কেন্দ্র সচিবদের ২৮ দফা নির্দেশনা

‘উপজেলা সদরের বাইরে প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক রাখা যাবে না’

‘কোন অবস্থাতেই উপজেলা সদরের বাহিরে প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক রাখা যাবে না’-এমন নির্দেশনাসহ আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য পরীক্ষার কেন্দ্র সচিবদের ২৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। পরীক্ষায় অসুদুপায় ঠেকাতে কেন্দ্রের প্রধান ফটকে পরীক্ষার্থীদের দেহ অবশ্যই তল্লাশি করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এসএসসি পরীক্ষা আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে। এবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৪১০টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল সকালে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে চার শতাধিক কেন্দ্র সচিবকে ডেকে পাঠিয়ে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে মোট ২৮ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়। এ বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক, সচিব প্রফেসর তপন কুমার সরকার প্রমুখ কেন্দ্র সচিবদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় বোর্ডের অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রফেসর তপর কুমার সরকার সংবাদকে বলেন, ‘আমরা বিগত সময়ের ন্যায় সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরীক্ষা গ্রহণ করতে চাই। পরীক্ষা গ্রহণে কেন্দ্র সচিবদের (প্রতিষ্ঠান প্রধান বা প্রধান শিক্ষক) ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য প্রায় চার’শ কেন্দ্র সচিবকে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছি’ বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী, কেন্দ্রে প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য একজন কক্ষ পরিদর্শক পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন এবং প্রতিটি কক্ষে কমপক্ষে ২ জন করে দায়িত্ব পালন করবেন। আর ৫ফুট-৬ফুট লম্বা প্রতি বেঞ্চে ২ জন এবং ৪ ফুট লম্বা বেঞ্চে একজন পরীক্ষার্থীর আসন ব্যবস্থা থাকবে।

শিক্ষা বোর্ডের অন্য নির্দেশনায় রয়েছে, পরীক্ষা শুরুর তিন দিন পূর্বে ট্রেজারিতে ট্রাঙ্কে রক্ষিত প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের সঙ্গে প্রশ্নপত্রের বিবরণী তালিকা সঠিকভাবে যাচাই করা এবং এ সময় ট্রেজারি অফিসার, কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। প্রশ্নপত্রের ২টি করে সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনি সেট, পরীক্ষার তারিখ অনুসারে সেট ভিত্তিক আলাদা করে নিরাপত্তা খামে প্যাকেট করতে হবে। এই খামের ওপর পরীক্ষার তারিখ, বিষয় কোড ও সেট কোড অবশ্যই লিখতে হবে; এ বিষয়ে কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে তা কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে অবহেলা বলে গণ্য হবে। ট্রেজারি হতে পরীক্ষার দিনগুলোতে ট্রেজারি অফিসারের নিকট থেকে ওই দিনের প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা খাম গ্রহণ করতে হবে। ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ ব্যতিত প্রশ্নপত্রের প্যাকেট নিয়ে ট্রেজারি/থানা থেকে কেন্দ্রে যাওয়া যাবে না।

প্রশ্নপত্র ব্যবহারের এসএমএস মোতাবেক সেট ব্যবহার করতে হবে এবং এসএমএস পাওয়ার পর প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে। অব্যবহৃত সেটের প্রশ্নপত্রের খাম অক্ষত অবস্থায় বোর্ডে জমা দিতে হবে। কেন্দ্র সচিব ব্যতিত অন্য কেউ মোবাইল ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই প্রবেশ করতে হবে। এ সময়ের পর কোন পরীক্ষার্থী আসলে কেন্দ্র সচিব বিশেষ বিবেচনায় রেজিস্ট্রার খাতায় রোল নম্বর ও অন্য তথ্য লিপিবদ্ধ করে কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারবেন। ১৪৪ ধারা জারিকৃত চিহ্নিত স্থানগুলোতে লাল পতাকা টানাতে হবে।

এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকরা যাতে জটলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া, সম্ভব হলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা; বোর্ড সরবরাহকৃত নকল প্রতিরোধমূলক পোস্টার পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশ পথের দৃশ্যমান স্থানে লাগানো, ত্রুটিপূর্ণ উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ না করা, অত্যন্ত সতর্ককতার সহিত থানা/ট্রেজারি থেকে পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্র পর্যন্ত প্রশ্নপত্র আনা, পরীক্ষার্থীর হাজিরা শিটে উপস্থিত স্বাক্ষর নেয়া, উত্তরপত্র বোর্ডের পরীক্ষা শাখায় স্ক্রিপ্ট রুমে বস্তায় সিলগালাকৃত অবস্থায় প্যাকেট পৌঁছানো, প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র পরিবহন কাজে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা রাখা, উত্তরপত্র সিলেবাস অনুসারে ৫০টির করে প্যাকেট করে করোগেটেড শিটে প্যাকেট করা, ভিন্ন ভিন্ন সিলেবাসের উত্তরপত্রের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেট করা, নতুন সিলেবাসের জন্য লেবেল সাদা রং ও পুরাতন সিলেবাসের জন্য লেভেল হলুদ করা, পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রে কোন ত্রুটি থাকলে তা অবশ্যই প্রবেশপত্র গ্রহণের ৪ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে সংশোধন করা এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের সমস্ত প্রকাশের ক্লাশ বন্ধ রাখা এবং অনলাইনে তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তবে উত্তরপত্রের প্যাকেটের গায়ে কোন চিহ্ন বা অতিরিক্ত লেখা থাকলে তার জন্য কেন্দ্র সচিব দায়ী থাকবেন বলে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনায় সতর্ক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২০ , ৭ মাঘ ১৪২৬, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

