দেশের অর্থনীতি খারাপ সময় পার করছে : অর্থমন্ত্রী

দেশের অর্থনীতি খারাপ সময় পার করছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশে ডেভলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) ‘বিডিবিএল ব্রাঞ্চ ম্যানেজারদের বার্ষিক কার্যক্রম প্রণয়ন সম্মেলন ২০২০’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিডিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও কাজী আলমগীরের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, বিডিবিএলের চেয়ারম্যান ও সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেসবাহউদ্দিন এবং পরিচলক কাজী তরিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন অর্থনীতির একটা খারাপ সময় যাচ্ছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই। কোন দেশেই আমদানি-রপ্তানি সঠিকভাবে হচ্ছে না। আমদানি রপ্তানি কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের কিছু সেক্টরে এর প্রভাব পড়েছে। তবে আমি আশা করি, বছর শেষে এই সেক্টরগুলোর আর পিছিয়ে থাকবে না। আমদানি-রপ্তানির অবস্থা ভালো হয়ে যাবে। ব্যাংক খাতের অবস্থা ভালো নয় ইঙ্গিত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকগুলো যদি ভালো চলতো, তবে ব্যাংকগুলোকে মার্চ করতে হতো না। ১৯৯৭ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির অবস্থা খারাপ ছিল। এরপর ২০০৯ সালে দ্বিতীয় দফায় খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দূরদৃষ্টিতার কারণে এখন অবস্থান থেকে উত্তোলন হয়েছে। দেশের অর্থনীতির ভিত গড়ে উঠেছে। আর এ কারণেই গত ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি সারাবিশ্বে রোল মডেল হয়েছে।

ব্যাংকারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এ কারণে সংসদে আমাকে গালি শুনতে হচ্ছে। আপনারা বলেন, এটা কি আমার জন্য হয়েছে? আপনাদের জন্য না? আমি আশা করব, আমার জন্য নয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শতবার্ষিকী উপলক্ষে আপনার সবাই যার যার দায়িত্ব পালন করবেন। দেশটাকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করবেন। আপনাদের মধ্যে সবাই খারাপ রয়েছেন তা বলব না। কিছু সংখ্যক লোক রয়েছে যারা খারাপ। বাংলাদেশ ব্যাংক, কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে, নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। শাস্তি দিন।

তিনি আরও বলেন, শিল্প খাতে অবদান রাখার জন্য আপনাদের এই ব্যাংকটির সৃষ্টি। শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি করার জন্য আপনারা জাতির কাছে দায়বদ্ধ। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা, মালিকানা ও দেখাশোনাসহ সবকিছুর দায়িত্ব আপনাদের। সবার অবদানের ওপর ভিত্তি করেই আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ২০ অর্থনীতির দেশের মধ্যে প্রবেশ করব। এই মুহূর্তে আমরা ৩৯তম স্থানে অবস্থান করছি। ২০২৭ সালের মধ্যে ২৪তম স্থানে পৌঁছাব। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হতে চাই, যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ক্লাসিফাইড লোন (খেলাপি ঋণ) আপনারা কমিয়ে এনেছেন। ৫০ শতাংশ থেকে সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের রিপোর্ট অনুসারে, ৩৮ শতাংশে এসেছে। এটা আরও কমাতে হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তির ঝুঁকির প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। মূলধন সংরক্ষণ হার ও আমানত বাড়াতে হবে। দেশের অর্থনীতিতে এখন প্রাইভেট সেক্টরের প্রবৃদ্ধি কমেছে। বর্তমানে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ আর টার্গেট ছিল ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির। সেটা হচ্ছে না। এ বিষয়টা অগ্রাধিকার দিতে হবে।

শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৪ মাঘ ১৪২৬, ১২ জমাদিউল সানি ১৪৪১

দেশের অর্থনীতি খারাপ সময় পার করছে : অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

দেশের অর্থনীতি খারাপ সময় পার করছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশে ডেভলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) ‘বিডিবিএল ব্রাঞ্চ ম্যানেজারদের বার্ষিক কার্যক্রম প্রণয়ন সম্মেলন ২০২০’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিডিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও কাজী আলমগীরের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, বিডিবিএলের চেয়ারম্যান ও সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেসবাহউদ্দিন এবং পরিচলক কাজী তরিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন অর্থনীতির একটা খারাপ সময় যাচ্ছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই। কোন দেশেই আমদানি-রপ্তানি সঠিকভাবে হচ্ছে না। আমদানি রপ্তানি কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের কিছু সেক্টরে এর প্রভাব পড়েছে। তবে আমি আশা করি, বছর শেষে এই সেক্টরগুলোর আর পিছিয়ে থাকবে না। আমদানি-রপ্তানির অবস্থা ভালো হয়ে যাবে। ব্যাংক খাতের অবস্থা ভালো নয় ইঙ্গিত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকগুলো যদি ভালো চলতো, তবে ব্যাংকগুলোকে মার্চ করতে হতো না। ১৯৯৭ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির অবস্থা খারাপ ছিল। এরপর ২০০৯ সালে দ্বিতীয় দফায় খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দূরদৃষ্টিতার কারণে এখন অবস্থান থেকে উত্তোলন হয়েছে। দেশের অর্থনীতির ভিত গড়ে উঠেছে। আর এ কারণেই গত ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি সারাবিশ্বে রোল মডেল হয়েছে।

ব্যাংকারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এ কারণে সংসদে আমাকে গালি শুনতে হচ্ছে। আপনারা বলেন, এটা কি আমার জন্য হয়েছে? আপনাদের জন্য না? আমি আশা করব, আমার জন্য নয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শতবার্ষিকী উপলক্ষে আপনার সবাই যার যার দায়িত্ব পালন করবেন। দেশটাকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করবেন। আপনাদের মধ্যে সবাই খারাপ রয়েছেন তা বলব না। কিছু সংখ্যক লোক রয়েছে যারা খারাপ। বাংলাদেশ ব্যাংক, কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে, নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। শাস্তি দিন।

তিনি আরও বলেন, শিল্প খাতে অবদান রাখার জন্য আপনাদের এই ব্যাংকটির সৃষ্টি। শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি করার জন্য আপনারা জাতির কাছে দায়বদ্ধ। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা, মালিকানা ও দেখাশোনাসহ সবকিছুর দায়িত্ব আপনাদের। সবার অবদানের ওপর ভিত্তি করেই আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ২০ অর্থনীতির দেশের মধ্যে প্রবেশ করব। এই মুহূর্তে আমরা ৩৯তম স্থানে অবস্থান করছি। ২০২৭ সালের মধ্যে ২৪তম স্থানে পৌঁছাব। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হতে চাই, যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ক্লাসিফাইড লোন (খেলাপি ঋণ) আপনারা কমিয়ে এনেছেন। ৫০ শতাংশ থেকে সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের রিপোর্ট অনুসারে, ৩৮ শতাংশে এসেছে। এটা আরও কমাতে হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তির ঝুঁকির প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। মূলধন সংরক্ষণ হার ও আমানত বাড়াতে হবে। দেশের অর্থনীতিতে এখন প্রাইভেট সেক্টরের প্রবৃদ্ধি কমেছে। বর্তমানে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ আর টার্গেট ছিল ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির। সেটা হচ্ছে না। এ বিষয়টা অগ্রাধিকার দিতে হবে।