কেশবপুরে মেম্বারের বিরুদ্ধে কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

যশোরের কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার কামরুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ওই মেম্বারের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে শহিদুল ইসলাম জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের একাধিক দফতরে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস জানায়, সরকার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও মঙ্গা এলাকার শ্রমিকদের স্বাবলম্বীর জন্যে ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকল্প গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে উপজেলার ২৫৩৭ জন শ্রমিক দিয়ে প্রকল্পটিগুলো বাস্তবায়ন করছে। প্রতিজন শ্রমিককে ২শ’ টাকা হারে পারিশ্রমিক দেয়া হয়। শ্রমিকরা প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে কাজ শুরু করে দুপুর ২টায় শেষ করে। প্রতিটি প্রকল্প দেখভালের জন্যে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে ৩ সপ্তাহের বিল উত্তোলন করা হয়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার কামরুজ্জামান কামাল এ প্রকল্পের কাজ শুরু থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। উপজেলার সুজাপুর গ্রামে তার গৃহীত প্রকল্পে ২৫ জন শ্রমিক কর্মরত থাকলেও কোন দিন ১৫ থেকে ১৮ জনের বেশি উপস্থিত হয় না। এছাড়া গত ২৪ ডিসেম্বর, ১ ও ৪ জানুয়ারি এ প্রকল্পের কোন কাজই করানো হয়নি। অথচ তিনি ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৫০ জন শ্রমিকের উপস্থিত দেখিয়ে বিল উত্তোলন করেছেন। সরেজমিনে গত ১১ জানুয়ারি ওই প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে গেলে ১৬ জন শ্রমিকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়া ১৪ জানুয়ারি দুপুর ১টায় গিয়ে ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ পাওয়া যায়। এভাবে চললে ওই গ্রামে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় সুজাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম গত ৯ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ১২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মেম্বার কামরুজ্জামান কামাল বলেন, তার প্রকল্পে প্রতিদিন সব শ্রমিকই উপস্থিত থাকে। মাঝে মধ্যে ৮-১০ জন শ্রমিক নিয়ে বিলের পানি সরানোর জন্য হরিহর নদীতে কাজ করানো হয়। গত ১৪ জানুয়ারি শ্রমিকরা ১টা পর্যন্ত কাজ করেছিল।

এ ব্যাপারে ওই প্রকল্পের ট্যাগ অফিসার ও বিআরডিবির আরডিও হংসপতি বলেন, আমি উদ্বোধনের দিন ও মাঝে একদিন গিয়ে ২২ ও ২৩ জন শ্রমিকের উপস্থিত পেয়েছিলাম। অফিসের কাজের চাপে প্রতিদিন যাওয়া সম্ভব হয় না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রিজিবুল ইসলাম বলেন, সরকারের কর্মসৃজন কর্মসূচি চলমান। কাজ না করার কোন সুযোগ নেই। তদন্তে সত্যতা মিললে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২০ , ৩ মাঘ ১৪২৬, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

কেশবপুরে মেম্বারের বিরুদ্ধে কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রতিনিধি, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার কামরুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ওই মেম্বারের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে শহিদুল ইসলাম জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের একাধিক দফতরে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস জানায়, সরকার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও মঙ্গা এলাকার শ্রমিকদের স্বাবলম্বীর জন্যে ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকল্প গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে উপজেলার ২৫৩৭ জন শ্রমিক দিয়ে প্রকল্পটিগুলো বাস্তবায়ন করছে। প্রতিজন শ্রমিককে ২শ’ টাকা হারে পারিশ্রমিক দেয়া হয়। শ্রমিকরা প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে কাজ শুরু করে দুপুর ২টায় শেষ করে। প্রতিটি প্রকল্প দেখভালের জন্যে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে ৩ সপ্তাহের বিল উত্তোলন করা হয়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার কামরুজ্জামান কামাল এ প্রকল্পের কাজ শুরু থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। উপজেলার সুজাপুর গ্রামে তার গৃহীত প্রকল্পে ২৫ জন শ্রমিক কর্মরত থাকলেও কোন দিন ১৫ থেকে ১৮ জনের বেশি উপস্থিত হয় না। এছাড়া গত ২৪ ডিসেম্বর, ১ ও ৪ জানুয়ারি এ প্রকল্পের কোন কাজই করানো হয়নি। অথচ তিনি ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৫০ জন শ্রমিকের উপস্থিত দেখিয়ে বিল উত্তোলন করেছেন। সরেজমিনে গত ১১ জানুয়ারি ওই প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে গেলে ১৬ জন শ্রমিকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়া ১৪ জানুয়ারি দুপুর ১টায় গিয়ে ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ পাওয়া যায়। এভাবে চললে ওই গ্রামে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় সুজাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম গত ৯ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ১২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মেম্বার কামরুজ্জামান কামাল বলেন, তার প্রকল্পে প্রতিদিন সব শ্রমিকই উপস্থিত থাকে। মাঝে মধ্যে ৮-১০ জন শ্রমিক নিয়ে বিলের পানি সরানোর জন্য হরিহর নদীতে কাজ করানো হয়। গত ১৪ জানুয়ারি শ্রমিকরা ১টা পর্যন্ত কাজ করেছিল।

এ ব্যাপারে ওই প্রকল্পের ট্যাগ অফিসার ও বিআরডিবির আরডিও হংসপতি বলেন, আমি উদ্বোধনের দিন ও মাঝে একদিন গিয়ে ২২ ও ২৩ জন শ্রমিকের উপস্থিত পেয়েছিলাম। অফিসের কাজের চাপে প্রতিদিন যাওয়া সম্ভব হয় না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রিজিবুল ইসলাম বলেন, সরকারের কর্মসৃজন কর্মসূচি চলমান। কাজ না করার কোন সুযোগ নেই। তদন্তে সত্যতা মিললে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।