মুজিব শাসন আমল : ১৯৭২

১৩ জানুয়ারি

দূররানী ও কমোডর সাঈদ কারারুদ্ধ

করাচি। পাকিস্তান স্টেট ব্যাংকের সাবেক গভর্নর জনাব এস ইউ দূররানী এবং জাতীয় শিপিং কর্পোরেশনের সাবেক ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কমোডর এস ইউ সাঈদকে আজ কারারুদ্ধ করা হয়েছে। বিগত ২০ ডিসেম্বর ভুট্টোর ক্ষমতাসীন হওয়ার পর হতে তারা গৃহে অন্তরীণ ছিলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ঐতিহাসিক সাক্ষাৎকার

সেতাবগঞ্জ, পাঁচগড়, জয়পুরহাট ও ঠাকুরগাঁও এর চারটি সুগার মিলের গুদামে ৯ হাজার টন অর্থাৎ হয় ৩ লক্ষ মণ চিনি পড়ে রয়েছে। রাজধানী ঢাকা ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে চিনি দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। চট্টগ্রামে বর্তমানে প্রতি সের চিনি ৪ টাকা ৫০ পয়সা হতে ৬ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ওপরে যে পরিমাণ চিনির কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি পার্টি যথারীতি ‘লেটার অব ক্রেডিট এর মাধ্যমে ক্রয় করছে। কিন্তু যানবাহন ব্যবস্থার শোচনীয় অবস্থার জন্য চিনি সরবরাহ করা সম্ভব হয় নাই। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, পাকিস্তানের হানাদারবাহিনী দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা চরমভাবে ক্ষতি সাধন করার ফলেই এই অবস্থার উদ্ভব হয়েছে। গুদামে ভরা ৯ হাজার টন চিনির মধ্যে জয়পুরহাটে ৫ হাজার টন, আড়াই হাজার টন ঠাকুরগাঁও- এ, সেতাবগঞ্জে দেড় হাজার টন এবং অবশিষ্ট পরিমাণ চিনি পাঁচগড়ে আটক রয়েছে। রেলওয়ের জনৈক মুখপাত্র ইত্তেফাক প্রতিনিধিকে বলেন, পূর্বে উত্তরবঙ্গ হতে খুলনা কিংবা তিস্তামুখঘাট হয়ে রেলযোগে চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হতো। সাড়ার হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং তিস্তামুখঘাটে কাজকর্ম বন্ধ থাকার জন্য বর্তমানে পূর্বের মতো সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। রেলওয়ের মুখপাত্র বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন, বন্দর নগরীতে চিনি সরবরাহ দ্রুত শুরু করার একটি মাত্র পন্থা রয়েছে। চিনি জয়পুরহাট হতে রেলযোগে ঈশ্বরদী আনতে হবে। ঈশ্বরদী হতে ট্রাকযোগে ঢাকায় এবং ঢাকা হতে স্টিমারযোগে চট্টগ্রামে চিনি পৌঁছবে।

চিনির বাজারে সঙ্কট : বন্দর নগরীতে চিনির অপ্রতুলতার জন্য চট্টগ্রামে চিনির বাজারেও সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সঙ্কট মোচনের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম যানবাহন ব্যবস্থার উন্নতির বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণ করেছে। উপরোক্ত পরিস্থিতির জন্য এখানে এই ধারণাই মূর্ত হয়ে উঠেছে যে, রাজধানী ঢাকা নগরীর উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চিনি সঙ্কট মোচনের জন্য যানবাহন ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি সাধনের প্রচেষ্টা করতে হবে।

বাংলাদেশে গণহত্যার রিপোর্ট পেশ করা হবে

কোলকাতা। আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রীক নেতা মি. হ্যান্স জেনিৎস আজ এখানে বলেন, চলতি মাসের লুক্সেমবার্গে তাদের কার্যনির্বাহক পরিষদের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, তাতে তিনি বাংলাদেশে পাকিস্তানি সশস্ত্রবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করবেন। মি. জেনিৎসের ঢাকা হতে দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছে সাংবাদিকদের নিকট এ কথা বলেন। বিএসএস-এর পূর্ববর্তী খবরে বলা হয় যে, আন্তর্জাতিক সমাজতন্ত্রী সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হ্যান্স জেনিৎস কোলকাতা রওনা হওয়ার প্রাক্কালে ঢাকায় বলেন, ৯ মাসে পাকিস্তান হানাদারবাহিনী বাংলাদেশে যে গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটতরাজ চালায়, সেই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক জুরিস্ট কমিশন গঠন করা দরকার। তিনি তেজগাঁও বিমানবন্দরে আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিদের সাথে এক সাক্ষাৎকারে উপরোক্ত অভিমত প্রকাশ করেন। সমাজতন্ত্রী নেতা এই মর্মে মন্তব্য করেন যে, বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর পরিচালিত বর্বরতা মানবতাবাদের বিরুদ্ধে একটি অপরাধ।

