প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯

নাহিদা ফারজানা কলি

ঘটনা ১ : ‘দুই দিনে তিনটি কুকুরকে হত্যা আর আটটি কুকুরকে গুম করার অভিযোগ পেয়ে তার তদন্তে নেমেছে ঢাকার খিলক্ষেত থানা পুলিশ। এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিটি কুকুরের মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। এছাড়াও আরও আটটি কুকুর নিখোঁজ রয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, এগুলোকে হত্যার পর গুম করা হয়েছে।’

ঘটনা ২ : ‘নারায়ণগঞ্জ বন্দরের মদনগঞ্জ বসুন্ধরা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে রাব্বি হাসানের বেশ কয়েকটি কবুতর গত ১৩ ও ২৩ অক্টোবর ২০১৯ বিড়ালে মেরে ফেলে। এতে করে সে ক্ষিপ্ত হয়ে বিড়ালটিকে ধরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে এবং হত্যার ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ফেসবুকের পোস্টটি বাংলাদেশ এএলবি অ্যানিম্যাল সেন্টার অর্গানাইজেশনের চোখে পড়ে। এ ঘটনায় এএলবি কর্তৃপক্ষ রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে। পরে তারা থানায় এসে প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯ ধারার ৭-এর ২ নম্বর উপধারায় মামলা দায়ের করেন।’

আইনের আশ্রয় লাভে প্রাণীর প্রতি যে অবিচার তা ধীরে ধীরে বন্ধ হবে- এ আশা আমাদের সবার। যেহেতু আগের আইনের তুলনায় এ নতুন আইনে শাস্তির মাত্রা বেশি, তাই অপরাধীর বিচার আশানুরূপ হবে, ফলে আর কেউ এ অবলা প্রাণীকে ক্ষতি করতে চেষ্টা করবে না-এ আশাই করছি

উপরিউক্ত ঘটনা দুটি, প্রাণীর প্রতি অত্যাচারের প্রতিচ্ছবি স্বরূপ। পত্রিকার পাতায় ঘটনা দুটি উঠে এলেও, প্রাণীর ওপর অন্যায়-অবিচারের দৃষ্টান্ত বিরল নয়। মালিকহীন প্রাণীগুলো নানা অবহেলা, নির্যাতনের শিকার হয় অহরহ। কিন্তু যে প্রাণী পোষা এবং যার মালিক আছে তাদের তত্ত্বাবধায়ন কতটুকু ঠিকভাবে হয়, তাও প্রশ্নবিদ্ধ। বোবা প্রাণী বলে হেয় প্রতিপন্ন করা হলেও, ওদেরও দুঃখ-কষ্টের অনভূতি আছে, ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। সমাজে তাই প্রাণী কল্যাণ সুনিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম এবং প্রাণীরা তুচ্ছ নয় বিধায় প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯ পাস একটি অত্যন্ত ভালো পদক্ষেপ।

প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিরোধ আইন, ১৯২০-এ প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের জন্য শাস্তি ছিল খুবই নগণ্য। নিষ্ঠুরতার পরিবর্তে প্রাণীর মালিকদের ইতিবাচক ও সদয় আচরণ প্রদর্শন করতে এই আইনটি রহিত করে ‘প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯’ অনুমোদন দেয়া হয়, যেখানে উদ্দেশ্য হলো- প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ করা, সদয় আচরণ প্রদর্শন করা ও দায়িত্বশীল প্রতিপালনের মাধ্যমে প্রাণী কল্যাণ নিশ্চিত করা।

নতুন প্রাণী কল্যাণ বিলের বিষয়ে প্রাণী কল্যাণ সংগঠন অ্যানিমেল লাভার্স অব বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী দ্বীপান্বিতা হৃদি বলেন, প্রাণীদের ওপর নিষ্ঠুর আচরণের জন্য আইন অনুযায়ী যে কোন পদক্ষেপ নিতে পারবেন প্রাণী অধিকারকর্মীরা, যেটা আগে খুবই কঠিন ছিল। তিনি আরও বলেন, প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিয়ে পুলিশ আগে এতটা সচেতন ছিল না। এখন পুলিশ এ বিষয়ে আরও সচেতন হবে এবং গুরুত্ব দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। এই আইন পাশ করানোর পেছনে প্রাণী কল্যাণ সংস্থা অভয়ারণ্যের প্রতিষ্ঠাতা রুবাইয়া আহমেদের অক্লান্ত পরিশ্রমকে সাধুবাদ জানান তিনি।

২০১৯ সালের এই আইনটির তাৎপর্য ব্যাপক। প্রাণী বলতে বোঝানো হয়েছে, মানুষ ব্যতীত সব স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, সরীসৃপজাতীয় প্রাণী, মৎস্য ব্যতীত অন্যান্য জলজ প্রাণী এবং সরকার কর্তৃক গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা ঘোষিত অন্য কোন প্রাণী। এ আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রাণীর মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীর দায়িত্ব ওই প্রাণীর প্রতি কল্যাণকর ও মানবিক আচরণ করা। এছাড়া যৌক্তিক কারণ ছাড়া নিষ্ঠুর আচরণ থেকে বিরত থাকতে সুনির্দিষ্ট বিধানও রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাণীকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করানো বা অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রহার, প্রয়োজনীয় খাদ্য না দেয়া, বসবাসের যথাযথ ব্যবস্থা না করা, ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগ, আহত প্রাণীর চিকিৎসা না করা, অনুমোদন ছাড়া বিনোদন বা ক্রীড়ায় ব্যবহারকে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ হিসেবে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, কোন ব্যক্তি মালিকবিহীন কোনো প্রাণীকে হত্যা করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। ফলে রাস্তার কোন কুকুরকে হত্যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কোনো প্রাণী যদি সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়ে, তাহলে সেই প্রাণী উদ্ধারের জন্য ক্ষেত্রমতো থানা, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সহায়তা প্রদান করতে পারবেন। পোষা প্রাণীর বাণিজ্যিক উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে নিবন্ধন, নিষ্ঠুরতা বা অন্য কোন কারণে আহত প্রাণীর চিকিৎসা এবং তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থারও বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া উল্লিখিত বিধান লঙ্ঘনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে বিচার ও সুনির্দিষ্ট শাস্তির ব্যবস্থার বিধান করা হয়েছে।

মোবাইল কোর্ট এই আইনের অধীন অপরাধের বিচার করতে পারবে, সংশ্লিষ্ট অপরাধসমূহ মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯-এর ৫৯ নম্বর আইন)-এর তফসিলভুক্ত হয়। এই আইনের অধীনে অপরাধ ঘটালে বা সহায়তা করলে, সর্বোচ্চ দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়ার বিধান করা হয়েছে অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

অবশেষে এ কথা বলতেই হয়, এ আইনটি পশুপ্রেমীদের জন্য একটি সুগম পথ তৈরি করে দিয়েছে, যার ফলে মালিকবিহীন প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতার প্রতিবাদ সহজ হবে। ২ নম্বর ঘটনাটা তারই প্রমাণ। আইনের আশ্রয় লাভে প্রাণীর প্রতি যে অবিচার তা ধীরে ধীরে বন্ধ হবে- এ আশা আমাদের সবার। যেহেতু আগের আইনের তুলনায় এ নতুন আইনে শাস্তির মাত্রা বেশি তাই, অপরাধীর বিচার আশানুরূপ হবে, ফলে আর কেউ এই অবলা প্রাণীকে ক্ষতি করতে চেষ্টা করবে না-এ আশাই করছি।

[সৌজন্যে : আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)]

শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২০ , ৪ মাঘ ১৪২৬, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯

নাহিদা ফারজানা কলি

ঘটনা ১ : ‘দুই দিনে তিনটি কুকুরকে হত্যা আর আটটি কুকুরকে গুম করার অভিযোগ পেয়ে তার তদন্তে নেমেছে ঢাকার খিলক্ষেত থানা পুলিশ। এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিটি কুকুরের মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। এছাড়াও আরও আটটি কুকুর নিখোঁজ রয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, এগুলোকে হত্যার পর গুম করা হয়েছে।’

ঘটনা ২ : ‘নারায়ণগঞ্জ বন্দরের মদনগঞ্জ বসুন্ধরা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে রাব্বি হাসানের বেশ কয়েকটি কবুতর গত ১৩ ও ২৩ অক্টোবর ২০১৯ বিড়ালে মেরে ফেলে। এতে করে সে ক্ষিপ্ত হয়ে বিড়ালটিকে ধরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে এবং হত্যার ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ফেসবুকের পোস্টটি বাংলাদেশ এএলবি অ্যানিম্যাল সেন্টার অর্গানাইজেশনের চোখে পড়ে। এ ঘটনায় এএলবি কর্তৃপক্ষ রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে। পরে তারা থানায় এসে প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯ ধারার ৭-এর ২ নম্বর উপধারায় মামলা দায়ের করেন।’

আইনের আশ্রয় লাভে প্রাণীর প্রতি যে অবিচার তা ধীরে ধীরে বন্ধ হবে- এ আশা আমাদের সবার। যেহেতু আগের আইনের তুলনায় এ নতুন আইনে শাস্তির মাত্রা বেশি, তাই অপরাধীর বিচার আশানুরূপ হবে, ফলে আর কেউ এ অবলা প্রাণীকে ক্ষতি করতে চেষ্টা করবে না-এ আশাই করছি

উপরিউক্ত ঘটনা দুটি, প্রাণীর প্রতি অত্যাচারের প্রতিচ্ছবি স্বরূপ। পত্রিকার পাতায় ঘটনা দুটি উঠে এলেও, প্রাণীর ওপর অন্যায়-অবিচারের দৃষ্টান্ত বিরল নয়। মালিকহীন প্রাণীগুলো নানা অবহেলা, নির্যাতনের শিকার হয় অহরহ। কিন্তু যে প্রাণী পোষা এবং যার মালিক আছে তাদের তত্ত্বাবধায়ন কতটুকু ঠিকভাবে হয়, তাও প্রশ্নবিদ্ধ। বোবা প্রাণী বলে হেয় প্রতিপন্ন করা হলেও, ওদেরও দুঃখ-কষ্টের অনভূতি আছে, ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। সমাজে তাই প্রাণী কল্যাণ সুনিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম এবং প্রাণীরা তুচ্ছ নয় বিধায় প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯ পাস একটি অত্যন্ত ভালো পদক্ষেপ।

