৬ জেলায় করোনা আক্রান্ত ৯

বরিশাল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

বরিশালে প্রথমবারের মতো দুই ব্যক্তির শরীরে করোনারভাইরাস ধরা পড়েছে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা হচ্ছেন বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গারহাট এলাকার বজলুর রহমান ও অন্যজন হচ্ছেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরচর এলাকার বাসিন্দা আবদুর রব মুন্সি। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার পর দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। বজলুর রহমানের বয়স ৬৫ বছর ও আবদুর রব মুন্সির বয়স ৬০ বছর। তারা দু’জনেই গত ৮ এপ্রিল থেকে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। করোনা আক্রান্ত বজলুর রহমান জনতা ব্যাংক লিমিটেডের কলসকাঠি ইউনিয়ন শাখায় গার্ডের চাকরি করতেন। সর্দি জ¦রে আক্রান্ত হবার পর তিনি স্থানীয় ডিজিটাল ক্লিনিক ও তার বাড়ির পাশের ৮টি বাড়িসহ আধা কিলোমিটারকে লকডাউন করা হয়। প্রয়োজনে তার বাড়ির অন্যান্য সদস্যদেরও পরীক্ষা করা হতে পারে। তিনি কিভাবে আক্রান্ত হলেন সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া শুরু হয়েছে। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের একটি হোসিয়ারি কারখানার শ্রমিক আবদুর রব মুন্সি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়ি এসেছিলেন বলে জানা গেছে। তার বাড়িসহ আশপাশের ১০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এসব বাড়িতে প্রায় ৪০টি পরিবার বসবাস করে। অন্যদিকে বরিশালে প্রথমবারের মতো করোনার রোগী পাওয়ায় রোববার রাতে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বরিশাল জেলাকেই লকডাউনের আওতায় এনেছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জরুরী সেবার যানবাহন ব্যতীত অন্য কোন যান বরিশালে আসতে পারবে না। এছাড়া বরিশাল থেকে কেউ বাইরে এবং বাইরের কেউ বরিশালে আসতে পারবেন না। এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।

তিতাস

প্রতিনিধি, হোমনা (কুমিল্লা)

কুমিল্লার তিতাসে একই পরিবারের বাবা-মেয়েসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ জন। উপজেলার কড়িকান্দি সদর ইউনিয়নের বিরামকান্দি ও জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের এ রোগী শনাক্ত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনা পজেটিভ রোগীরা হলো, বিরামকান্দি গ্রামের মো. জালালমিয়া (৫০)ও তার মেয়ে মোসাম্মৎ সাথী আক্তার (১২)এবং মৌটুপী গ্রামের কুস্তীগির মো. রাসেল (৩০)।

জানা যায়, বিরামকান্দি গ্রামের মো.জালাল মিয়া ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করত। করোনা পরিস্থিতিতে গ্রামে চলে আসে। এখানে অসুস্থতা অনুভব করলে উপজেলা প্রশাসণের সহযোগিতায় একটি মেডিকেল টিম নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করলে গত ৯ এপ্রিল করোনা পজেটিভ ধরা পরে। এরপর পুরো এলাকা লকডাউন করে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে মেয়ে সাথী আক্তারেরও পজেটিভ হয়। অপরদিকে জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের কুস্তীগির মো. রাসেল অসুস্থ অনুভব হলে উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে একটি মেডিকেল টিম নমুনা সংগ্রহ করে। গত ১০ এপ্রিল তারও করোনা পজেটিভ আসে। এ নিয়ে তিতাসে সর্বমোট ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত পজেটিভ পাওয়া যায় এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিতাস উপজেলাকে লকডাউন করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প.কর্মকর্তা ডাক্তার মো. সরফরাজ হোসেন খান সংবাদকে বলেন, তিতাসের পৃথক দুটি গ্রামে ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তিতাস উপজেলাকে প্রশাসন লকডাউন করে রেখেছে। এছাড়াও মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে উপজেলা প্রশাসন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। তিতাসবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আতঙ্ক নয়, সচেতন হউন। ঘরে থাকুন।

