ভাড়া পায় অ্যালামনাই-ব্যাংক খেলাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা

‘সুস্থ দেহে সুস্থ মন’। শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। বিকশিত জীবন এবং ব্যক্তির সুষম বিকাশই প্রকৃত শিক্ষা। একজন ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশই পরিপূর্ণ শিক্ষা। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা ব্যক্তিকে পরিপূর্ণ মানুষ করতে পারে না। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, ‘সুস্থ দেহ সুন্দর মন, কর্মচঞ্চল সারাক্ষণ’। এজন্যই বর্তমান সময়ে বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম খেলাধুলা। কিন্তু সেই সুযোগ পাচ্ছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছে। ইতোমধ্যে ৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু অ্যাকাউন্টিং বিভাগের অ্যালামনাইয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বাকি ম্যাচগুলো পেছানো হয়েছে। শিক্ষকদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলোও পিছিয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্য শিক্ষকরা। একই কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পিছিয়েছে। গত বছর জানুয়ারি মাসে শুরু হলেও এবার ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ প্রতিযোগিতা শুরু হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে, জানুয়ারি মাসে সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে ভাড়ার বিনিময়ে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তাদের বার্ষিক ক্রীড়া আয়োজনের সুযোগ দেয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের খেলার মাঠ থাকলেও দীর্ঘদিন থেকেই তা বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান বা বাইরের ক্লাবগুলোর কাছে ভাড়া দিচ্ছে প্রশাসন। ফলে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা গেছে।

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। সামনের মাসে যে আবার মাঠ ভাড়া দেয়া হবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় নি। কারণ, সামনের মাসে হলগুলোর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছাড়াও ডাকসুর আয়োজনে হকি, হ্যান্ডবল ও ফুটসাল ফুটবল টুর্নামেন্ট আছে। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শেষ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান একাডেমিক কার্যক্রম সেমিস্টারভিত্তিক। অল্প সময়ে সিলেবাস শেষ করার জন্য সপ্তাহের কার্যদিবসগুলোতে ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের। ছুটির দিনগুলোতে একটু খেলার সুযোগ মিললেও ক্লাব বা প্রতিষ্ঠানের কাছে মাঠ ভাড়া দেয়ায় সে সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে তারা। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা না করেই শুধু টাকার জন্য প্রতিনিয়ত মাঠ ভাড়া দিয়ে যাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দুই অংশে (ফুটবল ও ক্রিকেট) বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের অ্যালামনাইয়ের মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে ২৪ জানুয়ারি। এ অনুষ্ঠান চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু সরেজমিন দেখা যায়, শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল থেকেই অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ২৩ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত এ কাজ চলবে। ২৫ জানুয়ারি তাদের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর একই জায়গায় শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারী অর্থাৎ, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সব সদস্যকে নিয়ে বার্ষিক প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এর জন্য পরিবর্তন হয়েছে শিক্ষার্থীদের পূর্বনির্ধারিত ক্রিকেট ম্যাচের সূচি।

জানা যায়, ঢাবির আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের ৮৭ টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্য একটি খেলা অর্ধেক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ভেস্তে গেছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, ফিকশ্চার অনুযায়ী, শিক্ষকদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও শিক্ষার্থীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট একই সময়ে পড়েছে। শিক্ষকদের টুর্নামেন্টের কারণে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ থেকে শিক্ষার্থীদের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের ম্যাচ জগন্নাথ হলে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু গত ১৪ জানুয়ারি খেলা চলাকালীন সময়ে হল সংসদ ও হল ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা এসে তাতে বাধা দেন। এর ফলে খেলা অমীমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। অভিযোগ আছে, হল সংসদের বহিরঙ্গন ক্রীড়া সম্পাদক অর্ণব হোড়ের নেতৃত্বে এই বাধা দেয়া হয়েছে। তেব, বিষয়টি অস্বীকার করে অর্ণব হোড় বলেন, আমি এ সম্পর্কে কিছু জানি না। আমি তো সেখানে ছিলাম না। হলের প্রাধ্যক্ষ স্যার আমাকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে অবহিত করে। তিনি বলেন, এটা যে আন্তঃবিভাগ খেলা, সেটাও আমি জানি না। কারণ, আমি গত সাত বছর ধরে ক্যাম্পাসে, তবে কখনও আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট খেলিনি। এজন্য এর প্রতি আমার কোন আগ্রহও নেই।

