ই-পাসপোর্ট যুগে বাংলাদেশ

আজ থেকে শুরু

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য আজ থেকে চালু হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম। আজ সকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে থেকে ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ই-পাসপোর্ট চালুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৯তম দেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বপ্রথম ই-পাসপোর্ট বিতরণের মাধ্যমে এর কার্যক্রম শুরু হবে। বতর্মানে ঢাকার আগারগাঁও, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে এটি দেয়া হবে। ই-পাসপোর্ট হবে ৪৮ ও ৬৪ পাতার। আর মেয়াদ হবে ৫ ও ১০ বছর পর্যন্ত। ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫০০ টাকা থেকে ১২০০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি পাসপোর্টের জন্য নির্ধারিত হারে ভ্যাট দিতে হবে। তবে প্রবাসী শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের কম টাকায় ই-পাসপোর্ট করা যাবে। ই-পাসপোর্টে ৪১টি নিরাপত্তা ফিচার সংযুক্ত থাকবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ সূত্র জানায়। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। আপাতত শুধু ঢাকার আগারগাঁও, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে এটি দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এ কার্যক্রম চালু হবে। ২০২০ সালের মধ্যেই সারাদেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ রয়েছে সরকারের। এছাড়া বিদেশে অবস্থানরতরাও পর্যায়ক্রমে ই-পাসপোর্ট পাবেন। পাশাপাশি এমআরপি পাসপোর্ট কার্যকর থাকবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ পাসপোর্টের (১৫ দিনের মধ্যে দেয়া হবে) এর জন্য ফি লাগবে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। আর সাত দিনের মধ্যে (জরুরি) পেতে হলে ৫ হাজার ৫০০ টাকা ও দুই দিনে (অতি জরুরি) পাওয়ার জন্য খরচ করতে হবে ৭ হাজার ৫০০ টাকা। একই সংখ্যক পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য ৫ হাজার, জরুরি ৭ হাজার ও অতি ?জরুরির জন্য ৯ হাজার টাকা হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ (১৫ দিনের) ই-পাসপোর্ট করতে লাগবে ৫ হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি ৭ হাজার ৫০০ টাকা ও অতি জরুরি ১০ হাজার ৫০০ টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে লাগবে যথাক্রমে ৭ হাজার টাকা (সাধারণ), নয় হাজার টাকা (জরুরি) ও ১২ হাজার টাকা (অতি জরুরি)। বিদেশি নাগরিকদের জন্য ৫ বছর মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্ট করতে ফি লাগবে ১০০-৫০০ মার্কিন ডলার, একই মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার জন্য জরুরি ই-পাসপোর্ট করতে ফি লাগবে ১৫০-২০০ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্ট করতে ফি লাগবে ১২৫-১৫০ মার্কিন ডলার, একই মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার জন্য জরুরি ই-পাসপোর্ট করতে ফি দিবে হবে ১৭৫-২২৫ মার্কিন ডলার। তবে বিদেশি শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য ফি কম নির্ধারণ করা হয়েছে। এদের জন্য ৫ বছর মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্ট করতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০-১৫০ মার্কিন ডলার, একই মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার জরুরি ই-পাসপোর্ট করতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫-২০০ মার্কিন ডলার। ১০ মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্ট করতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০/১৭৫ মার্কিন ডলার, একই মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার জরুরি ই-পাসপোর্ট করতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫-২২৫ মার্কিন ডলার। ই-পাসপোর্ট এর আবেদন অনলাইনে অথবা পিডিএফ ফরমেট ডাউনলোড করে পূরণ করা যাবে। এতে কোন ছবির প্রয়োজন হবে না; কাগজপত্র সত্যায়নও করতে হবে না।