এসএসসি পরীক্ষায়

কেন্দ্র সচিবদের ২৮ দফা নির্দেশনা

‘উপজেলা সদরের বাইরে প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক রাখা যাবে না’

রাকিব উদ্দিন

‘কোন অবস্থাতেই উপজেলা সদরের বাহিরে প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক রাখা যাবে না’-এমন নির্দেশনাসহ আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য পরীক্ষার কেন্দ্র সচিবদের ২৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। পরীক্ষায় অসুদুপায় ঠেকাতে কেন্দ্রের প্রধান ফটকে পরীক্ষার্থীদের দেহ অবশ্যই তল্লাশি করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এসএসসি পরীক্ষা আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে। এবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৪১০টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল সকালে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে চার শতাধিক কেন্দ্র সচিবকে ডেকে পাঠিয়ে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে মোট ২৮ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়। এ বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক, সচিব প্রফেসর তপন কুমার সরকার প্রমুখ কেন্দ্র সচিবদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় বোর্ডের অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রফেসর তপর কুমার সরকার সংবাদকে বলেন, ‘আমরা বিগত সময়ের ন্যায় সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরীক্ষা গ্রহণ করতে চাই। পরীক্ষা গ্রহণে কেন্দ্র সচিবদের (প্রতিষ্ঠান প্রধান বা প্রধান শিক্ষক) ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য প্রায় চার’শ কেন্দ্র সচিবকে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছি’ বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী, কেন্দ্রে প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য একজন কক্ষ পরিদর্শক পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন এবং প্রতিটি কক্ষে কমপক্ষে ২ জন করে দায়িত্ব পালন করবেন। আর ৫ফুট-৬ফুট লম্বা প্রতি বেঞ্চে ২ জন এবং ৪ ফুট লম্বা বেঞ্চে একজন পরীক্ষার্থীর আসন ব্যবস্থা থাকবে।

শিক্ষা বোর্ডের অন্য নির্দেশনায় রয়েছে, পরীক্ষা শুরুর তিন দিন পূর্বে ট্রেজারিতে ট্রাঙ্কে রক্ষিত প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের সঙ্গে প্রশ্নপত্রের বিবরণী তালিকা সঠিকভাবে যাচাই করা এবং এ সময় ট্রেজারি অফিসার, কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। প্রশ্নপত্রের ২টি করে সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনি সেট, পরীক্ষার তারিখ অনুসারে সেট ভিত্তিক আলাদা করে নিরাপত্তা খামে প্যাকেট করতে হবে। এই খামের ওপর পরীক্ষার তারিখ, বিষয় কোড ও সেট কোড অবশ্যই লিখতে হবে; এ বিষয়ে কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে তা কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে অবহেলা বলে গণ্য হবে। ট্রেজারি হতে পরীক্ষার দিনগুলোতে ট্রেজারি অফিসারের নিকট থেকে ওই দিনের প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা খাম গ্রহণ করতে হবে। ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ ব্যতিত প্রশ্নপত্রের প্যাকেট নিয়ে ট্রেজারি/থানা থেকে কেন্দ্রে যাওয়া যাবে না।

প্রশ্নপত্র ব্যবহারের এসএমএস মোতাবেক সেট ব্যবহার করতে হবে এবং এসএমএস পাওয়ার পর প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে। অব্যবহৃত সেটের প্রশ্নপত্রের খাম অক্ষত অবস্থায় বোর্ডে জমা দিতে হবে। কেন্দ্র সচিব ব্যতিত অন্য কেউ মোবাইল ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই প্রবেশ করতে হবে। এ সময়ের পর কোন পরীক্ষার্থী আসলে কেন্দ্র সচিব বিশেষ বিবেচনায় রেজিস্ট্রার খাতায় রোল নম্বর ও অন্য তথ্য লিপিবদ্ধ করে কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারবেন। ১৪৪ ধারা জারিকৃত চিহ্নিত স্থানগুলোতে লাল পতাকা টানাতে হবে।

এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকরা যাতে জটলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া, সম্ভব হলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা; বোর্ড সরবরাহকৃত নকল প্রতিরোধমূলক পোস্টার পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশ পথের দৃশ্যমান স্থানে লাগানো, ত্রুটিপূর্ণ উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ না করা, অত্যন্ত সতর্ককতার সহিত থানা/ট্রেজারি থেকে পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্র পর্যন্ত প্রশ্নপত্র আনা, পরীক্ষার্থীর হাজিরা শিটে উপস্থিত স্বাক্ষর নেয়া, উত্তরপত্র বোর্ডের পরীক্ষা শাখায় স্ক্রিপ্ট রুমে বস্তায় সিলগালাকৃত অবস্থায় প্যাকেট পৌঁছানো, প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র পরিবহন কাজে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা রাখা, উত্তরপত্র সিলেবাস অনুসারে ৫০টির করে প্যাকেট করে করোগেটেড শিটে প্যাকেট করা, ভিন্ন ভিন্ন সিলেবাসের উত্তরপত্রের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেট করা, নতুন সিলেবাসের জন্য লেবেল সাদা রং ও পুরাতন সিলেবাসের জন্য লেভেল হলুদ করা, পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রে কোন ত্রুটি থাকলে তা অবশ্যই প্রবেশপত্র গ্রহণের ৪ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে সংশোধন করা এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের সমস্ত প্রকাশের ক্লাশ বন্ধ রাখা এবং অনলাইনে তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তবে উত্তরপত্রের প্যাকেটের গায়ে কোন চিহ্ন বা অতিরিক্ত লেখা থাকলে তার জন্য কেন্দ্র সচিব দায়ী থাকবেন বলে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনায় সতর্ক করা হয়েছে।