আক্রান্ত ৯৮ হাজার পার মৃত্যু ১৩০৫ জন

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৪০০৮ মৃত্যু ৪৩ জন

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৪৩ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ৩০৫ জনে। আক্রান্ত আরও ৪ হাজার ৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮ হাজার ৪৮৯ জন। কানাডায় গতকাল পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ৯৯ হাজার ৪৬৭ জন। শনাক্তের রেকর্ডে কানাডাকে এখন অতিক্রমের পথে বাংলাদেশ।

সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৫ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৮ হাজার ১৮৯ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষকরা বলছেন, সংক্রমণ এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। শুরু থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। অথচ মানুষের চরম অসচেতনতার কারণে সংক্রমণ কমছেই না বরং আরও বাড়ছে। সরকার সবকিছু চালু করে দিলেও কোথায় স্বাস্থ্যবিধি মানা বাধ্যতামূলক করতে পারেননি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে সাধারণ মানুষের চলাচলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। হাটবাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না।

চিকিৎসকরা বলছেন, যত বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে তত বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। কিট সংকট, পিসিআর ল্যাবের সংকট, প্রশিক্ষিত জনবল না থাকাসহ নানা অব্যবস্থাপনাপর কারণে নমুনা পরীক্ষা এবং পরীক্ষা ঠিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে এবং আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে তাদের পৃথকভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে। করোনায় আক্রান্তদের বা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে বা আইসোলশনে রাখলেই হবে না, তাদের পরিপূর্ণভাবে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করার জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থায় আরও দিক পরিবর্তন আনতে হবে। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

বুলেটিনে বলা হয়, নতুন মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী। এদের মধ্যে ৮১-৯০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ২১-৩০ বছরের একজন, ১১-২০ বছরের মধ্যে একজন, ০ থেকে ১০ বছরের মধ্যে একজন।

এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাগে একজন, ময়মনসিংহে ২ জন এবং রংপুর বিভাগে একজন।

এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২৭ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১৫ জন। আর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এসেছেন একজন।

অধ্যাপক নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭১৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১০ হাজার ৭৫২ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৬৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪৫ জন। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৩ হাজার ৪১ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২৯ হাজার ৮২০ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৭ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩০ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬২ হাজার ৪৯০ জন।

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ২০২০ , ৪ আষাঢ় ১৪২৭, ২৫ শাওয়াল ১৪৪১

দেশে করোনা পরিস্থিতি

আক্রান্ত ৯৮ হাজার পার মৃত্যু ১৩০৫ জন

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৪০০৮ মৃত্যু ৪৩ জন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৪৩ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ৩০৫ জনে। আক্রান্ত আরও ৪ হাজার ৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮ হাজার ৪৮৯ জন। কানাডায় গতকাল পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ৯৯ হাজার ৪৬৭ জন। শনাক্তের রেকর্ডে কানাডাকে এখন অতিক্রমের পথে বাংলাদেশ।

সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৫ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৮ হাজার ১৮৯ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষকরা বলছেন, সংক্রমণ এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। শুরু থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। অথচ মানুষের চরম অসচেতনতার কারণে সংক্রমণ কমছেই না বরং আরও বাড়ছে। সরকার সবকিছু চালু করে দিলেও কোথায় স্বাস্থ্যবিধি মানা বাধ্যতামূলক করতে পারেননি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে সাধারণ মানুষের চলাচলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। হাটবাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না।

চিকিৎসকরা বলছেন, যত বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে তত বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। কিট সংকট, পিসিআর ল্যাবের সংকট, প্রশিক্ষিত জনবল না থাকাসহ নানা অব্যবস্থাপনাপর কারণে নমুনা পরীক্ষা এবং পরীক্ষা ঠিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে এবং আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে তাদের পৃথকভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে। করোনায় আক্রান্তদের বা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে বা আইসোলশনে রাখলেই হবে না, তাদের পরিপূর্ণভাবে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করার জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থায় আরও দিক পরিবর্তন আনতে হবে। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

বুলেটিনে বলা হয়, নতুন মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী। এদের মধ্যে ৮১-৯০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ২১-৩০ বছরের একজন, ১১-২০ বছরের মধ্যে একজন, ০ থেকে ১০ বছরের মধ্যে একজন।

এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাগে একজন, ময়মনসিংহে ২ জন এবং রংপুর বিভাগে একজন।

এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২৭ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১৫ জন। আর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এসেছেন একজন।

অধ্যাপক নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭১৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১০ হাজার ৭৫২ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৬৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪৫ জন। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৩ হাজার ৪১ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২৯ হাজার ৮২০ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৭ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩০ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬২ হাজার ৪৯০ জন।