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, প্রবাসী শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের কম টাকায় ই-পাসপোর্ট দেবে সরকার। বাংলাদেশের একজন নাগরিকের বৈধ পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফি-এর টাকার পরিমাণ এতদিন সবার জন্য সমান থাকলেও এবারই প্রথম বিদেশে কর্মরত শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষাকৃত কম টাকায় পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে হচ্ছে। এতদিন একজন বড় ব্যবসায়ী যে টাকায় পাসপোর্ট করতেন গরিব মানুষও সমপরিমাণ টাকা ফি বাবদ জমা দিতেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রবাসী শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য কম টাকায় পাসপোর্ট করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জি-টু-জি ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও জার্মান সরকার যৌথভাবে ই-পাসপোর্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মেয়াদ ১০ বছর। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬০৫ কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই প্রকল্পের ৩ কোটি পাসপোর্ট তৈরি করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ২০ লাখ পাসপোর্ট বই সরাসরি জার্মান থেকে আমদানি করা হয়েছে। বাকী ২ কোটি ৮০ লাখ পাসপোর্ট বাংলাদেশে তৈরি করা হবে। পর্যায়ক্রমে ৭২টি আরপিও (রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিস) এবং ৮০পি এফএম (ফরেন মিশন) ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। পরিকার্বনেট ডাটা পৃষ্ঠাসহ বছরে ৩৫ লাখ ই-পাসপোর্ট তৈরি করা হবে। বিদেশ থেকে আবেদনের ক্ষেত্রে অতি জরুরি সুবিধা দেয়া হবে না। অনলাইনে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ফি পরিশোধ করা যাবে। অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন ট্রেকিং করা যাবে। উত্তরায় পার্সোনালইজেশন কমপ্লেক্সে ঘণ্টায় ৫০০ এবং এক শিফটে ২৫ হাজার পাসপোর্ট প্রিন্ট করা যাবে। ২৭টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ই-গেট বসানো হবে। এসব ইমিগ্রেশন পয়েন্টে ৫০টি ই-গেট বসানো হবে। এর মধ্যে ঢাকায় ২৪টি, ভিআই ২টি, ভিভিআইপি ২টি, চট্টগ্রামে ৬টি, সিলেটে ৬টি, বেনাপোলে ৩টি, বাংলাবান্দায় ৩টি ও রিজার্ভ ৩টি ই-গেট বসানো হবে। এই সব ই-গেট দিয়ে ডিপ্লোমেটি ও অফিসিয়াল ই-পাসপোর্টধারী, সিআইপি, ট্যাক্স কার্ডপ্রাপ্ত ই-পাসপোর্টধারী ও ই-পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি পাইলট ও ক্রগণের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। ২০১৮ সালের ২১ জুন প্রকল্পটি একনেকের পাস হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ওই বছরের জুলাইয়ে জার্মান কোম্পানি ভেরিডোসের সঙ্গে চুক্তি করে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদপ্তর। ই-পাসপোর্ট নামে পরিচিত বায়োমেট্রিক পাসপোর্টে স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যাতে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা বসানো থাকে। এ পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাসপোর্টের ডেটা পেজ এবং চিপে সংরক্ষিত থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২০ , ৮ মাঘ ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ই-পাসপোর্ট যুগে বাংলাদেশ

