কাজী জাহিদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
বাংলাদেশ রেলওয়ে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় গৃহীত সৈয়দপুরে রেলওয়ে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্প সাড়ে ৩ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। পিপিপি বাস্তবায়নের জটিলতায় প্রকল্পটি আটকে আছে।
রেলওয়ে সূত্র জানা যায়, রেলওয়ের অব্যবহৃত জমিতে পিপিপি’র আওতায় ১৫টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর একটি ছিলো সৈয়দপুরে রেলওয়ে প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ পিপিপিভুক্ত এসব প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও রেলপথ মন্ত্রণালয়ে কোন পিপিপি সেল গঠন করা হয়নি। এমনকি পিপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োগ বা তৈরি করা হয়নি কোন এক্সপার্ট। ফলে পিপিপি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জটিলতায় প্রকল্পগুলোর কোন অগ্রগতি হয়নি। এতে করে বাস্তবায়ন পর্যায়ে আসেনি রেলওয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ পিপিপি’র প্রকল্প সমূহ।
সূত্র মতে, সৈয়দপুরসহ সারাদেশে অব্যবহৃত জমির মাধ্যমে রেলওয়ের আয় বাড়াতে ২০১৭ সালে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) ১৫টি বাণিজ্যিক ও সেবামূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। পিপিপি’র আওতায় নেয়া ১২টি প্রকল্প অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় অনুমোদনও দেয়া হয়। বাকি ৩টি প্রকল্পও অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রথম দফায় পিপিপিভুক্ত ১৫টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সৈয়দপুরে রেলওয়ে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সৈয়দপুর, খুলনা, পাকশী ও ঢাকায় রেলওয়ে কর্মচারীদের ৪টি হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে উন্নীতকরণ, চট্টগ্রামে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ, জাতীয় ট্রেনিং ইনস্টিটিউট নির্মাণ, একটি পাঁচতারা হোটেল, একটি আধুনিক শপিংমল, হোটেল কাম রেস্ট হাউস, একটি আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে আইকনিক ভবন নির্মাণ, ঢাকা বিমানবন্দর ও কমলাপুর রেলস্টেশনে মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ, ঢাকা শহরের চারদিকে ৮২ কিলোমিটার বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণ ও গাজীপুরে আন্তর্জাতিক কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) নির্মাণ। এর মধ্যে সৈয়দপুর, খুলনা ও পাকশীতে রেলওয়ে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণে কেবল প্রকল্প কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এ কমিটির কোন সভায় হয়নি আজ পর্যন্ত। ফলে ৩টি মেডিকেল কলেজ নির্মাণ প্রকল্পের কোন অগ্রগতি হয়নি, বিষয়টি কমিটি গঠনের মধ্যে আটকে আছে। পিপিপিভুক্ত এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অনেক আগেই অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এর অন্য তিনটিও অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন। সূত্র মতে, পিপিপি গ্রহণের সাড়ে ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও আলোর মুখ দেখেনি একটি প্রকল্পও।
সম্প্রতি রেলপথ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে রেলওয়ের পিপিপিভুক্ত প্রকল্পসমূহ নিয়ে বিশদ পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, গত সাড়ে তিন বছরে পিপিপিতে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পগুলোর কোন অগ্রগতি নেই। এসব প্রকল্প কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা পর্যালোচনার সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য রেলওয়ের পৃথক কোন পিপিপি সেল না থাকার বিষয়টি উঠে আসে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য রেলওয়ের নিজস্ব পিপিপি সেল গঠন এবং তিন থেকে পাঁচ জনকে পিপিপি এক্সপার্ট হিসেবে তৈরি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বৈঠকে।
জানতে চাইলে, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার দায়িত্বশীল বিভাগীয় এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রেলওয়ে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষার দক্ষ জনবল তৈরির জন্য রেলওয়ে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয স্থাপন সময়ের দাবি। কারণ দেশে রেলওয়ে প্রযুক্তি শিক্ষার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। তবে পিপিপির আওতায় এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা একটি যুগান্তরকারী সিদ্ধান্ত। সূত্রটি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পিপিপিভুক্ত প্রকল্পসমূহ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণী বিষয়। মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প সম্পর্কে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন পর্যায়ে আসলেই কেবল কিছু বলা সম্ভব হবে।
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২০ , ৪ মাঘ ১৪২৬, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
কাজী জাহিদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
বাংলাদেশ রেলওয়ে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় গৃহীত সৈয়দপুরে রেলওয়ে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্প সাড়ে ৩ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। পিপিপি বাস্তবায়নের জটিলতায় প্রকল্পটি আটকে আছে।
রেলওয়ে সূত্র জানা যায়, রেলওয়ের অব্যবহৃত জমিতে পিপিপি’র আওতায় ১৫টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর একটি ছিলো সৈয়দপুরে রেলওয়ে প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ পিপিপিভুক্ত এসব প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও রেলপথ মন্ত্রণালয়ে কোন পিপিপি সেল গঠন করা হয়নি। এমনকি পিপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োগ বা তৈরি করা হয়নি কোন এক্সপার্ট। ফলে পিপিপি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জটিলতায় প্রকল্পগুলোর কোন অগ্রগতি হয়নি। এতে করে বাস্তবায়ন পর্যায়ে আসেনি রেলওয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ পিপিপি’র প্রকল্প সমূহ।
সূত্র মতে, সৈয়দপুরসহ সারাদেশে অব্যবহৃত জমির মাধ্যমে রেলওয়ের আয় বাড়াতে ২০১৭ সালে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) ১৫টি বাণিজ্যিক ও সেবামূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। পিপিপি’র আওতায় নেয়া ১২টি প্রকল্প অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় অনুমোদনও দেয়া হয়। বাকি ৩টি প্রকল্পও অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রথম দফায় পিপিপিভুক্ত ১৫টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সৈয়দপুরে রেলওয়ে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সৈয়দপুর, খুলনা, পাকশী ও ঢাকায় রেলওয়ে কর্মচারীদের ৪টি হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে উন্নীতকরণ, চট্টগ্রামে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ, জাতীয় ট্রেনিং ইনস্টিটিউট নির্মাণ, একটি পাঁচতারা হোটেল, একটি আধুনিক শপিংমল, হোটেল কাম রেস্ট হাউস, একটি আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে আইকনিক ভবন নির্মাণ, ঢাকা বিমানবন্দর ও কমলাপুর রেলস্টেশনে মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ, ঢাকা শহরের চারদিকে ৮২ কিলোমিটার বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণ ও গাজীপুরে আন্তর্জাতিক কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) নির্মাণ। এর মধ্যে সৈয়দপুর, খুলনা ও পাকশীতে রেলওয়ে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণে কেবল প্রকল্প কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এ কমিটির কোন সভায় হয়নি আজ পর্যন্ত। ফলে ৩টি মেডিকেল কলেজ নির্মাণ প্রকল্পের কোন অগ্রগতি হয়নি, বিষয়টি কমিটি গঠনের মধ্যে আটকে আছে। পিপিপিভুক্ত এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অনেক আগেই অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এর অন্য তিনটিও অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন। সূত্র মতে, পিপিপি গ্রহণের সাড়ে ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও আলোর মুখ দেখেনি একটি প্রকল্পও।
সম্প্রতি রেলপথ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে রেলওয়ের পিপিপিভুক্ত প্রকল্পসমূহ নিয়ে বিশদ পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, গত সাড়ে তিন বছরে পিপিপিতে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পগুলোর কোন অগ্রগতি নেই। এসব প্রকল্প কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা পর্যালোচনার সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য রেলওয়ের পৃথক কোন পিপিপি সেল না থাকার বিষয়টি উঠে আসে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য রেলওয়ের নিজস্ব পিপিপি সেল গঠন এবং তিন থেকে পাঁচ জনকে পিপিপি এক্সপার্ট হিসেবে তৈরি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বৈঠকে।
জানতে চাইলে, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার দায়িত্বশীল বিভাগীয় এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রেলওয়ে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষার দক্ষ জনবল তৈরির জন্য রেলওয়ে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয স্থাপন সময়ের দাবি। কারণ দেশে রেলওয়ে প্রযুক্তি শিক্ষার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। তবে পিপিপির আওতায় এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা একটি যুগান্তরকারী সিদ্ধান্ত। সূত্রটি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পিপিপিভুক্ত প্রকল্পসমূহ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণী বিষয়। মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প সম্পর্কে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন পর্যায়ে আসলেই কেবল কিছু বলা সম্ভব হবে।