কমানো হলো রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা

চলতি অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হয়েছে। নতুন করে ২৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ কোটি টাকার নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, রাজস্ব ঘাটতি বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে ২২ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। আর সংশোধিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। ফলে এনবিআরের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে কমে ৩ লাখ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এনবিআরের তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনও ৪৫ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে আছে রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থায় ৮ মাসে ঘাটতি থাকার পর নতুন করে করোনাভাইরাসের কারণে রাজস্ব ঘাটতি আরও বেশি হবে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) জানায়, চলতি বছরে রাজস্ব ঘাটতি হবে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংশোধন করেও যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা সম্ভব হবে না এনবিআরের পক্ষে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুলাই অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ‘সমৃদ্ধ আগামীর পদযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বাজেটে অনুদান ছাড়া আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ আয় হবে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। আয় ও ব্যয়ের ঘাটতি (অনুদানসহ) ১ লাখ ৪১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া এ ঘাটতির পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের মধ্যে কর হিসেবে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৪০ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর মাধ্যমে কর হিসেবে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, এনবিআর বহির্ভূত কর ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কর ছাড়া আয় হবে ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ আগামী বছর ৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা পাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ২২ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে পাঁচ লাখ ১১ হাজার ৯০ কোটি টাকা করা হয়েছে। যেটি মূল বাজেট থেকে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ।

সূত্র আরও জানায়, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় ২ লাখ ২৫ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা, যা সংশোধিত রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা কম এবং মূল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭০ হাজার ২৮২ কোটি টাকা কম। একইভাবে ২০১৭-১৮ অর্থবছর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দেয়া ছিল ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। পরে তা সংশোধন করে ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়। কিন্তু সেই বছরও এনবিআর সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় করে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা কম।

রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০ , ৬ বৈশাখ ১৪২৭, ২৪ শাবান ১৪৪১

কমানো হলো রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

চলতি অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হয়েছে। নতুন করে ২৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ কোটি টাকার নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, রাজস্ব ঘাটতি বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে ২২ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। আর সংশোধিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। ফলে এনবিআরের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে কমে ৩ লাখ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এনবিআরের তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনও ৪৫ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে আছে রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থায় ৮ মাসে ঘাটতি থাকার পর নতুন করে করোনাভাইরাসের কারণে রাজস্ব ঘাটতি আরও বেশি হবে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) জানায়, চলতি বছরে রাজস্ব ঘাটতি হবে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংশোধন করেও যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা সম্ভব হবে না এনবিআরের পক্ষে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুলাই অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ‘সমৃদ্ধ আগামীর পদযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বাজেটে অনুদান ছাড়া আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ আয় হবে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। আয় ও ব্যয়ের ঘাটতি (অনুদানসহ) ১ লাখ ৪১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া এ ঘাটতির পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের মধ্যে কর হিসেবে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৪০ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর মাধ্যমে কর হিসেবে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, এনবিআর বহির্ভূত কর ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কর ছাড়া আয় হবে ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ আগামী বছর ৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা পাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ২২ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে পাঁচ লাখ ১১ হাজার ৯০ কোটি টাকা করা হয়েছে। যেটি মূল বাজেট থেকে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ।

সূত্র আরও জানায়, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় ২ লাখ ২৫ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা, যা সংশোধিত রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা কম এবং মূল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭০ হাজার ২৮২ কোটি টাকা কম। একইভাবে ২০১৭-১৮ অর্থবছর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দেয়া ছিল ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। পরে তা সংশোধন করে ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়। কিন্তু সেই বছরও এনবিআর সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় করে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা কম।