আর ছুটি ঘোষণা করা হবে না : স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে গণপরিবহন

জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত ঢাকা মহানরগীতে ৪৫টি এলাকা রেডজোন চিহ্নিত

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সারাদেশে আর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে গণপরিবহন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে চলবে অফিস-আদালত। সরকার মূলত জোনভিত্তিক লকডাউনের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলার পদ্ধতি নিয়েছে। তার সাধারণ ছুটি থাকবে লকডাউন এলাকায়। কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে চলমান নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। গত ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ও গণপরিবহন চালু সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ১৬ জুন থেকেও এ ব্যবস্থা চলমান থাকবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ জুনের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের মতো অফিস এবং গণপরিবহন চলবে, সেজন্য একটি অর্ডার জারি করা হবে। আমার এখন জোনিংয়ে যাচ্ছি। ঢাকাসহ যে জায়গাগুলো বেশি সংক্রমিত হয়েছে সেই জায়গাগুলোতে রেডজোন ঘোষণা করে বিশেষ ট্রিটমেন্টে আমরা চলে যাবো। তাই বর্তমানে যে অবস্থায় চলছে সবকিছু সেভাবেই চলবে। নতুন করে ছুটি ঘোষণা করা হবে না। রেডজোনে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হবে। জানা গেছে, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেশি করোনা আক্রান্ত এলাকাকে রেড, অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত এলাকাকে ইয়োলো ও একেবারে কম আক্রান্ত বা আক্রান্তমুক্ত এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। রেডজোনকে লকডাউন করা হবে, ইয়োলো জোনে যেন আর সংক্রমণ না বাড়ে সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে। সতর্কতা থাকবে গ্রিন জোনেও। লকডাউনের মেয়াদ হবে ১৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত। ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী ধরা পড়ে। পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যেতে থাকলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী গত ৩০ মে ছুটি শেষ হয়। বর্তমানে করোনা রোগী সংখ্যা বিবেচনা সম্পূর্ণ লকডাউন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকাকে পরীক্ষামূলকভাবে ‘রেডজোন’ হিসেবে সম্পূর্ণ লকডাউন বাস্তবায়ন করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। তবে করোনাভাইরাসের সংখ্যা বিবেচনা করে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মোট ৪৮টি এলাকাকে ‘রেডজোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির ১৯ এবং দক্ষিণ সিটির ২৮টি এলাকা আছে। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার ১১টি এলাকা রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের বাইরে তিন জেলার মধ্যে গাজীপুরের সবকটি উপজেলাকে রেডজোনের আওতার মধ্যে আনা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, সদর এবং পুরো সিটি এলাকাকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে পূর্ব রাজাবাজার ছাড়া অন্য কোন এলাকাকে এখনও আনুষ্ঠানিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্র্তা জানান।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ডেপুটি পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সচিব ডা. জহিরুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১১ জুন কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত ১৪ দিনের প্রতি এক লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৬০ জন রোগীর থাকার ভিত্তিতে এই রেডজোন ঘোষণা করা হচ্ছে। এটা কেবল ঢাকা এবং চট্টগ্রামের জন্য প্রযোজ্য। বাকি জেলাগুলোতে ১৪ দিনের ভেতরে ১ লাখ জনসংখ্যা ১০ জন থাকলে সেটাকে রেডজোন ঘোষণা করা হবে।

সভা সিদ্ধান্ত হয় : উত্তর সিটি করপোরেশনের যে ১৭ এলাকাকে রেড জোন হিসেবে ধরা হয়েছে সেগুলো হলো- মিরপুর, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, গুলশান, বাড্ডা, ক্যান্টনমেন্ট, মহাখালী, তেজগাঁও, রামপুরা, আফতাবনগর, মগবাজার, এয়ারপোর্ট, বনশ্রী, রাজাবাজার, উত্তরা। দক্ষিণ সিটির ২৮টি এলাকার মধ্যে আছে- যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মুগদা, গেন্ডারিয়া, ধানমন্ডি, জিগাতলা, লালবাগ, বাসাবো, শান্তিনগর, পরিবাগ, পল্টন, আজিমপুর, কলাবাগান, রমনা, সূত্রাপুর, মালিবাগ, কোতোয়ালি, টিকাটুলি, মিটফোর্ড, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, ওয়ারী, খিলগাঁও, , কদমতলী, সিদ্ধেশ্বরী, লক্ষ্মীবাজার, এলিফ্যান্ট রোড, সেগুনবাগিচা। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটির ১০ এলাকাকে রেড জোনের মধ্যে রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো, কোতোয়ালির ১৬, ২০, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড, বন্দরে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, পতেঙ্গার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড, পাহাড়তলির ১০ নম্বর ওয়ার্ড, খুলশীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড, হালিশহর এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড।

