চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশে একটি মহাসড়কে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বহনকারী একটি ট্যাঙ্কারে আগুন ধরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও ১৭২ জন। গত শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে সংঘটিত এ দুর্ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। এ প্রতিবেদনে লেখা পর্যন্ত তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানা যায়। এএফপি, সিজিটিএন নিউজ।
সংবাদ মাধ্যম সিজিটিএন নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, শনিবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশের ওয়েইনলিং শহরের কাছের একটি এক্সপ্রেসওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে দেশটির ইংরেজি নিউজ টেলিভিশন জানিয়েছে। প্রথম বিস্ফোরণের ধাক্কায় ট্যাঙ্কারটি ছিটকে পাশের একটি ওয়ার্কশপে গিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয় আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা জানান, শনিবারের ওই ঘটনায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু ও ১৭২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। গতকাল রোববার সকালে দেশটির এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এদিকে দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্র্র্র্রচার মাধ্যম সিসিটিভির বরাতে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিস্ফোরণটি এতই শক্তিশালী ছিল যে নিকটস্থ বাড়িঘর ও কারখানাগুলো ধসে পড়েছে। এছাড়াও আশেপাশে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরে গেছে। এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ধ্বংসাবশেষের একটি বড় টুকরা উড়ে এসে পাশের কয়েকটি ভবনে আঘাত হেনেছে। অগ্নিকু- আকাশের দিকে উঠছে এবং আতঙ্কিত মানুষ চিৎকার করছে। অপর এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্যাঙ্কারের ধ্বংসাবশেষ ও ট্রাকের কয়েকটি চাকা একটি ভবনে প্রচ- গতিতে আঘাত করেছে। সিসিটিভি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১০ জন এবং আহত ১১৭ জন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জরুরি সেবার সদস্যরা সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন বলে সিসিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পর বেশ কয়েকটি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ বের করতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এদিন ঝেজিয়াংয়ের প্রাদেশিক কাউন্সিলের কর্ম সুরক্ষা কমিটি এ ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণ মামলা পরিচালনা ও এর তদারিক করার ঘোষণা দিয়েছে। সরকারি এ কমিটি, উৎপাদনের সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত দায়িত্বগুলো আরও জোরদার করার পাশাপাশি বিপজ্জনক পণ্যের পুরো পরিবহন চেইনের নিরাপত্তা তদারকি আরও শক্তিশালী করার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে। এ দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পরিবেশ দূষণের পরিষ্কার কোনো নজির পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তারা। চীনে প্রায়ই ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। দেশটিতে ট্রাফিক আইন মেনে চলার প্রবণতা খুব কম। সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০১৫ সালেই দেশটিতে ৫৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। ওই বছর ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকে ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে।
২০১৯ সালে চীনের পূর্বাঞ্চলে একটি ট্রাকের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষের ফলে কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হন।
সোমবার, ১৫ জুন ২০২০ , ১ আষাঢ় ১৪২৭, ২২ শাওয়াল ১৪৪১
সংবাদ ডেস্ক |
চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশে একটি মহাসড়কে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বহনকারী একটি ট্যাঙ্কারে আগুন ধরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও ১৭২ জন। গত শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে সংঘটিত এ দুর্ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। এ প্রতিবেদনে লেখা পর্যন্ত তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানা যায়। এএফপি, সিজিটিএন নিউজ।
সংবাদ মাধ্যম সিজিটিএন নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, শনিবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশের ওয়েইনলিং শহরের কাছের একটি এক্সপ্রেসওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে দেশটির ইংরেজি নিউজ টেলিভিশন জানিয়েছে। প্রথম বিস্ফোরণের ধাক্কায় ট্যাঙ্কারটি ছিটকে পাশের একটি ওয়ার্কশপে গিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয় আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা জানান, শনিবারের ওই ঘটনায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু ও ১৭২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। গতকাল রোববার সকালে দেশটির এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এদিকে দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্র্র্র্রচার মাধ্যম সিসিটিভির বরাতে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিস্ফোরণটি এতই শক্তিশালী ছিল যে নিকটস্থ বাড়িঘর ও কারখানাগুলো ধসে পড়েছে। এছাড়াও আশেপাশে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরে গেছে। এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ধ্বংসাবশেষের একটি বড় টুকরা উড়ে এসে পাশের কয়েকটি ভবনে আঘাত হেনেছে। অগ্নিকু- আকাশের দিকে উঠছে এবং আতঙ্কিত মানুষ চিৎকার করছে। অপর এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্যাঙ্কারের ধ্বংসাবশেষ ও ট্রাকের কয়েকটি চাকা একটি ভবনে প্রচ- গতিতে আঘাত করেছে। সিসিটিভি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১০ জন এবং আহত ১১৭ জন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জরুরি সেবার সদস্যরা সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন বলে সিসিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পর বেশ কয়েকটি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ বের করতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এদিন ঝেজিয়াংয়ের প্রাদেশিক কাউন্সিলের কর্ম সুরক্ষা কমিটি এ ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণ মামলা পরিচালনা ও এর তদারিক করার ঘোষণা দিয়েছে। সরকারি এ কমিটি, উৎপাদনের সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত দায়িত্বগুলো আরও জোরদার করার পাশাপাশি বিপজ্জনক পণ্যের পুরো পরিবহন চেইনের নিরাপত্তা তদারকি আরও শক্তিশালী করার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে। এ দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পরিবেশ দূষণের পরিষ্কার কোনো নজির পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তারা। চীনে প্রায়ই ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। দেশটিতে ট্রাফিক আইন মেনে চলার প্রবণতা খুব কম। সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০১৫ সালেই দেশটিতে ৫৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। ওই বছর ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকে ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে।
২০১৯ সালে চীনের পূর্বাঞ্চলে একটি ট্রাকের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষের ফলে কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হন।