অর্ধেকের বেশি দৃশ্যমান পদ্মা সেতু

সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ, মূল সেতুর ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, নদী শাসন ৬৬ শতাংশ , সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া প্রায় শতভাগ

স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন অর্ধেকের বেশি দৃশ্যমান। পুরোদমে চলছে নির্মাণকাজ। পদ্মার দুই পাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এখন বাস্তবায়নের পথে। ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২২টি জেলার দূরত্ব কমে আসবে। অর্থনৈতিক অবস্থা ও জীবনমান আরও উন্নত হবে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে নিজস্ব অর্থায়নে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। বর্তমানে সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। এছাড়া নদী শাসনের কাজ ৬৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। এছাড়া মাওয়া সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ প্রায় শতভাগ শেষ হয়েছে। তবে জাজিরা প্রান্তে সংযোগ সড়কের কিছু কাজ বাকি আছে। এই অংশে ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছে ২১তম স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো)। সেতুর ৩২ ও ৩৩ নাম্বার পিয়ারে এই স্প্যানটি বসানো হয়। এর মাধ্যমের সেতুর ৩ হাজার ১৫০ মিটার বা প্রায় সোয়া ৩ কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। চলতি মাসে আরও দু’টি স্প্যান বসানোর কথা রয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি ২২তম স্প্যান ও ৩০ জানুয়ারি ২৩তম স্প্যান বসানো হবে। এর ফলে সেতুর ৩ হাজার ৪৫০ মিটার বা প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হবে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়।

সূত্রমতে, ২০২১ সালের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করা লক্ষ্যে পুরোদমে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। সেতুর ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩৬টি পুরোপুরি শেষ হয়েছে। বাকি ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭ ও ২৯ নাম্বারের এই ৬টি পিয়ার চলতি বছরের জুনের মধ্যে শেষ হবে। ৪২টি পিয়ারে বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। গত ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ২১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। মাওয়ায় কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ১৩ স্প্যান তৈরি করা হয়েছে। বাকি ৮টি স্প্যান চীন থেকে মাওয়ায় আনা হবে। স্প্যানের ওপর রোড ও রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো কাজ চলছে। পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। প্রতিদিন গড়ে ছয় থেকে সাতটি রোড স্ল্যাব বসানো হয়। এ পর্যন্ত ৪৯৯টি রেলওয়ে স্ল্যাব ও ১৮৭টি রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালের জুনের পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এখন থেকে প্রতি মাসে সেতুর তিনটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সে হিসেবে চলতি বছরেই শেষ হয়ে যাবে সেতুর সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ। এছাড়া চলতি মাসের জুনের মধ্যে সেতুর পিয়ার নির্মাণকাজ শেষ হবে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, সেতুর ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩৬টি পিয়ার নির্মাণ শেষ হয়েছে। এখনও ৬টি পিয়ার নির্মাণ বাকি আছে। পিয়ার পাইল করার সময় নদীর তলদেশে কাদামাটির স্তর ধরা পড়ায় ১৪ পিয়ারের নতুন করে নকশা করতে হয়েছিল। এই ১৪টি পিয়ারের এখনো ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭ ও ২৯ নাম্বারের এই ৬টি পিয়ার নির্মাণ বাকি আছে। এছাড়া ৬, ৭, ৯, ১২, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৫ নাম্বার পিয়ার নির্মাণ শেষ হয়েছে। এই পিয়ারে একটি করে পাইল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেতুর নতুন নকশায় ১৪টি পিয়ারের জন্য ৭টি করে পাইল করার পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। সমস্যা সমাধানে কাজ করে ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউই (সিওডব্লিউআই) ইউকে লিমিটেড। ইতোমধ্যে ৬,৭ ও ৩২ নাম্বার পিয়ারে স্প্যান বসানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পদ্মাসেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বিশেষ পদ্ধতিতে নদীর তলদেশে মাটির গুণগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে এখানে পিয়ার গেঁথে রাখা হয়েছে। এমন পদ্ধতি বাংলাদেশেই প্রথম এবং বিশ্বেও খুব একটা নজির নেই। পাইলের সঙ্গে স্টিলের ছোট ছোট পাইপ ওয়েল্ডিং করে দেয়া হয়েছে। আর পাইপের ভেতর দিয়ে এক ধরনের কেমিক্যাল পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে নদীর তলদেশের মাটিতে। ফলে তলদেশের মাটি শক্ত রূপ ধারণ করে। এরপর এসব পাইল ভার বহনের সক্ষমতা অর্জন করে। এ পদ্ধতিটির নাম স্কিন গ্রাউটিং ।

