করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিপিও শিল্প

দেশের বিপিও/আউটসোর্সিং শিল্পের কেন্দ্রীয় ব্যবসায়িক সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে প্রতিনিয়ত মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে বিশ^ বাণিজ্যের পাশাপাশি আমাদের বিপিও শিল্পও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তাই বাক্কো বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের গৃহীত সকল উদ্যোগের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় বর্তমানে এই শিল্পের প্রতিবন্ধকতা, প্রতিবন্ধকতা নিরূপণের উপায় এবং নানাবিধ বিষয় নিয়ে বাক্কো তার সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ স্থাপন এবং তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে যাচ্ছে। সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত মার্চ মাস থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের কাছ থেকে বিল পাচ্ছে না এবং একইসঙ্গে ক্রেতারা তাদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিচ্ছে। ফলশ্রুতিতে এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে বিপুলসংখ্যক জনবলের বেতন-ভাতা, অফিস ভাড়া, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, বিপিও প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য অচিরেই চাকরি হারাতে যাচ্ছে এ শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫০ হাজার জনশক্তির একটি বড় অংশ।

বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকার কর্তৃক আর্থিক প্রণোদনা অথবা সহজ শর্তে জামানতবিহীন ও সুদবিহীন ঋণ সুবিধা প্রদান করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো। বিরূপ অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ৫টি জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন বাক্কো, বেসিস, বিসিএস, আইএসপিএবি এবং ই-ক্যাব তাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকারের কাছে আগামী ৬ মাসের জন্য মোট ১৯৩০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা (ড়িৎশরহম পধঢ়রঃধষ) চেয়েছে। ইতিমধ্যে সরকার বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্রকল্প গ্রহণ করলেও ব্যাংকগুলোর নানা জটিলতায় সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছে বিপিও শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের গৃহীত আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজগুলো থেকে ঋণ প্রাপ্তিতে নানা জটিলতা নিরসনের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন খাত ভিত্তিক সহজ নীতিমালা এবং এর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা। তাই এ বিষয়ে দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে বিপিও শিল্পের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে সকল ব্যাংকে অবহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা চায় বাক্কো।

এছাড়া বিপিও খাত বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক-বীমাসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ বিদেশি কোম্পানিগুলোকে না দিয়ে, দেশীয় বিপিও/ আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রদান করা হলে আসন্ন সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে এ শিল্প। অন্যথায়, বিপিও শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পাশাপাশি বেকার হয়ে যাবে এসব প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কর্মী এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে দেখা দেবে সামাজিক বিপর্যয়ও। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

মঙ্গলবার, ০৫ মে ২০২০ , ২২ বৈশাখ ১৪২৭, ১১ রমাজান ১৪৪১

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিপিও শিল্প

image

দেশের বিপিও/আউটসোর্সিং শিল্পের কেন্দ্রীয় ব্যবসায়িক সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে প্রতিনিয়ত মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে বিশ^ বাণিজ্যের পাশাপাশি আমাদের বিপিও শিল্পও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তাই বাক্কো বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের গৃহীত সকল উদ্যোগের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় বর্তমানে এই শিল্পের প্রতিবন্ধকতা, প্রতিবন্ধকতা নিরূপণের উপায় এবং নানাবিধ বিষয় নিয়ে বাক্কো তার সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ স্থাপন এবং তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে যাচ্ছে। সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত মার্চ মাস থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের কাছ থেকে বিল পাচ্ছে না এবং একইসঙ্গে ক্রেতারা তাদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিচ্ছে। ফলশ্রুতিতে এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে বিপুলসংখ্যক জনবলের বেতন-ভাতা, অফিস ভাড়া, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, বিপিও প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য অচিরেই চাকরি হারাতে যাচ্ছে এ শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫০ হাজার জনশক্তির একটি বড় অংশ।

বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকার কর্তৃক আর্থিক প্রণোদনা অথবা সহজ শর্তে জামানতবিহীন ও সুদবিহীন ঋণ সুবিধা প্রদান করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো। বিরূপ অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ৫টি জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন বাক্কো, বেসিস, বিসিএস, আইএসপিএবি এবং ই-ক্যাব তাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকারের কাছে আগামী ৬ মাসের জন্য মোট ১৯৩০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা (ড়িৎশরহম পধঢ়রঃধষ) চেয়েছে। ইতিমধ্যে সরকার বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্রকল্প গ্রহণ করলেও ব্যাংকগুলোর নানা জটিলতায় সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছে বিপিও শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের গৃহীত আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজগুলো থেকে ঋণ প্রাপ্তিতে নানা জটিলতা নিরসনের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন খাত ভিত্তিক সহজ নীতিমালা এবং এর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা। তাই এ বিষয়ে দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে বিপিও শিল্পের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে সকল ব্যাংকে অবহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা চায় বাক্কো।

এছাড়া বিপিও খাত বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক-বীমাসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ বিদেশি কোম্পানিগুলোকে না দিয়ে, দেশীয় বিপিও/ আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রদান করা হলে আসন্ন সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে এ শিল্প। অন্যথায়, বিপিও শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পাশাপাশি বেকার হয়ে যাবে এসব প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কর্মী এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে দেখা দেবে সামাজিক বিপর্যয়ও। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।