ত্রাণ কার্যক্রমে দলীয় কমিটি বাতিলের দাবি বিএনপির

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সারাদেশে ত্রাণ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা দিতে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ত্রাণ কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। তার মানে এই তালিকায় কেবল আওয়ামী লীগ করা লোকজনেরই ঠাঁই হবে, তাদের লোকজনই শুধু ত্রাণ পাবে। তাই সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

গতকাল নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ ত্রাণের তালিকা করে স্থানীয় প্রশাসনকে দেবে। যে সরষের মধ্যে ভুত সেখানে তাদেরকেই যদি দায়িত্ব দেয়া হয়, তাহলে কাদের পক্ষ নিয়েছে এই সরকার তা স্পষ্ট বোঝা যায়। আমরা এই বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং আশঙ্কাবোধ করছি যে, ত্রাণ কার্যক্রমে দলীয় কমিটির কারণে চাল চুরি আরও বৃদ্ধি পাবে। দলীয় তালিকা করে দলের লোকজন খাবে, আর অন্যরা না খেয়ে মরবে। এটা হলে দুর্ভীক্ষ আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আমরা মনে করি। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে দিয়ে ত্রাণের তালিকা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

রিজভী বলেন, লকডাউন কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে দেশের কোটি কোটি মানুষ খাবার সংকটে পড়েছে। এই অবস্থায় গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য ত্রাণের চাল বরাদ্দ, ওএমএস কর্মসূচি কিংবা কম দামে টিসিবির মাধ্যমে তেলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির উদ্যোগ অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু কোন গণবিরোধী সরকার ও প্রশাসনের হাতে পড়লে যে কোন শুভ উদ্যোগও কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে ওঠে।

তিনি বলেন, সরকার ভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় পেলেও সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ‘কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি’। আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউতে ভেন্টিলেটর মেশিন ও সেন্টাল অক্সিজেন লাইনের সুবিধাসহ পৃথক হাসপাতাল স্থাপন করতে পারেনি। এখন চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ না করায় বাড়ছে রোগীদের দুর্ভোগ ও মৃত্যুহার। সারাদেশে করোনার কোন চিকিৎসা হচ্ছে না, চারদিকে মানুষের কেবলেই আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতা ও হেয়ালিপনার কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, করোনাভাইরাস ইস্যু নিয়ে জনগণের সঙ্গে লুকোচুরি করার মানে হচ্ছে মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলা। জনগণের জীবন নিয়ে জুয়া খেলবেন না। আমরা দেখলাম, ১৬ এপ্রিল সারাদেশকে সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছে। এটি বুঝতে সরকারের কেন এত দেরি হলো তা বোধগম্য নয়। কই সরকারের মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তো জনগণের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না। কই স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে তো কোন হাসপাতাল পরিদর্শনে যেতে দেখিনি। উল্টো দেখা যাচ্ছে, সরকারি ত্রাণ চুরির মহোৎসব। ক্ষমতাসীনদের বাড়িতে চালের খনির পর এখন তেলের খনির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।

রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০ , ৬ বৈশাখ ১৪২৭, ২৪ শাবান ১৪৪১

ত্রাণ কার্যক্রমে দলীয় কমিটি বাতিলের দাবি বিএনপির

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সারাদেশে ত্রাণ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা দিতে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ত্রাণ কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। তার মানে এই তালিকায় কেবল আওয়ামী লীগ করা লোকজনেরই ঠাঁই হবে, তাদের লোকজনই শুধু ত্রাণ পাবে। তাই সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

গতকাল নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ ত্রাণের তালিকা করে স্থানীয় প্রশাসনকে দেবে। যে সরষের মধ্যে ভুত সেখানে তাদেরকেই যদি দায়িত্ব দেয়া হয়, তাহলে কাদের পক্ষ নিয়েছে এই সরকার তা স্পষ্ট বোঝা যায়। আমরা এই বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং আশঙ্কাবোধ করছি যে, ত্রাণ কার্যক্রমে দলীয় কমিটির কারণে চাল চুরি আরও বৃদ্ধি পাবে। দলীয় তালিকা করে দলের লোকজন খাবে, আর অন্যরা না খেয়ে মরবে। এটা হলে দুর্ভীক্ষ আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আমরা মনে করি। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে দিয়ে ত্রাণের তালিকা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

রিজভী বলেন, লকডাউন কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে দেশের কোটি কোটি মানুষ খাবার সংকটে পড়েছে। এই অবস্থায় গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য ত্রাণের চাল বরাদ্দ, ওএমএস কর্মসূচি কিংবা কম দামে টিসিবির মাধ্যমে তেলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির উদ্যোগ অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু কোন গণবিরোধী সরকার ও প্রশাসনের হাতে পড়লে যে কোন শুভ উদ্যোগও কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে ওঠে।

তিনি বলেন, সরকার ভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় পেলেও সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ‘কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি’। আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউতে ভেন্টিলেটর মেশিন ও সেন্টাল অক্সিজেন লাইনের সুবিধাসহ পৃথক হাসপাতাল স্থাপন করতে পারেনি। এখন চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ না করায় বাড়ছে রোগীদের দুর্ভোগ ও মৃত্যুহার। সারাদেশে করোনার কোন চিকিৎসা হচ্ছে না, চারদিকে মানুষের কেবলেই আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতা ও হেয়ালিপনার কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, করোনাভাইরাস ইস্যু নিয়ে জনগণের সঙ্গে লুকোচুরি করার মানে হচ্ছে মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলা। জনগণের জীবন নিয়ে জুয়া খেলবেন না। আমরা দেখলাম, ১৬ এপ্রিল সারাদেশকে সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছে। এটি বুঝতে সরকারের কেন এত দেরি হলো তা বোধগম্য নয়। কই সরকারের মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তো জনগণের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না। কই স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে তো কোন হাসপাতাল পরিদর্শনে যেতে দেখিনি। উল্টো দেখা যাচ্ছে, সরকারি ত্রাণ চুরির মহোৎসব। ক্ষমতাসীনদের বাড়িতে চালের খনির পর এখন তেলের খনির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।