যমুনার ভাঙন হুমকিতে সেচ প্রকল্পের পাম্পঘর

যমুনার ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে শিবালয় কাশাদহ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডে’র ইরি-বোরো সেচ প্রকল্পের পানির হাউজ। নদীতে পানি বৃদ্ধির সময় এ ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যে কোন সময় সেচ প্রকল্পটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ব্যাহত হবে ইরি-বোরো আবাদ। ফলে খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কাশাদহ সেচ প্রকল্পের আওয়াতায় দশটি গ্রামের কৃষকরা এবার প্রায় ২৩ হাজার শতাংশ কৃষি জমিতে ইরি-বোরোর আবাদ করা হয়েছে। যমুনা নদী থেকে সরাসরি পানি তোলার মাধ্যমে উক্ত কৃষি জমিতে সেচ দেয়া হয়। আরিচা খালপার এলাকায় যমুনা নদী থেকে পানি সেচের মাধ্যমে ইরি-বোরো আবাদের জন্য গত ২০০৪ সালে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে পানির হাউজ ও ড্রেন নির্মাণ করা হয়। চার-পাঁচটি সেচ মেশিনের সাহায্যে ইরি মৌসুমে নদী থেকে পানি উত্তোলন করে প্রথমে হাউসে তোলা হয়। পরে এ পানি নির্দিষ্ট ড্রেনের মাধ্যমে আবাদি জমিতে সেচ দিয়ে ফসল উৎপাদন করা হয়। এতে কৃষকের একদিকে সেচ খরচ সাশ্রয় হচ্ছে, অপরদিকে পলি মিশ্রিত পানি সেচ দেয়ায় জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দিন দিন এ সেচ প্রকল্পের আওতায় ইরি-বোরো আবাদের পরিমাণ বাড়ছে। কিন্তু হঠাৎ করে নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে যমুনার ভাঙনে কাশাদহ সেচ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ পানির হাউসটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এমতাবস্থায় কাশাদহ পবস সমিতি’র পক্ষ থেকে অতিদ্রুত হাউসটি’র পাশে নদীর পাড়ে প্যালাসাইটিং করে প্রটেকশন দিয়ে হাউজটি রক্ষায় আবেদন জানানো হয়েছে।

বড় আনুলিয়া গ্রামের কৃষক মো. মাহমুদ সরদার বলেন, কাশাদহ ইরি প্রজেক্টে ১৫ বিঘা জমিতে ইরি ধানের আবাদ করেছেন। ডিপ মেশিনের সাহায্যে সেচ দিয়ে যখন ইরি আবাদ করতেন তখন ১ বিঘা জমির শুধু সেচ খরচ হতো ১৫শ’ টাকা এবং আয়রণযুক্ত পানি দিয়ে সেচ দেয়ায় জমির উর্বরতা শক্তিও নষ্ট হতো। আর এখন কাশাদহ সমিতি’র সেচ প্রকল্পের আওয়াতায় সরাসরি নদীর পানি দিয়ে সেচ দেওয়ায় ১ বিঘা জমিতে সেচ খরচ হচ্ছে মাত্র ৩শ’ টাকা। ফলে জমিতে সেচ খরচ কম হচ্ছে এবং জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরিচা কাশাদহ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. মশিউর রহমান আওয়াল বলেন, আরিচা খালপাড় এলাকায় অবস্থিত উক্ত সেচ প্রকল্পের পানির হাউসটি নদী ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধ করা না গেলে যে কোন সময় হাউসটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সমিতি’র পক্ষ থেকে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি আবেদন করা হয়েছে।

শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০ , ২৯ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ১৯ শাওয়াল ১৪৪১

যমুনার ভাঙন হুমকিতে সেচ প্রকল্পের পাম্পঘর

রফিকুল ইসলাম, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)

image

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) : যমুনায় পানি বাড়ায় ডুবে গেছে কাশাদহ সেচ প্রকল্পের পাম্পঘর -সংবাদ

যমুনার ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে শিবালয় কাশাদহ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডে’র ইরি-বোরো সেচ প্রকল্পের পানির হাউজ। নদীতে পানি বৃদ্ধির সময় এ ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যে কোন সময় সেচ প্রকল্পটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ব্যাহত হবে ইরি-বোরো আবাদ। ফলে খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কাশাদহ সেচ প্রকল্পের আওয়াতায় দশটি গ্রামের কৃষকরা এবার প্রায় ২৩ হাজার শতাংশ কৃষি জমিতে ইরি-বোরোর আবাদ করা হয়েছে। যমুনা নদী থেকে সরাসরি পানি তোলার মাধ্যমে উক্ত কৃষি জমিতে সেচ দেয়া হয়। আরিচা খালপার এলাকায় যমুনা নদী থেকে পানি সেচের মাধ্যমে ইরি-বোরো আবাদের জন্য গত ২০০৪ সালে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে পানির হাউজ ও ড্রেন নির্মাণ করা হয়। চার-পাঁচটি সেচ মেশিনের সাহায্যে ইরি মৌসুমে নদী থেকে পানি উত্তোলন করে প্রথমে হাউসে তোলা হয়। পরে এ পানি নির্দিষ্ট ড্রেনের মাধ্যমে আবাদি জমিতে সেচ দিয়ে ফসল উৎপাদন করা হয়। এতে কৃষকের একদিকে সেচ খরচ সাশ্রয় হচ্ছে, অপরদিকে পলি মিশ্রিত পানি সেচ দেয়ায় জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দিন দিন এ সেচ প্রকল্পের আওতায় ইরি-বোরো আবাদের পরিমাণ বাড়ছে। কিন্তু হঠাৎ করে নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে যমুনার ভাঙনে কাশাদহ সেচ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ পানির হাউসটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এমতাবস্থায় কাশাদহ পবস সমিতি’র পক্ষ থেকে অতিদ্রুত হাউসটি’র পাশে নদীর পাড়ে প্যালাসাইটিং করে প্রটেকশন দিয়ে হাউজটি রক্ষায় আবেদন জানানো হয়েছে।

বড় আনুলিয়া গ্রামের কৃষক মো. মাহমুদ সরদার বলেন, কাশাদহ ইরি প্রজেক্টে ১৫ বিঘা জমিতে ইরি ধানের আবাদ করেছেন। ডিপ মেশিনের সাহায্যে সেচ দিয়ে যখন ইরি আবাদ করতেন তখন ১ বিঘা জমির শুধু সেচ খরচ হতো ১৫শ’ টাকা এবং আয়রণযুক্ত পানি দিয়ে সেচ দেয়ায় জমির উর্বরতা শক্তিও নষ্ট হতো। আর এখন কাশাদহ সমিতি’র সেচ প্রকল্পের আওয়াতায় সরাসরি নদীর পানি দিয়ে সেচ দেওয়ায় ১ বিঘা জমিতে সেচ খরচ হচ্ছে মাত্র ৩শ’ টাকা। ফলে জমিতে সেচ খরচ কম হচ্ছে এবং জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরিচা কাশাদহ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. মশিউর রহমান আওয়াল বলেন, আরিচা খালপাড় এলাকায় অবস্থিত উক্ত সেচ প্রকল্পের পানির হাউসটি নদী ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধ করা না গেলে যে কোন সময় হাউসটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সমিতি’র পক্ষ থেকে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি আবেদন করা হয়েছে।