লক্ষ্যপূরণ হয়নি কৃষিঋণ বিতরণে

অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কৃষিঋণ বিতরণে লক্ষ্যপূরণ হয়নি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুন-ডিসেম্বর ছয় মাসে ১২ হাজার ৬২ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করার কথা। এর বিপরীতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ১০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। কিছু ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার বেশি বিতরণ করলেও বেসরকারি অনেক ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ফলে সার্বিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ঋণ বিতরণ শুরুই করতে পারেনি এমন ব্যাংকও রয়েছে।

জানা যায়, খাদ্য নিরাপত্তা ও পল্লী অঞ্চলে দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে সব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের দুই ভাগ কৃষকদের মাঝে বিতরণের লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশি-বিদেশি ৪৬টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ছয় মাসে কৃষিঋণ বিতরণ করার কথা ছিল ছয় হাজার ৮৭৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে তারা বিতরণ করেছে পাঁচ হাজার ৩৭২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৫০২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ২২ শতাংশ কম। তবে সরকারি ব্যাংকগুলো এ ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত আট বাণিজ্যিক ব্যাংক পাঁচ হাজার ১৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ করেছে পাঁচ হাজার ৪২৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বিডিবিএল ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসরকারি খাতের ইস্টার্ন ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া।

বিদেশি হাবিব ব্যাংক ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে, একক ব্যাংক হিসেবে বিদেশি দুই বাণিজ্যিক উরি ব্যাংক ও কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন কৃষিঋণ বিতরণ শুরুই করেনি। আর শুরু করলেও নামমাত্র কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংক আল-ফালাহ, সিটি ব্যাংক ও বিশেষায়িত সীমান্ত ব্যাংক। এসব ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণের হার এক শতাংশের নিচে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক বছর শেষে এসে কোন এনজিও বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করে। এর ফলে কৃষকের কাছে ঋণ গেলেও তা দেরিতে যায়। এর ফলে কৃষকের সঠিক কাজে লাগে না।

জানা গেছে, দুই শতাংশের নিচে কৃষিঋণ বিতরণে ব্যর্থ হলে ওই ব্যাংককে জরিমানা দিতে হয়। এজন্য কোন ব্যাংক নিজের শাখার মাধ্যমে বিতরণে ব্যর্থ হলেও অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আশ্রয় নেয়। এর ফলে প্রতি বছর কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ছে। ২০০৯ সালে যেখানে কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল নয় হাজার কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০ , ৬ মাঘ ১৪২৬, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

অর্থবছরের প্রথমার্ধ

লক্ষ্যপূরণ হয়নি কৃষিঋণ বিতরণে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কৃষিঋণ বিতরণে লক্ষ্যপূরণ হয়নি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুন-ডিসেম্বর ছয় মাসে ১২ হাজার ৬২ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করার কথা। এর বিপরীতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ১০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। কিছু ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার বেশি বিতরণ করলেও বেসরকারি অনেক ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ফলে সার্বিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ঋণ বিতরণ শুরুই করতে পারেনি এমন ব্যাংকও রয়েছে।

জানা যায়, খাদ্য নিরাপত্তা ও পল্লী অঞ্চলে দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে সব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের দুই ভাগ কৃষকদের মাঝে বিতরণের লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশি-বিদেশি ৪৬টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ছয় মাসে কৃষিঋণ বিতরণ করার কথা ছিল ছয় হাজার ৮৭৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে তারা বিতরণ করেছে পাঁচ হাজার ৩৭২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৫০২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ২২ শতাংশ কম। তবে সরকারি ব্যাংকগুলো এ ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত আট বাণিজ্যিক ব্যাংক পাঁচ হাজার ১৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ করেছে পাঁচ হাজার ৪২৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বিডিবিএল ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসরকারি খাতের ইস্টার্ন ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া।

বিদেশি হাবিব ব্যাংক ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে, একক ব্যাংক হিসেবে বিদেশি দুই বাণিজ্যিক উরি ব্যাংক ও কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন কৃষিঋণ বিতরণ শুরুই করেনি। আর শুরু করলেও নামমাত্র কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংক আল-ফালাহ, সিটি ব্যাংক ও বিশেষায়িত সীমান্ত ব্যাংক। এসব ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণের হার এক শতাংশের নিচে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক বছর শেষে এসে কোন এনজিও বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করে। এর ফলে কৃষকের কাছে ঋণ গেলেও তা দেরিতে যায়। এর ফলে কৃষকের সঠিক কাজে লাগে না।

জানা গেছে, দুই শতাংশের নিচে কৃষিঋণ বিতরণে ব্যর্থ হলে ওই ব্যাংককে জরিমানা দিতে হয়। এজন্য কোন ব্যাংক নিজের শাখার মাধ্যমে বিতরণে ব্যর্থ হলেও অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আশ্রয় নেয়। এর ফলে প্রতি বছর কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ছে। ২০০৯ সালে যেখানে কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল নয় হাজার কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।