কেউ ফের সংক্রমিত হবেন না এমন প্রমাণ নেই ডব্লিউএইচও

করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার পরে পুনরায় এই ভাইরাস সংক্রমণ ঘটবে না এমন কোন প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও। নতুন করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়ার প্রেক্ষাপটে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার জ্যেষ্ঠ মহামারী বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলছেন। তারা বলছেন, কোন ব্যক্তি ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিমুক্ত কিনা বা কত সময় অ্যান্টিবডি তাকে সুরক্ষা দেবে তা এই পরীক্ষায় পাওয়া যাবে না। যাদের ইতোমধ্যে সংক্রমণ ঘটেছে তারা পুনরায় সংক্রমিত হবেন না- এই ধারণার পক্ষে এখনও প্রমাণ নেই।

ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোন মানুষের দেহে জীবাণু সংক্রমণ ঘটলে তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। যুক্তরাজ্য সরকার এরইমধ্যে ৩৫ লাখ সেরোলোজি টেস্টের উপকরণ কিনেছে, যে টেস্টের মধ্য দিয়ে মানুষের রক্তের প্লাজমায় অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়। যদিও এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে কোনমাত্রায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে তা বোঝা যাবে না। অ্যান্টিবডি টেস্টের যেসব পদ্ধতি বেরিয়েছে তার মধ্যে অনেকগুলো হচ্ছে পিন-প্রিক ব্লাড টেস্ট (আঙুলের ডগা থেকে রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা), যা বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত তাৎক্ষণিক এইচআইভি টেস্টের মতো। এর মধ্য দিয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য দেহে কী মাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তা পরিমাপ করা হয়।

জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার জ্যেষ্ঠ এপিডেমিয়োলোজিস্ট মারিয়া ভ্যান কেরকভ বলেন, ‘অনেক দেশ র‌্যাপিড ডায়াগনোস্টিক সেরোলোজিক্যাল টেস্টের দিকে ঝুঁকছে। তারা মনে করছে এর মধ্য দিয়ে মানুষের এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বের করতে পারবে। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে এমন কোন প্রমাণ নেই যে, সেরোলোজিক্যাল টেস্ট বলে দেবে কোন ব্যক্তির দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে বা তিনি পুনরায় সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত। এই অ্যান্টিবডি টেস্টের মধ্য দিয়ে সেরোপ্রিভ্যালেন্সের মাত্রা, যা অ্যান্টিবডির মাত্রা বোঝায়- সেটা পরিমাপ করা যাবে। তবে তার অর্থ এই নয় যে, কোন ব্যক্তির মধ্যে ওই রোগের বিরুদ্ধে স্থায়ী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তবে এ বিষয়ক অনেক পরীক্ষা পদ্ধতি বের হওয়াকে একটি ইতিবাচক বিষয় হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।

তবে এই বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেন, এসব পরীক্ষার মাধ্যমে তারা যা বের করার চেষ্টা করছে, তা পাওয়া যাচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে।

কেরকভের সহকর্মী মাইকেল রায়ান অ্যন্টিবডি পরীক্ষা নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্নও তুলেছেন। তিনি বলেন, আমাদের খুব সতর্কতার সঙ্গে এটা করতে হবে। অ্যান্টিবডি কতক্ষণ সুরক্ষা দেবে সে বিষয়েও আমাদের নজর দিতে হবে। কেউ হয়তো সেরোপজিটিভ (সংক্রমিত হয়েছেন) হওয়ার পর মনে করতে পারে যে তার আর এ রোগ হবে না। কিন্তু আবারও ভাইরাসের সংস্পর্শে এলে তার হয়তো সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাবে।

সোমবার, ২০ এপ্রিল ২০২০ , ৭ বৈশাখ ১৪২৭, ২৫ শাবান ১৪৪১

কেউ ফের সংক্রমিত হবেন না এমন প্রমাণ নেই ডব্লিউএইচও

সংবাদ ডেস্ক |

করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার পরে পুনরায় এই ভাইরাস সংক্রমণ ঘটবে না এমন কোন প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও। নতুন করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়ার প্রেক্ষাপটে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার জ্যেষ্ঠ মহামারী বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলছেন। তারা বলছেন, কোন ব্যক্তি ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিমুক্ত কিনা বা কত সময় অ্যান্টিবডি তাকে সুরক্ষা দেবে তা এই পরীক্ষায় পাওয়া যাবে না। যাদের ইতোমধ্যে সংক্রমণ ঘটেছে তারা পুনরায় সংক্রমিত হবেন না- এই ধারণার পক্ষে এখনও প্রমাণ নেই।

ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোন মানুষের দেহে জীবাণু সংক্রমণ ঘটলে তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। যুক্তরাজ্য সরকার এরইমধ্যে ৩৫ লাখ সেরোলোজি টেস্টের উপকরণ কিনেছে, যে টেস্টের মধ্য দিয়ে মানুষের রক্তের প্লাজমায় অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়। যদিও এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে কোনমাত্রায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে তা বোঝা যাবে না। অ্যান্টিবডি টেস্টের যেসব পদ্ধতি বেরিয়েছে তার মধ্যে অনেকগুলো হচ্ছে পিন-প্রিক ব্লাড টেস্ট (আঙুলের ডগা থেকে রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা), যা বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত তাৎক্ষণিক এইচআইভি টেস্টের মতো। এর মধ্য দিয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য দেহে কী মাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তা পরিমাপ করা হয়।

জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার জ্যেষ্ঠ এপিডেমিয়োলোজিস্ট মারিয়া ভ্যান কেরকভ বলেন, ‘অনেক দেশ র‌্যাপিড ডায়াগনোস্টিক সেরোলোজিক্যাল টেস্টের দিকে ঝুঁকছে। তারা মনে করছে এর মধ্য দিয়ে মানুষের এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বের করতে পারবে। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে এমন কোন প্রমাণ নেই যে, সেরোলোজিক্যাল টেস্ট বলে দেবে কোন ব্যক্তির দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে বা তিনি পুনরায় সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত। এই অ্যান্টিবডি টেস্টের মধ্য দিয়ে সেরোপ্রিভ্যালেন্সের মাত্রা, যা অ্যান্টিবডির মাত্রা বোঝায়- সেটা পরিমাপ করা যাবে। তবে তার অর্থ এই নয় যে, কোন ব্যক্তির মধ্যে ওই রোগের বিরুদ্ধে স্থায়ী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তবে এ বিষয়ক অনেক পরীক্ষা পদ্ধতি বের হওয়াকে একটি ইতিবাচক বিষয় হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।

তবে এই বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেন, এসব পরীক্ষার মাধ্যমে তারা যা বের করার চেষ্টা করছে, তা পাওয়া যাচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে।

কেরকভের সহকর্মী মাইকেল রায়ান অ্যন্টিবডি পরীক্ষা নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্নও তুলেছেন। তিনি বলেন, আমাদের খুব সতর্কতার সঙ্গে এটা করতে হবে। অ্যান্টিবডি কতক্ষণ সুরক্ষা দেবে সে বিষয়েও আমাদের নজর দিতে হবে। কেউ হয়তো সেরোপজিটিভ (সংক্রমিত হয়েছেন) হওয়ার পর মনে করতে পারে যে তার আর এ রোগ হবে না। কিন্তু আবারও ভাইরাসের সংস্পর্শে এলে তার হয়তো সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাবে।