দর্শনার্থী এসেছে। এর আগে দর্শনার্থী এসেছে প্রতিদিন গড়ে ৪-৫ হাজারের মতো। সামনে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। এবার মেলার শুরুতে দর্শনার্থীর সংখ্যা কম। গত বছর এমন সময়ের শনিবারে ৫০-৬০ হাজার দর্শনার্থী এসেছিল। এখন দর্শনার্থী কম হলেও সামনে বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী। কারণ বিনোদন প্রেমিক মানুষকে আটকে রাখা যাবে না। আর ঢাকার মানুষের বিনোদনের সুযোগও কম। সুতরাং মানুষ মেলায় আসবেই।

এদিকে ছুটির দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রিও বেড়ে গেছে। তবে সকাল বেলা কিছু সময় স্টলের বিক্রয় কর্মীরা অলস সময় পার করেন। অবশ্য সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বিদেশি প্যাভিলিয়নের একজন কর্মী বলেন, সকালে দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক কম থাকে। বিকেলে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ে। এবারের মেলায় এখনও পর্যন্ত শনিবার সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রেতা-দর্শনার্থী হয়েছে।

এবার মেলা শুরুর তৃতীয় দিনেও অধিকাংশ স্টলের কর্মীরা ব্যস্ত ছিলেন নির্মাণ ও পণ্য সাজানোর কাজে। মেলার ১১তম দিনেও দু-চারটি স্টলে দেখা গেল প্রস্তুতির কাজ। মেলায় আসতে এত দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে দুবাই থেকে সুগন্ধি এনে বিপণনকারী তুষার আহমেদ বলেন, এবারের মেলায় স্টল পাইনি। বেশ খাটাখাটনির পর একজনের কাছ থেকে স্টল ভাড়া নিয়েছি। সে কারণেই মেলায় আসতে এতো দেরি।

মেলায় আসবাব ও দেশীয় পোশাকের প্যাভিলিয়নগুলোতেই বেশি ভিড় দেখা গেছে। কয়েক বছর আগে বাজারে আসা স্নোটেক্স গার্মেন্টের ব্র্যান্ড ‘সারা’-এর প্যাভিলিয়নে দুপুর থেকে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। এই স্টলে একজন ক্রেতা বলেন, এই শীতের সময়ে তারা সময়োপযোগী পণ্য নিয়ে এসেছে। সারার হালকা পাতলা জ্যাকেটগুলো এই শীতে ভালোই উপযোগী। সারার পণ্যগুলো দেখতে সুন্দর, দামেও সাশ্রয়ী।

এবারের মেলায় মোট স্টল, প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৪৮৩টি। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১১২টি, মিনি প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১২৮টি এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টলের সংখ্যা ২৪৩টি। এর মধ্যে বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং বিদেশি প্রিমিয়ার স্টলের সংখ্যা ১৭টি। এবারের মেলায় ২১টি দেশ অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, দুবাই, ইতালি ও তাইওয়ান।

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২০ , ২৯ পৌষ ১৪২৬, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ধীরে ধীরে জমে উঠছে বাণিজ্যমেলা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

গতকাল সকালে দর্শনার্থী কম থাকলেও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ছবিটি গতকাল মেলার প্রধান গেট থেকে তোলা

আজ ১৩ দিন পার করছে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। শুরুর দিকে দর্শনার্থী খুবই কম ছিল। তবে ধীরে ধীরে মেলা জমে ওঠছে। গত শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় মেলার দর্শনার্থীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। গতকালও দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল।

‘মুজিববর্ষের’ ক্ষণগণনার উদ্বোধন উপলক্ষে সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন শুক্রবার সারাদিন বন্ধ ছিল মেলা, তার আগের দুই দিনেও আধাবেলা করে বন্ধ রাখতে হয়েছিল। গত শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই মেলায় আসতে থাকে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। তবে সকাল ১০টায় মেলার গেট খোলার পর প্রথম এক ঘণ্টা ক্রেতা দর্শনার্থীদের সমাগম ছিল তুলনামূলক কম। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে মেলায় আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সংখ্যা। দুপুর ১২টার পর ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে অনেকটাই বেড়ে যায়।

মেলার ইজারাদার ও অংশগ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মেলায় বাড়ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। সামনে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে। তবে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়লেও তা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম বলে জানিয়েছেন মেলার গেট ইজারা পাওয়া মীর ব্রাদার্সের মালিক মীর শহিদুল। তিনি বলেন, বর্তমানে মেলার দর্শনার্থী ভালোই হচ্ছে। ২০ হাজারের মতো দর্শনার্থী এসেছে। এর আগে দর্শনার্থী এসেছে প্রতিদিন গড়ে ৪-৫ হাজারের মতো। সামনে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। এবার মেলার শুরুতে দর্শনার্থীর সংখ্যা কম। গত বছর এমন সময়ের শনিবারে ৫০-৬০ হাজার দর্শনার্থী এসেছিল। এখন দর্শনার্থী কম হলেও সামনে বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী। কারণ বিনোদন প্রেমিক মানুষকে আটকে রাখা যাবে না। আর ঢাকার মানুষের বিনোদনের সুযোগও কম। সুতরাং মানুষ মেলায় আসবেই।

এদিকে ছুটির দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রিও বেড়ে গেছে। তবে সকাল বেলা কিছু সময় স্টলের বিক্রয় কর্মীরা অলস সময় পার করেন। অবশ্য সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বিদেশি প্যাভিলিয়নের একজন কর্মী বলেন, সকালে দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক কম থাকে। বিকেলে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ে। এবারের মেলায় এখনও পর্যন্ত শনিবার সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রেতা-দর্শনার্থী হয়েছে।

এবার মেলা শুরুর তৃতীয় দিনেও অধিকাংশ স্টলের কর্মীরা ব্যস্ত ছিলেন নির্মাণ ও পণ্য সাজানোর কাজে। মেলার ১১তম দিনেও দু-চারটি স্টলে দেখা গেল প্রস্তুতির কাজ। মেলায় আসতে এত দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে দুবাই থেকে সুগন্ধি এনে বিপণনকারী তুষার আহমেদ বলেন, এবারের মেলায় স্টল পাইনি। বেশ খাটাখাটনির পর একজনের কাছ থেকে স্টল ভাড়া নিয়েছি। সে কারণেই মেলায় আসতে এতো দেরি।

মেলায় আসবাব ও দেশীয় পোশাকের প্যাভিলিয়নগুলোতেই বেশি ভিড় দেখা গেছে। কয়েক বছর আগে বাজারে আসা স্নোটেক্স গার্মেন্টের ব্র্যান্ড ‘সারা’-এর প্যাভিলিয়নে দুপুর থেকে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। এই স্টলে একজন ক্রেতা বলেন, এই শীতের সময়ে তারা সময়োপযোগী পণ্য নিয়ে এসেছে। সারার হালকা পাতলা জ্যাকেটগুলো এই শীতে ভালোই উপযোগী। সারার পণ্যগুলো দেখতে সুন্দর, দামেও সাশ্রয়ী।

এবারের মেলায় মোট স্টল, প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৪৮৩টি। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১১২টি, মিনি প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১২৮টি এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টলের সংখ্যা ২৪৩টি। এর মধ্যে বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং বিদেশি প্রিমিয়ার স্টলের সংখ্যা ১৭টি। এবারের মেলায় ২১টি দেশ অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, দুবাই, ইতালি ও তাইওয়ান।