সরস্বতী পূজার মূল আয়োজন ৩০ জানুয়ারি শুরু হলেও জগন্নাথ হলের মাঠে পূজা ম-পের কাজ শুরু হবে ২৩ বা ২৪ জানুয়ারি। এর ফলে সে মাঠে খেলা অসম্ভব। জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা এ ঘটনার বিষয়ে বলেন, এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে, কারা করেছে তার জানি না। তাছাড়া, পূজার কাজও দ্রতই শুরু হয়ে যাবে। সেজন্য আমি জগন্নাথ হলে আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের ম্যাচগুলো আপাতত খেলতে নিষেধ করেছি।

এদিকে, শিক্ষকদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট পেছানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুইয়া সংবাদকে বলেন, অ্যাকাউন্টিং বিভাগ আগে থেকে মাঠ দখল করে নিয়েছে। এজন্য শিক্ষকদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট পিছিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। এ নিয়ে আজ (রোববার) রাতে শিক্ষক সমিতির একটি সভা আহ্বান করা হয়েছে। এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অ্যালামনাইয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্রিকেট খেলা পেছানো কতটুকু যুক্তিযুক্ত জানতে চাইলে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. অসীম সরকার সংবাদকে বলেন, আমি উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগে মাঠ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাই কিভাবে, কাকে দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে বলতে পারব না। যেহেতু নিয়মমাফিকই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সেহেতু এখন বাতিল করাও সম্ভব নয়। তবে, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ছাত্রদের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।এজন্য কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অধ্যাপক অসীম সরকারের ‘খেলার মাঠ আগেই বরাদ্দ হয়েছে’ মন্তব্যকে দৃঢ়চিত্তে খ-ন করে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সদ্যসাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম জিয়াউল হক মামুন সংবাদকে বলেন, এ নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। শুধু এটুকুই বলব, এগুলো ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। তিনি (অসীম সরকার) বললেই তো হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকেই এটা দেয়া হয়। আমি উপদেষ্টা থাকাকালীন হয়েছে এমন নয়। আর এটা (ভাড়া দেয়া) নতুন কিছু নয়, এটা হচ্ছে এবং হতেই থাকবে।

অ্যাকাউন্টিং বিভাগের অ্যালামনাইয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট পিছিয়েছে, এটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, ওখানে কি খেলা হচ্ছিল নাকি! জানি না তো। অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ৫০ বছর পূর্তিতে যে অনুষ্ঠান, সেটাও তো অ্যাকাডেমিক অনুষ্ঠান। তাদেরকেও তো জায়গা দিতে হবে। ৫০ বছরে অ্যাকাউন্টিং বিভাগ থেকে ২০-২৫ হাজার শিক্ষার্থী বের হয়েছে, তাদের এক-দুইদিন সময় না দিলে সেটাও তো ভালো দেখায় না। এই অ্যালামনাইগুলোই তো শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়, আর্থিক সাহায্য দেয়, চাকরি দেয়, ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেয়। তাদের অবদানও তো অনেক। এসব লোকজন যখন বলে, অ্যালামনাইরা অনুষ্ঠান করবে, তখন তো তাদের মানা করা যায় না। জগন্নাথ হলের বিষয়ে তিনি বলেন, নিজেদের ছাড়া অন্যদের মাঠ ব্যবহার করতে না দেয়াও তো ভালো কাজ নয়। তারা কেন অন্যদের খেলতে দিবে না। মুহসীন হল, জহুরুল হক হল, সূর্যসেন হল, জগন্নাথ হলসহ সব হলেরই মাঠ আছে। সেখানেও তো খেলা যায়। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অ্যাকাউন্টিং বিভাগ কেন অনুষ্ঠান করছে, সেটা ইস্যু হয়ে গেল। বাকি মাঠগুলোতো খালি, সেখানে খেলা হয় না কেন! শনিবার থেকে প্যান্ডেলের কাজ শুরু হয়েছে স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, আমি শুনেছি, একটু বেশি আগে ওরা প্যান্ডেলের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে খেলার জন্য কারা অগ্রাধিকার পাবে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিয়েছে বলেই আমরা আপাতত খেলা স্থগিত করেছি। কর্তৃপক্ষ কাউকে মাঠ দেয়ার অনুমতি দিলে আমাকে তো সেটা মানতেই হবে। জগন্নাথ হলে ঝামেলার বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে নির্বাচন এবং পূজা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে জগন্নাথ হলে খেলতে যাওয়া ঠিক হয় নি। সে কারণে খেলা স্থগিত করা হয়েছে। পূজা শেষ হয়ে গেলে আমরা নতুন করে ম্যাচের সময় নির্ধারণ করব। আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা যেকোনো মূল্যে খেলা শেষ করে করব। এটা সমস্যা হবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের কিছু করার নেই। আমি মনে করি, এমন সময়ে খেলা স্থগিত করা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।