পুঠিয়া

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

এতদিন রাজশাহীতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী না থাকলেও প্রথমবারের মতো একজন পজেটিভ রোগী পাওয়া গেছে। রাজশাহীর পুঠিয়ায় এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসক। তার বাড়ি উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বগুড়াপাড়া গ্রামে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে নমুনায় করোনাভাইরাস নিশ্চিত হওয়ার পর সংক্রমিত ব্যক্তির আশপাশের ৪০টি বাড়ি লকডাউন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কয়েকদিন আগে তিনি বাড়িতে ফিরেছেন। রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ না। ওই ব্যক্তিকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনে পরে থাকে হাসপাতালে নেয়া হতে পারে। আর প্রয়োজন না হলে বাড়িতেই চিকিৎসা চলবে। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য জানান, আক্রান্ত ব্যাক্তি ৮ এপ্রিল ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে আসে। শনিবার তার নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের করোনা ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষার পর রবিবার বিকেলে তার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। এ নিয়ে রাজশাহীতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হলো। আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়ি থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য বলেন, পুঠিয়ার ওই ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ওই পরিবারের সকল সদস্যকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি এলাকায় মাইকিং করে কাউকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকাও তৈরি করেছে প্রশাসন। তাদেরও লকডাউনের মধ্যে রাখা হয়েছে।

সীতাকুণ্ড

প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আরও এক ব্যক্তি (৪৫) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। গত রোববার রাতে ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা প্রজেটিভ হয় বলে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডাক্তার ফজলে রাব্বি নিশ্চিত করেন। আক্রান্ত ব্যক্তি ফৌজদারহাট ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও একজন স্ক্র্যাপ লোহা ব্যবসায়ী। ঘটনার খবর পেয়ে প্রশাসন তার বাড়ি ও আশপাশ লকডাউন করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ফৌজদারহাট ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির লোহার পাইপের ব্যবসা রয়েছে চট্টগ্রামের সাগরিকায়। সেই সূত্রে তিনি সাগরিকাতেই বসবাস করতেন। কয়েকদিন আগে তার পাশের বাড়ির এক মহিলা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে পুলিশ তার বাসাও লকডাউন করেছিলেন। এ অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে শনিবার তার স্ত্রীকে নিয়ে তিনি নিজ বাড়ি ফৌজদারহাটে চলে আসেন। স্থানীয় মেম্বার মোস্তাকিম আরজু ও সাবেক মেম্বার মাহাবুবুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, সাগরিকায় লকডাউনে থাকা অবস্থায় তিনি সীতাকুণ্ডে চলে আসার কথা জানতে পারার পর স্ত্রীসহ তার করোনা পরীক্ষার জন্য রবিবার ফৌজদারহাস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রিপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডিতে) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখানে ডাক্তাররা স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই নমুনা সংগ্রহ করেন। পরীক্ষা শেষে দেখা যায় তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত না হলেও ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত। রাতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডাক্তার ফজলে রাব্বি এ তথ্য নিশ্চিত করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার বাড়ি ও আশপাশের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করেন বলে তারা নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত এর আগে গত ৮ এপ্রিল সীতাকুণ্ড পৌরসদরের গোডাউন রোডে এক ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডও করোনায় আক্রান্ত হন। এ নিয়ে গত ৫ দিনে উপজেলায় দুই জন করোনায় আক্রান্ত হবার খবরে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর

জেলা বার্তা পরিবেশক, লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় এক ব্যক্তির করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই জেলায় এটি দ্বিতীয় করোনাভাইরাস শনাক্তের ঘটনা। গত রোববার রাতে ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়। ৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি কিছু দিন আগে নারায়ণগঞ্জে তাবলিগে গিয়েছিলেন। এর আগে গত শনিবার রাতে জেলায় প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার সকাল ছয়টা থেকে লক্ষ্মীপুর জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল গতকাল রোববার বিকেলে এই লকডাউনের ঘোষণা দেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তি ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে রামগতি আসেন। গত শুক্রবার জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে তিনি রামগতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। পরে তার নমুনা সংগ্রহ করে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামের বিআইটিআইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়। রোববার রাতে জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। এরপর রাতেই পুলিশের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে বাড়ি থেকে ঢাকায় কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন বলেন, লক্ষ্মীপুরে এ নিয়ে দু’জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।তাদের সংস্পর্শে যারা ছিলেন, তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

