বিনিয়োগকারীদের কর ছাড়ের চিন্তা

দেশের অস্থির শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি পুঁজিবাজার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রস্তাবনার যথাযথ বাস্তবায়ন তদারকির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একটি কমিটিও গঠন করেছে। এই কমিটির অন্যতম প্রস্তাব হলো, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা লোকসান করলে, তাদের কর ছাড় দেয়া হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

এ কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত সচিব মাকসুরা নূর আর সদস্য সচিব হচ্ছেন উপ-সচিব ড. নাহিদ হোসেন। এ কমিটিতে আরও রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মাসুদ বিশ্বাস, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ কমিটি পুঁজিবাজারের পতন ঠেকাতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের গত সোমবার জরুরি বৈঠক করেন। পর দিনই নিজেরা আবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে বৈঠক করে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতায় একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে। গতকাল এই কমিটির একজন সদস্য বলেন, শেয়ার মার্কেটকে কীভাবে গেইন করা যায়, বিভিন্ন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনা যায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করার জন্য বিনিয়োগ সংক্রান্ত করণীয় ঠিক করতে বিডার সঙ্গে বসব। পুঁজিবাজার সহায়ক কর নীতিমালা ঠিক করতে এনবিআরের সঙ্গে বসব। আমরা আজকে একটা দীর্ঘমেয়াদি ওয়ার্ক প্ল্যান করেছি। আমরা পুঁজিবাজারের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি প্ল্যানিং নিচ্ছি। পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করার জন্য আরও কি কি করা যায় সে বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে আমরা নিয়মিত স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসব। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের প্রটেক্টক করা।

গতকালের আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, এনবিআরের ট্যাক্সের বিষয়ে আজ মূলত আলোচনা হয়েছে। শেয়ারবাজারে একজন বিনিয়োগকারীকে যদি ১০ টাকা শেয়ার কিনে ৬ টাকায় বিক্রি করতে হয়, তারপরও যদি ট্যাক্স দিতে হয়, তাহলে তার লসের পরিমাণটা আরও বেড়ে যায়। তাহলে তো বিনিয়োগকারী রিয়েল লস ৫ টাকা হয়ে গেল। এক্ষেত্রে যারা বিনিয়োগ করে লস করছে তাদের কর ছাড় দেয়া যায় কিনা এসব বিষয় এনবিআরের সঙ্গে বসে নির্ধারণ করা হবে।

এদিকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নীতিনির্ধারণী সভায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। স্বল্পমেয়াদি কিছু পদক্ষেপ অচিরেই বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিএসইসি। ওইসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে- পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বাড়ানো; মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য কতিপয় সহজশর্তে ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করা; আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়ানো; বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও দেশীয় বাজারে আস্থা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া; প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া এবং বাজারে মানসম্পন্ন আইপিও বাড়াতে বহুজাতিক ও সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তকরণের উদ্যোগ নেয়া। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে জানানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে মর্মে সভায় আলোচনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২০ , ৯ মাঘ ১৪২৬, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

শেয়ারবাজার সংকট

বিনিয়োগকারীদের কর ছাড়ের চিন্তা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

দেশের অস্থির শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি পুঁজিবাজার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রস্তাবনার যথাযথ বাস্তবায়ন তদারকির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একটি কমিটিও গঠন করেছে। এই কমিটির অন্যতম প্রস্তাব হলো, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা লোকসান করলে, তাদের কর ছাড় দেয়া হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

এ কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত সচিব মাকসুরা নূর আর সদস্য সচিব হচ্ছেন উপ-সচিব ড. নাহিদ হোসেন। এ কমিটিতে আরও রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মাসুদ বিশ্বাস, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ কমিটি পুঁজিবাজারের পতন ঠেকাতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের গত সোমবার জরুরি বৈঠক করেন। পর দিনই নিজেরা আবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে বৈঠক করে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতায় একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে। গতকাল এই কমিটির একজন সদস্য বলেন, শেয়ার মার্কেটকে কীভাবে গেইন করা যায়, বিভিন্ন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনা যায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করার জন্য বিনিয়োগ সংক্রান্ত করণীয় ঠিক করতে বিডার সঙ্গে বসব। পুঁজিবাজার সহায়ক কর নীতিমালা ঠিক করতে এনবিআরের সঙ্গে বসব। আমরা আজকে একটা দীর্ঘমেয়াদি ওয়ার্ক প্ল্যান করেছি। আমরা পুঁজিবাজারের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি প্ল্যানিং নিচ্ছি। পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করার জন্য আরও কি কি করা যায় সে বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে আমরা নিয়মিত স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসব। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের প্রটেক্টক করা।

গতকালের আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, এনবিআরের ট্যাক্সের বিষয়ে আজ মূলত আলোচনা হয়েছে। শেয়ারবাজারে একজন বিনিয়োগকারীকে যদি ১০ টাকা শেয়ার কিনে ৬ টাকায় বিক্রি করতে হয়, তারপরও যদি ট্যাক্স দিতে হয়, তাহলে তার লসের পরিমাণটা আরও বেড়ে যায়। তাহলে তো বিনিয়োগকারী রিয়েল লস ৫ টাকা হয়ে গেল। এক্ষেত্রে যারা বিনিয়োগ করে লস করছে তাদের কর ছাড় দেয়া যায় কিনা এসব বিষয় এনবিআরের সঙ্গে বসে নির্ধারণ করা হবে।

এদিকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নীতিনির্ধারণী সভায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। স্বল্পমেয়াদি কিছু পদক্ষেপ অচিরেই বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিএসইসি। ওইসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে- পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বাড়ানো; মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য কতিপয় সহজশর্তে ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করা; আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়ানো; বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও দেশীয় বাজারে আস্থা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া; প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া এবং বাজারে মানসম্পন্ন আইপিও বাড়াতে বহুজাতিক ও সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তকরণের উদ্যোগ নেয়া। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে জানানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে মর্মে সভায় আলোচনা হয়েছে।