জাকারিয়া হোসাইন (৩১)। আলোর পথ দেখাচ্ছেন জেলার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের।
ব্রেইল পদ্ধতিতে পাঠদান করাচ্ছেন নয় শিক্ষার্থীকে। শুধু শিক্ষক হিসেবেই নয় পরীক্ষক হিসেবেও একমাত্র তিনি।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখুলি গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সবার্র ছোট সে।
সমাজসেবা অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম’-এ অস্থায়ী ভিত্তিতে হাউস প্যারেন্টস কাম শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জাকারিয়া।
সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে নয়জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের একমাত্র ভরসা জাকারিয়ার হাত ধরে নিজেদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে এখানকার শিক্ষার্থীরা।
নয়জনের মধ্যে পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে দুইজন, নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে দুইজন ও কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ছে দু’জন এবং বাকি তিনজনকে সমাজ সেবার এই কেন্দ্রে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ানো হচ্ছে।
নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়ণরত জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের চাওড়াডাঙ্গি গ্রামের এরশাদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ মাসুম বলেন, আমি চোখ দিয়ে দেখি না ঠিকই কিন্তু আমার মনের চোখতো বন্ধ নেই।
আর দশজনের মতো আমি চলাফেরা পড়াশোনা করতে না পারলেও আমিও স্বপ্ন দেখছি ভালো মানুষ হওয়ার এবং পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটি চাকরি করার। নিশ্চয় আমি সফল হবো।
কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের বাবলা রহমান জানান, আমি হতাশ নই। আমার মা বুলবুলি বেগম, বাবা শাহান উদ্দিন ও খালা মোহনা বেগম দু’চোখ দিয়ে দেখতে পারেন না কিন্তু তাদের সংসার তো চলছে।
আমিও পিছিয়ে থাকছি না, আমি যেখানে থাকি, আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব জায়গায় সহযোগিতায় পাচ্ছি। নিশ্চয় পড়াশোনা শেষ করে আমি ভালো কিছু করতে পারবো।
স্যার জাকারিয়া যেভাবে আমাদের পড়াশোনা করাচ্ছেন, দেখভাল করেন তাতে পরিবারের মতো মমতা ভালোবাসা দিয়ে করে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমে চারজনের পদ থাকলেও মাত্র একজন নৈশ প্রহরী ছাড়া স্থায়ী আর কেউ নেই এখানে।
সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন রিসোর্স টিচার পদে অতিরিক্ত রয়েছেন এখানে। বাকি দু’জনের মধ্যে জাকারিয়া হোসাইন হাউস প্যারেন্টস কাম টিচার ও তাহেরা বেগমকে বাবুর্চি হিসেবে শিল্প উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ‘নীলসাগর গ্রুপ’ মাসিক সম্মানি দিয়ে পরিচালনা করছে।
হাউস প্যারেন্টস কাম টিচার জাকারিয়া হোসেন বলেন, যখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি তখন ক্রিকেট খেলতে গিয়ে চোখে বলের আঘাত লাগে। ২০০৫ সালে আমি জিপিএ ৩.৩৩ নিয়ে দাখিল পাস করি।
এরই মধ্যে চোখে ব্যথা শুরু হলে ২০০৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে আমার দুটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তখন থেকে আর পৃথিবীর আলো দেখতি পারিনি।
২০১০ সালে লালমনিরহাট সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ ৩ দশমিক ৭০ নিয়ে এইচএসসি, একই কলেজ থেকে ২০১৩ সালে প্রথম শ্রেণীতে ডিগ্রি (বিএসএস) এবং পরবর্তীতে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ২০১৫ সালে জিপিএ ৩ দশমিক ২৮ নিয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করি।
তিনি বলেন, সমাজসেবা অধিদফতর নীলফামারীর তৎকালীন উপ-পরিচালক আবদুর রাজ্জাক ২০১৬ সালে আমাকে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম ও ছাত্র সংগ্রহের দায়িত্বের পাশাপাশি পড়াশোনায় সহায়তার জন্য দায়িত্ব দেন।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হিসেবে আমি লালমনিরহাটে ব্রেইল পদ্ধতি রপ্ত করি এবং সেটির ব্যাপকতা ঘটাই এখানে।
আক্ষেপ করে জাকারিয়া বলেন, আমার তো বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে সরকারি চাকরির। এখানে দায়িত্বে থেকে ব্যাচলর অব স্পেশাল এডুকেশন কোর্সটি (বিএসএড) সম্পন্ন করতে পারিনি। কয়েকটি চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি কিন্তু চাকরি হয়নি।
অনেক হতাশা নিয়ে দিনযাপন করছি, ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকায় পড়েছি আমি।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছে আকুতি জানাই পিওন হলেও যেন এই মুজিববর্ষে আমার একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।