পটুয়াখালী

প্রতিনিধি, পটুয়াখালী

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে পোশাক তৈরির কারখানার কর্মী এক যুবক (৩০) মারা যাওয়ার পর এখন তার বোনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ওই যুবকের বোনের বয়স ৪০ বছর। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুবকের মৃত্যুর পর মারা যাওয়া যুবকের স্ত্রীসহ পরিবারের নয়জন সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। গত রোববার ওই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে ওই যুবকের বোনের পজিটিভ এসেছে। তাকে হোম কোয়ারেন্টিতে রাখা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ দুমকি গ্রামের নিজ বাড়িকে ওই যুবক মারা যায়। তিনি দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ওই যুবক নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক তৈরির কারখানার কর্মী ছিলেন।

এক সপ্তাহ আগে নারায়ণগঞ্জের কর্মস্থল থেকে ওই যুবক বাড়ি আসেন। এ সময় তিনি জ্বর-শ্বসকষ্ট, গলা ব্যথায় ভুগছিলেন।গত মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এ পাঠিয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সে তার বাড়িতে মারা যায়। ওই দিনই মারা যাওয়া ওই যুবকের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে পটুয়াখালীতে এসে পৌঁছে এবং নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এদিকে ওই যুবক মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রীসহ পরিবারের নয়জন সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়।

পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানায়, মারা যাওয়া যুবকের বোনের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে। তাকে বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে নিভির পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়াও যুবকের সঙ্গে সংস্পর্শে ছিলেন এমন ২৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলার বাসিন্দা ১৫১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এ পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত ৭১ জনের রিপোর্ট এসেছে এবং এর মধ্যে দুইজনের পজিটিভ এসেছে। এরা দুইজন ভাইবোন। এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুবক মারা যাওয়ার পরদিন থেকে দুমকি উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। দুমকি উপজেলা শহরের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক ও নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরী ওষুধপত্র ও পণ্যবাহী যান চলাচল এর আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটে পাহারা ও সড়কে টহল জোড়দার করেছে।

মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল ২০২০ , ১ বৈশাখ ১৪২৭, ১৯ শাবান ১৪৪১

৬ জেলায় করোনা আক্রান্ত ৯

বরিশাল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

বরিশালে প্রথমবারের মতো দুই ব্যক্তির শরীরে করোনারভাইরাস ধরা পড়েছে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা হচ্ছেন বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গারহাট এলাকার বজলুর রহমান ও অন্যজন হচ্ছেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরচর এলাকার বাসিন্দা আবদুর রব মুন্সি। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার পর দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। বজলুর রহমানের বয়স ৬৫ বছর ও আবদুর রব মুন্সির বয়স ৬০ বছর। তারা দু’জনেই গত ৮ এপ্রিল থেকে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। করোনা আক্রান্ত বজলুর রহমান জনতা ব্যাংক লিমিটেডের কলসকাঠি ইউনিয়ন শাখায় গার্ডের চাকরি করতেন। সর্দি জ¦রে আক্রান্ত হবার পর তিনি স্থানীয় ডিজিটাল ক্লিনিক ও তার বাড়ির পাশের ৮টি বাড়িসহ আধা কিলোমিটারকে লকডাউন করা হয়। প্রয়োজনে তার বাড়ির অন্যান্য সদস্যদেরও পরীক্ষা করা হতে পারে। তিনি কিভাবে আক্রান্ত হলেন সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া শুরু হয়েছে। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের একটি হোসিয়ারি কারখানার শ্রমিক আবদুর রব মুন্সি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়ি এসেছিলেন বলে জানা গেছে। তার বাড়িসহ আশপাশের ১০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এসব বাড়িতে প্রায় ৪০টি পরিবার বসবাস করে। অন্যদিকে বরিশালে প্রথমবারের মতো করোনার রোগী পাওয়ায় রোববার রাতে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বরিশাল জেলাকেই লকডাউনের আওতায় এনেছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জরুরী সেবার যানবাহন ব্যতীত অন্য কোন যান বরিশালে আসতে পারবে না। এছাড়া বরিশাল থেকে কেউ বাইরে এবং বাইরের কেউ বরিশালে আসতে পারবেন না। এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।