আজ থেকে শুরু

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

image

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য আজ থেকে চালু হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম। আজ সকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে থেকে ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ই-পাসপোর্ট চালুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৯তম দেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বপ্রথম ই-পাসপোর্ট বিতরণের মাধ্যমে এর কার্যক্রম শুরু হবে। বতর্মানে ঢাকার আগারগাঁও, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে এটি দেয়া হবে। ই-পাসপোর্ট হবে ৪৮ ও ৬৪ পাতার। আর মেয়াদ হবে ৫ ও ১০ বছর পর্যন্ত। ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫০০ টাকা থেকে ১২০০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি পাসপোর্টের জন্য নির্ধারিত হারে ভ্যাট দিতে হবে। তবে প্রবাসী শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের কম টাকায় ই-পাসপোর্ট করা যাবে। ই-পাসপোর্টে ৪১টি নিরাপত্তা ফিচার সংযুক্ত থাকবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ সূত্র জানায়। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। আপাতত শুধু ঢাকার আগারগাঁও, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে এটি দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এ কার্যক্রম চালু হবে। ২০২০ সালের মধ্যেই সারাদেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ রয়েছে সরকারের। এছাড়া বিদেশে অবস্থানরতরাও পর্যায়ক্রমে ই-পাসপোর্ট পাবেন। পাশাপাশি এমআরপি পাসপোর্ট কার্যকর থাকবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ পাসপোর্টের (১৫ দিনের মধ্যে দেয়া হবে) এর জন্য ফি লাগবে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। আর সাত দিনের মধ্যে (জরুরি) পেতে হলে ৫ হাজার ৫০০ টাকা ও দুই দিনে (অতি জরুরি) পাওয়ার জন্য খরচ করতে হবে ৭ হাজার ৫০০ টাকা। একই সংখ্যক পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য ৫ হাজার, জরুরি ৭ হাজার ও অতি ?জরুরির জন্য ৯ হাজার টাকা হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ (১৫ দিনের) ই-পাসপোর্ট করতে লাগবে ৫ হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি ৭ হাজার ৫০০ টাকা ও অতি জরুরি ১০ হাজার ৫০০ টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে লাগবে যথাক্রমে ৭ হাজার টাকা (সাধারণ), নয় হাজার টাকা (জরুরি) ও ১২ হাজার টাকা (অতি জরুরি)। বিদেশি নাগরিকদের জন্য ৫ বছর মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্ট করতে ফি লাগবে ১০০-৫০০ মার্কিন ডলার, একই মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার জন্য জরুরি ই-পাসপোর্ট করতে ফি লাগবে ১৫০-২০০ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্ট করতে ফি লাগবে ১২৫-১৫০ মার্কিন ডলার, একই মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার জন্য জরুরি ই-পাসপোর্ট করতে ফি দিবে হবে ১৭৫-২২৫ মার্কিন ডলার। তবে বিদেশি শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য ফি কম নির্ধারণ করা হয়েছে। এদের জন্য ৫ বছর মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্ট করতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০-১৫০ মার্কিন ডলার, একই মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার জরুরি ই-পাসপোর্ট করতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫-২০০ মার্কিন ডলার। ১০ মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্ট করতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০/১৭৫ মার্কিন ডলার, একই মেয়াদি ৪৮-৬৪ পাতার জরুরি ই-পাসপোর্ট করতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫-২২৫ মার্কিন ডলার। ই-পাসপোর্ট এর আবেদন অনলাইনে অথবা পিডিএফ ফরমেট ডাউনলোড করে পূরণ করা যাবে। এতে কোন ছবির প্রয়োজন হবে না; কাগজপত্র সত্যায়নও করতে হবে না।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, প্রবাসী শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের কম টাকায় ই-পাসপোর্ট দেবে সরকার। বাংলাদেশের একজন নাগরিকের বৈধ পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফি-এর টাকার পরিমাণ এতদিন সবার জন্য সমান থাকলেও এবারই প্রথম বিদেশে কর্মরত শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষাকৃত কম টাকায় পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে হচ্ছে। এতদিন একজন বড় ব্যবসায়ী যে টাকায় পাসপোর্ট করতেন গরিব মানুষও সমপরিমাণ টাকা ফি বাবদ জমা দিতেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রবাসী শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য কম টাকায় পাসপোর্ট করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জি-টু-জি ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও জার্মান সরকার যৌথভাবে ই-পাসপোর্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মেয়াদ ১০ বছর। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬০৫ কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই প্রকল্পের ৩ কোটি পাসপোর্ট তৈরি করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ২০ লাখ পাসপোর্ট বই সরাসরি জার্মান থেকে আমদানি করা হয়েছে। বাকী ২ কোটি ৮০ লাখ পাসপোর্ট বাংলাদেশে তৈরি করা হবে। পর্যায়ক্রমে ৭২টি আরপিও (রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিস) এবং ৮০পি এফএম (ফরেন মিশন) ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। পরিকার্বনেট ডাটা পৃষ্ঠাসহ বছরে ৩৫ লাখ ই-পাসপোর্ট তৈরি করা হবে। বিদেশ থেকে আবেদনের ক্ষেত্রে অতি জরুরি সুবিধা দেয়া হবে না। অনলাইনে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ফি পরিশোধ করা যাবে। অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন ট্রেকিং করা যাবে। উত্তরায় পার্সোনালইজেশন কমপ্লেক্সে ঘণ্টায় ৫০০ এবং এক শিফটে ২৫ হাজার পাসপোর্ট প্রিন্ট করা যাবে। ২৭টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ই-গেট বসানো হবে। এসব ইমিগ্রেশন পয়েন্টে ৫০টি ই-গেট বসানো হবে। এর মধ্যে ঢাকায় ২৪টি, ভিআই ২টি, ভিভিআইপি ২টি, চট্টগ্রামে ৬টি, সিলেটে ৬টি, বেনাপোলে ৩টি, বাংলাবান্দায় ৩টি ও রিজার্ভ ৩টি ই-গেট বসানো হবে। এই সব ই-গেট দিয়ে ডিপ্লোমেটি ও অফিসিয়াল ই-পাসপোর্টধারী, সিআইপি, ট্যাক্স কার্ডপ্রাপ্ত ই-পাসপোর্টধারী ও ই-পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি পাইলট ও ক্রগণের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। ২০১৮ সালের ২১ জুন প্রকল্পটি একনেকের পাস হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ওই বছরের জুলাইয়ে জার্মান কোম্পানি ভেরিডোসের সঙ্গে চুক্তি করে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদপ্তর। ই-পাসপোর্ট নামে পরিচিত বায়োমেট্রিক পাসপোর্টে স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যাতে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা বসানো থাকে। এ পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাসপোর্টের ডেটা পেজ এবং চিপে সংরক্ষিত থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।