পটুয়াখালীর বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষা ফাতরার বনাঞ্চল এখন পর্যটকদের ভ্রমণের অন্যতম পর্যটন স্পট। শীত মৌসুমে সাগর শান্ত থাকায় কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা শতশত পর্যটক সাগর পথে ভিড় করছে ফাতরার ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। এখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরুপ দৃশ্য উপভোগ ছাড়াও পর্যটকরা উপভোগ করতে পারছেন এ বনাঞ্চলের বিভিন্ন প্রাণীর চঞ্চলতা। কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে তালতলী থানার পূর্ব সীমান্ত পর্যন্ত বিশাল এ বনাঞ্চল।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফাতরার চরের মোট আয়তন ৯ হাজার ৬৭৫ দশমিক ১৪ একর। এ বনাঞ্চলে সুন্দরী, কেওড়া, ছইলা, গেওয়া, তাল, গজারি, বাইন, গোলপাতা, হোগল পাতা, কেওয়া পাতা, হেতাল গাছসহ গুল্ম জাতীয় বৃক্ষ সমারোহ রয়েছে। এ বনে রয়েছে বানর, কাঠবিড়ালী, বন মোরগ, শিয়াল, বাঘদাস, ভোঁদর, খরগোশ, অজগরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী। এছাড়া রয়েছে শতশত বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এ বনাঞ্চলের তীর ঘেষে ফকিরহাট ও সোনাকাটা চরের খাল, নিশানবাড়িয়ার খাল, বেহুলার খাল, দোনার খাল, ফেচুয়ার খাল, ছোট চরের খাল, বড় চরের খাল গইয়মতলার খালসহ ২০টি লেক রয়েছে। পর্যটকরা নৌকা ও ট্রলারে করে এ লেকে ঘুরেই বনাঞ্চলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।
পর্যটকদের বিনোদনের জন্য বিশাল এলাকাজুড়ে ইকোপার্ক তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া বনাঞ্চলের মধ্যে পর্যটকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে একাধিক পিকনিক স্পট। এ পিকনিক স্পটকে ঘিরে পর্যটকদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। শীত মৌসুমে পর্যটকদের আগমনে উৎসবমুখর ফাতড়ার বনাঞ্চলের পিকনিক স্পটগুলো। বন বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে গোটা বন ঘুরেও দেখার সুযোগ রয়েছে। ভাগ্য ভালো হলে চোখে পড়তে পারে বনাঞ্চলের বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু।
ফাতরার বনাঞ্চলে শিক্ষা সফরে ভ্রমণে আসা পর্যটক অমি, নিয়ন, রিফাত জানায়, তারা এবারই প্রথম এখানে এসেছেন। এরআগে ৭-৮ বার কুয়াকাটা আসলেও এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় তারা ৪০ জন এখানে পিকনিক করতে এসেছেন। এটা অসাধারণ ভ্রমণ স্পট। সবকিছুই যেন ছবির মতো সাজানো। বনাঞ্চলের সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অরিত্রী বলেন, সামনে বিশাল জলরাশি, পেছনে আকাশের সঙ্গে মিতালী করা বিশাল বিশাল সারি সারি বৃক্ষরাজি। নেই কোন কোলাহল। গাছের ওপর থেকে উঁকি দিচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। তাদের কলকাকলী ও প্রকৃতির সৌন্দর্য সবকিছু মিলিয়ে এটা একটা স্বর্গীয় উদ্যান। ফাতরার বনে রাত্রি যাপনের জন্য একটি রেস্ট হাউস ও গোল পাতার ছাউনী দেয়া ছোট ছোট কটেজ রয়েছে। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে পর্যটকরা এখানে রাত্রিযাপনও করতে পারবেন। ফাতরার বনাঞ্চল পর্যটকদের ঘুরে দেখানোর জন্য কুয়াকাটায় একাধিক ট্যুরিস্ট গাইড। তাদের নিজস্ব জলযান থাকায় ফাতরার বনাঞ্চল ঘুরে দেখতে কোন দুর্ভোগ পোহাতে হয় না পর্যটকদের।
কলাপাড়া ও তালতলী বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সরকার কুয়াকাটায় জাতীয় উদ্যান নির্মাণ করেছে। এছাড়া ফাতরার বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য গড়ে তুলছে। এ মৌসুমে সাগর শান্ত থাকায় এখন ফাতরার বনাঞ্চলে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে।
সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০ , ৬ মাঘ ১৪২৬, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষা ফাতরার বনাঞ্চল এখন পর্যটকদের ভ্রমণের অন্যতম পর্যটন স্পট। শীত মৌসুমে সাগর শান্ত থাকায় কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা শতশত পর্যটক সাগর পথে ভিড় করছে ফাতরার ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। এখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরুপ দৃশ্য উপভোগ ছাড়াও পর্যটকরা উপভোগ করতে পারছেন এ বনাঞ্চলের বিভিন্ন প্রাণীর চঞ্চলতা। কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে তালতলী থানার পূর্ব সীমান্ত পর্যন্ত বিশাল এ বনাঞ্চল।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফাতরার চরের মোট আয়তন ৯ হাজার ৬৭৫ দশমিক ১৪ একর। এ বনাঞ্চলে সুন্দরী, কেওড়া, ছইলা, গেওয়া, তাল, গজারি, বাইন, গোলপাতা, হোগল পাতা, কেওয়া পাতা, হেতাল গাছসহ গুল্ম জাতীয় বৃক্ষ সমারোহ রয়েছে। এ বনে রয়েছে বানর, কাঠবিড়ালী, বন মোরগ, শিয়াল, বাঘদাস, ভোঁদর, খরগোশ, অজগরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী। এছাড়া রয়েছে শতশত বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এ বনাঞ্চলের তীর ঘেষে ফকিরহাট ও সোনাকাটা চরের খাল, নিশানবাড়িয়ার খাল, বেহুলার খাল, দোনার খাল, ফেচুয়ার খাল, ছোট চরের খাল, বড় চরের খাল গইয়মতলার খালসহ ২০টি লেক রয়েছে। পর্যটকরা নৌকা ও ট্রলারে করে এ লেকে ঘুরেই বনাঞ্চলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।
পর্যটকদের বিনোদনের জন্য বিশাল এলাকাজুড়ে ইকোপার্ক তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া বনাঞ্চলের মধ্যে পর্যটকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে একাধিক পিকনিক স্পট। এ পিকনিক স্পটকে ঘিরে পর্যটকদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। শীত মৌসুমে পর্যটকদের আগমনে উৎসবমুখর ফাতড়ার বনাঞ্চলের পিকনিক স্পটগুলো। বন বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে গোটা বন ঘুরেও দেখার সুযোগ রয়েছে। ভাগ্য ভালো হলে চোখে পড়তে পারে বনাঞ্চলের বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু।
ফাতরার বনাঞ্চলে শিক্ষা সফরে ভ্রমণে আসা পর্যটক অমি, নিয়ন, রিফাত জানায়, তারা এবারই প্রথম এখানে এসেছেন। এরআগে ৭-৮ বার কুয়াকাটা আসলেও এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় তারা ৪০ জন এখানে পিকনিক করতে এসেছেন। এটা অসাধারণ ভ্রমণ স্পট। সবকিছুই যেন ছবির মতো সাজানো। বনাঞ্চলের সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অরিত্রী বলেন, সামনে বিশাল জলরাশি, পেছনে আকাশের সঙ্গে মিতালী করা বিশাল বিশাল সারি সারি বৃক্ষরাজি। নেই কোন কোলাহল। গাছের ওপর থেকে উঁকি দিচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। তাদের কলকাকলী ও প্রকৃতির সৌন্দর্য সবকিছু মিলিয়ে এটা একটা স্বর্গীয় উদ্যান। ফাতরার বনে রাত্রি যাপনের জন্য একটি রেস্ট হাউস ও গোল পাতার ছাউনী দেয়া ছোট ছোট কটেজ রয়েছে। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে পর্যটকরা এখানে রাত্রিযাপনও করতে পারবেন। ফাতরার বনাঞ্চল পর্যটকদের ঘুরে দেখানোর জন্য কুয়াকাটায় একাধিক ট্যুরিস্ট গাইড। তাদের নিজস্ব জলযান থাকায় ফাতরার বনাঞ্চল ঘুরে দেখতে কোন দুর্ভোগ পোহাতে হয় না পর্যটকদের।
কলাপাড়া ও তালতলী বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সরকার কুয়াকাটায় জাতীয় উদ্যান নির্মাণ করেছে। এছাড়া ফাতরার বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য গড়ে তুলছে। এ মৌসুমে সাগর শান্ত থাকায় এখন ফাতরার বনাঞ্চলে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে।