হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ তাবিথের বিরুদ্ধে

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী তাবিথ আওয়ালের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে দেশীয় এবং আন্তজার্তিক কিছু গণমাধ্যমে খবরের শিরোনাম হয়েছে। তথ্য গোপনের খবর প্রকাশ হলেও তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন থেকে তদন্ত হচ্ছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।

অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনী হলফনামায় ব্যবসায়ী পুত্র ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল যেসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানার কথা উল্লেখ করেছেন সেখানে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এনএফএম এনার্জি (সিঙ্গাপুর) নামক প্রতিষ্ঠানের নাম নেই। অথচ এ প্রতিষ্ঠানে ২০০৮ সালে ১ হাজার শেয়ারের মধ্যে তাবিথ আওয়াল একাই ৩৪০ শেয়ার কেনেন। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের লিড শেয়ার হোল্ডার। বিএনপি এ প্রার্থীর নাম প্যারাডাইড পেপারস কেলেঙ্কারীতেও এসেছিল। তাবিথ আওয়াল ও তার পরিবারের সদস্যসহ অনেক বাংলাদেশির নাম প্যারাডাইস পেপাস ফাঁস কেলেঙ্কারীতে আসার পর এ নিয়ে অনুসন্ধানের ঘোষণা দিয়েছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তাবিথ আওয়ালকে পাওয়া যায়নি। গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তার পিএস হাসান মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাবিথ আওয়াল নির্বাচনী প্রচরণায় ব্যস্থ আছেন।

নির্বাচন সংশ্লিষ্টা বলেন, কোন প্রার্থী হলফনামায় তথ্য গোপন করলে তার প্রার্থীরা থাকার কথা নয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কিভাবে কাজ করছে তা স্পষ্ট নয়। যদি তাবিথ আওয়াল তথ্য গোপন করে থাকেন এবং তার উপযুক্ত প্রমাণ থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী এখনি ব্যবস্থা নেয়া দরকার। বিষয়টি নির্বাচন কমিশন থেকে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের নভেম্ব ফাঁস হওয়া নথিতে বিএনপি থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল এবং তার বাবা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী আবদুল আওয়াল মিন্টু, তাবিথের মা ফাতেমা আওয়াল, দুই ভাই তাসরিফ মোহাম্মদ আওয়াল এবং তাজওয়ার মোহাম্মদ আওয়ালের নাম আসে। ওই তালিকায় বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ আরও অনেকের নাম আসে। এরপর থেকে দূর্নীতির সম্পর্ক্যে তথ্য উপাত্ত নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন ট্রান্সপারেন্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। সে সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বিষয়টি অনুসন্ধানের ঘোষণা দিলেও তা আর দৃশ্যমান হয়নি।

তবে দুদক সূত্র জানায়, প্যারাডাইস পেপারস নিয়ে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে কাজ করতে দুদকের উপ-পরিচালক মীর জয়নুল আবেদিন শিবলীর নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান টিমও গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুদক থেকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গেও যোগাযোগ করছে অনুসন্ধান টিম।

বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২০ , ৯ মাঘ ১৪২৬, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচন

হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ তাবিথের বিরুদ্ধে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী তাবিথ আওয়ালের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে দেশীয় এবং আন্তজার্তিক কিছু গণমাধ্যমে খবরের শিরোনাম হয়েছে। তথ্য গোপনের খবর প্রকাশ হলেও তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন থেকে তদন্ত হচ্ছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।

অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনী হলফনামায় ব্যবসায়ী পুত্র ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল যেসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানার কথা উল্লেখ করেছেন সেখানে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এনএফএম এনার্জি (সিঙ্গাপুর) নামক প্রতিষ্ঠানের নাম নেই। অথচ এ প্রতিষ্ঠানে ২০০৮ সালে ১ হাজার শেয়ারের মধ্যে তাবিথ আওয়াল একাই ৩৪০ শেয়ার কেনেন। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের লিড শেয়ার হোল্ডার। বিএনপি এ প্রার্থীর নাম প্যারাডাইড পেপারস কেলেঙ্কারীতেও এসেছিল। তাবিথ আওয়াল ও তার পরিবারের সদস্যসহ অনেক বাংলাদেশির নাম প্যারাডাইস পেপাস ফাঁস কেলেঙ্কারীতে আসার পর এ নিয়ে অনুসন্ধানের ঘোষণা দিয়েছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তাবিথ আওয়ালকে পাওয়া যায়নি। গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তার পিএস হাসান মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাবিথ আওয়াল নির্বাচনী প্রচরণায় ব্যস্থ আছেন।

নির্বাচন সংশ্লিষ্টা বলেন, কোন প্রার্থী হলফনামায় তথ্য গোপন করলে তার প্রার্থীরা থাকার কথা নয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কিভাবে কাজ করছে তা স্পষ্ট নয়। যদি তাবিথ আওয়াল তথ্য গোপন করে থাকেন এবং তার উপযুক্ত প্রমাণ থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী এখনি ব্যবস্থা নেয়া দরকার। বিষয়টি নির্বাচন কমিশন থেকে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের নভেম্ব ফাঁস হওয়া নথিতে বিএনপি থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল এবং তার বাবা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী আবদুল আওয়াল মিন্টু, তাবিথের মা ফাতেমা আওয়াল, দুই ভাই তাসরিফ মোহাম্মদ আওয়াল এবং তাজওয়ার মোহাম্মদ আওয়ালের নাম আসে। ওই তালিকায় বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ আরও অনেকের নাম আসে। এরপর থেকে দূর্নীতির সম্পর্ক্যে তথ্য উপাত্ত নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন ট্রান্সপারেন্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। সে সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বিষয়টি অনুসন্ধানের ঘোষণা দিলেও তা আর দৃশ্যমান হয়নি।

তবে দুদক সূত্র জানায়, প্যারাডাইস পেপারস নিয়ে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে কাজ করতে দুদকের উপ-পরিচালক মীর জয়নুল আবেদিন শিবলীর নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান টিমও গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুদক থেকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গেও যোগাযোগ করছে অনুসন্ধান টিম।