সোমবার, ১৫ জুন ২০২০ , ১ আষাঢ় ১৪২৭, ২২ শাওয়াল ১৪৪১

আর ছুটি ঘোষণা করা হবে না : স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে গণপরিবহন

জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত ঢাকা মহানরগীতে ৪৫টি এলাকা রেডজোন চিহ্নিত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সারাদেশে আর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে গণপরিবহন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে চলবে অফিস-আদালত। সরকার মূলত জোনভিত্তিক লকডাউনের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলার পদ্ধতি নিয়েছে। তার সাধারণ ছুটি থাকবে লকডাউন এলাকায়। কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে চলমান নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। গত ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ও গণপরিবহন চালু সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ১৬ জুন থেকেও এ ব্যবস্থা চলমান থাকবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ জুনের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের মতো অফিস এবং গণপরিবহন চলবে, সেজন্য একটি অর্ডার জারি করা হবে। আমার এখন জোনিংয়ে যাচ্ছি। ঢাকাসহ যে জায়গাগুলো বেশি সংক্রমিত হয়েছে সেই জায়গাগুলোতে রেডজোন ঘোষণা করে বিশেষ ট্রিটমেন্টে আমরা চলে যাবো। তাই বর্তমানে যে অবস্থায় চলছে সবকিছু সেভাবেই চলবে। নতুন করে ছুটি ঘোষণা করা হবে না। রেডজোনে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হবে। জানা গেছে, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেশি করোনা আক্রান্ত এলাকাকে রেড, অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত এলাকাকে ইয়োলো ও একেবারে কম আক্রান্ত বা আক্রান্তমুক্ত এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। রেডজোনকে লকডাউন করা হবে, ইয়োলো জোনে যেন আর সংক্রমণ না বাড়ে সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে। সতর্কতা থাকবে গ্রিন জোনেও। লকডাউনের মেয়াদ হবে ১৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত। ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী ধরা পড়ে। পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যেতে থাকলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী গত ৩০ মে ছুটি শেষ হয়। বর্তমানে করোনা রোগী সংখ্যা বিবেচনা সম্পূর্ণ লকডাউন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকাকে পরীক্ষামূলকভাবে ‘রেডজোন’ হিসেবে সম্পূর্ণ লকডাউন বাস্তবায়ন করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। তবে করোনাভাইরাসের সংখ্যা বিবেচনা করে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মোট ৪৮টি এলাকাকে ‘রেডজোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির ১৯ এবং দক্ষিণ সিটির ২৮টি এলাকা আছে। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার ১১টি এলাকা রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের বাইরে তিন জেলার মধ্যে গাজীপুরের সবকটি উপজেলাকে রেডজোনের আওতার মধ্যে আনা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, সদর এবং পুরো সিটি এলাকাকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে পূর্ব রাজাবাজার ছাড়া অন্য কোন এলাকাকে এখনও আনুষ্ঠানিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্র্তা জানান।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ডেপুটি পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সচিব ডা. জহিরুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১১ জুন কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত ১৪ দিনের প্রতি এক লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৬০ জন রোগীর থাকার ভিত্তিতে এই রেডজোন ঘোষণা করা হচ্ছে। এটা কেবল ঢাকা এবং চট্টগ্রামের জন্য প্রযোজ্য। বাকি জেলাগুলোতে ১৪ দিনের ভেতরে ১ লাখ জনসংখ্যা ১০ জন থাকলে সেটাকে রেডজোন ঘোষণা করা হবে।

সভা সিদ্ধান্ত হয় : উত্তর সিটি করপোরেশনের যে ১৭ এলাকাকে রেড জোন হিসেবে ধরা হয়েছে সেগুলো হলো- মিরপুর, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, গুলশান, বাড্ডা, ক্যান্টনমেন্ট, মহাখালী, তেজগাঁও, রামপুরা, আফতাবনগর, মগবাজার, এয়ারপোর্ট, বনশ্রী, রাজাবাজার, উত্তরা। দক্ষিণ সিটির ২৮টি এলাকার মধ্যে আছে- যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মুগদা, গেন্ডারিয়া, ধানমন্ডি, জিগাতলা, লালবাগ, বাসাবো, শান্তিনগর, পরিবাগ, পল্টন, আজিমপুর, কলাবাগান, রমনা, সূত্রাপুর, মালিবাগ, কোতোয়ালি, টিকাটুলি, মিটফোর্ড, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, ওয়ারী, খিলগাঁও, , কদমতলী, সিদ্ধেশ্বরী, লক্ষ্মীবাজার, এলিফ্যান্ট রোড, সেগুনবাগিচা। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটির ১০ এলাকাকে রেড জোনের মধ্যে রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো, কোতোয়ালির ১৬, ২০, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড, বন্দরে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, পতেঙ্গার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড, পাহাড়তলির ১০ নম্বর ওয়ার্ড, খুলশীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড, হালিশহর এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড।