বাঁশের খুঁটিতে দাঁড়িয়ে ৩৫ বছরের জীর্ণ সেতু দুর্ঘটনার আশঙ্কা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-নবীনগর সড়কে যান চলাচল বিঘিœত করছে ৩৫-৩৬ বছর আগে নির্মিত একটি ব্রিজ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার গাছতলায় বদগনী খালের ওপর ব্রিজটি নির্মিত হয়েছে তিন যুগ আগে। বর্তমানে ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকার মানুষ। ব্রিজের নিচে বাঁশের ঠিকা দিয়ে রাখা হয়েছে। ৪-৫ দিন আগে ভেঙ্গে পড়ে এর ছাদ। এরপর ২১শে জানুয়ারি দিনভর সরাসরি যান চলাচল বন্ধ থাকে সড়ক দিয়ে। বিকেলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর(এলজিইডি) স্টিলের প্লেট বসিয়ে ব্রিজটি মেরামত করে। এর আগে ৩-৪ দিন ধরে ব্রিজের ভাঙ্গা অংশের একপাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে ।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, নির্মাণের সময়কালে মূলত খাল পাড়ি দিতেই এই ব্রিজটি ব্যবহার করত এলাকার মানুষেরা। কয়েক বছর আগে জেলা সদরের সঙ্গে নবীনগর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ চালু হওয়ার পর সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত অটো, মাইক্রো, মিনি ট্রাক চলাচল শুরু হয় এ পথে। সময় গড়ানোর সঙ্গে নানা যানবাহনের চাপ বাড়ে সড়কে। এরমধ্যে মালবোঝাই বড় ট্রাক, ইট-বালু বোঝাই ট্রাকটরও চলতে শুরু করে। কিন্তু কয়েক টন ওজন নেয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন এই ব্রিজ অল্প ক’দিনেই নড়বড়ে হয়ে পড়ে। ৪৭ মিটার দীর্ঘ এই ব্রিজ বর্তমান সড়কের সঙ্গেও বেমানান। সরু হওয়ায় যানবাহন একমুখী চলাচল করতে পারে শুধু।

গাছতলা গ্রামের সাদেক মিয়া জানান, প্রতি রাতে বড় ট্রাক চলে এই ব্রিজের ওপর দিয়ে। ১০-১৫টি ট্রাক বালু, পাথর এসব মাল নিয়ে ব্রিজ পার হয়। সে কারণেই এটি ভাইঙ্গা পড়ছে। সাদেক আরো জানান ব্রিজটি অনেক আগের। কোন রকমে রড,বালু সিমেন্ট দিয়ে বানাইছে তখন। তারপরও চলছে এতাদিন, মানুষ আর ছোটখাট গাড়িঘোড়া চলাচল করছে বলে।

নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হোসেন মিয়া জানান, ব্রিজটিতে ৪ দিন আগেই ভাঙন দেখা দেয়। পরে ভাঙন বড় হয়। ব্রিজটির অবস্থা ভাল না, সেটি তারা একবছর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্যের দৃষ্টিতে আনেন বলেও জানান তিনি। এলজিইডি’র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা এখন স্টিলের প্লেইট বসিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করছি। ব্রিজটি রিপ্লেসমেন্ট করার জন্যে আমরা অনেকদিন ধরেই লিখছি। এটি উপজেলা রোড। আমাদের ব্রিজ রিপ্লেসমেন্ট একটি প্রকল্প রয়েছে। এই প্রকল্প ছাড়াও অন্য প্রকল্প থেকেও আমরা ব্রিজটি করার চেষ্টা করছি। আশা করছি ২-৩ মাসের মাধ্যমে কোন প্রকল্প থেকে ব্রিজটির কাজ শুরু করতে পারব। তিনি জানান, গত মাস দুয়েক আগে একবার ভাঙ্গছে, এখন আবার ভাঙ্গছে। আসলে আমাদের রাস্তায়তো ৮-৯ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলার কথা নয়।

শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২০ , ১০ মাঘ ১৪২৬, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