তিতাস

প্রতিনিধি, হোমনা (কুমিল্লা)

কুমিল্লার তিতাসে একই পরিবারের বাবা-মেয়েসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ জন। উপজেলার কড়িকান্দি সদর ইউনিয়নের বিরামকান্দি ও জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের এ রোগী শনাক্ত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনা পজেটিভ রোগীরা হলো, বিরামকান্দি গ্রামের মো. জালালমিয়া (৫০)ও তার মেয়ে মোসাম্মৎ সাথী আক্তার (১২)এবং মৌটুপী গ্রামের কুস্তীগির মো. রাসেল (৩০)।

জানা যায়, বিরামকান্দি গ্রামের মো.জালাল মিয়া ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করত। করোনা পরিস্থিতিতে গ্রামে চলে আসে। এখানে অসুস্থতা অনুভব করলে উপজেলা প্রশাসণের সহযোগিতায় একটি মেডিকেল টিম নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করলে গত ৯ এপ্রিল করোনা পজেটিভ ধরা পরে। এরপর পুরো এলাকা লকডাউন করে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে মেয়ে সাথী আক্তারেরও পজেটিভ হয়। অপরদিকে জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের কুস্তীগির মো. রাসেল অসুস্থ অনুভব হলে উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে একটি মেডিকেল টিম নমুনা সংগ্রহ করে। গত ১০ এপ্রিল তারও করোনা পজেটিভ আসে। এ নিয়ে তিতাসে সর্বমোট ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত পজেটিভ পাওয়া যায় এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিতাস উপজেলাকে লকডাউন করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প.কর্মকর্তা ডাক্তার মো. সরফরাজ হোসেন খান সংবাদকে বলেন, তিতাসের পৃথক দুটি গ্রামে ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তিতাস উপজেলাকে প্রশাসন লকডাউন করে রেখেছে। এছাড়াও মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে উপজেলা প্রশাসন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। তিতাসবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আতঙ্ক নয়, সচেতন হউন। ঘরে থাকুন।

পুঠিয়া

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

এতদিন রাজশাহীতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী না থাকলেও প্রথমবারের মতো একজন পজেটিভ রোগী পাওয়া গেছে। রাজশাহীর পুঠিয়ায় এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসক। তার বাড়ি উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বগুড়াপাড়া গ্রামে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে নমুনায় করোনাভাইরাস নিশ্চিত হওয়ার পর সংক্রমিত ব্যক্তির আশপাশের ৪০টি বাড়ি লকডাউন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কয়েকদিন আগে তিনি বাড়িতে ফিরেছেন। রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ না। ওই ব্যক্তিকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনে পরে থাকে হাসপাতালে নেয়া হতে পারে। আর প্রয়োজন না হলে বাড়িতেই চিকিৎসা চলবে। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য জানান, আক্রান্ত ব্যাক্তি ৮ এপ্রিল ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে আসে। শনিবার তার নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের করোনা ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষার পর রবিবার বিকেলে তার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। এ নিয়ে রাজশাহীতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হলো। আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়ি থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য বলেন, পুঠিয়ার ওই ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ওই পরিবারের সকল সদস্যকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি এলাকায় মাইকিং করে কাউকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকাও তৈরি করেছে প্রশাসন। তাদেরও লকডাউনের মধ্যে রাখা হয়েছে।