প্রকল্প সূত্র জানায়, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প ২০০৭ সালে একনেকে অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১১ সালে সেতুতে রেলপথ সংযুক্ত করে প্রথম দফায় দ্বিগুণের বেশি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। ২০১৬ দ্বিতীয় দফায় ব্যয় বৃদ্ধি করা হয় সালে। তখন ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তৃতীয় দফায় ২০১৮ সালে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। চতুর্থ দফায় আরও ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের সময় ২১ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ১৪ পিয়ারের পাইলিং সমস্যা নতুন ডিজাইনে চূড়ান্ত করতে অনেক সময় চলে যায় তাই নির্মাণ সময় ১ বছর বৃদ্ধি ২০১৯ সালে ৩০ ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে ১ বছর ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধির সুপারিশ করে ডিপিপি সংশোধনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সে হিসেবে প্রকল্পেন নির্মাণকাজ শেষ হবে ২০২১ সালের জুনে। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। আর চীনেরই সিনো হাইড্রো করপোরেশন করছে নদীশাসনের কাজ। পদ্মা সেতু দ্বিতলবিশিষ্ট। নিচতলায় অর্থাৎ স্টিলের স্প্যানের ভেতর দিয়ে রেল চলবে। মিটারগেজ ও ব্রডগেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলতে পারবে। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। এজন্য স্টিলের কাঠামোর ওপরে কংক্রিটের স্ল্যাব বসাতে হবে। ওপরের এই অংশ চওড়ায় ২২ মিটার, চার লেনের সড়কের সমান। এছাড়া সেতু দিয়ে ৭৬০ মিলিমিটার ব্যসের গ্যাসের পাইপলাইন বসানোর কথা রয়েছে। ১৫০ মিলিমিটার ব্যসের ফাইবার অপটিক ও টেলিফোন লাইনের পাইপের ব্যবস্থা রয়েছে।

সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০ , ৬ মাঘ ১৪২৬, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

অর্ধেকের বেশি দৃশ্যমান পদ্মা সেতু

সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ, মূল সেতুর ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, নদী শাসন ৬৬ শতাংশ , সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া প্রায় শতভাগ

মাহমুদ আকাশ

image

স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন অর্ধেকের বেশি দৃশ্যমান। পুরোদমে চলছে নির্মাণকাজ। পদ্মার দুই পাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এখন বাস্তবায়নের পথে। ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২২টি জেলার দূরত্ব কমে আসবে। অর্থনৈতিক অবস্থা ও জীবনমান আরও উন্নত হবে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে নিজস্ব অর্থায়নে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। বর্তমানে সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। এছাড়া নদী শাসনের কাজ ৬৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। এছাড়া মাওয়া সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ প্রায় শতভাগ শেষ হয়েছে। তবে জাজিরা প্রান্তে সংযোগ সড়কের কিছু কাজ বাকি আছে। এই অংশে ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছে ২১তম স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো)। সেতুর ৩২ ও ৩৩ নাম্বার পিয়ারে এই স্প্যানটি বসানো হয়। এর মাধ্যমের সেতুর ৩ হাজার ১৫০ মিটার বা প্রায় সোয়া ৩ কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। চলতি মাসে আরও দু’টি স্প্যান বসানোর কথা রয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি ২২তম স্প্যান ও ৩০ জানুয়ারি ২৩তম স্প্যান বসানো হবে। এর ফলে সেতুর ৩ হাজার ৪৫০ মিটার বা প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হবে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়।

সূত্রমতে, ২০২১ সালের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করা লক্ষ্যে পুরোদমে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। সেতুর ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩৬টি পুরোপুরি শেষ হয়েছে। বাকি ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭ ও ২৯ নাম্বারের এই ৬টি পিয়ার চলতি বছরের জুনের মধ্যে শেষ হবে। ৪২টি পিয়ারে বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। গত ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ২১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। মাওয়ায় কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ১৩ স্প্যান তৈরি করা হয়েছে। বাকি ৮টি স্প্যান চীন থেকে মাওয়ায় আনা হবে। স্প্যানের ওপর রোড ও রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো কাজ চলছে। পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। প্রতিদিন গড়ে ছয় থেকে সাতটি রোড স্ল্যাব বসানো হয়। এ পর্যন্ত ৪৯৯টি রেলওয়ে স্ল্যাব ও ১৮৭টি রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালের জুনের পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এখন থেকে প্রতি মাসে সেতুর তিনটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সে হিসেবে চলতি বছরেই শেষ হয়ে যাবে সেতুর সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ। এছাড়া চলতি মাসের জুনের মধ্যে সেতুর পিয়ার নির্মাণকাজ শেষ হবে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, সেতুর ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩৬টি পিয়ার নির্মাণ শেষ হয়েছে। এখনও ৬টি পিয়ার নির্মাণ বাকি আছে। পিয়ার পাইল করার সময় নদীর তলদেশে কাদামাটির স্তর ধরা পড়ায় ১৪ পিয়ারের নতুন করে নকশা করতে হয়েছিল। এই ১৪টি পিয়ারের এখনো ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭ ও ২৯ নাম্বারের এই ৬টি পিয়ার নির্মাণ বাকি আছে। এছাড়া ৬, ৭, ৯, ১২, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৫ নাম্বার পিয়ার নির্মাণ শেষ হয়েছে। এই পিয়ারে একটি করে পাইল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেতুর নতুন নকশায় ১৪টি পিয়ারের জন্য ৭টি করে পাইল করার পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। সমস্যা সমাধানে কাজ করে ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউই (সিওডব্লিউআই) ইউকে লিমিটেড। ইতোমধ্যে ৬,৭ ও ৩২ নাম্বার পিয়ারে স্প্যান বসানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পদ্মাসেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বিশেষ পদ্ধতিতে নদীর তলদেশে মাটির গুণগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে এখানে পিয়ার গেঁথে রাখা হয়েছে। এমন পদ্ধতি বাংলাদেশেই প্রথম এবং বিশ্বেও খুব একটা নজির নেই। পাইলের সঙ্গে স্টিলের ছোট ছোট পাইপ ওয়েল্ডিং করে দেয়া হয়েছে। আর পাইপের ভেতর দিয়ে এক ধরনের কেমিক্যাল পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে নদীর তলদেশের মাটিতে। ফলে তলদেশের মাটি শক্ত রূপ ধারণ করে। এরপর এসব পাইল ভার বহনের সক্ষমতা অর্জন করে। এ পদ্ধতিটির নাম স্কিন গ্রাউটিং ।

প্রকল্প সূত্র জানায়, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প ২০০৭ সালে একনেকে অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১১ সালে সেতুতে রেলপথ সংযুক্ত করে প্রথম দফায় দ্বিগুণের বেশি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। ২০১৬ দ্বিতীয় দফায় ব্যয় বৃদ্ধি করা হয় সালে। তখন ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তৃতীয় দফায় ২০১৮ সালে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। চতুর্থ দফায় আরও ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের সময় ২১ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ১৪ পিয়ারের পাইলিং সমস্যা নতুন ডিজাইনে চূড়ান্ত করতে অনেক সময় চলে যায় তাই নির্মাণ সময় ১ বছর বৃদ্ধি ২০১৯ সালে ৩০ ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে ১ বছর ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধির সুপারিশ করে ডিপিপি সংশোধনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সে হিসেবে প্রকল্পেন নির্মাণকাজ শেষ হবে ২০২১ সালের জুনে। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। আর চীনেরই সিনো হাইড্রো করপোরেশন করছে নদীশাসনের কাজ। পদ্মা সেতু দ্বিতলবিশিষ্ট। নিচতলায় অর্থাৎ স্টিলের স্প্যানের ভেতর দিয়ে রেল চলবে। মিটারগেজ ও ব্রডগেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলতে পারবে। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। এজন্য স্টিলের কাঠামোর ওপরে কংক্রিটের স্ল্যাব বসাতে হবে। ওপরের এই অংশ চওড়ায় ২২ মিটার, চার লেনের সড়কের সমান। এছাড়া সেতু দিয়ে ৭৬০ মিলিমিটার ব্যসের গ্যাসের পাইপলাইন বসানোর কথা রয়েছে। ১৫০ মিলিমিটার ব্যসের ফাইবার অপটিক ও টেলিফোন লাইনের পাইপের ব্যবস্থা রয়েছে।