করোনা মোকাবিলায় বাজেটে থোক বরাদ্দ বাড়ছে

করোনা মোকাবিলায় আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে থোক বরাদ্দ বাড়ছে। এজন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) খসড়া চূড়ান্ত করছে পরিকল্পনা কমিশন। নতুন এডিপির আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। যা চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ১২ হাজার ২২৪ কোটি টাকা বেশি। অর্থাৎ ছয় দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি বরাদ্দ।

এরমধ্যে করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় নতুন এডিপিতে রেকর্ড পাঁচ হাজার ৮৯৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা মোট বরাদ্দের দুই দশমিক ৮৭ শতাংশ। এই থোক বরাদ্দ থেকে সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা জাতীয় প্রয়োজনে খরচ করা হয়।

নতুন এডিপির আওতায় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এক লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা ও বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৭০ হাজার ৫০১ কোটি ৭২ লাখ টাকা খরচ করা হবে। নতুন এডিপিতে কোভিড-১৯ এর কারণে স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এরপরও করোনা সংকটে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় রেকর্ড পরিমাণে ব্লক অ্যালোকেশন বা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অথচ এর আগে এডিপিতে এক হাজার ৬৩০ কোটি টাকা বিশেষ উন্নয়ন সহায়তার নামে থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় ৮৩১ কোটি টাকা এবং বিদেশি সহায়তা হিসেবে ৭৯৯ কোটি টাকা আছে।

এডিপিতে এবার চার হাজার ২৬৮ কোটি টাকা বেশি থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এবার প্রায় পাঁচ গুণ বাড়ানো হচ্ছে থোক বরাদ্ধ। এখন অনুমোদনের অপেক্ষায়। এদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এক চিঠিতে অপ্রয়োজনীয় গাড়ি কেনা, বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন কম গুরত্বপূর্ণ খাতে অর্থ খরচ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে থোক বরাদ্দ বেশি রাখা হয়েছে।

আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় নতুন ওই এডিপির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) খলিলুর রহমান খান বলেন, নতুন এডিপির খসড়া চূড়ান্ত। এর আকার দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। তবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, নতুন এডিপিতে রেকর্ড পরিমাণে থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। করোনা সংকট মোকাবিলায় যেকোন ধরনের নতুন প্রকল্প নেয়া হতে পারে। তখন থোক বরাদ্দ থেকে টাকা খরচ করা হবে। জাতীয় প্রয়োজন বিবেচনায় থোক বরাদ্দ বেশি রাখা হয়েছে। এডিপিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যা চেয়েছিল এরচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলাকে প্রধান্য দিয়ে স্বাস্থ্য খাতে ১৩ হাজার ৩৩ কোটি এবং কৃষি খাতে আট হাজার ৪২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরপর আবার এসব মন্ত্রণালয় করোনা মোকাবিলায় যাতে নতুন নতুন পদক্ষেপ নিতে পারে এ জন্য থোক বরাদ্দও বাড়িয়েছে। তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, থোক বরাদ্দ শুধু বাড়ালেই হবে না, স্বচ্ছতার সঙ্গে খরচ করতে হবে। থোক বরাদ্দ বাজেটে সব সময় রাখা হয়। এখন বেশি রাখা হয়েছে। কারণ করোনায় কখন কী দরকার হয় আন্দাজ করা মুশকিল।

মঙ্গলবার, ১৯ মে ২০২০ , ৫ জৈষ্ঠ্য ১৪২৭, ২৫ রমাজান ১৪৪১

করোনা মোকাবিলায় বাজেটে থোক বরাদ্দ বাড়ছে

করোনা মোকাবিলায় আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে থোক বরাদ্দ বাড়ছে। এজন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) খসড়া চূড়ান্ত করছে পরিকল্পনা কমিশন। নতুন এডিপির আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। যা চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ১২ হাজার ২২৪ কোটি টাকা বেশি। অর্থাৎ ছয় দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি বরাদ্দ।

এরমধ্যে করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় নতুন এডিপিতে রেকর্ড পাঁচ হাজার ৮৯৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা মোট বরাদ্দের দুই দশমিক ৮৭ শতাংশ। এই থোক বরাদ্দ থেকে সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা জাতীয় প্রয়োজনে খরচ করা হয়।

নতুন এডিপির আওতায় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এক লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা ও বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৭০ হাজার ৫০১ কোটি ৭২ লাখ টাকা খরচ করা হবে। নতুন এডিপিতে কোভিড-১৯ এর কারণে স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এরপরও করোনা সংকটে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় রেকর্ড পরিমাণে ব্লক অ্যালোকেশন বা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অথচ এর আগে এডিপিতে এক হাজার ৬৩০ কোটি টাকা বিশেষ উন্নয়ন সহায়তার নামে থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় ৮৩১ কোটি টাকা এবং বিদেশি সহায়তা হিসেবে ৭৯৯ কোটি টাকা আছে।

এডিপিতে এবার চার হাজার ২৬৮ কোটি টাকা বেশি থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এবার প্রায় পাঁচ গুণ বাড়ানো হচ্ছে থোক বরাদ্ধ। এখন অনুমোদনের অপেক্ষায়। এদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এক চিঠিতে অপ্রয়োজনীয় গাড়ি কেনা, বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন কম গুরত্বপূর্ণ খাতে অর্থ খরচ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে থোক বরাদ্দ বেশি রাখা হয়েছে।

আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় নতুন ওই এডিপির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) খলিলুর রহমান খান বলেন, নতুন এডিপির খসড়া চূড়ান্ত। এর আকার দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। তবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, নতুন এডিপিতে রেকর্ড পরিমাণে থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। করোনা সংকট মোকাবিলায় যেকোন ধরনের নতুন প্রকল্প নেয়া হতে পারে। তখন থোক বরাদ্দ থেকে টাকা খরচ করা হবে। জাতীয় প্রয়োজন বিবেচনায় থোক বরাদ্দ বেশি রাখা হয়েছে। এডিপিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যা চেয়েছিল এরচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলাকে প্রধান্য দিয়ে স্বাস্থ্য খাতে ১৩ হাজার ৩৩ কোটি এবং কৃষি খাতে আট হাজার ৪২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরপর আবার এসব মন্ত্রণালয় করোনা মোকাবিলায় যাতে নতুন নতুন পদক্ষেপ নিতে পারে এ জন্য থোক বরাদ্দও বাড়িয়েছে। তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, থোক বরাদ্দ শুধু বাড়ালেই হবে না, স্বচ্ছতার সঙ্গে খরচ করতে হবে। থোক বরাদ্দ বাজেটে সব সময় রাখা হয়। এখন বেশি রাখা হয়েছে। কারণ করোনায় কখন কী দরকার হয় আন্দাজ করা মুশকিল।