সীতাকুণ্ড

প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আরও এক ব্যক্তি (৪৫) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। গত রোববার রাতে ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা প্রজেটিভ হয় বলে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডাক্তার ফজলে রাব্বি নিশ্চিত করেন। আক্রান্ত ব্যক্তি ফৌজদারহাট ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও একজন স্ক্র্যাপ লোহা ব্যবসায়ী। ঘটনার খবর পেয়ে প্রশাসন তার বাড়ি ও আশপাশ লকডাউন করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ফৌজদারহাট ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির লোহার পাইপের ব্যবসা রয়েছে চট্টগ্রামের সাগরিকায়। সেই সূত্রে তিনি সাগরিকাতেই বসবাস করতেন। কয়েকদিন আগে তার পাশের বাড়ির এক মহিলা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে পুলিশ তার বাসাও লকডাউন করেছিলেন। এ অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে শনিবার তার স্ত্রীকে নিয়ে তিনি নিজ বাড়ি ফৌজদারহাটে চলে আসেন। স্থানীয় মেম্বার মোস্তাকিম আরজু ও সাবেক মেম্বার মাহাবুবুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, সাগরিকায় লকডাউনে থাকা অবস্থায় তিনি সীতাকুণ্ডে চলে আসার কথা জানতে পারার পর স্ত্রীসহ তার করোনা পরীক্ষার জন্য রবিবার ফৌজদারহাস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রিপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডিতে) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখানে ডাক্তাররা স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই নমুনা সংগ্রহ করেন। পরীক্ষা শেষে দেখা যায় তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত না হলেও ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত। রাতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডাক্তার ফজলে রাব্বি এ তথ্য নিশ্চিত করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার বাড়ি ও আশপাশের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করেন বলে তারা নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত এর আগে গত ৮ এপ্রিল সীতাকুণ্ড পৌরসদরের গোডাউন রোডে এক ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডও করোনায় আক্রান্ত হন। এ নিয়ে গত ৫ দিনে উপজেলায় দুই জন করোনায় আক্রান্ত হবার খবরে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর

জেলা বার্তা পরিবেশক, লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় এক ব্যক্তির করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই জেলায় এটি দ্বিতীয় করোনাভাইরাস শনাক্তের ঘটনা। গত রোববার রাতে ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়। ৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি কিছু দিন আগে নারায়ণগঞ্জে তাবলিগে গিয়েছিলেন। এর আগে গত শনিবার রাতে জেলায় প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার সকাল ছয়টা থেকে লক্ষ্মীপুর জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল গতকাল রোববার বিকেলে এই লকডাউনের ঘোষণা দেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তি ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে রামগতি আসেন। গত শুক্রবার জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে তিনি রামগতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। পরে তার নমুনা সংগ্রহ করে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামের বিআইটিআইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়। রোববার রাতে জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। এরপর রাতেই পুলিশের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে বাড়ি থেকে ঢাকায় কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন বলেন, লক্ষ্মীপুরে এ নিয়ে দু’জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।তাদের সংস্পর্শে যারা ছিলেন, তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

পটুয়াখালী

প্রতিনিধি, পটুয়াখালী

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে পোশাক তৈরির কারখানার কর্মী এক যুবক (৩০) মারা যাওয়ার পর এখন তার বোনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ওই যুবকের বোনের বয়স ৪০ বছর। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুবকের মৃত্যুর পর মারা যাওয়া যুবকের স্ত্রীসহ পরিবারের নয়জন সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। গত রোববার ওই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে ওই যুবকের বোনের পজিটিভ এসেছে। তাকে হোম কোয়ারেন্টিতে রাখা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ দুমকি গ্রামের নিজ বাড়িকে ওই যুবক মারা যায়। তিনি দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ওই যুবক নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক তৈরির কারখানার কর্মী ছিলেন।

এক সপ্তাহ আগে নারায়ণগঞ্জের কর্মস্থল থেকে ওই যুবক বাড়ি আসেন। এ সময় তিনি জ্বর-শ্বসকষ্ট, গলা ব্যথায় ভুগছিলেন।গত মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এ পাঠিয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সে তার বাড়িতে মারা যায়। ওই দিনই মারা যাওয়া ওই যুবকের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে পটুয়াখালীতে এসে পৌঁছে এবং নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এদিকে ওই যুবক মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রীসহ পরিবারের নয়জন সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়।

পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানায়, মারা যাওয়া যুবকের বোনের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে। তাকে বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে নিভির পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়াও যুবকের সঙ্গে সংস্পর্শে ছিলেন এমন ২৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলার বাসিন্দা ১৫১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এ পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত ৭১ জনের রিপোর্ট এসেছে এবং এর মধ্যে দুইজনের পজিটিভ এসেছে। এরা দুইজন ভাইবোন। এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুবক মারা যাওয়ার পরদিন থেকে দুমকি উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। দুমকি উপজেলা শহরের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক ও নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরী ওষুধপত্র ও পণ্যবাহী যান চলাচল এর আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটে পাহারা ও সড়কে টহল জোড়দার করেছে।