রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করুন

বর্ষা আসতে এখনও প্রায় মাস বাকি। অথচ রাজধানীর কোন কোন এলাকায় ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতে কোমরসমান পানি জমে যাচ্ছে। পানির নিচে থাকা খানাখন্দে রিকশা উল্টে নাকানিচুবানি খেতে হয়েছে অনেককে। কারও কারও হাত-পা ভেঙেছে। এ নিয়ে প্রশাসন ও নগর অভিভাবকদের আশ্বাসের অন্ত নেই। আগের চেয়ে এবারের অবস্থা অনেকটা ভালো হবে, আগামী বছর থেকে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না- এমন আশ্বাস বছরের পর বছর শোনা যাচ্ছে। গত রোববার সহযোগী দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

নগরীর জলাবদ্ধতার জন্য আশ্বাসের পাশাপাশি একে অন্যকে দায়ী করার বহু পুরোনো ধারাটি এখনও চলমান। সিটি করপোরেশন বলছে, ওয়াসা খাল সংস্কার করে না বলেই জলাবদ্ধতা দূর করা যায় না। ওয়াসা বলছে, সিটি করপোরেশন ঠিকমতো ময়লা পরিষ্কার করে না বলেই খালের প্রবাহ আটকে যায়। বিভিন্ন সেবা সংস্থা রাস্তা কেটে রেখে চলে যায়। ভোগান্তি পোহাতে হয় নগরবাসীকে। জানা গেছে, ২০১৮ সালে ঢাকা ওয়াসা রাজধানীর খালগুলো খনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে দুটি প্রকল্প হাতে নেয়। হাজারীবাগ, বাইশটেকী, কুর্মিটোলা, মান্ডা ও বেগুনবাড়ি খাল উন্নয়নে নেয়া প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৬০৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ওই বছরের এপ্রিলে প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন পায়। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কার্যত এখনও প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি। এছাড়া ‘ঢাকা মহানগরীর ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং খাল উন্নয়ন’ নামে আরেকটি প্রকল্প রয়েছে ঢাকা ওয়াসার। এ পর্যন্ত শুধু দরপত্র আহ্বান করা গেছে। দুই সিটি করপোরেশনের অধীনে থাকা দুই হাজার ১৬২ কিলোমিটার নালাও ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। ফলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের সময় দ্রুত পানি নামতে পারে না এবং জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসব কাজের দায়িত্বে যারা আছেন, আমরা কি মনে করব, জনভোগান্তির বিষয়টি তাদের চিন্তাভাবনায় আছে বা থাকে?

দোষারোপ বা দায় চাপানোর খেলা যারা করার, তারা করছে। কিন্তু সবার ওপরে তো সরকার রয়েছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় রয়েছে, তারা কেন কোটি মানুষের চরম ভোগান্তি নিরসনে সামান্য উদ্যোগী হয় না।

আমরা চাই, করোনা দুর্যোগের মধ্যেও দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজধানীর জলাবদ্ধতার অবসান করা হোক।

মঙ্গলবার, ০২ জুন ২০২০ , ১৯ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ৯ শাওয়াল ১৪৪১

রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করুন

বর্ষা আসতে এখনও প্রায় মাস বাকি। অথচ রাজধানীর কোন কোন এলাকায় ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতে কোমরসমান পানি জমে যাচ্ছে। পানির নিচে থাকা খানাখন্দে রিকশা উল্টে নাকানিচুবানি খেতে হয়েছে অনেককে। কারও কারও হাত-পা ভেঙেছে। এ নিয়ে প্রশাসন ও নগর অভিভাবকদের আশ্বাসের অন্ত নেই। আগের চেয়ে এবারের অবস্থা অনেকটা ভালো হবে, আগামী বছর থেকে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না- এমন আশ্বাস বছরের পর বছর শোনা যাচ্ছে। গত রোববার সহযোগী দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

নগরীর জলাবদ্ধতার জন্য আশ্বাসের পাশাপাশি একে অন্যকে দায়ী করার বহু পুরোনো ধারাটি এখনও চলমান। সিটি করপোরেশন বলছে, ওয়াসা খাল সংস্কার করে না বলেই জলাবদ্ধতা দূর করা যায় না। ওয়াসা বলছে, সিটি করপোরেশন ঠিকমতো ময়লা পরিষ্কার করে না বলেই খালের প্রবাহ আটকে যায়। বিভিন্ন সেবা সংস্থা রাস্তা কেটে রেখে চলে যায়। ভোগান্তি পোহাতে হয় নগরবাসীকে। জানা গেছে, ২০১৮ সালে ঢাকা ওয়াসা রাজধানীর খালগুলো খনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে দুটি প্রকল্প হাতে নেয়। হাজারীবাগ, বাইশটেকী, কুর্মিটোলা, মান্ডা ও বেগুনবাড়ি খাল উন্নয়নে নেয়া প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৬০৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ওই বছরের এপ্রিলে প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন পায়। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কার্যত এখনও প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি। এছাড়া ‘ঢাকা মহানগরীর ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং খাল উন্নয়ন’ নামে আরেকটি প্রকল্প রয়েছে ঢাকা ওয়াসার। এ পর্যন্ত শুধু দরপত্র আহ্বান করা গেছে। দুই সিটি করপোরেশনের অধীনে থাকা দুই হাজার ১৬২ কিলোমিটার নালাও ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। ফলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের সময় দ্রুত পানি নামতে পারে না এবং জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসব কাজের দায়িত্বে যারা আছেন, আমরা কি মনে করব, জনভোগান্তির বিষয়টি তাদের চিন্তাভাবনায় আছে বা থাকে?

দোষারোপ বা দায় চাপানোর খেলা যারা করার, তারা করছে। কিন্তু সবার ওপরে তো সরকার রয়েছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় রয়েছে, তারা কেন কোটি মানুষের চরম ভোগান্তি নিরসনে সামান্য উদ্যোগী হয় না।

আমরা চাই, করোনা দুর্যোগের মধ্যেও দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজধানীর জলাবদ্ধতার অবসান করা হোক।