চট্টগ্রাম মহনগরীর ১০নং ওয়ার্ড ও জেলার ১১টি উপজেলাকে রেডজোন ঘোষণা করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। এরইমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে নগরীর ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডকে আজ মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। তবে অনেকেই জানে না লকডাউন ও রেডজোনে যেসব নিয়ম মানতে হয়।
জানা গেছে, লকডাউনে কেউ এলাকায় ঢুকতে পারবে না। আবার বেরও হতে পারবে না।
সবাই বাসায় অবস্থান করবে। যানবাহন, জনসাধারণের চলাচল, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসাসহ অ্যাম্বুল্যান্স সুবিধা দেয়া হবে। সবাই সাধারণ ছুটির আওতায় থাকবে।অফিস আদালত আন্ধ থাকবে। তবে সংবাদকর্মী আর স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রবেশ করতে পারবে। সিটি করপোরেশন, আইনশৃঙ্খলা ও স্থানীয়দের সমন্বয়ে কমিটি করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করবে। বাসীন্দাদের যে কোন সুবিধা অসুবিধা কমিটি দেখাশুনা করবে। বড় রাস্তাগুলো লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। ওই এলাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সবার চিকিৎসাসেবা দিবে।
অন্যদিকে যে এলাকায় ১৪ দিনে ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছে তা রেডজোন। রেডজোনে পরবর্তীতে লকডাউন কার্যকর হবে। কোভিড-১৯ রোগী ও যারা কোয়ারেন্টিনে থাকবেন, তাদের নিজেদের বাসা থেকে বের হতে দেয়া হবে না। আক্রান্ত রোগী ও কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের খাবার ও জরুরি ওষুধ তাদের বাসায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। রেডজোনে থাকা এলাকাগুলোতে যারা ঘরে কোয়ারেন্টিন করতে পারবেন না, তাদের জন্য কমিউনিটি কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র করা হবে। প্রস্তুত রাখা হবে একটি হাসপাতাল। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থাকলে সেটিকে ওই এলাকার জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত অফিস ছাড়া অন্য কোন ধরনের অফিস খোলা থাকবে না। তবে এটা নিয়ে ভিন্ন মত আছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, আজ রাত ১২টা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে লকডাউন কার্যকর করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য ৯ ওয়ার্ডও করা হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ১০টি ওয়ার্ডকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরমধ্যে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেই হিসাবে ১১টি ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএমপির উপকমিশনার (বিশেষ শাখা) আবদুল ওয়ারিশ বলেন, করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশে ১৬ জুন রাত ১২টা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে লকডাউন কার্যকর করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য ৯ ওয়ার্ডও করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন চলা ওয়ার্ডটিকে ২১ দিন দেখার পর অন্য ওয়ার্ডগুলো করা হবে।
করোনা প্রতিরোধে উক্ত টেকনিক্যাল কমিটির গত শনিবারের সভায় চট্টগ্রাম সিটির ১১টি ওয়ার্ডকে চিহ্নিত করা হয়। চট্টগ্রাম সিটির ১০ এলাকাকে রেডজোনের মধ্যে রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো- চট্টগ্রাম বন্দরে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, পতেঙ্গার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড, পাহাড়তলির ১০ নম্বর ওয়ার্ড, কোতোয়ালির ১৬, ২০, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড, খুলশীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড, হালিশহর এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড।
চট্টগ্রামের যেসব এলাকায় প্রতি এক লাখ জনসংখ্যায় ১৪ দিনে ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছে সেসব এলাকাকে রেডজোন চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সভার সিদ্ধান্ত মতে, জেলার জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন এবং পুলিশ কমিশনার/সুপার মিলে এসব জোনের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে লাল এলাকা চিহ্নিত করবেন।
এদিকে চট্টগ্রামের ১৩ উপজেলা ও নগরীর ১০ ওয়ার্ডে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। রেড ও ইয়োলে জোনে আগামী ১৬ জুন থেকে সরকারি ছুটি কার্যকরে গতকাল সোমবার দুপুরে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চট্টগ্রামের রেডজোন ঘোষিত উপজেলাগুলো হচ্ছে কর্ণফুলী, পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, সীতাকু-, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান উপজেলাকে রেডজোন চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যদিকে সাতকানিয়া লোহাগাড়া, ফটিকছড়ি হলুদজোন এবং মীরসরাই ও সন্দ্বীপকে সবুজজোন হিসেবে তালিকা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০ , ২ আষাঢ় ১৪২৭, ২৩ শাওয়াল ১৪৪
নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম মহনগরীর ১০নং ওয়ার্ড ও জেলার ১১টি উপজেলাকে রেডজোন ঘোষণা করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। এরইমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে নগরীর ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডকে আজ মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। তবে অনেকেই জানে না লকডাউন ও রেডজোনে যেসব নিয়ম মানতে হয়।
জানা গেছে, লকডাউনে কেউ এলাকায় ঢুকতে পারবে না। আবার বেরও হতে পারবে না।
সবাই বাসায় অবস্থান করবে। যানবাহন, জনসাধারণের চলাচল, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসাসহ অ্যাম্বুল্যান্স সুবিধা দেয়া হবে। সবাই সাধারণ ছুটির আওতায় থাকবে।অফিস আদালত আন্ধ থাকবে। তবে সংবাদকর্মী আর স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রবেশ করতে পারবে। সিটি করপোরেশন, আইনশৃঙ্খলা ও স্থানীয়দের সমন্বয়ে কমিটি করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করবে। বাসীন্দাদের যে কোন সুবিধা অসুবিধা কমিটি দেখাশুনা করবে। বড় রাস্তাগুলো লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। ওই এলাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সবার চিকিৎসাসেবা দিবে।
অন্যদিকে যে এলাকায় ১৪ দিনে ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছে তা রেডজোন। রেডজোনে পরবর্তীতে লকডাউন কার্যকর হবে। কোভিড-১৯ রোগী ও যারা কোয়ারেন্টিনে থাকবেন, তাদের নিজেদের বাসা থেকে বের হতে দেয়া হবে না। আক্রান্ত রোগী ও কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের খাবার ও জরুরি ওষুধ তাদের বাসায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। রেডজোনে থাকা এলাকাগুলোতে যারা ঘরে কোয়ারেন্টিন করতে পারবেন না, তাদের জন্য কমিউনিটি কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র করা হবে। প্রস্তুত রাখা হবে একটি হাসপাতাল। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থাকলে সেটিকে ওই এলাকার জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত অফিস ছাড়া অন্য কোন ধরনের অফিস খোলা থাকবে না। তবে এটা নিয়ে ভিন্ন মত আছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, আজ রাত ১২টা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে লকডাউন কার্যকর করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য ৯ ওয়ার্ডও করা হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ১০টি ওয়ার্ডকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরমধ্যে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেই হিসাবে ১১টি ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএমপির উপকমিশনার (বিশেষ শাখা) আবদুল ওয়ারিশ বলেন, করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশে ১৬ জুন রাত ১২টা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে লকডাউন কার্যকর করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য ৯ ওয়ার্ডও করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন চলা ওয়ার্ডটিকে ২১ দিন দেখার পর অন্য ওয়ার্ডগুলো করা হবে।
করোনা প্রতিরোধে উক্ত টেকনিক্যাল কমিটির গত শনিবারের সভায় চট্টগ্রাম সিটির ১১টি ওয়ার্ডকে চিহ্নিত করা হয়। চট্টগ্রাম সিটির ১০ এলাকাকে রেডজোনের মধ্যে রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো- চট্টগ্রাম বন্দরে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, পতেঙ্গার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড, পাহাড়তলির ১০ নম্বর ওয়ার্ড, কোতোয়ালির ১৬, ২০, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড, খুলশীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড, হালিশহর এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড।
চট্টগ্রামের যেসব এলাকায় প্রতি এক লাখ জনসংখ্যায় ১৪ দিনে ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছে সেসব এলাকাকে রেডজোন চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সভার সিদ্ধান্ত মতে, জেলার জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন এবং পুলিশ কমিশনার/সুপার মিলে এসব জোনের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে লাল এলাকা চিহ্নিত করবেন।
এদিকে চট্টগ্রামের ১৩ উপজেলা ও নগরীর ১০ ওয়ার্ডে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। রেড ও ইয়োলে জোনে আগামী ১৬ জুন থেকে সরকারি ছুটি কার্যকরে গতকাল সোমবার দুপুরে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চট্টগ্রামের রেডজোন ঘোষিত উপজেলাগুলো হচ্ছে কর্ণফুলী, পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, সীতাকু-, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান উপজেলাকে রেডজোন চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যদিকে সাতকানিয়া লোহাগাড়া, ফটিকছড়ি হলুদজোন এবং মীরসরাই ও সন্দ্বীপকে সবুজজোন হিসেবে তালিকা করা হয়েছে।