বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০টি ছার্ডের মধ্যে ২৭টি ছার্ডকে স্বাস্থ্য বিভাগ রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করায় এসব এলাকা আগামী সপ্তাহ থেকে লকডাউনের আওতায় নেয়া হতে পারে। তবে পুরো সিটি করপোরেশন এলাকা নাকি ২৬টি ছার্ড বা যেসব এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি সেই সব এলাকাগুলোকে লকডাউনের আওতায় নেয়া হবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকাকে লকডাউনের আওতায় নেবার নির্দেশনা দেয়া হয় বরিশালের সিভিল সার্জনকে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দেছা এই নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। করোনা সংক্রমণের ব্যাপকতার কারণে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকা ইতোমধ্যে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রায় ৫ লাখ নাগরিক অধ্যুষিত এ নগরীতে সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৮শ’ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। লকডাউনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ফোন করে প্রদত্ত নির্দেশনা দ্রুত সময়ে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে এ নির্দেশনা আসার পরপরই সিভিল সার্জন বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকাকে লকডাউন বাস্তবায়নের সুপারিশ করে বরিশালের সংশ্লিষ্ট দফতর প্রধানদের নিকট চিঠি প্রদান করেছেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহবুদ্দিন খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লকডাউন বাস্তবায়নে নির্দেশনা কার্যকরের জন্য বেশকিছু পূর্বপ্রস্তুতি ও বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। তা সম্পন্ন করার পরই লকডাউন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য সিটি করপোরেশন থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ ছাড়াও বেশকিছু মহলের সঙ্গে আলোচনার বিষয় রয়েছে। প্রয়োজনীয় পূর্ব প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে কিছু সময় লেগে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তাই ধারণা করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহের আগে স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন ঘোষণা করতে পারছে না। বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান সাংবাদিকদের এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। সিভিল সার্জন জানান, টেলিফোনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক সিটি করপোরেশন এলাকা লকডাউন করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে অতি দ্রুত সময়ে তা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। এছাড়া রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকা লকডাউন করার ক্ষেত্রে প্রদত্ত সব শর্ত শতভাগ কার্যকর করার কথাও বলেছেন পরিচালক।
সিভিল সার্জন বলেন এ নির্দেশনার পরপরই বিষয়টি অবহিত করে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব দফতর প্রধানদের লকডাউন বাস্তবায়নের সুপারিশ করে চিঠি দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কোন দফতর এককভাবে একা লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারে না। তাই জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের সমন্বয় করে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রদত্ত প্রজ্ঞাপনে যেখানে রেডজোন হবে সেই এলাকাকে ব্লক করা হবে। ওই এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে। রেডজোনে লকডাউন বাস্তবায়ন করবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এবং জেলা প্রশাসন। এছাড়া রেডজোনে দেয়া লকডাউন ১৪ থেকে ২১ দিনের জন্য প্রযোজ্য হবে। সেখানে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য বুথ বসানো হবে। থাকবে চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স। খাবার, ওষুধ ও বাজারের সব ব্যবস্থা পরিপূর্ণভাবে ভেতরেই করা হবে। সবদিক থেকে ওই এলাকাটিকে ঘিরে দেয়া হবে। যাতে মানুষ বাইরে বের হতে না পারে এবং বাইরে থেকে কেউ ঢুকতে না পারে। মন্ত্রণালয়ের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশ কার্যকর করতে ২/৩ দিন সময় লাগবে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ২০২০ , ৪ আষাঢ় ১৪২৭, ২৫ শাওয়াল ১৪৪১
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল
বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০টি ছার্ডের মধ্যে ২৭টি ছার্ডকে স্বাস্থ্য বিভাগ রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করায় এসব এলাকা আগামী সপ্তাহ থেকে লকডাউনের আওতায় নেয়া হতে পারে। তবে পুরো সিটি করপোরেশন এলাকা নাকি ২৬টি ছার্ড বা যেসব এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি সেই সব এলাকাগুলোকে লকডাউনের আওতায় নেয়া হবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকাকে লকডাউনের আওতায় নেবার নির্দেশনা দেয়া হয় বরিশালের সিভিল সার্জনকে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দেছা এই নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। করোনা সংক্রমণের ব্যাপকতার কারণে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকা ইতোমধ্যে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রায় ৫ লাখ নাগরিক অধ্যুষিত এ নগরীতে সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৮শ’ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। লকডাউনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ফোন করে প্রদত্ত নির্দেশনা দ্রুত সময়ে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে এ নির্দেশনা আসার পরপরই সিভিল সার্জন বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকাকে লকডাউন বাস্তবায়নের সুপারিশ করে বরিশালের সংশ্লিষ্ট দফতর প্রধানদের নিকট চিঠি প্রদান করেছেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহবুদ্দিন খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লকডাউন বাস্তবায়নে নির্দেশনা কার্যকরের জন্য বেশকিছু পূর্বপ্রস্তুতি ও বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। তা সম্পন্ন করার পরই লকডাউন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য সিটি করপোরেশন থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ ছাড়াও বেশকিছু মহলের সঙ্গে আলোচনার বিষয় রয়েছে। প্রয়োজনীয় পূর্ব প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে কিছু সময় লেগে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তাই ধারণা করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহের আগে স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন ঘোষণা করতে পারছে না। বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান সাংবাদিকদের এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। সিভিল সার্জন জানান, টেলিফোনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক সিটি করপোরেশন এলাকা লকডাউন করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে অতি দ্রুত সময়ে তা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। এছাড়া রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকা লকডাউন করার ক্ষেত্রে প্রদত্ত সব শর্ত শতভাগ কার্যকর করার কথাও বলেছেন পরিচালক।
সিভিল সার্জন বলেন এ নির্দেশনার পরপরই বিষয়টি অবহিত করে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব দফতর প্রধানদের লকডাউন বাস্তবায়নের সুপারিশ করে চিঠি দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কোন দফতর এককভাবে একা লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারে না। তাই জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের সমন্বয় করে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রদত্ত প্রজ্ঞাপনে যেখানে রেডজোন হবে সেই এলাকাকে ব্লক করা হবে। ওই এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে। রেডজোনে লকডাউন বাস্তবায়ন করবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এবং জেলা প্রশাসন। এছাড়া রেডজোনে দেয়া লকডাউন ১৪ থেকে ২১ দিনের জন্য প্রযোজ্য হবে। সেখানে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য বুথ বসানো হবে। থাকবে চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স। খাবার, ওষুধ ও বাজারের সব ব্যবস্থা পরিপূর্ণভাবে ভেতরেই করা হবে। সবদিক থেকে ওই এলাকাটিকে ঘিরে দেয়া হবে। যাতে মানুষ বাইরে বের হতে না পারে এবং বাইরে থেকে কেউ ঢুকতে না পারে। মন্ত্রণালয়ের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশ কার্যকর করতে ২/৩ দিন সময় লাগবে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা গেছে।