সমাজসেবা সূত্র জানায়, ৭ থেকে ১৩ বছর বয়সী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নেয়া হয় এই শিক্ষা কেন্দ্রে। সরকারি খরচে থাকা খাওয়া এবং আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে এতে।
পড়ানো হয় ব্রেইল পদ্ধতিতে। শিক্ষার্থীরা এখানে ব্যবহার করেন রাইটিং ফ্রেম, স্টাইলাজ, টকিং ডিভাইস, গণিতের জন্য টেইলার ফ্রেম ও অ্যাবাকাস, দ্রুত গতিতে লেখার জন্য পারকিংস প্রভৃতি।
প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিসোর্স টিচার ও সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন জানান, চারজনের পদ রয়েছে এখানে। কিন্তু স্থায়ীভাবে রয়েছে মাত্র একজন। যিনি নৈশ প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হাউস প্যারেন্টস ও বার্বুচিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নীলসাগর গ্রুপ সম্মানি দিয়ে পরিচালনা করছে।
জাকারিয়াকে আমাদের প্রয়োজন তার চাকরি স্থায়ী হলে প্রতিষ্ঠানটি সমৃদ্ধ হবে এবং জেলার দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা আলোকিত হতে পারবে।
তিনি বলেন, দৃষ্টি শক্তি হারিয়েও এখানকার ছাত্র মাসুম ২০১৮ সালের পিইসি পরীক্ষায় ৪ দশমিক ৫৮ পেয়েছে। এছাড়া ২০১৯ সালের পিইসি পরীক্ষায় শামসুল এ প্লাস, বাবলা ৪ দশমিক ৭০, মোরশেদুল এ প্লাস অর্জন করে।
জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক ইমাম হাসিন বলেন, ২০১৬ সাল থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে।
এতদিন এটি প্রকল্প আকারে ছিল এখন রেভিনিউ (রাজস্ব) খাতে গেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। তারপরও জাকারিয়ার বিষয়টি আমরা উপড়ে বলে রেখেছি।
কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমার এখানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী দু’জন বাচ্চা পড়ে। তাদের সব দিকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
ক্লাসেও তাদের কোন সমস্যা হয় না। অন্য ছেলেরা যেভাবে পড়েন তারাও পড়তে পারে শুধু ব্যতিক্রম তাদের বইটি আলাদা কিন্তু বইয়ের পাঠ্যসূচি একই।
বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২০ , ৮ মাঘ ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
প্রতিনিধি, নীলফামারী
জাকারিয়া হোসাইন (৩১)। আলোর পথ দেখাচ্ছেন জেলার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের।
ব্রেইল পদ্ধতিতে পাঠদান করাচ্ছেন নয় শিক্ষার্থীকে। শুধু শিক্ষক হিসেবেই নয় পরীক্ষক হিসেবেও একমাত্র তিনি।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখুলি গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সবার্র ছোট সে।
সমাজসেবা অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম’-এ অস্থায়ী ভিত্তিতে হাউস প্যারেন্টস কাম শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জাকারিয়া।
সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে নয়জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের একমাত্র ভরসা জাকারিয়ার হাত ধরে নিজেদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে এখানকার শিক্ষার্থীরা।
নয়জনের মধ্যে পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে দুইজন, নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে দুইজন ও কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ছে দু’জন এবং বাকি তিনজনকে সমাজ সেবার এই কেন্দ্রে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ানো হচ্ছে।
নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়ণরত জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের চাওড়াডাঙ্গি গ্রামের এরশাদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ মাসুম বলেন, আমি চোখ দিয়ে দেখি না ঠিকই কিন্তু আমার মনের চোখতো বন্ধ নেই।
আর দশজনের মতো আমি চলাফেরা পড়াশোনা করতে না পারলেও আমিও স্বপ্ন দেখছি ভালো মানুষ হওয়ার এবং পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটি চাকরি করার। নিশ্চয় আমি সফল হবো।
কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের বাবলা রহমান জানান, আমি হতাশ নই। আমার মা বুলবুলি বেগম, বাবা শাহান উদ্দিন ও খালা মোহনা বেগম দু’চোখ দিয়ে দেখতে পারেন না কিন্তু তাদের সংসার তো চলছে।
আমিও পিছিয়ে থাকছি না, আমি যেখানে থাকি, আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব জায়গায় সহযোগিতায় পাচ্ছি। নিশ্চয় পড়াশোনা শেষ করে আমি ভালো কিছু করতে পারবো।
স্যার জাকারিয়া যেভাবে আমাদের পড়াশোনা করাচ্ছেন, দেখভাল করেন তাতে পরিবারের মতো মমতা ভালোবাসা দিয়ে করে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমে চারজনের পদ থাকলেও মাত্র একজন নৈশ প্রহরী ছাড়া স্থায়ী আর কেউ নেই এখানে।
সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন রিসোর্স টিচার পদে অতিরিক্ত রয়েছেন এখানে। বাকি দু’জনের মধ্যে জাকারিয়া হোসাইন হাউস প্যারেন্টস কাম টিচার ও তাহেরা বেগমকে বাবুর্চি হিসেবে শিল্প উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ‘নীলসাগর গ্রুপ’ মাসিক সম্মানি দিয়ে পরিচালনা করছে।
হাউস প্যারেন্টস কাম টিচার জাকারিয়া হোসেন বলেন, যখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি তখন ক্রিকেট খেলতে গিয়ে চোখে বলের আঘাত লাগে। ২০০৫ সালে আমি জিপিএ ৩.৩৩ নিয়ে দাখিল পাস করি।
এরই মধ্যে চোখে ব্যথা শুরু হলে ২০০৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে আমার দুটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তখন থেকে আর পৃথিবীর আলো দেখতি পারিনি।
২০১০ সালে লালমনিরহাট সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ ৩ দশমিক ৭০ নিয়ে এইচএসসি, একই কলেজ থেকে ২০১৩ সালে প্রথম শ্রেণীতে ডিগ্রি (বিএসএস) এবং পরবর্তীতে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ২০১৫ সালে জিপিএ ৩ দশমিক ২৮ নিয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করি।
তিনি বলেন, সমাজসেবা অধিদফতর নীলফামারীর তৎকালীন উপ-পরিচালক আবদুর রাজ্জাক ২০১৬ সালে আমাকে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম ও ছাত্র সংগ্রহের দায়িত্বের পাশাপাশি পড়াশোনায় সহায়তার জন্য দায়িত্ব দেন।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হিসেবে আমি লালমনিরহাটে ব্রেইল পদ্ধতি রপ্ত করি এবং সেটির ব্যাপকতা ঘটাই এখানে।
আক্ষেপ করে জাকারিয়া বলেন, আমার তো বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে সরকারি চাকরির। এখানে দায়িত্বে থেকে ব্যাচলর অব স্পেশাল এডুকেশন কোর্সটি (বিএসএড) সম্পন্ন করতে পারিনি। কয়েকটি চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি কিন্তু চাকরি হয়নি।
অনেক হতাশা নিয়ে দিনযাপন করছি, ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকায় পড়েছি আমি।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছে আকুতি জানাই পিওন হলেও যেন এই মুজিববর্ষে আমার একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।
সমাজসেবা সূত্র জানায়, ৭ থেকে ১৩ বছর বয়সী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নেয়া হয় এই শিক্ষা কেন্দ্রে। সরকারি খরচে থাকা খাওয়া এবং আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে এতে।
পড়ানো হয় ব্রেইল পদ্ধতিতে। শিক্ষার্থীরা এখানে ব্যবহার করেন রাইটিং ফ্রেম, স্টাইলাজ, টকিং ডিভাইস, গণিতের জন্য টেইলার ফ্রেম ও অ্যাবাকাস, দ্রুত গতিতে লেখার জন্য পারকিংস প্রভৃতি।
প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিসোর্স টিচার ও সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন জানান, চারজনের পদ রয়েছে এখানে। কিন্তু স্থায়ীভাবে রয়েছে মাত্র একজন। যিনি নৈশ প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হাউস প্যারেন্টস ও বার্বুচিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নীলসাগর গ্রুপ সম্মানি দিয়ে পরিচালনা করছে।
জাকারিয়াকে আমাদের প্রয়োজন তার চাকরি স্থায়ী হলে প্রতিষ্ঠানটি সমৃদ্ধ হবে এবং জেলার দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা আলোকিত হতে পারবে।
তিনি বলেন, দৃষ্টি শক্তি হারিয়েও এখানকার ছাত্র মাসুম ২০১৮ সালের পিইসি পরীক্ষায় ৪ দশমিক ৫৮ পেয়েছে। এছাড়া ২০১৯ সালের পিইসি পরীক্ষায় শামসুল এ প্লাস, বাবলা ৪ দশমিক ৭০, মোরশেদুল এ প্লাস অর্জন করে।
জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক ইমাম হাসিন বলেন, ২০১৬ সাল থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে।
এতদিন এটি প্রকল্প আকারে ছিল এখন রেভিনিউ (রাজস্ব) খাতে গেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। তারপরও জাকারিয়ার বিষয়টি আমরা উপড়ে বলে রেখেছি।
কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমার এখানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী দু’জন বাচ্চা পড়ে। তাদের সব দিকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
ক্লাসেও তাদের কোন সমস্যা হয় না। অন্য ছেলেরা যেভাবে পড়েন তারাও পড়তে পারে শুধু ব্যতিক্রম তাদের বইটি আলাদা কিন্তু বইয়ের পাঠ্যসূচি একই।