প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিরোধ আইন, ১৯২০-এ প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের জন্য শাস্তি ছিল খুবই নগণ্য। নিষ্ঠুরতার পরিবর্তে প্রাণীর মালিকদের ইতিবাচক ও সদয় আচরণ প্রদর্শন করতে এই আইনটি রহিত করে ‘প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯’ অনুমোদন দেয়া হয়, যেখানে উদ্দেশ্য হলো- প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ করা, সদয় আচরণ প্রদর্শন করা ও দায়িত্বশীল প্রতিপালনের মাধ্যমে প্রাণী কল্যাণ নিশ্চিত করা।

নতুন প্রাণী কল্যাণ বিলের বিষয়ে প্রাণী কল্যাণ সংগঠন অ্যানিমেল লাভার্স অব বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী দ্বীপান্বিতা হৃদি বলেন, প্রাণীদের ওপর নিষ্ঠুর আচরণের জন্য আইন অনুযায়ী যে কোন পদক্ষেপ নিতে পারবেন প্রাণী অধিকারকর্মীরা, যেটা আগে খুবই কঠিন ছিল। তিনি আরও বলেন, প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিয়ে পুলিশ আগে এতটা সচেতন ছিল না। এখন পুলিশ এ বিষয়ে আরও সচেতন হবে এবং গুরুত্ব দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। এই আইন পাশ করানোর পেছনে প্রাণী কল্যাণ সংস্থা অভয়ারণ্যের প্রতিষ্ঠাতা রুবাইয়া আহমেদের অক্লান্ত পরিশ্রমকে সাধুবাদ জানান তিনি।

২০১৯ সালের এই আইনটির তাৎপর্য ব্যাপক। প্রাণী বলতে বোঝানো হয়েছে, মানুষ ব্যতীত সব স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, সরীসৃপজাতীয় প্রাণী, মৎস্য ব্যতীত অন্যান্য জলজ প্রাণী এবং সরকার কর্তৃক গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা ঘোষিত অন্য কোন প্রাণী। এ আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রাণীর মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীর দায়িত্ব ওই প্রাণীর প্রতি কল্যাণকর ও মানবিক আচরণ করা। এছাড়া যৌক্তিক কারণ ছাড়া নিষ্ঠুর আচরণ থেকে বিরত থাকতে সুনির্দিষ্ট বিধানও রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাণীকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করানো বা অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রহার, প্রয়োজনীয় খাদ্য না দেয়া, বসবাসের যথাযথ ব্যবস্থা না করা, ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগ, আহত প্রাণীর চিকিৎসা না করা, অনুমোদন ছাড়া বিনোদন বা ক্রীড়ায় ব্যবহারকে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ হিসেবে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, কোন ব্যক্তি মালিকবিহীন কোনো প্রাণীকে হত্যা করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। ফলে রাস্তার কোন কুকুরকে হত্যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কোনো প্রাণী যদি সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়ে, তাহলে সেই প্রাণী উদ্ধারের জন্য ক্ষেত্রমতো থানা, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সহায়তা প্রদান করতে পারবেন। পোষা প্রাণীর বাণিজ্যিক উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে নিবন্ধন, নিষ্ঠুরতা বা অন্য কোন কারণে আহত প্রাণীর চিকিৎসা এবং তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থারও বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া উল্লিখিত বিধান লঙ্ঘনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে বিচার ও সুনির্দিষ্ট শাস্তির ব্যবস্থার বিধান করা হয়েছে।

মোবাইল কোর্ট এই আইনের অধীন অপরাধের বিচার করতে পারবে, সংশ্লিষ্ট অপরাধসমূহ মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯-এর ৫৯ নম্বর আইন)-এর তফসিলভুক্ত হয়। এই আইনের অধীনে অপরাধ ঘটালে বা সহায়তা করলে, সর্বোচ্চ দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়ার বিধান করা হয়েছে অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

অবশেষে এ কথা বলতেই হয়, এ আইনটি পশুপ্রেমীদের জন্য একটি সুগম পথ তৈরি করে দিয়েছে, যার ফলে মালিকবিহীন প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতার প্রতিবাদ সহজ হবে। ২ নম্বর ঘটনাটা তারই প্রমাণ। আইনের আশ্রয় লাভে প্রাণীর প্রতি যে অবিচার তা ধীরে ধীরে বন্ধ হবে- এ আশা আমাদের সবার। যেহেতু আগের আইনের তুলনায় এ নতুন আইনে শাস্তির মাত্রা বেশি তাই, অপরাধীর বিচার আশানুরূপ হবে, ফলে আর কেউ এই অবলা প্রাণীকে ক্ষতি করতে চেষ্টা করবে না-এ আশাই করছি।

[সৌজন্যে : আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)]