আবু সাঈদ চৌধুরী রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ায় জাতিসংঘ মহলে আনন্দ ও বিস্ময়

জাতিসংঘ। জাতিসংঘের প্রতিনিধিবৃন্দ আনন্দমিশ্রিত বিস্ময়ের সাথে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট পদে নিযুক্তির সংবাদ শ্রবণ করেন। সাধারণ পরিষদের গত অধিবেশনকালে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী জাতিসংঘের লবিমহলে একজন পরিচিত ব্যক্তিতে পরিণত হন। সেই সময়ে তিনি জাতিসংঘস্থ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সেনাবাহিনী কিরূপ বর্বর হত্যাকা- চালায় সেই সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য প্রচারকার্য চালান। জনাব চৌধুরী দাবি করেন যে, নিরাপত্তা পরিষদে উপমহাদেশের সংকটের বিষয় আলোচিত হলে সেখানে তার বক্তব্য শুনতে হবে। রুশ প্রতিনিধি মিস্টার জ্যাকব মালিক তাঁর দাবির প্রতি জোর সমর্থন দেন। পোল্যান্ড ও ভারতের প্রতিনিধি দল বিচারপতি চৌধুরীর দাবির প্রতি সমর্থন দেন। চীন উক্ত দাবির প্রতি তীব্র বিরোধীতা করে। লন্ডনে অবস্থানকালে বিচারপতি চৌধুরী বাংলাদেশের জনগণের ওপর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্রদের ওপর জেনারেল ইয়াহিয়ার বর্বরোচিত হামলার সংবাদ শ্রবণের পর তিনি বিচারপতি পদ ত্যাগ করেন। সেই সময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। পশ্চিম দেশসমূহে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর জন্য বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী লন্ডনে অবস্থান করতে থাকেন। জাতিসংঘ ভবনে বিচারপতি চৌধুরীর উপস্থিতির বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানে কূটনীতিবিদরা তীব্র আপত্তি করতে থাকে। কিন্তু তৎসত্ত্বেও তিনি বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল মহলের সহযোগিতায় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথেও সাক্ষাৎকার অব্যাহত রাখেন এবং বাংলাদেশের বক্তব্য পেশ করতে থাকেন। পাকিস্তান সরকারের সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন করার পূর্বে তিনি জাতিসংঘ মানবিক অধিকার কমিশনের একজন সদস্য ছিলেন।

সূত্র : দিনলিপি, বঙ্গবন্ধুর শাসন সময়, ১৯৭২

মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২০ , ৩০ পৌষ ১৪২৬, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

মুজিব শতবর্ষ

মুজিব শাসন আমল : ১৯৭২

১৩ জানুয়ারি

দূররানী ও কমোডর সাঈদ কারারুদ্ধ

করাচি। পাকিস্তান স্টেট ব্যাংকের সাবেক গভর্নর জনাব এস ইউ দূররানী এবং জাতীয় শিপিং কর্পোরেশনের সাবেক ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কমোডর এস ইউ সাঈদকে আজ কারারুদ্ধ করা হয়েছে। বিগত ২০ ডিসেম্বর ভুট্টোর ক্ষমতাসীন হওয়ার পর হতে তারা গৃহে অন্তরীণ ছিলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ঐতিহাসিক সাক্ষাৎকার

সেতাবগঞ্জ, পাঁচগড়, জয়পুরহাট ও ঠাকুরগাঁও এর চারটি সুগার মিলের গুদামে ৯ হাজার টন অর্থাৎ হয় ৩ লক্ষ মণ চিনি পড়ে রয়েছে। রাজধানী ঢাকা ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে চিনি দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। চট্টগ্রামে বর্তমানে প্রতি সের চিনি ৪ টাকা ৫০ পয়সা হতে ৬ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ওপরে যে পরিমাণ চিনির কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি পার্টি যথারীতি ‘লেটার অব ক্রেডিট এর মাধ্যমে ক্রয় করছে। কিন্তু যানবাহন ব্যবস্থার শোচনীয় অবস্থার জন্য চিনি সরবরাহ করা সম্ভব হয় নাই। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, পাকিস্তানের হানাদারবাহিনী দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা চরমভাবে ক্ষতি সাধন করার ফলেই এই অবস্থার উদ্ভব হয়েছে। গুদামে ভরা ৯ হাজার টন চিনির মধ্যে জয়পুরহাটে ৫ হাজার টন, আড়াই হাজার টন ঠাকুরগাঁও- এ, সেতাবগঞ্জে দেড় হাজার টন এবং অবশিষ্ট পরিমাণ চিনি পাঁচগড়ে আটক রয়েছে। রেলওয়ের জনৈক মুখপাত্র ইত্তেফাক প্রতিনিধিকে বলেন, পূর্বে উত্তরবঙ্গ হতে খুলনা কিংবা তিস্তামুখঘাট হয়ে রেলযোগে চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হতো। সাড়ার হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং তিস্তামুখঘাটে কাজকর্ম বন্ধ থাকার জন্য বর্তমানে পূর্বের মতো সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। রেলওয়ের মুখপাত্র বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন, বন্দর নগরীতে চিনি সরবরাহ দ্রুত শুরু করার একটি মাত্র পন্থা রয়েছে। চিনি জয়পুরহাট হতে রেলযোগে ঈশ্বরদী আনতে হবে। ঈশ্বরদী হতে ট্রাকযোগে ঢাকায় এবং ঢাকা হতে স্টিমারযোগে চট্টগ্রামে চিনি পৌঁছবে।