এ বিষয়ে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. শাহজাহান আলীর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কোনো ভাড়ার ধারণায় আমরা থাকব না। এটা সবাইকে বলে দেয়া হয়েছে। এটা কি সামনের বছর থেকে কার্যকর হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবই কার্যকর আছে। যারা ভাড়া দেয়, তাদেরকে ফিকশ্চারটা ঠিকমতো করতে হবে। ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ঘটাতে হবে এবং দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। এর মাধ্যমে মাঠের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সারা বছরের খেলাগুলোর ইভেন্ট সাজাতে হবে। এ সময়ে অন্য কাউকে মাঠ দেয়া যাবে না। অগোছালো অবস্থায় সবসময় ঝামেলা লেগেই থাকবে। ব্যাংকসহ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে মাঠ ভাড়া দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ভাড়ার কোনো বিষয়ই থাকবে না। তাদের সঙ্গে ভাড়ার নয়, কমিউনিটি সম্পর্ক রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে শিক্ষার্থীদের সহ-শিক্ষা কার্যক্রম অনেক বেড়েছে। খেলার আইটেম ও ফ্রিকোয়েন্সি বেড়েছে। এছাড়া, ডাকসু হওয়ার পর খেলাধুলার পরিমাণ বেড়েছে।

আরও খবর
ছাত্রলীগের দুঃসময়ে মান্নান দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ কামনায় শেষ বিশ্ব ইজতেমা
নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের অপকৌশল : ফখরুল
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ৪ আসামির জামিন বাতিল
সমৃদ্ধির জন্য শিক্ষিত জনগণ বেশি কার্যকর : কৃষিমন্ত্রী
নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সুলতান মেলায় আন্তর্জাতিক আর্টক্যাম্প শুরু
শরিয়তপুর ফেনী ও নওগাঁ জেলার পরিবেশনা আজ
এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসায় পূর্ণ সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
প্রথম আলো সম্পাদকসহ ৬ জনকে গ্রেফতার না করার নির্দেশ
আদালতে ৩৬ লাখ মামলা বিচারাধীন
সব জেলায় চক্ষু সেবা কেন্দ্র হবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভৈরব নদে কয়লাবোঝাই কার্গোডুবি
সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা শফিকুলের ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ

সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০ , ৬ মাঘ ১৪২৬, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ঢাবিতে মাঠ বাণিজ্য

ভাড়া পায় অ্যালামনাই-ব্যাংক খেলাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা

আবদুল্লাহ আল জোবায়ের

‘সুস্থ দেহে সুস্থ মন’। শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। বিকশিত জীবন এবং ব্যক্তির সুষম বিকাশই প্রকৃত শিক্ষা। একজন ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশই পরিপূর্ণ শিক্ষা। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা ব্যক্তিকে পরিপূর্ণ মানুষ করতে পারে না। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, ‘সুস্থ দেহ সুন্দর মন, কর্মচঞ্চল সারাক্ষণ’। এজন্যই বর্তমান সময়ে বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম খেলাধুলা। কিন্তু সেই সুযোগ পাচ্ছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছে। ইতোমধ্যে ৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু অ্যাকাউন্টিং বিভাগের অ্যালামনাইয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বাকি ম্যাচগুলো পেছানো হয়েছে। শিক্ষকদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলোও পিছিয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্য শিক্ষকরা। একই কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পিছিয়েছে। গত বছর জানুয়ারি মাসে শুরু হলেও এবার ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ প্রতিযোগিতা শুরু হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে, জানুয়ারি মাসে সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে ভাড়ার বিনিময়ে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তাদের বার্ষিক ক্রীড়া আয়োজনের সুযোগ দেয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের খেলার মাঠ থাকলেও দীর্ঘদিন থেকেই তা বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান বা বাইরের ক্লাবগুলোর কাছে ভাড়া দিচ্ছে প্রশাসন। ফলে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা গেছে।