বাঁশের খুঁটিতে দাঁড়িয়ে ৩৫ বছরের জীর্ণ সেতু দুর্ঘটনার আশঙ্কা

মো. সাদেকুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

image

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : এভাবেই বাঁশে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে বদগনী খালের উপর নির্মিত জীর্ণ সেতু-সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-নবীনগর সড়কে যান চলাচল বিঘিœত করছে ৩৫-৩৬ বছর আগে নির্মিত একটি ব্রিজ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার গাছতলায় বদগনী খালের ওপর ব্রিজটি নির্মিত হয়েছে তিন যুগ আগে। বর্তমানে ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকার মানুষ। ব্রিজের নিচে বাঁশের ঠিকা দিয়ে রাখা হয়েছে। ৪-৫ দিন আগে ভেঙ্গে পড়ে এর ছাদ। এরপর ২১শে জানুয়ারি দিনভর সরাসরি যান চলাচল বন্ধ থাকে সড়ক দিয়ে। বিকেলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর(এলজিইডি) স্টিলের প্লেট বসিয়ে ব্রিজটি মেরামত করে। এর আগে ৩-৪ দিন ধরে ব্রিজের ভাঙ্গা অংশের একপাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে ।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, নির্মাণের সময়কালে মূলত খাল পাড়ি দিতেই এই ব্রিজটি ব্যবহার করত এলাকার মানুষেরা। কয়েক বছর আগে জেলা সদরের সঙ্গে নবীনগর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ চালু হওয়ার পর সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত অটো, মাইক্রো, মিনি ট্রাক চলাচল শুরু হয় এ পথে। সময় গড়ানোর সঙ্গে নানা যানবাহনের চাপ বাড়ে সড়কে। এরমধ্যে মালবোঝাই বড় ট্রাক, ইট-বালু বোঝাই ট্রাকটরও চলতে শুরু করে। কিন্তু কয়েক টন ওজন নেয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন এই ব্রিজ অল্প ক’দিনেই নড়বড়ে হয়ে পড়ে। ৪৭ মিটার দীর্ঘ এই ব্রিজ বর্তমান সড়কের সঙ্গেও বেমানান। সরু হওয়ায় যানবাহন একমুখী চলাচল করতে পারে শুধু।

গাছতলা গ্রামের সাদেক মিয়া জানান, প্রতি রাতে বড় ট্রাক চলে এই ব্রিজের ওপর দিয়ে। ১০-১৫টি ট্রাক বালু, পাথর এসব মাল নিয়ে ব্রিজ পার হয়। সে কারণেই এটি ভাইঙ্গা পড়ছে। সাদেক আরো জানান ব্রিজটি অনেক আগের। কোন রকমে রড,বালু সিমেন্ট দিয়ে বানাইছে তখন। তারপরও চলছে এতাদিন, মানুষ আর ছোটখাট গাড়িঘোড়া চলাচল করছে বলে।

নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হোসেন মিয়া জানান, ব্রিজটিতে ৪ দিন আগেই ভাঙন দেখা দেয়। পরে ভাঙন বড় হয়। ব্রিজটির অবস্থা ভাল না, সেটি তারা একবছর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্যের দৃষ্টিতে আনেন বলেও জানান তিনি। এলজিইডি’র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা এখন স্টিলের প্লেইট বসিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করছি। ব্রিজটি রিপ্লেসমেন্ট করার জন্যে আমরা অনেকদিন ধরেই লিখছি। এটি উপজেলা রোড। আমাদের ব্রিজ রিপ্লেসমেন্ট একটি প্রকল্প রয়েছে। এই প্রকল্প ছাড়াও অন্য প্রকল্প থেকেও আমরা ব্রিজটি করার চেষ্টা করছি। আশা করছি ২-৩ মাসের মাধ্যমে কোন প্রকল্প থেকে ব্রিজটির কাজ শুরু করতে পারব। তিনি জানান, গত মাস দুয়েক আগে একবার ভাঙ্গছে, এখন আবার ভাঙ্গছে। আসলে আমাদের রাস্তায়তো ৮-৯ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলার কথা নয়।