একদিনে মৃত্যু অর্ধশতাধিক আক্রান্ত ৩৮৬২ জন

দেশে করোনা সংক্রমণের শততম দিন পার হয়েছে। ভাইরাসটি এখন দানবীয় রূপ ধারণ করছে। শুরু থেকে নানা অব্যবস্থাপনায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক, গবেষকসহ দেশের বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে এবং আক্রান্তদের দ্রুত পৃথক করতে হবে।

সরকারের মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, চিকিৎসক, সরকারি পদস্থ কর্মকর্তা, বিশিষ্টজনসহ অনেকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা। দেশে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১ হাজার ২৬২ জন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৬২ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৮১ জনে। সুস্থ হয়েছেন আরও দুই হাজার ২৩৭ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩৬ হাজার ২৬৪ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন প্রায় ৫৭ হাজার মানুষ।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান। বুলেটিনে বলা হয় দেশের ৬১টি ল্যাবে করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ হাজার ৪০৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে পরীক্ষা করা হয় ১৭ হাজার ২১৪টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৭১৭টি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতি মিনিটে দেশে ৩ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

গত রোববার পর্যন্ত বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে করোনা ঝুঁকিতে থাকা শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৮ নম্বরে। বাংলাদেশের পরে রয়েছে করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের অবস্থান।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষকরা বলছেন, সংক্রমণ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষের চরম অসচেতনতায় সংক্রমণ বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষের চলাচলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসকরা বলছেন, পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। কিট সংকট, পিসিআর ল্যাবের সংকট, প্রশিক্ষিত জনবল না থাকাসহ নানা অব্যবস্থাপনায় নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা ঠিকভাবে হচ্ছে না। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে এবং আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে তাদের পৃথক করতে হবে। করোনায় আক্রান্তদের বা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের আইসোলশনে রাখলেই হবে না তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আরও দিক পরিবর্তন আনতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে বলা হয়, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা নিজেদেরই হাতে। অসচেতনতায় আক্রান্ত এবং মৃত্যু ডেকে আনবে।

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৪৭ জন এবং নারী ছয়জন। এদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের তিনজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুইজন, চল্লিশোর্ধ্ব নয়জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৯ জন, ষাটোর্ধ্ব ১০ জন, সত্তরোর্ধ্ব আটজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী একজন মারা গেছেন। ৩০ জন ঢাকা বিভাগের, ১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, তিনজন খুলনা বিভাগের, চারজন রাজশাহী বিভাগের এবং একজন করে বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভা?গের। ৩৪ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, ১৮ জন বাসায় এবং একজনকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

বুলেটিনে দেয়া তথ্যমতে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগী বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৬৩৫ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৬ হাজার ৪৭৯ জনকে। আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩৫৯ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ছয় হাজার ১৭৭ জন। বর্তমানে আই?সো?লেশ?নে আ?ছেন ১০ হাজার ৩০২ জন। হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে তিন হাজার ৪২১ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ২৬ হাজার ৭৭৯ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৫৪৪ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৬৪ হাজার ২৩৩ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৬২ হাজার ৫৪৬ জন। দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

করোনায় মন্ত্রী, এমপি এবং সরকারি কমকর্তাদের মধ্যে আক্রান্ত বাড়ছে : মন্ত্রিসভার সদস্য ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর, যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনের সাংসদ রণজিত কুমার রায়, নওগাঁ-২ আসনের শহীদুজ্জামান সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের এবাদুল করিম, জামালপুর-২ আসনের ফরিদুল হক খান, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। তাদের মধ্যে নওগাঁর শহীদুজ্জামান সরকার ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। গত রোববার মারা গেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদ সদস্য মোহাম্মাদ নাসিম এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। এর আগে করোনায় মারা গেছেন সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আনোয়ারুল কবির, সংরক্ষিত মহিলা (বগুড়া-জয়পুরহাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামরুন্নাহার ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি মকবুল হোসেন।

সর্বশেষ সরকারের দু’জন সচিব করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিরক্ষাসচিব আবদুল্লাহ আল মহসিন চৌধুরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর ও তার স্ত্রী নাসরীন আক্তারও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। শিক্ষাবিদদের মধ্যে মারা গেছেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা নিলুফার মঞ্জুরসহ কয়েকজন।

সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোতে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ২৪৭ জন সদস্য ও তাদের পরিবারের লোকজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত পুলিশ বাহিনীতে। গত রোববার পর্যন্ত পুলিশ বাহিনীতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৩১৭ জন।