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। সামনের মাসে যে আবার মাঠ ভাড়া দেয়া হবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় নি। কারণ, সামনের মাসে হলগুলোর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছাড়াও ডাকসুর আয়োজনে হকি, হ্যান্ডবল ও ফুটসাল ফুটবল টুর্নামেন্ট আছে। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শেষ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান একাডেমিক কার্যক্রম সেমিস্টারভিত্তিক। অল্প সময়ে সিলেবাস শেষ করার জন্য সপ্তাহের কার্যদিবসগুলোতে ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের। ছুটির দিনগুলোতে একটু খেলার সুযোগ মিললেও ক্লাব বা প্রতিষ্ঠানের কাছে মাঠ ভাড়া দেয়ায় সে সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে তারা। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা না করেই শুধু টাকার জন্য প্রতিনিয়ত মাঠ ভাড়া দিয়ে যাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দুই অংশে (ফুটবল ও ক্রিকেট) বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের অ্যালামনাইয়ের মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে ২৪ জানুয়ারি। এ অনুষ্ঠান চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু সরেজমিন দেখা যায়, শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল থেকেই অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ২৩ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত এ কাজ চলবে। ২৫ জানুয়ারি তাদের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর একই জায়গায় শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারী অর্থাৎ, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সব সদস্যকে নিয়ে বার্ষিক প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এর জন্য পরিবর্তন হয়েছে শিক্ষার্থীদের পূর্বনির্ধারিত ক্রিকেট ম্যাচের সূচি।

জানা যায়, ঢাবির আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের ৮৭ টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্য একটি খেলা অর্ধেক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ভেস্তে গেছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, ফিকশ্চার অনুযায়ী, শিক্ষকদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও শিক্ষার্থীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট একই সময়ে পড়েছে। শিক্ষকদের টুর্নামেন্টের কারণে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ থেকে শিক্ষার্থীদের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের ম্যাচ জগন্নাথ হলে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু গত ১৪ জানুয়ারি খেলা চলাকালীন সময়ে হল সংসদ ও হল ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা এসে তাতে বাধা দেন। এর ফলে খেলা অমীমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। অভিযোগ আছে, হল সংসদের বহিরঙ্গন ক্রীড়া সম্পাদক অর্ণব হোড়ের নেতৃত্বে এই বাধা দেয়া হয়েছে। তেব, বিষয়টি অস্বীকার করে অর্ণব হোড় বলেন, আমি এ সম্পর্কে কিছু জানি না। আমি তো সেখানে ছিলাম না। হলের প্রাধ্যক্ষ স্যার আমাকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে অবহিত করে। তিনি বলেন, এটা যে আন্তঃবিভাগ খেলা, সেটাও আমি জানি না। কারণ, আমি গত সাত বছর ধরে ক্যাম্পাসে, তবে কখনও আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট খেলিনি। এজন্য এর প্রতি আমার কোন আগ্রহও নেই।

সরস্বতী পূজার মূল আয়োজন ৩০ জানুয়ারি শুরু হলেও জগন্নাথ হলের মাঠে পূজা ম-পের কাজ শুরু হবে ২৩ বা ২৪ জানুয়ারি। এর ফলে সে মাঠে খেলা অসম্ভব। জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা এ ঘটনার বিষয়ে বলেন, এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে, কারা করেছে তার জানি না। তাছাড়া, পূজার কাজও দ্রতই শুরু হয়ে যাবে। সেজন্য আমি জগন্নাথ হলে আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের ম্যাচগুলো আপাতত খেলতে নিষেধ করেছি।

এদিকে, শিক্ষকদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট পেছানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুইয়া সংবাদকে বলেন, অ্যাকাউন্টিং বিভাগ আগে থেকে মাঠ দখল করে নিয়েছে। এজন্য শিক্ষকদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট পিছিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। এ নিয়ে আজ (রোববার) রাতে শিক্ষক সমিতির একটি সভা আহ্বান করা হয়েছে। এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অ্যালামনাইয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্রিকেট খেলা পেছানো কতটুকু যুক্তিযুক্ত জানতে চাইলে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. অসীম সরকার সংবাদকে বলেন, আমি উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগে মাঠ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাই কিভাবে, কাকে দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে বলতে পারব না। যেহেতু নিয়মমাফিকই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সেহেতু এখন বাতিল করাও সম্ভব নয়। তবে, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ছাত্রদের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।এজন্য কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অধ্যাপক অসীম সরকারের ‘খেলার মাঠ আগেই বরাদ্দ হয়েছে’ মন্তব্যকে দৃঢ়চিত্তে খ-ন করে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সদ্যসাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম জিয়াউল হক মামুন সংবাদকে বলেন, এ নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। শুধু এটুকুই বলব, এগুলো ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। তিনি (অসীম সরকার) বললেই তো হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকেই এটা দেয়া হয়। আমি উপদেষ্টা থাকাকালীন হয়েছে এমন নয়। আর এটা (ভাড়া দেয়া) নতুন কিছু নয়, এটা হচ্ছে এবং হতেই থাকবে।

