৭ মাসের বকেয়া বেতন দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ৭ মাসের বকেয়া বেতনের দাবীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ইউসান নিট কম্পোজিট লিমিটেড নামের একটি রপ্তানিমূখী গার্মেন্টসের নারী-পুরুষ মিলে কয়েকশত শ্রমিক। মহাসড়কের পাশে টিপরদী এলাকায় অবস্থিত উক্ত গার্মেন্টসে গত বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোদান করে তাদের বেতন চাইলে কর্তৃপক্ষ বেতন দিতে পারবেনা বলে জানালে তারা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। প্রায় দেড় ঘন্টা অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পার্শ্বে পণ্যবাহী বিভিন্ন পরিবহনের দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনে অংশ নেয়া শ্রমিক লাভলী বেগম, মৌসুমী আক্তার, লিপি আক্তার, রেনু বেগম, আহসান মিয়া, রুবেল, নাসিরসহ আরো অনেকে জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ বেতন দেই দিচ্ছি বলে আমাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত বেতন না পাওয়ায় বাড়ি ভাড়া ও মুদি দোকানের বাকি পরেছে অনেক। দোকানদাররাও আর বাকি দিতে চায়না আর বাড়ির মালিকরাও ভাড়ার জন্য প্রতি মাসেই চাপ দিতে থাকে। তাছাড়াও ধার দেনা হয়েছে অনেক।

কষ্ট করে এতোদিন চলতে পারলেও করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন এলাকা লকডাউন হওয়ায় আমরা সমস্যায় পড়েছি। গত বছর থেকে শুরু করে মালিকপক্ষের কাছে বেতন চাইলে এই মাসে না পরের মাসে দিয়ে দেব এমন বাহানায় ৭ মাস পার করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আর চলা সম্ভব হচ্ছেনা বিধায় বেতন চাইলে মালিকপ্ক্ষ জানায়, তোমাদের বেতন দিতে পারবোনা, তোমরা কারখানার ইট খুলে নিয়ে যাও। তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে বাধ্য হয়েছি। এদিকে শ্রমিকরা সকাল ৯টা থেকে প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল ছুড়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে মহাসড়কের দুই পার্শ্বে আটকা পড়ে ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রামগামী পণ্যবাহী ট্রাক, লরি, কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী পরিবহন। এই বিষয়ে ইউসান নিট কম্পোজিট লিমিটেডের মালিকপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। পরে ইউসান নিট কম্পোজিট লিমিটেডের ম্যানেজার আক্তার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিভিন্ন সমস্যার কারণে শ্রমিকদের বেতন কিছুটা আটকে গেছে। তবে ৭ মাসের হবেনা, তিন চার মাসের বেতন তারা পাবে। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে কথা বলে এই মাসের মধ্যেই তাদেও বেতন পরিশোধের চেষ্টা করবো। শ্রমিকদের আন্দোলনের খবর পেয়ে কাঁচপুর শিল্প পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও সোনারগাঁ থানা পুলিশ গিয়ে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে প্রায় দেড় ঘন্টা পর পরিস্থিতি শান্ত করে পণ্য পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক করে।

শনিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২০ , ৫ বৈশাখ ১৪২৭, ২৩ শাবান ১৪৪১

৭ মাসের বকেয়া বেতন দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

প্রতিনিধি, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)

image

সোনারগাঁ : বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ -সংবাদ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ৭ মাসের বকেয়া বেতনের দাবীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ইউসান নিট কম্পোজিট লিমিটেড নামের একটি রপ্তানিমূখী গার্মেন্টসের নারী-পুরুষ মিলে কয়েকশত শ্রমিক। মহাসড়কের পাশে টিপরদী এলাকায় অবস্থিত উক্ত গার্মেন্টসে গত বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোদান করে তাদের বেতন চাইলে কর্তৃপক্ষ বেতন দিতে পারবেনা বলে জানালে তারা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। প্রায় দেড় ঘন্টা অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পার্শ্বে পণ্যবাহী বিভিন্ন পরিবহনের দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনে অংশ নেয়া শ্রমিক লাভলী বেগম, মৌসুমী আক্তার, লিপি আক্তার, রেনু বেগম, আহসান মিয়া, রুবেল, নাসিরসহ আরো অনেকে জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ বেতন দেই দিচ্ছি বলে আমাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত বেতন না পাওয়ায় বাড়ি ভাড়া ও মুদি দোকানের বাকি পরেছে অনেক। দোকানদাররাও আর বাকি দিতে চায়না আর বাড়ির মালিকরাও ভাড়ার জন্য প্রতি মাসেই চাপ দিতে থাকে। তাছাড়াও ধার দেনা হয়েছে অনেক।

কষ্ট করে এতোদিন চলতে পারলেও করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন এলাকা লকডাউন হওয়ায় আমরা সমস্যায় পড়েছি। গত বছর থেকে শুরু করে মালিকপক্ষের কাছে বেতন চাইলে এই মাসে না পরের মাসে দিয়ে দেব এমন বাহানায় ৭ মাস পার করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আর চলা সম্ভব হচ্ছেনা বিধায় বেতন চাইলে মালিকপ্ক্ষ জানায়, তোমাদের বেতন দিতে পারবোনা, তোমরা কারখানার ইট খুলে নিয়ে যাও। তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে বাধ্য হয়েছি। এদিকে শ্রমিকরা সকাল ৯টা থেকে প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল ছুড়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে মহাসড়কের দুই পার্শ্বে আটকা পড়ে ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রামগামী পণ্যবাহী ট্রাক, লরি, কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী পরিবহন। এই বিষয়ে ইউসান নিট কম্পোজিট লিমিটেডের মালিকপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। পরে ইউসান নিট কম্পোজিট লিমিটেডের ম্যানেজার আক্তার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিভিন্ন সমস্যার কারণে শ্রমিকদের বেতন কিছুটা আটকে গেছে। তবে ৭ মাসের হবেনা, তিন চার মাসের বেতন তারা পাবে। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে কথা বলে এই মাসের মধ্যেই তাদেও বেতন পরিশোধের চেষ্টা করবো। শ্রমিকদের আন্দোলনের খবর পেয়ে কাঁচপুর শিল্প পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও সোনারগাঁ থানা পুলিশ গিয়ে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে প্রায় দেড় ঘন্টা পর পরিস্থিতি শান্ত করে পণ্য পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক করে।