আইসিজের রায়

মায়ানমারকে গণহত্যা বন্ধ ও রোহিঙ্গা সুরক্ষায় চার নির্দেশনা

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় মায়ানমারের প্রতি অবশ্য পালনীয় ৪টি অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস, আইসিজে)। জাতিসঙ্গের সর্বোচ্চ এই আদালত মায়ানমারকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া এবং রাখাইন রাজ্যে এখন যে রোহিঙ্গারা বাস করছেন তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।

গতকাল ২৩ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের হেগে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা) অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ বিষয়ক এ রায় পড়া শুরু করেন আইসিজের প্রেসিডেন্ট আবদুল কোয়াই আহমেদ ইউসুফ। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ১৭ সদস্যের বিচারক প্যানেলের এই রায় তিনি পাঠ করেন। আইসিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সরাসরি এ রায় ঘোষণা সম্প্রচার করা হয়।

আইসিজে’র চার নির্দেশ : এক. মায়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সব ধরনের হত্যা ও হত্যা প্রচেষ্টা নিরসন করতে হবে। সেই সঙ্গে দূর করতে হবে তাদের যে কোন রকমের শারীরিক বা মানসিক ক্ষতির আশঙ্কা। নিশ্চিত করতে হবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার।

দুই. দেশটির সেনাবাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী বা যে কেউ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর ব্যাপারে কোন ধরনের ষড়যন্ত্র, উস্কানি বা কুকর্মে সহযোগিতার সুযোগ পাবে না, তা নিশ্চিত করতে হবে। তিন. রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোন ধরনের প্রমাণ ধ্বংস করা যাবে না। সব প্রমাণ অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।

চার. উপরোক্ত নির্দেশগুলো যথাযথভাবে যে পালিত হচ্ছে, ৪ মাস পর মায়ানমার সে বিষয়টি নিশ্চিত করে আইসিজেকে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এরপর থেকে চূড়ান্ত রায় দেয়ার আগ পর্যন্ত প্রত্যেক ৬ মাস অন্তর অন্তর মায়ানমারকে এ বিষয়ক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। সেসব প্রতিবেদন গাম্বিয়াকে দেয়া হবে। গাম্বিয়া সেগুলো পর্যবেক্ষণ করে নিজেদের মতামত জানাবে।

আইসিজে’র পর্যবেক্ষণ : আইসিজে পর্যবেক্ষণে বলেছে, রাখাইনে রোহিঙ্গারা গণহত্যার হুমকির মধ্যে রয়েছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন রাখাইনে সম্ভাব্য গণহত্যার যে আলামত পেয়েছে, তা পর্যালোচনা করে আইসিজে এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, মায়ানমারে বসবাসরত রোহিঙ্গারা জেনোসাইড কনভেনশনের অনুচ্ছেদ ২ অনুযায়ী একটি ‘প্রটেক্টেড গ্রুপ’। ২০১৭ সালে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর অভিযানের অভিযোগ উড়িয়ে দেয়া যায় না। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী তারা আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি ও বেসামরিকদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেনি। তাই অনেক বেসামরিক প্রাণ হারিয়েছে। রোহিঙ্গাদের অস্তিত্বের সুরক্ষা নিশ্চিতে কোন প্রস্তাব দেয়নি মায়ানমার। তাদের অবশ্যই জেনোসাইড কনভেনশন মেনে চলতে হবে এবং ভবিষ্যতে এমন হত্যাকা- যেন না হয় সেটা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। নেপিদো রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে দায়বদ্ধ বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে আইসিজে।

গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ৩ দিনব্যাপী নেদারল্যান্ডসের হেগে এ মামলার শুনানি হয়। এতে মায়ানমারের পক্ষে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচি অংশ নেয়। আদালতে তিনি রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। এছাড়া গাম্বিয়া (পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম প্রধান দেশ) মায়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার রাখে না বলেও দাবি করা হয় মায়ানমারের পক্ষে।

অন্যদিকে গাম্বিয়া রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে ও তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে আদালতকে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেয়ার অনুরোধ জানায়।

ওইদিন শুরুতে ওই শুনানির সূত্রে গাম্বিয়া ও মায়ানমারের অবস্থান নিয়ে আদালতের বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়। আদালত জানান, গণহত্যা কনভেনশনের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে গাম্বিয়া মায়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার রাখে।

গত ডিসেম্বরে মামলার শুনানিতে অং সান সুচি বলেন, সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির বিরুদ্ধেই মূলত ২০১৭ সালে রাখাইনে সেনা অভিযান চালানো হয়। ওই গোষ্ঠী বেশ কিছু সেনা চৌকিতে হামলা চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার প্রতিক্রিয়ায় ওই অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে কিছু সেনা আইন লঙ্ঘন করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন সুচি।

আদালত মায়ানমারের এ আত্মপক্ষ সমর্থনের সমালোচনা করে বলেছেন, ২০১৭ সালে মায়ানমার যে সেনা অভিযান চালায় তাতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। ব্যাপকহারে হত্যা, ধর্ষণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয় বেসামরিক রোহিঙ্গারা। মায়ানমার রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি ও বেসামরিক রোহিঙ্গাদের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে পারেনি।

রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে গাম্বিয়ার বক্তব্য, এ বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য ও গণহত্যা কনভেনশনে উল্লেখিত গণহত্যার সংজ্ঞা অনুসারে মায়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর যে ধরনের নিপীড়ন ও সহিংসতার অভিযোগ উঠেছে তা গণহত্যার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে জানান আন্তজার্তিক বিচারক আদালত। মায়ানমারে এখনও বিভিন্ন ক্যাম্পে ৬ লাখ বিপন্ন রোহিঙ্গা অবস্থান করছে বলে জানান আদালত।

আরও বিস্তারিত তদন্ত, সুস্পষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণের আগে আদালত এখনই চূড়ান্ত রায় দেবেন না। এজন্য আরও সময় প্রয়োজন। কিন্তু সার্বিক বিশ্লেষণে রোহিঙ্গারা বিপন্ন প্রতিভাত হওয়ায় তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে চূড়ান্ত রায়ের আগ পর্যন্ত মায়ানমারের উদ্দেশে অবশ্যপালনীয় ৪টি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছেন আইসিজে।

গত নভেম্বর রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ তুলে মায়ানমারের বিরুদ্ধে এ মামলা করে গাম্বিয়া। গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ৩ দিনব্যাপী নেদারল্যান্ডসের হেগে ওই মামলার শুনানি হয়।

image

বিচারক প্যানেলের রায় পাঠ করেন আইসিজের প্রেসিডেন্ট আবদুল কোয়াই আহমেদ ইউসুফ (ডানে)

আরও খবর
রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে নতুন আদালত গঠনের প্রস্তাব দেবেন ইয়াং হি লি

শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২০ , ১০ মাঘ ১৪২৬, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

আইসিজের রায়

মায়ানমারকে গণহত্যা বন্ধ ও রোহিঙ্গা সুরক্ষায় চার নির্দেশনা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

বিচারক প্যানেলের রায় পাঠ করেন আইসিজের প্রেসিডেন্ট আবদুল কোয়াই আহমেদ ইউসুফ (ডানে)

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় মায়ানমারের প্রতি অবশ্য পালনীয় ৪টি অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস, আইসিজে)। জাতিসঙ্গের সর্বোচ্চ এই আদালত মায়ানমারকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া এবং রাখাইন রাজ্যে এখন যে রোহিঙ্গারা বাস করছেন তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।

গতকাল ২৩ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের হেগে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা) অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ বিষয়ক এ রায় পড়া শুরু করেন আইসিজের প্রেসিডেন্ট আবদুল কোয়াই আহমেদ ইউসুফ। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ১৭ সদস্যের বিচারক প্যানেলের এই রায় তিনি পাঠ করেন। আইসিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সরাসরি এ রায় ঘোষণা সম্প্রচার করা হয়।

আইসিজে’র চার নির্দেশ : এক. মায়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সব ধরনের হত্যা ও হত্যা প্রচেষ্টা নিরসন করতে হবে। সেই সঙ্গে দূর করতে হবে তাদের যে কোন রকমের শারীরিক বা মানসিক ক্ষতির আশঙ্কা। নিশ্চিত করতে হবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার।

দুই. দেশটির সেনাবাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী বা যে কেউ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর ব্যাপারে কোন ধরনের ষড়যন্ত্র, উস্কানি বা কুকর্মে সহযোগিতার সুযোগ পাবে না, তা নিশ্চিত করতে হবে। তিন. রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোন ধরনের প্রমাণ ধ্বংস করা যাবে না। সব প্রমাণ অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।

চার. উপরোক্ত নির্দেশগুলো যথাযথভাবে যে পালিত হচ্ছে, ৪ মাস পর মায়ানমার সে বিষয়টি নিশ্চিত করে আইসিজেকে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এরপর থেকে চূড়ান্ত রায় দেয়ার আগ পর্যন্ত প্রত্যেক ৬ মাস অন্তর অন্তর মায়ানমারকে এ বিষয়ক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। সেসব প্রতিবেদন গাম্বিয়াকে দেয়া হবে। গাম্বিয়া সেগুলো পর্যবেক্ষণ করে নিজেদের মতামত জানাবে।

আইসিজে’র পর্যবেক্ষণ : আইসিজে পর্যবেক্ষণে বলেছে, রাখাইনে রোহিঙ্গারা গণহত্যার হুমকির মধ্যে রয়েছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন রাখাইনে সম্ভাব্য গণহত্যার যে আলামত পেয়েছে, তা পর্যালোচনা করে আইসিজে এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, মায়ানমারে বসবাসরত রোহিঙ্গারা জেনোসাইড কনভেনশনের অনুচ্ছেদ ২ অনুযায়ী একটি ‘প্রটেক্টেড গ্রুপ’। ২০১৭ সালে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর অভিযানের অভিযোগ উড়িয়ে দেয়া যায় না। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী তারা আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি ও বেসামরিকদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেনি। তাই অনেক বেসামরিক প্রাণ হারিয়েছে। রোহিঙ্গাদের অস্তিত্বের সুরক্ষা নিশ্চিতে কোন প্রস্তাব দেয়নি মায়ানমার। তাদের অবশ্যই জেনোসাইড কনভেনশন মেনে চলতে হবে এবং ভবিষ্যতে এমন হত্যাকা- যেন না হয় সেটা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। নেপিদো রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে দায়বদ্ধ বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে আইসিজে।

গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ৩ দিনব্যাপী নেদারল্যান্ডসের হেগে এ মামলার শুনানি হয়। এতে মায়ানমারের পক্ষে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচি অংশ নেয়। আদালতে তিনি রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। এছাড়া গাম্বিয়া (পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম প্রধান দেশ) মায়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার রাখে না বলেও দাবি করা হয় মায়ানমারের পক্ষে।

অন্যদিকে গাম্বিয়া রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে ও তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে আদালতকে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেয়ার অনুরোধ জানায়।

ওইদিন শুরুতে ওই শুনানির সূত্রে গাম্বিয়া ও মায়ানমারের অবস্থান নিয়ে আদালতের বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়। আদালত জানান, গণহত্যা কনভেনশনের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে গাম্বিয়া মায়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার রাখে।

গত ডিসেম্বরে মামলার শুনানিতে অং সান সুচি বলেন, সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির বিরুদ্ধেই মূলত ২০১৭ সালে রাখাইনে সেনা অভিযান চালানো হয়। ওই গোষ্ঠী বেশ কিছু সেনা চৌকিতে হামলা চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার প্রতিক্রিয়ায় ওই অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে কিছু সেনা আইন লঙ্ঘন করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন সুচি।

আদালত মায়ানমারের এ আত্মপক্ষ সমর্থনের সমালোচনা করে বলেছেন, ২০১৭ সালে মায়ানমার যে সেনা অভিযান চালায় তাতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। ব্যাপকহারে হত্যা, ধর্ষণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয় বেসামরিক রোহিঙ্গারা। মায়ানমার রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি ও বেসামরিক রোহিঙ্গাদের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে পারেনি।

রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে গাম্বিয়ার বক্তব্য, এ বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য ও গণহত্যা কনভেনশনে উল্লেখিত গণহত্যার সংজ্ঞা অনুসারে মায়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর যে ধরনের নিপীড়ন ও সহিংসতার অভিযোগ উঠেছে তা গণহত্যার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে জানান আন্তজার্তিক বিচারক আদালত। মায়ানমারে এখনও বিভিন্ন ক্যাম্পে ৬ লাখ বিপন্ন রোহিঙ্গা অবস্থান করছে বলে জানান আদালত।

আরও বিস্তারিত তদন্ত, সুস্পষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণের আগে আদালত এখনই চূড়ান্ত রায় দেবেন না। এজন্য আরও সময় প্রয়োজন। কিন্তু সার্বিক বিশ্লেষণে রোহিঙ্গারা বিপন্ন প্রতিভাত হওয়ায় তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে চূড়ান্ত রায়ের আগ পর্যন্ত মায়ানমারের উদ্দেশে অবশ্যপালনীয় ৪টি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছেন আইসিজে।

গত নভেম্বর রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ তুলে মায়ানমারের বিরুদ্ধে এ মামলা করে গাম্বিয়া। গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ৩ দিনব্যাপী নেদারল্যান্ডসের হেগে ওই মামলার শুনানি হয়।