রাশিয়ায় গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ সংবিধান অনুযায়ী, টানা দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকা যায় না। পুতিন প্রথমে দুই বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে মাঝে একবার প্রধানমন্ত্রী হন। তারপর আবারও দুই বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটিই তার শেষ মেয়াদ। গত বুধবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি দেশটির সংবিধানে সংস্কার আনার ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে তাহলে কি ভবিষ্যত সুসংহত করার পরিকল্পনা করছেন তিনি? নাকি আজীবন ক্ষমতায় থাকতে কী চান তিনি?- এমন প্রশ্নই বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। বিবিসি।
দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির চৌকষ এজেন্ট থেকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসা ৬৭ বছর বয়সী এ নেতা সম্প্রতি দেশটির সংবিধানে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করেছেন। তার দাবি এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনা যাবে। এর পাশাপাশি এক নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন। কাগজে-কলমে পুতিন দাবি করছেন, এর মাধ্যমে রাশিয়াকে আরও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে। তিনি সরকারের হাতে মন্ত্রী নিয়োগ বা এ ধরনের আরও ক্ষমতা দিতে চান। অন্যদিকে তিনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাও সীমিত করতে চান।
বাস্তবে পুতিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এখন চতুর্থ মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আসীন। এ মেয়াদ শেষ হলেও তিনি যে রাশিয়ার ক্ষমতার মঞ্চ থেকে সরে যাবেন তা মনে হচ্ছে না। রাশিয়ার রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পুতিন রাশিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতায় তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য পরবর্তী পরিকল্পনার ছক কাটছেন।
বিশ্বের অনেক দেশের নেতাই তাদের ক্ষমতার মেয়াদ নিজেরাই বাড়িয়ে নিয়েছেন। এজন্য হয় তারা সংবিধানের এক সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বাতিল করে দিয়েছেন অথবা কোন সাংবিধানিক ফাঁক-ফোকরের সুযোগ নিয়েছেন। পুতিন ইতোমধ্যেই এ কাজ একবার করেছেন। এবার ধারণা করা হচ্ছে, তিনি নতুন কোন কৌশল বা ফন্দি আঁটছেন। রাশিয়ায় ‘স্টেট কাউন্সিল’ নামে একটি পরিষদ আছে, যার প্রধান তিনি নিজে। এখনও পর্যন্ত এর ক্ষমতা এবং উদ্দেশ্য খুবই সীমিত। কিন্তু এখন এ ‘স্টেট কাউন্সিল’কে সাংবিধানিক মর্যাদা দেয়া হচ্ছে এবং মনে করা হচ্ছে এ পদকেই বেশ ক্ষমতাশালী করা হবে। হয়তো সেই পদে থেকেই ক্ষমতা ধরে রাখবেন পুতিন। রাষ্ট্র ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার এরকম কৌশলের নজির আছে। কাযাখস্তানের নুরসুলতান নাযারবায়েভ প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অবসর নিয়ে আজীবনের জন্য ‘লিডার অব দ্য নেশন’ (জাতির নেতা)র পদে অধিষ্ঠিত হন।
ভ্লাদিমির পুতিন আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের পদে থাকতে পারবেন। কিন্তু তারপর কে প্রকৃত দায়িত্ব নেবেন, সেটা নিয়ে অনেক জল্পনা চলছে। পুতিন তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাকে বেছে নিয়েছেন, সেই মিখাইল মিশুস্তিনকে অনেকে হিসেবের বাইরেই রাখছেন। তবে বিশ্লেষকদের অভিমত, ভবিষ্যতে যাই ঘটুক সেটি যে পুতিনের পরিকল্পনা মতো হবে তা অনেকটা নিশ্চিত।
সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০ , ৬ মাঘ ১৪২৬, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
সংবাদ ডেস্ক |
রাশিয়ায় গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ সংবিধান অনুযায়ী, টানা দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকা যায় না। পুতিন প্রথমে দুই বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে মাঝে একবার প্রধানমন্ত্রী হন। তারপর আবারও দুই বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটিই তার শেষ মেয়াদ। গত বুধবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি দেশটির সংবিধানে সংস্কার আনার ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে তাহলে কি ভবিষ্যত সুসংহত করার পরিকল্পনা করছেন তিনি? নাকি আজীবন ক্ষমতায় থাকতে কী চান তিনি?- এমন প্রশ্নই বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। বিবিসি।
দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির চৌকষ এজেন্ট থেকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসা ৬৭ বছর বয়সী এ নেতা সম্প্রতি দেশটির সংবিধানে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করেছেন। তার দাবি এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনা যাবে। এর পাশাপাশি এক নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন। কাগজে-কলমে পুতিন দাবি করছেন, এর মাধ্যমে রাশিয়াকে আরও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে। তিনি সরকারের হাতে মন্ত্রী নিয়োগ বা এ ধরনের আরও ক্ষমতা দিতে চান। অন্যদিকে তিনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাও সীমিত করতে চান।
বাস্তবে পুতিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এখন চতুর্থ মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আসীন। এ মেয়াদ শেষ হলেও তিনি যে রাশিয়ার ক্ষমতার মঞ্চ থেকে সরে যাবেন তা মনে হচ্ছে না। রাশিয়ার রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পুতিন রাশিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতায় তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য পরবর্তী পরিকল্পনার ছক কাটছেন।
বিশ্বের অনেক দেশের নেতাই তাদের ক্ষমতার মেয়াদ নিজেরাই বাড়িয়ে নিয়েছেন। এজন্য হয় তারা সংবিধানের এক সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বাতিল করে দিয়েছেন অথবা কোন সাংবিধানিক ফাঁক-ফোকরের সুযোগ নিয়েছেন। পুতিন ইতোমধ্যেই এ কাজ একবার করেছেন। এবার ধারণা করা হচ্ছে, তিনি নতুন কোন কৌশল বা ফন্দি আঁটছেন। রাশিয়ায় ‘স্টেট কাউন্সিল’ নামে একটি পরিষদ আছে, যার প্রধান তিনি নিজে। এখনও পর্যন্ত এর ক্ষমতা এবং উদ্দেশ্য খুবই সীমিত। কিন্তু এখন এ ‘স্টেট কাউন্সিল’কে সাংবিধানিক মর্যাদা দেয়া হচ্ছে এবং মনে করা হচ্ছে এ পদকেই বেশ ক্ষমতাশালী করা হবে। হয়তো সেই পদে থেকেই ক্ষমতা ধরে রাখবেন পুতিন। রাষ্ট্র ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার এরকম কৌশলের নজির আছে। কাযাখস্তানের নুরসুলতান নাযারবায়েভ প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অবসর নিয়ে আজীবনের জন্য ‘লিডার অব দ্য নেশন’ (জাতির নেতা)র পদে অধিষ্ঠিত হন।
ভ্লাদিমির পুতিন আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের পদে থাকতে পারবেন। কিন্তু তারপর কে প্রকৃত দায়িত্ব নেবেন, সেটা নিয়ে অনেক জল্পনা চলছে। পুতিন তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাকে বেছে নিয়েছেন, সেই মিখাইল মিশুস্তিনকে অনেকে হিসেবের বাইরেই রাখছেন। তবে বিশ্লেষকদের অভিমত, ভবিষ্যতে যাই ঘটুক সেটি যে পুতিনের পরিকল্পনা মতো হবে তা অনেকটা নিশ্চিত।