অ্যাকাউন্টিং বিভাগের অ্যালামনাইয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট পিছিয়েছে, এটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, ওখানে কি খেলা হচ্ছিল নাকি! জানি না তো। অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ৫০ বছর পূর্তিতে যে অনুষ্ঠান, সেটাও তো অ্যাকাডেমিক অনুষ্ঠান। তাদেরকেও তো জায়গা দিতে হবে। ৫০ বছরে অ্যাকাউন্টিং বিভাগ থেকে ২০-২৫ হাজার শিক্ষার্থী বের হয়েছে, তাদের এক-দুইদিন সময় না দিলে সেটাও তো ভালো দেখায় না। এই অ্যালামনাইগুলোই তো শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়, আর্থিক সাহায্য দেয়, চাকরি দেয়, ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেয়। তাদের অবদানও তো অনেক। এসব লোকজন যখন বলে, অ্যালামনাইরা অনুষ্ঠান করবে, তখন তো তাদের মানা করা যায় না। জগন্নাথ হলের বিষয়ে তিনি বলেন, নিজেদের ছাড়া অন্যদের মাঠ ব্যবহার করতে না দেয়াও তো ভালো কাজ নয়। তারা কেন অন্যদের খেলতে দিবে না। মুহসীন হল, জহুরুল হক হল, সূর্যসেন হল, জগন্নাথ হলসহ সব হলেরই মাঠ আছে। সেখানেও তো খেলা যায়। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অ্যাকাউন্টিং বিভাগ কেন অনুষ্ঠান করছে, সেটা ইস্যু হয়ে গেল। বাকি মাঠগুলোতো খালি, সেখানে খেলা হয় না কেন! শনিবার থেকে প্যান্ডেলের কাজ শুরু হয়েছে স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, আমি শুনেছি, একটু বেশি আগে ওরা প্যান্ডেলের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে খেলার জন্য কারা অগ্রাধিকার পাবে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিয়েছে বলেই আমরা আপাতত খেলা স্থগিত করেছি। কর্তৃপক্ষ কাউকে মাঠ দেয়ার অনুমতি দিলে আমাকে তো সেটা মানতেই হবে। জগন্নাথ হলে ঝামেলার বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে নির্বাচন এবং পূজা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে জগন্নাথ হলে খেলতে যাওয়া ঠিক হয় নি। সে কারণে খেলা স্থগিত করা হয়েছে। পূজা শেষ হয়ে গেলে আমরা নতুন করে ম্যাচের সময় নির্ধারণ করব। আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা যেকোনো মূল্যে খেলা শেষ করে করব। এটা সমস্যা হবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের কিছু করার নেই। আমি মনে করি, এমন সময়ে খেলা স্থগিত করা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।

এ বিষয়ে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. শাহজাহান আলীর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কোনো ভাড়ার ধারণায় আমরা থাকব না। এটা সবাইকে বলে দেয়া হয়েছে। এটা কি সামনের বছর থেকে কার্যকর হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবই কার্যকর আছে। যারা ভাড়া দেয়, তাদেরকে ফিকশ্চারটা ঠিকমতো করতে হবে। ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ঘটাতে হবে এবং দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। এর মাধ্যমে মাঠের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সারা বছরের খেলাগুলোর ইভেন্ট সাজাতে হবে। এ সময়ে অন্য কাউকে মাঠ দেয়া যাবে না। অগোছালো অবস্থায় সবসময় ঝামেলা লেগেই থাকবে। ব্যাংকসহ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে মাঠ ভাড়া দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ভাড়ার কোনো বিষয়ই থাকবে না। তাদের সঙ্গে ভাড়ার নয়, কমিউনিটি সম্পর্ক রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে শিক্ষার্থীদের সহ-শিক্ষা কার্যক্রম অনেক বেড়েছে। খেলার আইটেম ও ফ্রিকোয়েন্সি বেড়েছে। এছাড়া, ডাকসু হওয়ার পর খেলাধুলার পরিমাণ বেড়েছে।