চিনির বাজারে সঙ্কট : বন্দর নগরীতে চিনির অপ্রতুলতার জন্য চট্টগ্রামে চিনির বাজারেও সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সঙ্কট মোচনের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম যানবাহন ব্যবস্থার উন্নতির বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণ করেছে। উপরোক্ত পরিস্থিতির জন্য এখানে এই ধারণাই মূর্ত হয়ে উঠেছে যে, রাজধানী ঢাকা নগরীর উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চিনি সঙ্কট মোচনের জন্য যানবাহন ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি সাধনের প্রচেষ্টা করতে হবে।

বাংলাদেশে গণহত্যার রিপোর্ট পেশ করা হবে

কোলকাতা। আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রীক নেতা মি. হ্যান্স জেনিৎস আজ এখানে বলেন, চলতি মাসের লুক্সেমবার্গে তাদের কার্যনির্বাহক পরিষদের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, তাতে তিনি বাংলাদেশে পাকিস্তানি সশস্ত্রবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করবেন। মি. জেনিৎসের ঢাকা হতে দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছে সাংবাদিকদের নিকট এ কথা বলেন। বিএসএস-এর পূর্ববর্তী খবরে বলা হয় যে, আন্তর্জাতিক সমাজতন্ত্রী সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হ্যান্স জেনিৎস কোলকাতা রওনা হওয়ার প্রাক্কালে ঢাকায় বলেন, ৯ মাসে পাকিস্তান হানাদারবাহিনী বাংলাদেশে যে গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটতরাজ চালায়, সেই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক জুরিস্ট কমিশন গঠন করা দরকার। তিনি তেজগাঁও বিমানবন্দরে আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিদের সাথে এক সাক্ষাৎকারে উপরোক্ত অভিমত প্রকাশ করেন। সমাজতন্ত্রী নেতা এই মর্মে মন্তব্য করেন যে, বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর পরিচালিত বর্বরতা মানবতাবাদের বিরুদ্ধে একটি অপরাধ।

আবু সাঈদ চৌধুরী রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ায় জাতিসংঘ মহলে আনন্দ ও বিস্ময়

জাতিসংঘ। জাতিসংঘের প্রতিনিধিবৃন্দ আনন্দমিশ্রিত বিস্ময়ের সাথে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট পদে নিযুক্তির সংবাদ শ্রবণ করেন। সাধারণ পরিষদের গত অধিবেশনকালে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী জাতিসংঘের লবিমহলে একজন পরিচিত ব্যক্তিতে পরিণত হন। সেই সময়ে তিনি জাতিসংঘস্থ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সেনাবাহিনী কিরূপ বর্বর হত্যাকা- চালায় সেই সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য প্রচারকার্য চালান। জনাব চৌধুরী দাবি করেন যে, নিরাপত্তা পরিষদে উপমহাদেশের সংকটের বিষয় আলোচিত হলে সেখানে তার বক্তব্য শুনতে হবে। রুশ প্রতিনিধি মিস্টার জ্যাকব মালিক তাঁর দাবির প্রতি জোর সমর্থন দেন। পোল্যান্ড ও ভারতের প্রতিনিধি দল বিচারপতি চৌধুরীর দাবির প্রতি সমর্থন দেন। চীন উক্ত দাবির প্রতি তীব্র বিরোধীতা করে। লন্ডনে অবস্থানকালে বিচারপতি চৌধুরী বাংলাদেশের জনগণের ওপর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্রদের ওপর জেনারেল ইয়াহিয়ার বর্বরোচিত হামলার সংবাদ শ্রবণের পর তিনি বিচারপতি পদ ত্যাগ করেন। সেই সময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। পশ্চিম দেশসমূহে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর জন্য বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী লন্ডনে অবস্থান করতে থাকেন। জাতিসংঘ ভবনে বিচারপতি চৌধুরীর উপস্থিতির বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানে কূটনীতিবিদরা তীব্র আপত্তি করতে থাকে। কিন্তু তৎসত্ত্বেও তিনি বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল মহলের সহযোগিতায় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথেও সাক্ষাৎকার অব্যাহত রাখেন এবং বাংলাদেশের বক্তব্য পেশ করতে থাকেন। পাকিস্তান সরকারের সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন করার পূর্বে তিনি জাতিসংঘ মানবিক অধিকার কমিশনের একজন সদস্য ছিলেন।

সূত্র : দিনলিপি, বঙ্গবন্ধুর শাসন সময়, ১৯৭২