বুধবার, ১৭ জুন ২০২০ , ৩ আষাঢ় ১৪২৭, ২৪ শাওয়াল ১৪৪১

দেশে সংক্রমণের শতদিন পার

একদিনে মৃত্যু অর্ধশতাধিক আক্রান্ত ৩৮৬২ জন

সাইফ বাবলু

দেশে করোনা সংক্রমণের শততম দিন পার হয়েছে। ভাইরাসটি এখন দানবীয় রূপ ধারণ করছে। শুরু থেকে নানা অব্যবস্থাপনায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক, গবেষকসহ দেশের বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে এবং আক্রান্তদের দ্রুত পৃথক করতে হবে।

সরকারের মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, চিকিৎসক, সরকারি পদস্থ কর্মকর্তা, বিশিষ্টজনসহ অনেকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা। দেশে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১ হাজার ২৬২ জন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৬২ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৮১ জনে। সুস্থ হয়েছেন আরও দুই হাজার ২৩৭ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩৬ হাজার ২৬৪ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন প্রায় ৫৭ হাজার মানুষ।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান। বুলেটিনে বলা হয় দেশের ৬১টি ল্যাবে করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ হাজার ৪০৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে পরীক্ষা করা হয় ১৭ হাজার ২১৪টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৭১৭টি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতি মিনিটে দেশে ৩ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

গত রোববার পর্যন্ত বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে করোনা ঝুঁকিতে থাকা শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৮ নম্বরে। বাংলাদেশের পরে রয়েছে করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের অবস্থান।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষকরা বলছেন, সংক্রমণ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষের চরম অসচেতনতায় সংক্রমণ বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষের চলাচলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসকরা বলছেন, পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। কিট সংকট, পিসিআর ল্যাবের সংকট, প্রশিক্ষিত জনবল না থাকাসহ নানা অব্যবস্থাপনায় নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা ঠিকভাবে হচ্ছে না। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে এবং আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে তাদের পৃথক করতে হবে। করোনায় আক্রান্তদের বা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের আইসোলশনে রাখলেই হবে না তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আরও দিক পরিবর্তন আনতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে বলা হয়, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা নিজেদেরই হাতে। অসচেতনতায় আক্রান্ত এবং মৃত্যু ডেকে আনবে।

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৪৭ জন এবং নারী ছয়জন। এদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের তিনজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুইজন, চল্লিশোর্ধ্ব নয়জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৯ জন, ষাটোর্ধ্ব ১০ জন, সত্তরোর্ধ্ব আটজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী একজন মারা গেছেন। ৩০ জন ঢাকা বিভাগের, ১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, তিনজন খুলনা বিভাগের, চারজন রাজশাহী বিভাগের এবং একজন করে বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভা?গের। ৩৪ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, ১৮ জন বাসায় এবং একজনকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

বুলেটিনে দেয়া তথ্যমতে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগী বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৬৩৫ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৬ হাজার ৪৭৯ জনকে। আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩৫৯ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ছয় হাজার ১৭৭ জন। বর্তমানে আই?সো?লেশ?নে আ?ছেন ১০ হাজার ৩০২ জন। হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে তিন হাজার ৪২১ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ২৬ হাজার ৭৭৯ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৫৪৪ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৬৪ হাজার ২৩৩ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৬২ হাজার ৫৪৬ জন। দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

করোনায় মন্ত্রী, এমপি এবং সরকারি কমকর্তাদের মধ্যে আক্রান্ত বাড়ছে : মন্ত্রিসভার সদস্য ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর, যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনের সাংসদ রণজিত কুমার রায়, নওগাঁ-২ আসনের শহীদুজ্জামান সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের এবাদুল করিম, জামালপুর-২ আসনের ফরিদুল হক খান, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। তাদের মধ্যে নওগাঁর শহীদুজ্জামান সরকার ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। গত রোববার মারা গেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদ সদস্য মোহাম্মাদ নাসিম এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। এর আগে করোনায় মারা গেছেন সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আনোয়ারুল কবির, সংরক্ষিত মহিলা (বগুড়া-জয়পুরহাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামরুন্নাহার ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি মকবুল হোসেন।

সর্বশেষ সরকারের দু’জন সচিব করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিরক্ষাসচিব আবদুল্লাহ আল মহসিন চৌধুরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর ও তার স্ত্রী নাসরীন আক্তারও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। শিক্ষাবিদদের মধ্যে মারা গেছেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা নিলুফার মঞ্জুরসহ কয়েকজন।

সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোতে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ২৪৭ জন সদস্য ও তাদের পরিবারের লোকজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত পুলিশ বাহিনীতে। গত রোববার পর্যন্ত পুলিশ বাহিনীতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৩১৭ জন।