নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যা : চার আসামির ফাঁসি ১ ফেব্রুয়ারি

ভারতের আলোচিত প্যারামেডিক শিক্ষার্থী নির্ভয়ার ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষীদের বিরুদ্ধে নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে দিল্লির আদালত। এ ঘটনায় ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত চার আসামির ২২ জানুয়ারির পরিবর্তে ১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় ফাঁসি কার্যকর করতে গতকাল তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। এনডিটিভি।

গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্ট দোষী বিনয় শর্মা, মুকেশ সিং, অক্ষয় কুমার সিং এবং পবন গুপ্তকে আগামী ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় তিহার কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয়। গতকাল দিল্লির আদালত এই চার আসামির মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার আগে নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুকেশ সিংয়ের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ। ফলে মুকেশসহ অন্য তিন আসামিদের ফাঁসি কার্যকরে আইনগত আর কোন বাঁধা নেই বলে জানান আদালত। দেশটির সম্প্রচার মাধ্যম এনডিটিভি গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, ভারতসহ সারা বিশ্বজুড়ে এ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে সাত বছর পর চার আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়। আর বাসটির চালক রাম সিং কারাগারে আত্মহত্যা করে। অপর এক আসামি অপরাধের সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় তিন বছর সংশোধন কেন্দ্রে থাকার পর মুক্তি পায়।

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে দিল্লির আদালত। ওই পরোয়ানা অনুযায়ী, ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় তাদের ফাঁসি কার্যকর করার কথা ছিল। তবে গত ৯ জানুয়ারি চার আসামির দু’জন মুকেশ সিং ও বিনয় শর্মা সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেন। ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার সেই পিটিশন খারিজ করে দেয় আদালত। সেদিনই প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানায় মুকেশ সিং। ফলে আটকে যায় তাদের ফাঁসি। এরই ধারাবিহকতায় গতকাল রাষ্ট্রপতি মুকেশের আবেদন খারিজ করে দেয়ার পর তাই নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করল আদালত। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ক্ষমার আবেদন নাকচ করে দিলে কোনো অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে ১৪ দিনের নোটিশ দিতে হয়। সেই আইন অনুযায়ী আগামী মাসে কার্যকর করতে হচ্ছে চার আসামির ফাঁসি।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই মেডিকেল শিক্ষার্থী। ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘নির্ভয়া’ স্বীকৃতি দেয়া ওই শিক্ষার্থী ১৩ দিন পর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে বিক্ষোভকারীদের চাপে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে আইন পরিবর্তনেও বাধ্য হয় ভারত সরকার।

শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২০ , ৪ মাঘ ১৪২৬, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ভারতে

নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যা : চার আসামির ফাঁসি ১ ফেব্রুয়ারি

সংবাদ ডেস্ক |

ভারতের আলোচিত প্যারামেডিক শিক্ষার্থী নির্ভয়ার ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষীদের বিরুদ্ধে নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে দিল্লির আদালত। এ ঘটনায় ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত চার আসামির ২২ জানুয়ারির পরিবর্তে ১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় ফাঁসি কার্যকর করতে গতকাল তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। এনডিটিভি।

গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্ট দোষী বিনয় শর্মা, মুকেশ সিং, অক্ষয় কুমার সিং এবং পবন গুপ্তকে আগামী ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় তিহার কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয়। গতকাল দিল্লির আদালত এই চার আসামির মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার আগে নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুকেশ সিংয়ের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ। ফলে মুকেশসহ অন্য তিন আসামিদের ফাঁসি কার্যকরে আইনগত আর কোন বাঁধা নেই বলে জানান আদালত। দেশটির সম্প্রচার মাধ্যম এনডিটিভি গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, ভারতসহ সারা বিশ্বজুড়ে এ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে সাত বছর পর চার আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়। আর বাসটির চালক রাম সিং কারাগারে আত্মহত্যা করে। অপর এক আসামি অপরাধের সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় তিন বছর সংশোধন কেন্দ্রে থাকার পর মুক্তি পায়।

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে দিল্লির আদালত। ওই পরোয়ানা অনুযায়ী, ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় তাদের ফাঁসি কার্যকর করার কথা ছিল। তবে গত ৯ জানুয়ারি চার আসামির দু’জন মুকেশ সিং ও বিনয় শর্মা সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেন। ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার সেই পিটিশন খারিজ করে দেয় আদালত। সেদিনই প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানায় মুকেশ সিং। ফলে আটকে যায় তাদের ফাঁসি। এরই ধারাবিহকতায় গতকাল রাষ্ট্রপতি মুকেশের আবেদন খারিজ করে দেয়ার পর তাই নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করল আদালত। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ক্ষমার আবেদন নাকচ করে দিলে কোনো অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে ১৪ দিনের নোটিশ দিতে হয়। সেই আইন অনুযায়ী আগামী মাসে কার্যকর করতে হচ্ছে চার আসামির ফাঁসি।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই মেডিকেল শিক্ষার্থী। ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘নির্ভয়া’ স্বীকৃতি দেয়া ওই শিক্ষার্থী ১৩ দিন পর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে বিক্ষোভকারীদের চাপে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে আইন পরিবর্তনেও বাধ্য হয় ভারত সরকার।